প্রিয় টেকটিউনস পাঠক, আমি রবিন মিয়া। আপনাদের সাথে শেয়ার করা এটাই আমার প্রথম টিউন। ইনশাআল্লাহ, সামনে আরও ভালো ভালো টিউন শেয়ার করার চেষ্টা করবো।
আমাদের অনেকেরই স্বপ্ন থাকে ব্লগিং করে অনলাইন থেকে টাকা আয় করার। কিন্তু সঠিক দিকনির্দেশনার অভাবে অনেকেরই তা হয়ে উঠে না।
আবার অনেকের ব্লগিং-এর শুরুটা ভালোভাবে হলেও মাঝ পথে গিয়ে থমকে যায়।
আপনিও যেন তাদের দলের কেউ না হোন তার জন্যে ব্লগিং-এর একেবারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কীভাবে কী করবেন তার ধাপগুলো জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
বেশিরভাগ মানুষ যা করে তা হলো, অনলাইন থেকে টিউটোরিয়াল দেখে একটি ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করে এবং তাতে কিছু টিউন প্রকাশ করেই গুগল এডসেন্সের জন্য একের পর এক আবেদন করতে থাকে।
এডসেন্স কর্তৃপক্ষও তা রিজেক্ট করে দেয়। আর ফলাফল হয় শূন্য।
প্রতিটি কাজ সফলতার সাথে সম্পন্ন করতে উক্ত কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা প্রয়োজন। যে কাজের ধারাবাহিকতা ঠিক থাকে না সে কাজে সফলতা পাওয়া অনেক কষ্টের হয়ে যায়।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, ব্লগিং করে টাকা আয় করতে কীসের পর কী করতে হবে। আপনি যদি প্রতিটি স্টেপ সঠিকভাবে মেনে কাজ করতে পারেন তাহলে ব্লগিং-এ দ্রুত সফল হতে পারবেন।
ব্লগিং কিভাবে শুরু করা যায়? ব্লগ ওয়েবসাইট থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য যেসকল বিষয় স্টেপ বাই স্টেপ করতে হবে তা নিচে তুলে ধরা হলো:
আপনি যখন কোনো ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিবেন তখন সবার প্রথমে আপনার ব্লগিং এর জন্য সঠিক নিশ বা বিষয় নির্বাচন করতে হবে।
আর বেশিরভাগ মানুষ এখানেই ভুলটা করে। তারা যেসব নিশ বা বিষয়ে ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করলে বেশি টাকা আয় করা যায় বা বেশি ভিজিটর পাওয়া যায় সেগুলোই বাছাই করে।
এটা মোটেও ঠিক নয়। আপনাকে আপনার ব্লগ ওয়েবসাইটের জন্য ঐ নিশ বা বিষয়টাই বাছাই করতে হবে যেটা সম্পর্কে আপনার যথেষ্ট জ্ঞান ও আগ্রহ আছে।
অন্যথায় আপনি ব্লগিং এর মাঝ পথেই হোচট খাবেন। যে বিষয়ে আপনার কোনো জ্ঞান বা আগ্রহ থাকবে না সে বিষয় নিয়ে কখনও ব্লগিং করতে যাবেন না।
ব্লগিং এর নিশ বা বিষয় নির্বাচন করার পর ভালো একটি ডোমেইন নাম নির্বাচন করার পালা।
আপনার ব্লগ ওয়েবসাইটের জন্য ছোট, মনে রাখা সহজ, সহজ বানান এবং নিশ রিলেটেড একটি সুন্দর নাম নির্বাচন করুন।
এমন একটি নাম যেটা দিয়ে আপনি পরবর্তীতে একটা ব্রান্ড দাড় করতে পারবেন। আর যদি আপনি যা-তা নাম নেন আর পরবর্তীতে যদি এমন হয় যে, আপনার ওয়েবসাইটটি খুব বেশি জনপ্রিয় হয়ে গেলো তাহলে তখন কিন্তু আপনি চাইলেও আপনার সাইটের নাম পরিবর্তন করতে পারবেন না।
তাই প্রয়োজন হলে কয়েক দিন সময় ব্যয় করুন শুধুমাত্র আপনার ব্লগ ওয়েবসাইটের নাম নির্বাচন করার জন্য। আর চেষ্টা করবেন ব্লগের নামের সাথে নিজের নাম না জরানোর জন্য।
ওয়েবাসাইটের জন্য কীভাবে একটি সঠিক ডোমেইন নাম খোঁজে বের করবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন এই আর্টিকেল থেকে।
ব্লগার না কি ওয়ার্ডপ্রেস? আপনার ব্লগ ওয়েবসাইটটি ব্লগার না কি ওয়ার্ডপ্রেস CMS দিয়ে তৈরি করবেন? ব্লগার এবং ওয়ার্ডপ্রেস দুইটারই বিশেষ বিশেষ সুবিধা রয়েছে।
অনেকের ধারণা ওয়ার্ডপ্রেসে দিয়ে ব্লগ সাইট তৈরি করলে তার টিউন গুগলে সহজেই র্যাংক করে। এটা আসলে ভুল ধারণা।
কারণ শুধু মাত্র আপনার ওয়েবসাইটটি ব্লগার না কি ওয়ার্ডপ্রেস CMS দিয়ে তৈরি সেটার উপর নির্ভর করে কখনও টিউন র্যাংক কম-বেশি হয় না।
তবে আপনি ওয়ার্ডপ্রেস সাইটে বাড়তি কিছু ফিচার এবং প্রয়োজন মতো প্লাগিন ব্যবহার করে আপনার ব্লগ টিউন সহজেই সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক করাতে পারবেন।
