আপনারা যারা অনলাইন ভিডিও গেমিং করে থাকেন, তারা প্রায় সকলেই ইন্টারনেটে পিং (Ping) রেট বিষয়টি সাথে পরিচিত। যেখানে আমরা সকলেই অনলাইন গেমিং করার সময় সর্বনিম্ন পিং (Ping) রেট পছন্দ করে থাকি।
আপনি যদি একজন গেমার হয়ে থাকেন এবং গেমিং এ আগ্রহী হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি নিশ্চয়ই হাই পিং (Ping) এর কারণে অনেক সময় আপনার আইএসপি এর উপর বিরক্ত হয়েছেন। এক্ষেত্রে, আপনি সবসময় সর্বনিম্ন পিং (Ping) চান, এমনকি আপনাকে 0ms Ping দিলে সবচেয়ে ভালো হয়। কিন্তু, আসলেই কি জিরো পিং (Ping) সম্ভব?
ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় কিংবা অনলাইন গেমিং এর ক্ষেত্রে কখনো জিরো পিং (Ping) পাওয়া সম্ভব কিনা, এই বিষয়টি নিয়েই আজকের এই টিউন আলোচনা করা হবে। তাহলে চলুন এবার পিং (Ping) সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
পিং (Ping) রেট দ্বারা আপনার কম্পিউটার বা ডিভাইস থেকে ইন্টারনেটের নির্দিষ্ট কোন সার্ভারে ডেটা প্যাকেটের রাউন্ড-ট্রিপ সময়কে বোঝায়। আপনাকে যদি এই বিষয়টি সহজ ভাবে ব্যাখ্যা করা যায়, তাহলে আপনি যখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে কোন একটি সার্ভার থেকে তথ্য পাওয়ার জন্য রিকোয়েস্ট করেন, তখন আপনার এই রিকোয়েস্ট টি সেই কম্পিউটারে যাওয়া এবং সেই সার্ভার থেকে পুনরায় আপনার ডিভাইসে আসার ক্ষেত্রে যে সময়টি খরচ হয়, এটিকে লেটেন্সি বলে। আর, সেই সার্ভার থেকে আপনার ডিভাইসে তথ্যটি আসার এই সময়কে পিং (Ping) রেট বলা হয়।
উদাহরণস্বরূপ, মনে করুন আপনি ইউটিউবে কোন একটি ভিডিও দেখার জন্য ক্লিক করলেন। এখন, আপনার এই রিকোয়েস্টটি ছোট ছোট একক ডেটার প্যাকেজ হিসেবে সেই সার্ভার যাবে, যা ইন্টারনেটে “প্যাকেট” হিসেবে পরিচিত। এখন, আপনার রিকোয়েস্টের ভিত্তিতে যে ছোট ছোট ডেটার প্যাকেট ইউটিউবের সার্ভারে যাবে, এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার কম্পিউটার থেকে ইউটিউবের সার্ভারে যেতে বেশ কিছুটা সময় লাগবে এবং সেখান থেকে রেসপন্স পাওয়ার পর আপনার কম্পিউটারে ও ডেটার প্যাকেট হিসেবে তথ্যগুলো ফেরত আসতে থাকবে। আপনার ডিভাইস থেকে ইউটিউবের সার্ভারে ডেটার প্যাকেট গুলো যাওয়া এবং সেই সার্ভার থেকে আপনার ডিভাইসে ডেটার প্যাকের আসার যে মধ্যবর্তী সময় লাগবে, সেটিকে পিং (Ping) রেট বলা হয়।
এক্ষেত্রে, আপনার রিকোয়েস্টের ভিত্তিতে ইউটিউবার সার্ভারে সেটি পৌঁছাতে যদি বেশি সময় লাগে এবং তাদের সার্ভার থেকে ও যদি রিকোয়েস্ট এর ভিত্তিতে ডেটা প্যাকেট আসতে দেরি হয়, তাহলে পিং (Ping) রেট বেড়ে যায়। মনে করুন যে, আপনি কোন একটি ভিডিওতে ক্লিক করলেন, এখন আপনার রিকোয়েস্টের ডেটা প্যাকেটগুলো ইউটিউবের সার্ভারে যাওয়া এবং সেখান থেকে সেই রিকোয়েস্টের ভিত্তিতে ডেটা গুলো ফেরত আসতে 70 মিলি সেকেন্ড সময় নিল। তার মানে হলো যে, ইউটিউব সার্ভারের সাথে আপনার ডিভাইসের পিং (Ping) রেট হল 70ms।
