অতিরিক্ত ইন্টারনেটে আসক্তি কমানোর ৫ টি কার্যকারী উপায়

Level 6
Sonic টিউনার, টেকটিউনস, গাইবান্ধা, রংপুর

আসসালামু আলাইকুম। টেকটিউনস ওয়েবসাইটের নতুন আরো একটি টিউনে আপনাকে স্বাগতম। আমি স্বপন আছি আপনাদের সাথে, আশাকরি সকলেই অনেক অনেক ভালো আছেন। স্বাগতম সবাইকে অতিরিক্ত ইন্টারনেটে আসক্তি কমানোর কার্যকারী উপায় নিয়ে নতুন আরো একটি টিউনে। অনেকেই নিজেদের না চাওয়াতে অথবা নিজেদের অজান্তেই অনলাইনে অতিরিক্ত আসক্ত হয়ে যাই। অতিরিক্ত অনলাইন অ্যাডিকশন একজন সুস্থ মানুষের শারীরিক অথবা মানসিক উভয়েদিকে অনেক জটিল প্রভাব ফেলতে পারে। শারীরিক ক্ষতিগুলোর মধ্যে কিছু জটিল ক্ষতি হলো মাইগ্রেশন (মাথাব্যথা), খুব কাছে অথবা একটু দূরের জিনিসই ঝাপসা দেখা (চোখের পাওয়ার কমে যাওয়া) মতো মারাত্মক সব শারীরিক ক্ষতি হতে পারে।

এবার আসে মানসিক ক্ষতি কী হতে পারে? আমরা যারা অতিরিক্ত ইন্টারনেটে আসক্ত হয়ে পড়ি, তারা সারা দিনে প্রায় 22 ঘণ্টারও বেশি মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকি। এটি নিঃসন্দেহে একটি খারাপ অভ্যাস। এরকম খারাপ অভ্যাসের জন্য আমাদের মানসিক অনেক অবনতি হতে পারে। উল্লেখযোগ্য কিছু মানসিক অবনতি হলো, সব সময় মেজাজ খিটখিটে থাকা, ভালো কিছু সহজে ভালো না লাগা, একসময় প্রিয় মানুষগুলোর সাথে ভালোভাবে কথা না বলা সহ এমন আরও জটিল ধরনের মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারি। এছাড়াও ডায়াবেটিসের মতো দীর্ঘমেয়াদি অনেক বড় বড় রোগ তো থাকছেই।

আমাদের সকলেরই উচিত ইন্টারনেটে এমন আসক্তি থেকে নিজেকে বিরত রাখা। কারণ নিজের ভাল মন্দের খেয়াল নিজেকে রাখতে হবে, নিজের ভালো-মন্দের দায়িত্ব অন্য কেউ নেবে না। তা না হলে অনেক বড় বড় ধরনের রোগের বাসস্থান হবে আমাদের মানব শরীর। সময় থাকতে ইন্টারনেটের প্রতি এই খারাপ আসক্ত থেকে আমাদের দূরে থাকতে হবে। কম্পিউটার মোবাইল সহ জনপ্রিয় এই ডিভাইস গুলো নিয়ে গবেষণা করে বের হয়েছে এক ভয়ানক তথ্য যা শুনলে আপনি চমকা উঠবেন। এসব ডিভাইস থেকে নির্গত মেলাটোনিন যা এক প্রকার জৈব নিয়ন্ত্রণ রাসায়নিক পদার্থ যা আমাদের শরীরে অতিরিক্ত প্রবেশ করলে নিয়মিত ঘুমের ব্যাঘাত ঘটবে। যার ফলে আমাদের শরীর অনেক বেশি শুকিয়ে যাবে।