কিন্তু আপনি যদি ব্লগার CMS দিয়ে সাইট তৈরি করেন তাহলে সেসব সুবিধা পাবেন না। মূলত যারা ব্লগিং নিয়ে সিরিয়াস তাদের উচিত ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে সাইট তৈরি করা।
আর যারা একেবারে নতুন তাদের জন্য বেস্ট হচ্ছে ব্লগার। কারণ ব্লগার ওয়েবসাইট কাস্টমাইজ করা অনেকটাই সহজ। আর হোস্টিং খরচও বেচে যাবে।
এরপর আপনি আপনার সাইটের জন্য একটি থিম/টেম্পলেট নির্বাচন করবেন। তবে সেটা যেন অবশ্যই এসইও ফ্রেন্ডলি, মোবাইল ফ্রেন্ডলি, সুন্দর এবং আপনার নীশ রিলেটেড হয়।
আপনি চাইলে প্রেমিয়াম কিংবা ভালো কোনো ফ্রি থিম/টেম্পলেটও ব্যবহার করতে পারেন। তবে ফ্রি থিম কখনও প্রেমিয়াম থিমের বিকল্প হতে পারে না।
আপনার ব্লগ ওয়েবসাইট পুরোপুরি ভাবে কাস্টমাইজ করুন। কোনো কিছু বাদ রাখবেন না। আর অপ্রয়োজনীয় কোনো কিছু সাইটে রাখবেন না।
ওয়েবাসাইট কাস্টমাইজ করার সময় কিছু টিউন প্রকাশ করে দেখবেন সব কিছু ঠিকঠাক দেখাচ্ছে কিনা।
সবকিছু প্রফেশনাল মানের করার চেষ্টা করবেন। নিজে না পারলে অভিজ্ঞ কাউকে দিয়ে সাইট কাস্টমাইজেশন করিয়ে নিতে পারেন।
আপনার ওয়েবসাইট তো প্রস্তুত। কিন্তু আপনার লেখা ব্লগ পড়বে কে? আর এর জন্য আপনাকে ব্যাকলিংক তৈরি, গুগল ও অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে সাবমিট সহ অন পেইজ এসইও এবং অফপেইজ এসইও করতে হবে।
আপনার ব্লগ ওয়েবসাইটে কোনো এড নেটওয়ার্কের বিজ্ঞাপণের জন্য আবেদন করার পূর্বে পর্যাপ্ত পরিমাণ মানসম্মত আর্টিকেল প্রকাশ করুন।
আর সাইটের ভিজিটর বেশি পেতে নিয়মিত আর্টিকেল প্রকাশ করুন। এখন প্রশ্ন আসতে পারে কতগুলো আর্টিকেল প্রকাশ করার পর গুগলে আবেদন করা যাবে?
এর উত্তর হচ্ছে এমন কোনো নিয়ম করা নেই যে, সর্বনিম্ন এতগুলো টিউন করার আগ পর্যন্ত আপনি আবেদন করতে পারবেন না।
তবে চেষ্টা করুন কমপক্ষে ২০-২৫ টি মানসম্মত এবং আকারে বড় আর্টিকেল প্রকাশ করার পর আবেদন করার।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে তারপর আপনি আপনার ওয়েবসাইটের জন্য আয়ের রাস্তা খুজবেন। ব্লগ সাইটে বিজ্ঞাপণ দেখিয়ে অর্থ উপার্জনের জন্য বেশ কিছু জনপ্রিয় এড নেটওয়ার্ক রয়েছে।
তবে প্রায় সব ব্লগারদের স্বপ্ন থাকে গুগল এডসেন্স এর অনুমোদন নেওয়া। কারণ অন্যান্য এড নেটওয়ার্কের চেয়ে গুগল এডসেন্স সব দিক দিয়ে এগিয়ে।
নতুন অবস্থায় নতুন কোনো ব্লগ ওয়েবসাইটে গুগল এডসেন্সের এপ্রুভ পাওয়া অনেকটাই জটিল।
তবে যদি আপনি নতুন ব্লগ ওয়েবসাইটে গুগল এডসেন্স পাওয়ার সহজ উপায়গুলো সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান রাখুন। তাহলে তা অনেক সহজ হয়ে যায়। তাই আপনি এই আর্টিকেলটি পড়ে আসতে পারেন।
ব্লগ ওয়েবসাইট থেকে ডলার আয় করার জন্য আপনিও একই পথে হাটতে পারেন। কেউ কেউ আবার ব্লগ ওয়েবসাইট ব্যবহার করে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ডলার উপার্জন করে থাকে।
ব্লগ সাইটে বিজ্ঞাপণ দেখানো এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা ছাড়াও আরও বিভিন্ন উপায় আছে টাকা আয় করার জন্য।
আজ এপর্যন্তই। শীগ্রই নতুন কোনো টিউন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হবো। সে পর্যন্ত ভালো থাকবেন টেকটিউনসের সাথেই থাকবেন।
আর ব্লগিং বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন আপনি টিউমেন্ট করে জানাতে পারেন। আমি উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
আমি রবিন মিয়া। স্বত্বাধিকারী, প্রযুক্তি প্রিয় ডট কম বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 1 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
আমি একজন প্রবাসী। আমার বাসা টাংগাইলের কালিহাতীতে। আমার প্রযুক্তি প্রিয় ডট কম ব্লগ ওয়েবসাইটে নিয়মিত আর্টিকেল প্রকাশ করার পাশাপাশি অন্যান্য ব্লগ সাইটেও আর্টিকেল লিখি।