একইভাবে, আপনি যদি অনলাইন ভিডিও গেম যেমন পাবজি বা ফ্রি ফায়ার খেলেন, তাহলে আপনার ডিভাইসের সাথে সে সমস্ত গেমের সার্ভারের কানেক্ট হওয়া এবং সেখান থেকে রেসপন্স আসা পর্যন্ত সময়কে পিং (Ping) রেট বলা হয়। এক্ষেত্রে আপনি এই সমস্ত গেমে যে 70ms বা 60ms পিং (Ping) দেখতে পান, এটি হলো গেমটির সার্ভারের সাথে আপনার ডিভাইসটি কানেক্ট হওয়ার মধ্যবর্তী সময়। অর্থাৎ, আপনার ডিভাইসটি সে সমস্ত সার্ভারের সাথে এত মিলিসেকেন্ড সময়ে ডেটা প্যাকেট আদান প্রদান করতে পারছে। এখানে পিং (Ping) রেট হল দুইটি ডিভাইসের মাঝে লেটেন্সি পরিমাপ করার একটি মাধ্যম।
আপনি হয়তোবা সবসময়ই লক্ষ্য করে থাকবেন যে, আপনি যখন কোন একটি ওয়েব পেজের লিংকে ক্লিক করেন, তখন সেটি সঙ্গে সঙ্গে লোড হয় না। এক্ষেত্রে আপনি যতই দ্রুত গতির ইন্টারনেট ব্যবহার করুন না কেন, আপনি যখন কোন লিংকে ক্লিক করেন, সেটি কিছুটা সময় নিয়ে লোড হয়। ওয়েব পেজ লোড হওয়ার এই সামান্য বিলম্বকে "লেটেন্সি" বলা হয়।
আপনি যখন ইন্টারনেটের কোন একটি তথ্য পাওয়ার জন্য কোন লিংকে ক্লিক করেন, তখন সেই রিকোয়েস্টই সার্ভারে যেতে হয় এবং সেই সার্ভার কম্পিউটার থেকে আপনার ডিভাইসে কথাগুলো ডাটা প্যাকেট হিসেবে আসতে হবে। এখন, আপনার রিকোয়েস্টের ভিত্তিতে সেই সার্ভার থেকে ডেটার প্যাকেট গুলো আসতে নিশ্চয়ই কিছুটা সময়ের প্রয়োজন। কারণ, সেই সার্ভারটি আপনার ডিভাইস থেকে অনেক অনেক দূরে থাকতে পারে।
ডেটা প্যাকেট গুলো আপনার কম্পিউটারে আসতে যদি বেশি সময় নেয়, তার মানে হল যে, লেটেন্সি অনেক বেশি হচ্ছে। আর লেটেন্সি বেশি মানেই পিং (Ping) রেট ও বেশি। কারণ, লেটেন্সি কে পিং (Ping) দ্বারা পরিমাপ করা হয়। এখন ওয়েব ব্রাউজিং এর সময় যদি পিং (Ping) অনেক বেশি হয়, তাহলে আপনি ইন্টারনেট ব্রাউজিং এ ধীরগতি লক্ষ্য করবেন। যদিও পিং (Ping) কিছুটা বেশি হওয়ার কারণে একটানা ভিডিও স্ট্রিমিং এবং ডাউনলোডের ক্ষেত্রে তেমন সমস্যা ফেস করবেন না।
কিন্তু, যখন ইন্টারনেটের ইনস্ট্যান্ট কাজগুলো করতে যাবেন, যেমন ভিডিও কলিং, ভিডিও গেম, মাল্টি টাস্কিং ইত্যাদি কাজগুলোর সময় ধীরগতি লক্ষ্য করবেন। যাইহোক, এই বিষয়টি নিয়ে নিজে আরো বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
অনলাইন ভিডিও গেম গুলোতে পিং (Ping) রেট অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি গেম খেলার সময় 20ms পিং (Ping) দেখতে পান, তার মানে হলো যে, আপনি যে গেম খেলছেন সেটির সার্ভারের সাথে আপনার মোবাইলটি খুবই কম সময়ে যোগাযোগ করতে পারছে। এক্ষেত্রে আপনি ভিডিও গেমটিতে যে মুভমেন্টগুলো করছেন, সেটি তাৎক্ষণিকভাবে সংঘটিত হচ্ছে বলে মনে হয়।
আর অন্যদিকে, গেম খেলার সময় যদি 200ms এর মতো উচ্চতর পিং (Ping) রেট দেখতে পান, তাহলে গেমে আপনি যা করছেন সেটি অনেক দেরিতে হবে বলে মনে হবে। এক্ষেত্রে আপনি গেমের অন্যান্য লোকদের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারবেন না।