এছাড়াও অনেকে অতিরিক্ত মোবাইলের আসক্তির ফলে বিভিন্ন ধরনের নেশায় জড়িয়ে পড়ে। যার ফলে বড় বড় শারীরিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। অতিরিক্ত ইন্টারনেট আসক্তির ফলে নেশা তারপর নেশা থেকেই শারীরিক ক্ষতি শ্বাসকষ্ট, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া, বিবেক বুদ্ধি অথবা বিচক্ষণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলা সহ নানা ধরনের জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে। এসব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অবশ্যই আমাদের মোবাইলের আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। হ্যাঁ বন্ধুরা, আজকের টিউনে আমরা আলোচনা করব অতিরিক্ত ইন্টারনেটে আসক্তি কমানোর উপায় নিয়ে। আশাকরি আজকের পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়লে অতিরিক্ত ইন্টারনেটের আসক্তি কমাতে পারবেন। তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক আমাদের আজকের টিউন, অতিরিক্ত ইন্টারনেট আসক্তি কমানোর সেরা উপায়।

১. নিয়মিত নামাজ পড়ুন

আজকের টিউনের শুরুটা আমরা ভালো কাজ দিয়ে করবো। আশাকরি আজকের এই ভালো কাজের মধ্যে দিয়ে শুরু করার জন্য আমাদের অতিরিক্ত ইন্টারনেট আসক্তি কমানোর চেস্টার ফলাফলও ভালোই হবে ইনশাআল্লাহ। অতিরিক্ত মোবাইল চাপা অথবা ইন্টারনেটের আসক্তি কমানোর জন্য নিয়মিত নামাজ পড়তে পারেন। এটি অনেক কার্যকর একটি পদ্ধতি যা অনেক বেশি সহজেই আপনার অতিরিক্ত ইন্টারনেট অথবা মোবাইলের প্রতি আসক্ত কমিয়ে আনবে। আপনারা যারা ইন্টারনেট অথবা মোবাইলের প্রতি অতিরিক্ত আসক্ততা কমাতে চাচ্ছেন তারা আজ থেকেই প্রতিজ্ঞা করুন, নিয়মিত নামাজ পড়বো!

আপনি যদি নিয়মিত নামাজ পড়েন তাহলে, দিনে পাঁচবার আপনার হাত থেকে ফোনটি দূরে থাকবে। আপনি সব সময় খেয়াল করে থাকুন কখন আযান দেয়। আজান দেওয়ার সাথে সাথে অজু করে আপনি নামাজের উদ্দেশ্যে রওনা হোন। এতে দিনের পাঁচবার, পাঁচটি বিভিন্ন সময় বেশ খানিকটা সময় ধরেই আপনার ফোনটি আপনার হাতের বাহিরে থাকবে যার ফলে মোবাইলের প্রতি অতিরিক্ত আসক্ত কমানোর প্রথম ধাপ সফল হবে। আপনারা যারা ইতোমধ্যেই মোবাইলের প্রতি অনেক বেশি আসক্ত হয়ে পড়ছেন তারা চাইলেই সারা দিনের জন্য মোবাইল ফোন হাতে না নেওয়ার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে থাকতে পারবেনা। একটু পর অবশ্যই তারা তাদের ফোনটি হাতে নিবেনই।

তবে আপনি যদি নামাজ পড়ার মাধ্যমে আপনার হাতের ফোনটি কিছু সময়ের জন্য বাসায় রাখেন তাহলে শুরুতে আপনি কিছুটা সময় করে আপনার ফোনটি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে পারবেন। এভাবে আস্তে আস্তে ফোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার সময় টা বাড়াতে পারবেন। আর এর মধ্যে নিয়মিত নামাজ পড়াটা আপনার মনের মধ্যে গেঁথে গেলে একটা সময় পর আপনি দেখবেন আপনার অতিরিক্ত ফোন চাপার অথবা ইন্টারনেটের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তের অভ্যাসটা এমনিতেই দূর হয়ে গেছে। তাই আমি মনে করি, অতিরিক্ত মোবাইলের প্রতি অথবা ইন্টারনেটের প্রতি আসক্ত কমানোর জন্য অবশ্যই নিয়মিত নামাজ পড়ার বিকল্প আর কিছু নেই।

