আসসালামু আলাইকুম! আজকে আমরা যে বিষয়ের উপর আলোচনা করতে যাচ্ছি, তা বর্তমান বিশ্বের ডিজিটাল যুগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়—‘বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট ব্যবহারকারী সংখ্যা’। এটি এমন একটি পরিসংখ্যান যা আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই গভীর প্রভাব ফেলছে।
ইন্টারনেটের বিস্তার এবং এর প্রভাব
২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে, মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫.৫২ বিলিয়ন। এটি পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ৬৭.৫%। ভাবুন তো, পৃথিবীর প্রতিটি তিনজনের মধ্যে দুইজনের হাতে রয়েছে ইন্টারনেট। এটি খুবই চমকপ্রদ একটি পরিসংখ্যান, যা প্রমাণ করে যে ইন্টারনেট কতটা বিস্তার লাভ করেছে এবং মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ হয়ে উঠেছে।
ইন্টারনেটের এই বিস্তার শুধুমাত্র তথ্য আদান-প্রদান বা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের মাধ্যমে নয়, বরং এটি ব্যবসা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা, এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রেই নিত্যনতুন সুযোগের সৃষ্টি করেছে। ডিজিটাল বিজ্ঞাপণ থেকে শুরু করে অনলাইন শপিং, অনলাইন শিক্ষা এবং বিনোদন—সবই বর্তমানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে।
বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল এবং তাদের ইন্টারনেট প্রবেশাধিকার
এখন যদি আমরা ভৌগোলিক দিক থেকে দেখি, তবে এশিয়া, ইউরোপ, এবং উত্তর আমেরিকাই ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সবচেয়ে বড় অংশ দখল করে রেখেছে। বিশেষত, এশিয়া মহাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ২.৮ বিলিয়ন, যা বিশ্বের মোট ব্যবহারকারীর ৫০% এরও বেশি। এই অঞ্চলের মধ্যে চীন, ভারত, এবং দক্ষিণ কোরিয়া অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ।
অন্যদিকে, ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকায় ইন্টারনেট প্রবেশাধিকার যথেষ্ট ভালো হলেও, কিছু দেশ এখনও উন্নয়নশীল। তবে এই অঞ্চলগুলোতে উচ্চতর প্রযুক্তি ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে, এবং আরও বেশি সংখ্যক মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে।
ইন্টারনেটের ব্যবহার বৃদ্ধি এবং ভবিষ্যৎ
এখন যে তথ্যটি আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো প্রয়োজন, তা হলো—বর্তমান ইন্টারনেটের ব্যবহার কেবল যোগাযোগের জন্য নয়, বরং এটি মানুষের জীবনযাত্রার অভ্যন্তরীণ অংশ হয়ে উঠেছে। আগামী বছরগুলোতে এই প্রবণতা আরও বাড়বে এবং বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে।
বিশ্বের বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশে কম্পিউটার এবং স্মার্টফোনের ব্যবহারের মাধ্যমে ইন্টারনেটের পৌঁছানো সহজ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে আফ্রিকা এবং এশিয়া মহাদেশে এক বিপ্লব ঘটে চলেছে।
ইন্টারনেট এবং এর সাথে যুক্ত প্রযুক্তি
যেহেতু ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বের ৬৭.৫% মানুষ সংযুক্ত, তাই এর সাথে সম্পর্কিত প্রযুক্তিগুলোর ব্যবহারও বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেমনঃ ৫জি নেটওয়ার্ক, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), ক্লাউড কম্পিউটিং, ইন্টারনেট অফ থিংস (IoT) এবং ব্লকচেইন—এই সব প্রযুক্তি ইন্টারনেট ব্যবহারের পরিধি বাড়াতে সহায়ক হয়েছে। এই প্রযুক্তিগুলোর মাধ্যমে, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা আরও দ্রুত, নিরাপদ এবং উন্নত পরিষেবা পাচ্ছেন।
এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায়, অনেকেই এখন নিজেদের ব্যবসা, পণ্য বা সেবাকে অনলাইনে প্রচার করতে সক্ষম হচ্ছেন। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, টিকটক ইত্যাদি প্ল্যাটফর্মে ব্যবসা পরিচালনা এবং প্রচারণা খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
সংক্ষেপে
বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫.৫২ বিলিয়ন—এটি একটি প্রমাণ যে ইন্টারনেট আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। এই বিশাল সংখ্যা মানে শুধু যে যোগাযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে, তা নয়, বরং এটি একটি বৃহৎ অর্থনৈতিক এবং সামাজিক পরিবর্তনের সূচনা করেছে। ব্যবসা থেকে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা থেকে বিনোদন—সব ক্ষেত্রেই ইন্টারনেটের প্রভাব দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তাহলে, আমরা সবাই যে এই ডিজিটাল যুগের অংশ, তা আর অস্বীকার করা সম্ভব নয়। আসুন, আমরা একে আরও ভালোভাবে ব্যবহার করি এবং আরও বেশি সুযোগ সৃষ্টি করি!
ধন্যবাদ সবাইকে!
আমি মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ। শিক্ষার্থী, ইস্টার্ণ রিফাইনারী মডেল হাই স্কুল, চট্টগ্রাম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 বছর 4 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 20 টি টিউন ও 29 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 8 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
Assalamu Alaikum everyone, I am Mohammad Habib Ullah, a lifelong learner. I'm not particularly eager to brag about myself. Because I believe that if my work and skills do not speak for me, then I have nothing to say for myself.