আর এ কারণেই অনলাইন মাল্টিপ্লেয়ার গেম গুলো গেম খেলার সময় স্ক্রিনে সর্বদা এটি প্রদর্শন করে যে, এই মুহূর্তে আপনার পিং (Ping) কত রয়েছে। অর্থাৎ, সার্ভারের সাথে কত মিলিসেকেন্ড সময়ে ডিভাইসটি ডেটা আদান-প্রদান করতে পারছে। কখনো কখনো গেমস এবং সফটওয়্যার গুলো পিং (Ping) কে লেটেন্সি হিসেবে বলে থাকে। তবে, পিং (Ping) এবং লেটেন্সি প্রায় একই জিনিস। যেখানে লেটেন্সি পরিমাপ করার জন্য পিং (Ping) দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়।
পিং (Ping) আসলে কী এবং এটি কীভাবে কাজ করে, এই বিষয়টি সহজ ভাবে বুঝার জন্য আপনাকে ইন্টারনেটের বেসিক বিষয়গুলো জানতে হবে।
পিং (Ping) যেভাবে কাজ করে, তার একটি সরল ব্যাখ্যা হল:
এই যে এখানে একটি ডেটা প্যাকেট আপনার কম্পিউটার থেকে সেই কম্পিউটারে পাঠানো হলো এবং তার ভিত্তিতে আবার একটি ডেটা প্যাকেট আপনার কম্পিউটারে আসলো, এটি হলো একটি প্যাকেটের রাউন্ড-ট্রিপ, যে সময়কে পিং (Ping) রেট বলে।
উদাহরণস্বরূপ, আপনি আমার নিচের স্ক্রিনশট লক্ষ্য করুন। এখানে আমি আমার কম্পিউটার থেকে Google.com ওয়েবসাইট বা সার্ভারের পিং (Ping) বের করার চেষ্টা করেছি। Windows Command Prompt ব্যবহার করে আমি যখন আমার কম্পিউটার থেকে গুগলের সার্ভারের সাথে কানেক্ট হওয়ার চেষ্টা করলাম, তখন আমার কম্পিউটারটি থেকে গুগলের সার্ভার ডাটা প্যাকেট গিয়ে ফেরত আসতে সময় লাগছিল গড়ে 72ms এর মতো। তার মানে হলো যে, গুগল ব্যবহারের সময় আমার কম্পিউটারটি তাদের সার্ভারের সাথে 72ms সময়ে ডাটা প্রদান করতে পারছে।
এখন, আমি যদি Google এ কোন একটি তথ্য পাওয়ার জন্য রিকোয়েস্ট করি, তাহলে সেটি ডাটা প্যাকেট হিসেবে গুগলে সার্ভারে যাচ্ছে এবং 72ms সময়ে রেসপন্স নিয়ে আবার ফিরে আসছে। যাইহোক, এখন হয়তোবা আপনাদের কাছে এটি পরিষ্কার যে, পিং (Ping) আসলে কী এবং এটি কীভাবে কাজ করে।
যদিও ইন্টারনেটে সর্বনিম্ন পিং (Ping) অর্জন করার জন্য প্রতিনিয়তই সার্ভার এবং ইন্টারনেটের হার্ডওয়্যার গুলোকে আপগ্রেড করা হয়, কিন্তু কখনোই জিরো বা শূন্য পিং (Ping) বা সম্ভব নয়। আর এমনটি হওয়ার কারণ হলো, পদার্থবিজ্ঞানের ধর্মের কারণে ডেটা প্যাকেট গুলো নির্দিষ্ট পথে ভ্রমণ করার জন্য কিছুটা সময় নেয়। এমনকি আপনার সেই তার টি যদি সম্পূর্ণভাবে ফাইবার অপটিক হয়, তবুও এটি আলো গতির চেয়ে দ্রুত ভ্রমণ করতে পারে না।
যদিও ফাইবার অপটিক ক্যাবলের মধ্য দিয়ে আলোর গতিতে ডেটা ট্রান্সফার হয়, কিন্তু আলো ও 299792458 m/s এর চাইতে বেশি গতিতে ট্রাভেল করতে পারে না। এখন, ইন্টারনেটে যখন আপনার কম্পিউটার থেকে অন্য কোন একটি কম্পিউটার থেকে ডাটা পাওয়ার জন্য রিকোয়েস্ট করা হবে, তখন আপনার রিকোয়েস্ট এবং সেই সার্ভার থেকে আসা তথ্য আপনার কম্পিউটারে বা রাউটার পর্যন্ত পৌঁছাতে আলোর গতিতে আসলেও, এক্ষেত্রে কয়েক মিলি সেকেন্ড সময়ের প্রয়োজন হবে।
ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় আপনার কম্পিউটার থেকে যদি সার্ভার কম্পিউটারের দূরত্ব বেশি হয়, তাহলে ডেটাকে অনেক দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে হবে এবং এক্ষেত্রে পিং (Ping) বেশি হবে।
আর যদি আপনার কম্পিউটার থেকে সার্ভার কম্পিউটারের দূরত্ব অল্প হয়, তাহলে এক্ষেত্রে অবশ্যই সার্ভার কম্পিউটারে ডেটা গুলো যাওয়া এবং সেখান থেকে ডেটা প্যাকেট ফেরত আসতে কয়েক মিলি সেকেন্ড হলেও সময় লাগবে। আর যেকারণে বলা যায় যে, ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় কখনই জিরো পিং (Ping) পাওয়া সম্ভব নয়। তবে, ইন্টারনেটে আমরা সর্বনিম্ন পিং (Ping) পাওয়ার জন্য কাজ করতে পারি।
আপনি যদি আপনার লোকাল কম্পিউটারে পিং (Ping) দেখার চেষ্টা করে, তাহলে "ping localhost" কমান্ড ব্যবহার করে আপনি আপনার কম্পিউটারে রিপ্লে দেখার চেষ্টা করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই "<1ms" পিং (Ping) দেখতে পাবেন। যা মূলত শূন্য বা জিরো পিং (Ping) নির্দেশ করছে।
তার মানে হল যে, আপনার কম্পিউটার তাৎক্ষণিকভাবে নিজের সাথে যোগাযোগ করতে পারে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, আপনার কম্পিউটারটি সত্যিই 0ms সময়ে লোকাল হোস্টের সাথে রাউন্ড করতে পারছে। কারণ হলো, আপনার সফটওয়্যারটি এই কার্যকলাপ সম্পাদন করার জন্য অল্প পরিমাণ সময় হলেও নিয়ে থাকে। যাইহোক, এটি এত অল্প পরিমাণ সময় যে, আমরা যেদিকে 0ms বলতে পারি। আর এর উপর ভিত্তি করেই আমরা এটি বলতে পারি যে, আপনার কম্পিউটারে লোকাল হোস্টে জিরো বা শূন্য পিং (Ping) পাওয়া সম্ভব।
প্রায় সময়ই উচ্চ পিং (Ping) আমাদের গেমিং এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করার অভিজ্ঞতাকে নষ্ট করে দেয়। আর তাই আমরা সব সময় সর্বনিম্ন পিং (Ping) পাওয়ার চেষ্টা করি। এই সমস্যা থেকেই আমাদের মাথায় এমন প্রশ্ন আসে যে, আসলে কখনো কী কখনো জিরো বা শূন্য পাওয়া সম্ভব কিনা।
যাইহোক, ইন্টারনেট কাজ করার জন্য যেহেতু আপনার ডিভাইস থেকে ফাইবার ক্যাবলের মাধ্যমে সার্ভারে ডেটা প্যাকেট প্রেরণ করতে হয় এবং সেটি রিসিভ করতে হয়, তাই এই প্রক্রিয়া চলার জন্য কিছুটা সময় প্রয়োজন। আর তাই ইন্টারনেটে কখনো 0ms Ping পাওয়া সম্ভব নয়, যা পদার্থবিজ্ঞানের বিপরীত। যদিও আপনি ইন্টারনেটে জিরো পিং (Ping) অর্জন করতে পারবেন না, কিন্তু আপনি ইন্টারনেট স্পিড বাড়ানোর জন্য কিছু টিপস ফলো করতে পারেন। ধন্যবাদ, আসসালামু আলাইকুম
আমি মো আতিকুর ইসলাম। কন্টেন্ট রাইটার, টেল টেক আইটি, গাইবান্ধা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 421 টি টিউন ও 93 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 62 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 3 টিউনারকে ফলো করি।
“আল্লাহর ভয়ে তুমি যা কিছু ছেড়ে দিবে, আল্লাহ্ তোমাকে তার চেয়ে উত্তম কিছু অবশ্যই দান করবেন।” —হযরত মোহাম্মদ (সঃ)