২. গল্পের বই অথবা ক্লাসের বইয়ের প্রতি মনোযোগী হন

অতিরিক্ত ইন্টারনেট আসক্তি থেকে মুক্তির আরো একটি উপায় হল বই পড়ার প্রতি মনোযোগী হওয়া। বই পড়া শুধুমাত্র জ্ঞান বাড়ায় এটির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, নিয়মিত বই পরের প্রতি অভ্যস্ত হওয়ার কারণে অনেক খারাপ অভ্যাস থেকেও বিরত থাকা যায়। আপনার যদি অনলাইনে প্রতি অনেক বেশি আসক্ত থেকে থাকে তাহলে আজকে অনলাইনে মাধ্যমে কোন একটি বই অর্ডার করুন। সেটি হতে পারে গল্পের বই, নিজের ক্লাসে পড়ে, থ্রিলার অথবা রোমান্টিক ভালোবাসার বই, হরর অথবা রহস্যজনক কোন কাল্পনিক বিষয় নিয়ে বইগুলো পড়ার প্রতি অনেক বেশি মনোযোগী হয়ে পড়ুন। এতে যেমন নিজের অজানা জ্ঞান বাড়বে তেমনি অনলাইনে প্রতি অতিরিক্ত নিশা থেকেও মুক্তি পাবেন।

আর যদি আপনার ইতিমধ্যে এমন বিষয়গুলোর মধ্যে বই থেকে থাকে তাহলে সেই বইগুলোতে পড়া শুরু করুন। আর আপনার যদি বই কেনার মত সামর্থ্য না থাকে অথবা আপনার নিজের যদি কোনো বই না থেকে থাকে তাহলে আপনার আশেপাশে এলাকার ক্লাস এইট, নাইন, টেন ক্লাসের ছাত্রদের কাছে আনন্দপাঠ নাম একটি গল্পের বই পাবেন। তাদের থেকে সেই গল্পের বই ধার নিয়ে এসে দুই একদিন পরে আবার ফেরত দিয়ে দিবেন। তাদের এই আনন্দপাঠ বই স্কুল থেকেই পাঠ্যবই হিসেবেই প্রদান করা হয়। তাই এ আনন্দপাঠ গল্পের বইটি যেকোনো ছাত্রের কাছেই পাবেন ইনশাআল্লাহ। এছাড়াও আপনি যদি অনলাইন থেকে বই কিনতে চান তাহলে অনলাইনে জনপ্রিয় একটি বই কেনার মার্কেট হলোঃ

  1. রকমারি

জনপ্রিয় এই বই কেনার মার্কেটে আপনি প্রায় সকল ধরনের বই পেয়ে যাবেন। এছাড়া আপনি জনপ্রিয় অনলাইন বই কেনার মার্কেটে রবীন্দ্রনাথের বিখ্যাত অনেকগুলো বই বিনামূল্যে পিডিএফ আকারে পড়তে পারবেন। এছাড়াও আপনি চাইলে সেই বইগুলো খুব অল্প দামেই কিনে ফেলতে পারবেন। রকমের একটি বিশ্বস্ত বই বিক্রির প্ল্যাটফর্ম। আপনি যদি কোন বই কিনতে আগ্রহী হন তাহলে আজকেই রকমারি নামক সেই বিখ্যাত অনলাইন লাইব্রেরি থেকে ঘুরে আসতে পারেন।

৩. ছোট ছোট কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন

অতিরিক্ত ইন্টারনেটের প্রতি আসক্ত কমানোর আরো একটি কার্যকরী পদ্ধতি হলো ছোট ছোট কাজে সব সময় নিজেকে ব্যস্ত রাখা। আপনি একটি বিষয়ে ভালো করে খেয়াল করলে বুঝতে পারবেন আপনার হাতে যখন কাজ থাকে না অর্থাৎ আপনি যখন বসে থাকেন তখনই কিন্তু আপনি আপনার ফোনটি হাতে নিয়ে চাপতে থাকেন। তাহলে এখানে আমরা একটা কথা সহজেই বুঝতে পারি যে আপনার কোন কাজ না থাকায় আপনি অতিরিক্ত ইন্টারনেটের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছেন। এমন অতিরিক্ত আসক্ততা কমানোর জন্য ছোট ছোট কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখা অত্যন্ত কার্যকরী একটি উপায়।

আপনি যদি কোন স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন তাহলে নিয়মিত পড়াশোনায় মনোযোগী হন। মানুষ তো আর সারাদিন অর্থাৎ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বই নিয়ে পড়তে পারবে না। তাই বই ছাড়া যখন আপনি ফিরে বসে থাকবেন তখন ফোন হাতে নিবেন না। তখন ভাবতে থাকুন আপনার কোন কাজটি এখনো করা হয়নি। একটু পরে করব অথবা কোন কাজ অনেকদিন থেকে যদি আপনার অবহেলায় পড়ে থাকে তাহলে সেই কাজগুলো সম্পন্ন করন। এতে আপনার কাজগুলো সম্পন্ন হবে এবং সেই কাজের জন্য আপনার ফোন চাপাও কমা হবে। এভাবে ছোট ছোট কাজের মধ্যে নিজেকে ব্যস্ত রাখলে খুব সহজে আপনি আপনার অতিরিক্ত ইন্টারনেট আসক্ততা কমাতে পারবেন।

৪. খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী হোন

আমরা সবাই জানি খেলাধুলা শরীর-স্বাস্থ্য ও মন তিনটের জন্যই বেশ উপকারী একটি উপাদান। প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীর যতটা সুস্থ থাকে তার থেকেও বেশি প্রতিদিন নিয়মিত খেলাধুলা করলে শরীর বেশি সুস্থ থাকে। আপনি নিজে নিজে একটু ভেবে দেখুন অতিরিক্ত মোবাইলের কারণে আর অতিরিক্ত বসে থাকা কারণে আপনার মাঝে অবশ্যই কিছুটা হলেও অলসতা বিরাজ করছে। এই অলসতা থেকে নিজেকে বের করার জন্য অবশ্যই নিয়মিত খেলাধুলা করা প্রয়োজন। ইন্টারনেট আসক্ততা কমানোর জন্য খেলতে পারেন এমন কয়েকটি খেলা হলোঃ

  1. ফুটবল
  2. ক্রিকেট
  3. ব্যাডমিন্টন
  4. ভলিবল
  5. বন্ধুদের সাথে নিয়মিত নদীতে সাঁতার কাটা ইত্যাদি।

উপরের খেলাগুলো নিয়মিত খেলতে পারলে নিঃসন্দেহে আপনার শরীর স্বাস্থ্য ও মন তিনটাই ভালো হয়ে যাবে। নিয়মিত এই খেলা গুলো খেলার ফলে আপনার ইন্টারনেটের প্রতি আসক্ততাও কমে যাবে। কারণ আপনি যখন এই খেলা গুলো খেলতে থাকবেন তখন আপনার হাতের কোনটি ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন না। যার ফলে আস্তে আস্তে আপনার মোবাইলের প্রতি অতিরিক্ত আসক্ততা কমে আসবে। তাই আমি মনে করি ইন্টারনেট অথবা মোবাইলের প্রতি অতিরিক্ত আসক্ততা কমানোর জন্য নিয়মিত খেলাধুলা করার বিকল্প হিসেবে আর কিছু নাই।

৫. নিয়মিত বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যান

নিয়মিত বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যান, এই অভ্যাস আপনাকে অতিরিক্ত মোবাইল চাপা থেকে বিরত রাখতে পারবে। কারণ আপনি যখন বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যান তখন সবগুলো বন্ধু মিলে একসাথে আড্ডা দেন, মজা করেন, হাসি তামাশা করে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন। আপনি যদি অনেক বেশি মোবাইলের প্রতি আসক্তও হয়ে থাকেন তাহলে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার সময়টুকু আপনার ফোনটি আপনার হাতে নিতে ইচ্ছা করবে না। কারণ কেই বা চাইবে বন্ধুদের সাথে কাটানো এমন হাসি মজার সময় গুলো হেলায় হেলায় মিস করতে।

হ্যাঁ ঠিক তাই। আপনি যখন আপনার প্রিয় বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিবেন তখন চেষ্টা করুন নিজের মন থেকে কোন কথা বন্ধুদের সাথে শেয়ার করার। আপনার প্রিয় মানুষের কথা অথবা সাম্প্রতিক ঘটে গেছে এমন মজার অথবা দুঃখের কথাগুলো আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। এতে আপনার সাথে আপনার বন্ধুদের একটি ভাল কমিউনিকেট তৈরি হবে। যার ফলে একটা সময় বন্ধুদের সাথে আড্ডা না দিলে আপনার ভালো লাগবে না। তবে খেয়াল রাখবেন অবশ্যই ভালো বন্ধুদের সাথে ঘোরাফেরা করবেন। নয়তো হিতে বিপরীত নেশায় আসক্ত হতে পারেন। তাই অতিরিক্ত মোবাইলের প্রতি আসক্ত কমাতে নিয়মিত বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

৬. অপ্রয়োজনীয় নোটিফিকেশন আসা বন্ধ করুন

অতিরিক্ত ইন্টারনেটের প্রতি আসক্ত বাড়ানোর নষ্টের গোড়া হতে পারে মোবাইলে আসা অপ্রয়োজনীয় নোটিফিকেশন। আপনি একটু ভাবতে থাকুন আসলে কোন সময়টি আপনার ফোনটি হাতে নেন? আমি মনে করি আপনি বলবেন ফেসবুক থেকে নোটিফিকেশন, মেসেঞ্জার নোটিফিকেশন, ইনস্টাগ্রাম থেকে নোটিফিকেশন, টুইটার থেকে নোটিফিকেশন আসার পরে আপনি আপনার ফোনটি হাতে নিয়ে চেক করেন নোটিফিকেশনটি আসলে কোথা থেকে এসেছে। তাহলে এখানে আমরা সহজেই ধরে নিতে পারি আপনার ফোনটি হাতে নেওয়া অথবা ইন্টারনেট চালানোর মূল কারণ হলো ফোনে আসা নোটিফিকেশন।

তাহলে শুরুতেই আমি আপনাদের বলবো ফোনে আসা অপ্রয়োজনীয় নোটিফিকেশন বন্ধ করুন। এতে আপনার ফোনে অপ্রয়োজনীয় নোটিফিকেশন আসবে না। যার ফলে আপনি আর ইন্টারনেটের প্রবেশ করার প্রয়োজন মনে করবেন না। এবার অনেকেই হয়ত বলবেন কীভাবে ফোনের অতিরিক্ত নোটিফিকেশন আসে বন্ধ করতে পারি? হ্যাঁ আজকের পোস্টটি আরও এগিয়ে নেওয়ার আগে আমরা এখানেই জেনে নেই কীভাবে ফোনে আসা যেকোনো অ্যাপের অতিরিক্ত নোটিফিকেশন বন্ধ করবেন?

১. যেকোনো অ্যাপের আসা অতিরিক্ত নোটিফিকেশন বন্ধ করতে চাইলে, এই কাজটি করার জন্য আপনারা যে অ্যাপটি নোটিফিকেশন বন্ধ করতে চাচ্ছেন সেই অ্যাপটিতে লং প্রেস করে ধরে রাখুন। তারপর App Info অপশনে ক্লিক করুন।

২. এবার আপনারা একটু নীচ থেকে নোটিফিকেশন অপশনে ক্লিক করুন।

৩. তারপর শো নোটিফিকেশন অপশনে ক্লিক করে অপশনটি অফ করে দিন।

ব্যাস আপনাদের কাজ শেষ। এবার অসময়ে আপনাদের ডাটা অন থাকলেও আপনাদের ফোনে সেই নির্দিষ্ট অ্যাপ থেকে আর কোন নোটিফিকেশন আসবে না। আমার দেখানো এই সেটিংটি আপনি যে যে অ্যাপ গুলো তো করে রাখবেন শেষে অ্যাপ গুলো থেকে নোটিফিকেশন আসা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই আপনার ফোনে আসা অপ্রয়োজনীয় নোটিফিকেশন বন্ধ করার জন্য সেই সমস্ত সকল অ্যাপগুলোতো এই সেটিংটি করে রাখুন। তাহলে আপনাদের ফোনেও সেই সমস্ত অ্যাপগুলো থেকে অপ্রয়োজনীয় নোটিফিকেশন আশা বন্ধ হয়ে যাবে। এভাবে আপনারা খুব সহজেই ফোনের অপ্রয়োজনীয় নোটিফিকেশন আসা বন্ধ করে অতিরিক্ত মোবাইল ফোনের আসক্ততা কমাতে পারবেন।

বাচ্চাদের মোবাইলে আসক্তি কমানোর উপায়

ইন্টারনেটে আসক্ত শুধুমাত্র বড়রাই হয় না। ছোটরাও ইন্টারনেটের প্রতি ভয়ানক ভাবে আসক্ত হতে পারে। আপনার ঘরে যদি কোনো ছোট বাচ্চা থেকে থাকে তাহলে তার প্রতি বিশেষভাবে নজর রাখুন। খেয়াল রাখুন সে যেন মোবাইল অথবা ইন্টারনেটের মতো জঘন্য জিনিসের প্রতি অনেক বেশি আসক্ত না হয়ে পড়ে। আপনার বাচ্চা যদি অনেক বেশি সময় ফোন নিয়ে খেলা করে তাহলে আপনি আজ থেকে সতর্ক হয়ে যান। অবশ্যই চেষ্টা করুন আপনার বাচ্চার মাঝে ফোন নিয়ে খেলা করার অভ্যাসটি দূর করুন। নয়তো ভবিষ্যতে এমন খেলা আপনার বাচ্চার জন্য বিরাট এক ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

এ সময় অনেক বেশি মোবাইলের প্রতি আসক্ত হওয়া থেকে আপনি যদি তাদেরকে বাধা না দেন অথবা নিষেধ না করেন তাহলে আপনার বাচ্চা দিন দিন অনেকটাই এবনরমাল হয়ে পড়বে। আপনি আপনার বাচ্চা সহজেই হাসিখুশি মুখটি দেখতে পারবেন না। আপনার বাচ্চার স্মৃতিশক্তি বিকাশ হতে বাধাগ্রস্ত হবে। সহজে কোনো জিনিস বুঝতে চাইবে না। অতিরিক্ত জেদি টাইপের হবে। সহজে কারো কথায় কর্ণপাত করবে না। ভালো-মন্দ বিবেকবুদ্ধি তার মধ্যে জাগ্রত হতে বাধাগ্রস্ত হবে। সহজে কাউকে সম্মান দিতে চাইবে না। তাই একজন আদর্শ বাবা মা হিসেবে অবশ্যই আপনার সন্তানকে মোবাইলের প্রতি অথবা ইন্টারনেটের প্রতি অতিরিক্ত আসক্ত হওয়া থেকে রক্ষা করতে হবে।

আর ইতিমধ্যে যদি আপনার বাচ্চা অনেক বেশি মোবাইলের প্রতি অথবা ইন্টারনেটের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে তাহলে অবশ্যই আপনার বাচ্চাকে ইন্টারনেটের প্রতি যে আসক্ত, তা থেকে বের করতে হবে। নয়তো আপনার বাচ্চার জন্য ফিউচার অনেক খারাপ হতে পারে। আপনার যদি টিউনের শুরু থেকে মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই বুঝতে পারবেন, অতিরিক্ত ইন্টারনেটে আসক্ত হওয়ার ফলে মাইগ্রেশন, স্বাস্থ্যঝুঁকি, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার মত বড় বড় রোগ গুলো আপনার বাচ্চার মধ্যেও হতে পারে। তাই আপনার বাচ্চার সুস্বাস্থ্যের জন্য অবশ্যই তাকে ইন্টারনেট আসক্ত থেকে বের করতে হবে। আপনি আপনার বাচ্চার অতিরিক্ত ইন্টারনেট আসক্তি থেকে বের করতে যা যা করতে পারেন তা হলঃ

  1. নিয়মিত বাচ্চাদেরকে নিয়ে ঘুরতে বের হন।
  2. বাচ্চাদের খেলার প্রতি আসক্তি করে তুলুন। খেলার প্রতি আগ্রহী করে তোলার জন্য নিত্যনতুন খেলা কিনে দিতে পারেন।
  3. বাচ্চাদের মাঝে মাঝে সুস্বাদু খাবার অফার করুন। তাকে বলুন সে যদি এই কাজটা না করে তাহলে আপনি তাকে ওই খাবার জিনিসটি কিনে দিবেন।
  4. বাচ্চাদেরকে নিয়ে মাঝে মাঝেই পার্কে অথবা সুন্দর কোনো রিসোর্টে ঘুরতে যান।
  5. প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে বাচ্চাদের ঘুমের অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে আপনার বাচ্চা সুস্বাস্থ্য বজায় থাকবে।
  6. ছোটদের বই কিংবা ড্রয়িং পেপার কিনে দিন। এতে আপনার বাচ্চা মোবাইলে আসক্ত না হয়ে ড্রয়িং অথবা ছোট বই পড়তে আগ্রহী হয়ে উঠবে। যার ফলে দিন দিন তার মেধা শক্তি বৃদ্ধি পাবে।
  7. যতটা সম্ভব হয় আপনি নিজেও আপনার বাচ্চা সামনে ফোন তুলনামূলক কম ব্যবহার করবেন। এতে আপনার বাচ্চা আপনার ফোনের প্রতি ততটা বেশি আগ্রহ থাকবে না।
  8. আপনার বাচ্চা মাঝে মাঝেই আপনার ফোনটি হাতে নিলে আপনি তার দিকে কড়া নজরে তাকিয়ে দেখুন। ফোন হাতে নেওয়ার কারণে তার সাথে ধমক দিয়ে কথা বলুন। পরে থাকে সুন্দর করে বুঝিয়ে বলুন যাতে সে বুঝতে পারে ফোন ব্যবহার করা একটি খারাপ অভ্যাস।

শেষ কথা

আজকের টিউনে আলোচনা করা অতিরিক্ত ইন্টারনেটে আসক্তি কমানোর উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা প্রতিটি বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। অতিরিক্ত মোবাইল আসক্তি কমানোর জন্য এই গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো অবশ্যই আপনাকে মানতে হবে। আপনি যদি এই গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলো মানতে না পারেন তাহলে আপনি আপনার অতিরিক্ত মোবাইলের প্রতি আসক্ততা কমাতে পারবেন না। যা বর্তমান থেকে শুরু করে ভবিষ্যৎ পর্যন্ত আপনার শরীর-স্বাস্থ্য এমনকি মনের ওপর অনেক খারাপ ইফেক্ট ফালাতে পারে।

আমরা যদি আমাদের শরীর, স্বাস্থ্য, মন এমনকি স্মৃতিশক্তি ভালো রাখতে চাই সেই সাথে আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ চোখকে ভালো রাখতে চাই তাহলে অবশ্যই আমাদের অতিরিক্ত ইন্টারনেটের প্রতি এবং মোবাইল ব্যবহারে আসক্ততা কমাতে হবে। নয়তো ফিউচারে আমাদের শরীরে নানা রকম রোগব্যাধি বাসা বাঁধবেন। অনেক বড় বড় জটিল জটিল রোগের দেখা দিতে পারে। যা আমাদের ফিউচারের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক একটি কারণ হতে পারে। তাই আমাদের সকলের উচিত উপরের প্রতিটি বিষয় খুব নিয়ম সহকারে মেনে চলা এবং অতিরিক্ত ইন্টারনেট অথবা মোবাইলের প্রতি আসক্ততা দূর করা।

তো বন্ধুরা, এই ছিল আমাদের আজকের টিউন, অতিরিক্ত ইন্টারনেট ও মোবাইল ব্যবহারের আসক্তি কমানোর উপায়! আশাকরি টিউন টি আপনাদের একটু হলেও হেল্পফুল হবে। আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি, দেখা হবে পরবর্তী টিউনে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। ততক্ষণ অবধি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং টেকটিউনস এর সাথেই থাকবেন।

Level 6

আমি স্বপন মিয়া। Sonic টিউনার, টেকটিউনস, গাইবান্ধা, রংপুর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 104 টি টিউন ও 28 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

টেকনোলজি বিষয়ে জানতে শিখতে ও যেটুকু পারি তা অন্যর মাঝে তুলে ধরতে অনেক ভালো লাগে। এই ভালো লাগা থেকেই আমি নিয়মিত রাইটিং করি। আশা করি নতুন অনেক কিছুই জানতে ও শিখতে পারবেন।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস