বাপরে বাপ ঘুরে এলাম ইন্টারনেটের অন্ধকার দুনিয়ার ডীপ ওয়েব, ডার্ক ওয়েব সাইটগুলো থেকে।
ইন্টারনেটের লুকায়িত অধ্যায় দি ডীপ ওয়েব, ডার্ক ওয়েব রেভেলডঃ ইন্টারনেট জগতের অন্ধকার অংশ! কীভাবে যাবেন? গিয়ে কী কী করবেন? কোথায় কী কী খাবেন.
কথা না কইয়া চুপিচুপি এইদিকে- এইহানে আসেন শিখা’য়া দিত্যাছি.
(বি.দ্র. আপনার পিসি, কিংবা নিজের সুরক্ষাজনিত কারণে অনুরোধ করছি, পুরো লেখাডা আগে পড়ুন, হ্যারবাদে নাহয় অ্যাকে অ্যাকে স্টেপগুলো ফলো করে আইসিটি’র ক্যারানীগিরী ফলাইতে যাইয়েন। আবারও কইত্যাছি এইড্যা কিন্তুক ফেসবুকে কী বোর্ডের 100 টি ব্যবহার জাতীয় টিপস না। সিরিয়াস কিছু করতে গিয়্যা আফনের কুনু বিফদাফদের জন্য কইলাম আমি দায়ী না)
বাইসাব, ইন্টারনেটতো আফনেরা সবাই ইউজ্যায়্যা থাহেন। কিন্তু আফনে কি জানেন, ইন্টারনেটে এমন একটা অধ্যায়, এমন আরোও একটা দুনিয়া আছে যেমন একটা আন্ডারগ্রাউন্ড সাইটে ঢুকে যেখানে ট্যাকার বিনিমিয়ে কিলার ভয়াবহ প্রফেশনাল কিলার ভাড়া পাওন যায়! যা হয়তো আপনি এহনোও ব্যবহার করেননি কিংবা জানেনই না- আজই প্রথম জানলেন!
কীহ! বিশ্বাস খাচ্ছেননা! আমারও তখন বিশ্বাস হয়নাইক্যা। এমনই এক সাইটে ঢুকে দেখি কিলার তার নিজের সর্ম্পকে বর্ণনা দিচ্ছে এভাবে-
“ আমাকে তুমি স্ল্যাট নামে ডাকতে পার। আমি তোমার শত্রুকে প্রফেশনাল ওয়েতে শেষ করে দিতে পারব। আমি তার সাথে তোমার সমস্যা জানতে আগ্রহী নই। তুমি শুধু আমাকে টাকা দিবে আর আমি তাকে শেষ করে দিব। টার্গেটের বয়স কমপক্ষে ১৮ হতে হবে, টার্গেট পুরুষ না মহিলা তাতে আমার কিছু আশাকরি না, টার্গেট যদি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব অথবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য হয় তাহলে বাড়তি চার্জ লাগবে, আর বাড়তি চার্জের বিনিময়ে আমি পুরো ঘটনাকে আত্মহত্যা বা দুর্ঘটনার মত করে সাজাতে পারব। ডাউনপেমেন্টের চার সপ্তাহের মধ্যে কাজ হয়ে যাবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের টার্গেটের জন্য বাড়তি ৫০০০ ডলার ট্রাভেল চার্জ লাগবে কাজ হয়ে গেল আমি তোমাকে টার্গেটের ছবি তুলে পাঠাব”
তথ্য প্রযুক্তির উৎকর্ষের লগে লগে প্রসার ঘটেছে ইন্টারনেটের, আর তা আজ মহাসমুদ্রের ন্যায় বিশাল এক ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে, এর সাথে তাল মিল্যা’য়া সক্ষমতা বেড়েছে সার্চ ইঞ্জিনগুল্যার। বিশেষ করে গুগল -এর নাম বলাই লাগবে, যা এখন বিশ্বব্যাপী অন্যতম একটি বিশ্বস্ত ব্র্যাণ্ডে পরিণত হয়েছে। আমরা গুগল ছাড়া এক মুহূর্তও চিন্তা করতে পারি না। কিন্তু এই গুগলের সামর্থ্য কতটুকু, তা কি আফনে জানেন? আপনি জাইন্যা টাসকী খাবেন যে, আফনে ইন্টারনেটে যখন কোন বিষয়ে সার্চ দেন আর গুগল তার লক্ষ লক্ষ ফলাফল আমনের সামনে আলাদীনের চ্যারগের লাহান হাজির করে তা ইন্টারনেটে থাকা গোটা তথ্যের মাত্র ৫ – ১০ শতাংশ থেকে পাওয়া। বাকি ৯০ – ৯৫ শতাংশ তথ্যই লুকায়িত আছে ডার্ক ওয়েব বা ব্ল্যাক ওয়েব বা ডিপ ওয়েব নামক অদৃশ্য এক ওয়েবে। যা গুগল জানেইনা। মাত্র ৫ থেকে ১০ শতাংশের মইধ্যে থেকেই সার্চ দিয়ে সে তার ফলাফলকে গ্রাহকের সামনে হাজির করে। বাকি ৯০ শতাংশই চিরকালই আপনার অজানাই থেকে যায়!
ডীপ ওয়েব হল ইন্টারনেটের ওই সমস্ত অংশ যেগুলো যা আমনের সচরাচর ব্যবহার করা সার্চ ইঞ্জিনগুলো খুঁজেই পায়না। কিন্তুক আপনি যদি এগুল্যার ঠিকানা ভালোয় ভালোয় জানেন তাইলেই কেবল আপনি এই অংশে যেতে পারবেন। অনেক ব্যবহারকারী ইতোমধ্যেই ইন্টারনেটের এই অন্ধকারাচ্ছন্নতার সাথে পরিচিত। অ্যাক জরীপ থেকে জানা গ্যাছে দৃশ্যমান ওয়েবে যে পরিমাণ ডেটা সংরক্ষিত আছে তার চেয়ে ৫০০ গুণ বেশী ডেটা সংরক্ষিত আছে অদৃশ্য এই ওয়েবে। প্রকৃতপক্ষে এই অদৃশ্য ওয়েব হল মহাসাগর পরিমাণ আর আমাদের ব্যবহার করা সচরাচর দৃশ্যমান ইন্টারনেটের ডেটা হল অসীম মহাসাগরের বুকে ভেসে থাকা এক টুকরো বরফের ল্যাহান।
আইজক্যার লেহাডা মনদিয়্যা পড়তে থাকুন, ইট্টু পরেই পরিচয় করায়্যা দিতাছি ইন্টারনেটের সেই পালা’য়া থাকা অবৈধ অধ্যায় ডীপ ওয়েব বা ডার্ক ওয়েব এর সাথে। ধৈর্য ধরেন, শিখায়াও দিমু ক্যামতে সেইখানে যাওন যায় আর সেইখানে গিয়া কী কী পাওন যায়!
গোটা ইন্টারনেটকে মোট দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
নাম্বার ওয়ান- সার্ফেস ওয়েব (Surface Web),
নাম্বার ট্যু- ডীপ ওয়েব (Deep Web), এবং ডীপ ওয়েবের একটা অংশ
নাম্বার থ্রী- ডার্ক ওয়েব (Dark Web)।
তো চলে আগ বাডি প্রথমে কথা বলে নেই সার্ফেস ওয়েব সম্পর্কে।
সার্ফেস ওয়েব (Surface Web)
আমনেরা যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকেন তারা নিশ্চয়ই সার্ফেস ওয়েব সম্পর্কে জানেন। যদি না জেনে থাকেনতো আরোও একবার ঝালাই করে নিচ্ছি। সার্ফেস ওয়েব হলো ঐ ওয়েব, যেটি দুনিয়া জুড়ে প্রত্যেকটি সাধারণ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা ব্যবহার করে থাকে। যেটি ব্যবহার করে আফনে এই লেখাডা পড়ছেন, যেটি ব্যবহার করে আমি এই লেখাডা লিখেছি এবং ভবিষ্যতেও আমি আফনে ব্যবহার করেত থাকবো সেইড্যাই হলো সার্ফেস ওয়েব।
মানে, আফনেযে আমার এই লেখাডা পড়ছেন এটিও সার্ফেস ওয়েব এর একটি অংশ। তো সার্ফেস ওয়েব এমন ইন্টারনেট যেটি দুনিয়া জুড়া যেকোনো ইউজার যেকোনো সময় কোন প্রকার স্পেশাল অনুমতি ছাড়া অ্যাক্সেস নিতে পারে এবং সার্ফেস ওয়েবের প্রায় সকল তথ্য আমনে গুগল সার্চ করে পেয়ে যেতে পারেন মানে যেসকল তথ্য গুগল সার্চ থেকে পাওয়া যায় বা আফনে যেকোনো লিঙ্কে ক্লিক করলে যে ওয়েব সাইটগুলো খুলতে পারেন তারা প্রত্যেকেই এই সার্ফেস ওয়েবের এক একটি অংশ। এমনিভাবে আপনার নিত্যদিনের নিউজ আপডেট সাইটগুল্যা, প্রযুক্তি বিষয়ক সাইটগুল্যা, গান ডাউনলোড সাইটগুল্যা ইত্যাদি সবগুল্যাই সার্ফেস ওয়েবের অংশ। কিন্তু আপনি কি জানেন যে, এই সার্ফেস ওয়েব গোটা ইন্টারনেটের দুনিয়ার মাত্র ৫% জুড়ে রয়েছে! আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই বাইসাব এতো কেবল জানার শুরুমাত্র.
ডীপ ওয়েব কী (Deep Web)
যে সকল সাইটগুল্যা আমার মতো আম পাবলিক মানে জনসাধারনের জন্য উন্মুক্ত না, যেগুলোর ক্রিয়েটর বা প্রতিষ্ঠাতারা চান না যে তাদের সাইটগুল্যা কেউ সার্চ করে খুঁজে পাক সেগুলোকেই ডীপ ওয়েব বলে। এটা সাধারণ ভাষায়, আরেকটু ভিত্রে গ্যালে বোঝা যায়- যে সকল সাইট বা অনলাইন কনটেন্টকে লুকিয়ে রাখা হয় সার্চ ইঞ্জিন বা আপনার আমার মত সাধারণ মানুষ থেকে সেগুলোকেই ডীপ ওয়েব বলে।
একটা গবেষণার মাধ্যমে জানা গেছে যে, সম্পূর্ণ ইন্টারনেটের প্রায় ৯৫% অংশ হলো এই ডীপ ওয়েব। তো এখন এই ডীপ ওয়েবে কী কী সংরক্ষিত রয়েছে সে বিষয়ে প্রথমে জেনে নিই। অনলাইনে আপনার যত স্টোরেজ রয়েছে যেখানে আফনের সকল ডাটা স্টোর করা রয়েছে। যেমন কথা বলি গুগল ড্রাইভ নিয়ে বা ড্রপ বক্স নিয়ে। আবার বড় বড় ইউনিভার্সিটিতে যতোগুলো গবেষণা তথ্য বা গোপন তথ্য স্টোর করা রয়েছে বা ব্যাংক -এর যতগুলো তথ্য বা ডাটাবেজ রয়েছে অথবা সরকারের যে গোপন প্রজেক্টগুলো সংরক্ষিত রয়েছে এই সবই হলো ডীপ ওয়েবের অংশ। অর্থাৎ খাঁডি বাংলা ভাষায় বলতে গেলে যে তথ্যগুল্যা আফনে গুগল সার্চ করে কখনোও খুঁজে পাবেন না সেটিই হলো ডীপ ওয়েবের তথ্য।
ডীপ ওয়েব থেকে আপনি যদি কোন তথ্য অ্যাক্সেস করতে চান তবে আপনার প্রয়োজন পড়তে পারে একটি বিশেষ ওয়েব ব্রাউজার ও অ্যাড্রেস। একটি বিশেষ সাইট একটি বিশেষ সার্ভারের জন্য একটি বিশেষ ওয়েব অ্যাড্রেস এবং ওয়েব অ্যাড্রেসের সাথে আপনার প্রয়োজন একটি বিশেষ অনুমতি, যেন আপনি ঐ ওয়েবসাইটটির অমুক তথ্য অ্যাক্সেস করার উপযোগী। অনুমতি গ্রহণ করার জন্য আপনাকে হয়তো কোন লগইন আইডি বা পাসওয়ার্ড প্রবেশ করাতে হতে পারে অথবা সেটি যেকোনো ধরনের অথেন্টিকেশন হতে পারে। কিন্তু আপনি বিশেষ ওয়েব অ্যাড্রেস ছাড়া কখনই ডীপ ওয়েবে প্রবেশ করতে পারবেন না। কেননা ডীপ ওয়েবের কোন তথ্যই গুগল বা যেকোনো সার্চ ইঞ্জিনে ইনডেক্স করা থাকেনা- করতে পারেনা। তো আপনি যতই সার্চ করতে থাকুননা কেন, আমার গুগল ড্রাইভে কী সেভ করা আছে তা আপনি কখনই দেখতে বা অ্যাক্সেস করতে পারবেন না, পারবেন কি?
আপনি তখনই সেই ফাইলগুলো অ্যাক্সেস করতে পারবেন যখন আমি আপনাকে ঐ ফাইল গুলোর বিশেষ লিঙ্ক আপনার সাথে শেয়ার করবো। আশা করছি ডীপ ওয়েব সম্পর্কে খুব ভালোভাবে না হলেও মোটামুটি আপনি কিছুটা বুঝে গেছেন এবং নিশ্চয়ই ডীপ ওয়েবের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কেও বুঝতে চেষ্টা করছেন। কেননা, অনেক সময় আমাদের ইন্টারনেটে ফাইলতো রাখতে হয়, কিন্তু আমরা চাই সেটা শুধু নির্দিষ্ট কিছু লোকের জন্যই প্রাপ্য হোক। উদাহরণ স্বরূপ যদি কোন কোম্পানির কোন ডাটাবেজ হয় তবে সেই কোম্পানিটি অবশ্যই চাইবে যে সেই ডাটা গুলো শুধুমাত্র তার নির্বাচিত ইউজাররা অ্যাক্সেস করুক। তাছাড়া গোপন তথ্য ইন্টারনেটের সবার জন্য প্রাপ্য রাখাটাও অনেক ঝুঁকির ব্যাপার।
সহজ ভাবে বলতে গেলে ডিপ ওয়েব হল ইন্টারনেটের একটা অংশ যা কিনা সার্চ ইঞ্জিনে সূচীবদ্ধ করা হয়নি। এর কারণ হল সার্চ ইঞ্জিনগুলো তাদের সার্চ তদারকি করে এক ধরনের ভার্চ্যূয়াল রোবট তথা ক্রলার দিয়ে। এই ক্রলারগুলো ওয়েবসাইটের এইচটিএমএল ট্যাগ দেখে ওয়েবসাইটগুলোকে লিপিবদ্ধ করে। তাছাড়া কিছু কিছু সাইট থেকে সার্চ ইঞ্জিনে লিপিবদ্ধ হওয়ার জন্য রিকোয়েস্ট যায়। যে সমস্ত সাইট এডমিন চান না যে তাদের সাইটটি সার্চ ইঞ্জিন খুঁজে পাক, তারা রোবট এক্সিকিউসন প্রটোকল ব্যবহার করেন যা ক্রলারগুলোকে সাইটগুলো খুঁজে পাওয়া বা লিপিবদ্ধ করা থেকে বিরত রাখে। কিছু সাইট আছে ডাইনামিক অর্থাৎ নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ সাপেক্ষে এই ধরনের সাইটের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া সম্ভব, আর ক্রলার এর পক্ষে এইসব করা সম্ভব হয় না। কিছু সাইট আছে যেগুলোতে অন্য সাইট থেকে লিংক নেই। এগুলো বিচ্ছিন্ন সাইট, এগুলোও সার্চে আসে না। তাছাড়া বলতে গেলে সার্চ ইঞ্জিন টেকনোলজি এখনো তার আঁতুড় ঘর ছাড়তে পারেনি। সার্চ ইঞ্জিনগুলো টেক্সট বাদে অন্য ফরম্যাটে থাকা (যেমনঃ ফ্ল্যাশ ফরম্যাট) ওয়েবপেজ খুঁজে পায় না। ম্যাকফি অ্যাণ্টিভাইরাস কোম্পানী -এর নিরাপত্তা গবেষকে বিশ্লেষক কেজায়া মিউনজ ডার্ক ওয়েব সম্বন্ধে বলেছেন “ডিপ ওয়েব বা ডার্ক ওয়েব অনেক তথ্য নিয়ে তৈরী যা প্রযুক্তিগত কারণে সার্চ ইঞ্জিনে দ্বারা আপডেট করা যায় না”।
ডীপ ওয়েব ১৯৯৪ সালে শুরু হয় এবং তখন এটি হিডেন ওয়েব হিসাবে পরিচিত ছিল। ২০০১ সালে এর নাম ডীপ ওয়েব বা ডার্ক ওয়েব রাখা হয়। নানা সময়ে বিশ্ব ইন্টারনেটের নানা গ্রুপ এমন একটি ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছে যেখানে তারা খুব গোপনে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারবে। সামরিক বাহিনী, বিপ্লবী, হ্যাকার, এমনকী খোদ প্রশাসনই এমন এক ব্যবস্থা চেয়েছে যেখানে গোয়েন্দারা খুব গোপনে নিজেদের ভেতর তথ্য আদান প্রদান করতে পারবে অথবা চুরি যাওয়া তথ্য ফিরে পেতে দর কষাকষি করতে পারবে অপরাধীদের সাথে। তাছাড়া বিশ্বের অনেক দেশ আছে যেখানকার অনলাইন সেন্সরশীপ খুবই কড়া, ফলস্বররূপ ভিন্নমতাবলম্বীদের এমন এক ব্যবস্থার কথা চিন্তা করতে হয়েছে যেখানে সরকার তদারকি করতে পারবেনা। আর এভাবেই উৎপত্তি হয়েছে এই অজানা অংশের। সাথে সাথে এটা প্রলুব্ধ করেছে ওই সমস্ত অপরাধীদের যারা ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে মূল নেটে আলোচনা করতে সাহস পায় না।
কীভাবে কাজ সম্পাদন করেঃ
টর (TOR) বা টিওআর (দি অনিয়ন রাউটার- The Onion Router) হল ডার্ক বা ডিপ ওয়েবে যাওয়ার প্রধান ওয়েব ব্রাউজার বা পোর্টাল যেইটাই বলেননা কেন। এটি ব্যবহারকারীর তথ্যকে ইনক্রিপ্ট করে এবং একটি স্বেচ্ছাসেবক সার্ভারের মাধ্যমে সারা বিশ্বের নেটওয়ার্কে পাঠায়। এই পদ্ধতিতে এটি প্রায় অসম্ভব ব্যবহারকারীদের অথবা তাদের তথ্য ট্র্যাক করা।
টর যে কোন পিসিতে ব্যবহার করা যায়। ম্যাকিণ্টোস এমনকি আইফোন এবং অ্যান্ড্রয়েড চালিত স্মার্টফোনের যেকোন মোবাইল ডিভাইস দিয়েও টর ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু এখানে দৃশ্যমান ওয়েব এর মত কোন কিছু খুঁজে পাওয়া যায় না, কারণ এখানে গুগলের মত কোন সার্চ ইঞ্জিন নেই যেটি মুহুর্তের মধ্যে সব কিছু আপনাকে খুঁজে দেবে। এর পরিবর্তে এটি উইকি এবং বিবিএস এর মত ইণ্টিগ্রেটেড লিঙ্ক রয়েছে যা ডীপ ওয়েব এর লোকেশন দেখাবে। এই সাইটগুলির এড্রেসগুলো সাধারণত উদ্ভট প্রকৃতির হয়ে থাকে, যেমনঃ- sdjsdhsjhsuyumnsdxkxcoioiydsu67686hsjdhjd.onion। ইন্টারনেটে প্রচলিত ওয়েব ব্রাউজার দিয়ে এই সমস্ত সাইটে ঢোকা যায় না। কারণ, এরা ইন্টারনেটের সমস্ত প্রথার বাইরে অবস্থান করে, এরা কোন নিয়মকানুনের ধার ধারেনা- গ্রাহ্য করে না। আর এদের ঠিকানাও থাকে এতটাই উদ্ভট অদ্ভূত প্রকৃতির যে, সাধারণ মানুষের পক্ষে এগুলো মনে রাখা ভীষণ কঠিন। বিশেষ কিছু জ্ঞান (যেমন প্রোগ্রামিং, নেটওয়ার্কিং, প্রক্সি) না থাকলে এই নেটওর্য়াকে প্রবেশ করা যায় না। এই অংশের আরেকটি বিশেষত্ব হল এরা ওর্য়াল্ড ওয়াইড ওয়েবের সাইটগুলোর মত (TLD) টপ লেভেল ডোমেইন (যেমন ডট কম) ব্যবহার না করে “শেইডো টপ লেভেল ডোমেইন” ব্যবহার করে যা কিনা মূল ওর্য়াল্ড ওয়াইড ওয়েবে না থেকে দ্বিতীয় আরেকটি নেটওর্য়াকের অধীনে থাকে। এ ধরনের ডোমেইনের ভেতর আছে বিটনেট, অনিয়ন, ফ্রিনেট প্রভৃতি। ডার্ক ওয়েব -এর ডোমেইনগুলো ডট কম এর পরিবর্তে ডট অনিয়ন হয়। ডার্ক ওয়েব -এর লিঙ্কগুলো উদ্ভট হওয়ায় এখানে উল্লেখযোগ্য সময় কাটালে কোন লিঙ্ক থেকে কোন লিঙ্কের পেজ আসবে, তা আর মনে রাখা সম্ভব হবে না।
ডিপ ওয়েবে কী কী পাওয়া যায় বা কী হয় এখানেঃ
কী হয় তা খুঁজতে গিয়েতো আমার মাথা নষ্ট হবার যোগাড় হইলো ভায়া। কী হয় তা জানতে না চেয়ে বরং বলুন কী হয় না এখানে! যা কিছুকে রক্ষা করা হয় কপিরাইট দিয়া সবই এখানে পাওয়া যায়। পাওয়া যায় ড্রাগস, আর্মস, এমনকী ভয়াবহ পেশাদার খুনী পর্যন্তও। আপনি ভুল শোনেন নাই, আমি ঠিকই বলছি, একটা বিজ্ঞাপণে দেখেছি একজন মুখোস পড়া ব্যক্তি, হাতে ভয়ানক একটা ছোরা নিয়ে ছবি দিয়ে রেখেছে, ক্যাপশনে লিখেছে- “I Can Kill Anyone For Money”। আরেক বিজ্ঞাপণে দেখলাম ইরাক যুদ্ধে ব্যাবহৃত শর্টগান! বিক্রি করতে চাচ্ছে, তাও ওদের ভাষায় Cheap Rate -এ! নানা রকম হ্যাকিং টিউটোরিয়াল, বিভিন্ন পাইরেটেড টুলস কী নাই এখানে! এবার একটু থামি, আরোও একবার ইট্টু বুঝা’য়া বলি ডীপ ওয়েব বিষয়ডা কী। অনলাইনে যা কিছু আছে তারপরিমাণ কল্পনা করা আমার আপনার ধারণার বাইরে, এর মধ্যে কিছু লিখে সার্চ করলে যতগুলো ফলাফল তথ্য আসবে তা ঘেটে দেখতে গেলেই আমার আফনেরযে কয়বছর টাইম লাগবে তা আমরা নিজেও জানি না। বাট, মজার বিষয় হলো মোট তথ্য বা ফাইলের শতকরা ১% নাকি আমরা দেখতাছি। বাকি ৯৯% ভাগই লুকানো অবস্থায় থাকে। এগুলোই ডার্কওয়েবের এলিমেণ্টস আরকী।
ইন্টারনেটের এই দুনিয়াডা সবচেয়ে আলাদা। ধোঁয়াশায় আচ্ছন্ন, অন্ধকারাচ্ছন্ন। যা কখনো কেউ কল্পনা করেনি তাই পাওয়া যাবে এখানে। উইকিলিকস ঘোষণা করল- এ বছর তারা আরো নতুন কিছু ডেটা প্রকাশ করবে, কিন্তু এখানে ঢুকে হয়তো দেখা যাবে উইকিলিকস -এর এই সমস্ত কথিত নতুন ডেটা এই ডার্ক ওয়েবে আছে বেশ ক’বছর আগে থেকেই। যেকোন বইয়ের একদম লেটেস্ট এডিশন যা কিনা সারফেস ওয়েবে কপিরাইট ল’এর কারণে নেই তা এখানে দেদারসে আদান প্রদান হচ্ছে। আরো আছে বিকৃত রুচির বিনোদন। শিশু পর্ণোগ্রাফি থেকে শুরু করে নানা ধরনের ভিডিও যা কিনা সারফেস ওয়েবে নেই, তা এখানকার হট টপিকস। এমন কিছু সাইট আছে যেখানে মারিজুয়ানা, হেরোইন থেকে শুরু করে সব ধরনের মাদক হোম ডেলিভারী দে’য়া হয়। ডার্ক ওয়েব -এর মূল ব্যবহারকারী মূলত মাদকাসক্তরাই। আবার কিছু সাইট আছে যেখানে কট্টরপন্থী গ্রুপগুলো শিক্ষা দিচ্ছে কীভাবে গোলা বারুদ বানাতে হয়, কিছু সাইটেতো রেডিমেড অস্ত্রই বিক্রি হয়। একে ৪৭ থেকে শুরু করে রকেট লাঞ্চার, মর্টারের মত অস্ত্রও কিনতে পাওয়া যায়। আরব-বসন্তের সময় বিপ্লবকারীরা এই ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমেই যোগাযোগ করত। ডার্ক ওয়েবে নানা ধরনের মেইল সার্ভিস, চ্যাট সার্ভিস আছে যেখানে পরিচয় গোপন রেখে আফনে অনেক কিছুই করতে পারবেন। কীভাবে অবৈধ সঙ্গীত ডাউনলোড, যেখানে বিনামূল্যে সর্বশেষ সিনেমা দেখা, বা কীভাবে অল্প অর্থের বিনিময়ে অতিরিক্ত মাদক অর্ডার দেয়া যায়। এছাড়াও অস্ত্র পাচার, ভাড়াটে হত্যাকারী, পতিতা, সন্ত্রাসবাদ ইত্যাদি সব এই ডার্ক ওয়েবকে সব চেয়ে বড় ব্ল্যাক মার্কেটে পরিণত করেছে। এসব অনিয়ন নেটওর্য়াকে থাকা ব্ল্যাক মার্কেটগুলোর ভেতর সবচেয়ে জনপ্রিয় হল সিল্ক রোড। ফোর্বসের হিসেবে এখানে গত বছর ২২ মিলিয়ন ডলারের বেচা-কেনা হয়েছিল। মাইক্রোসফট, অ্যাপেলের প্রোডাক্ট এখানে ৮০% পর্যন্ত ডিস্কাউন্টে পাওয়া যায়। জনপ্রিয় মাদক দ্রব্য ও বিভিন্ন ক্ষতিকারক রাসায়নিক দ্রব্য তারা মূলতঃ একটি ইউজারবেজ এ বিক্রয় করে। সালফিউরিক অ্যাসিড, তরল পারদ, চোরাই ক্রেডিট কার্ড, চেক, নকল বিল, কয়েন, পাথর জাতীয় জুয়েলারি, চুরির স্বর্ণ এধরণের সব কিছুর জন্যই আলাদা আলাদা বিভাগ আছে। ডিপ ওয়েব -এর সর্বাধিক লেনদেন সাধারণত বিটকয়েন -এর মাধ্যমে সঞ্চালিত হয়ে থাকে। ১ বিটকয়েন হল ৯ মার্কিন ডলার মূল্যের সমপরিমাণ অর্থ। বিটকয়েন নামক এই ডিজিটাল মুদ্রা দিয়ে সব কেনা যায়। সারফেস ওয়েবে যেসব হ্যাকিং টেকনিক দেখতে পান তা হল এই ডার্ক ওয়েব থেকে লীক হওয়া ১% তথ্যের অংশ বিশেষ। এখানকার হ্যাকাররা খুবই ভয়ংকর এবং প্রোগামিং -এ তাদের কোন জুড়ি নেই। কিন্তু সব ডিপ ওয়েবসাইট আবার খারাপ না। যেমনঃ উইকিলিকস সাইটটি জনগণের সামনে আসার আগে ডিপ ওয়েবেই ছিল। এমনকী এখনও কেউ যদি কোন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উইকিলিকস -এ প্রকাশ করতে চায়, তাহলে তা ডিপ ওয়েব বা ডার্ক ওয়েব এর মাধ্যমেই করা সম্ভব। মোদ্দাকথা এটি এমনই এক অন্ধকার জগত যেখানে প্রতিটি পদক্ষেপ ফেলার আগে অন্ততঃ দু’বার ভেবে নিতে হবে।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কেন এদরকে খুঁজে পাচ্ছে নাঃ
ডার্ক ওয়েব -এ ব্যবহৃত নেটওর্য়াকের মধ্যে সারফেস ওয়েবে বেশ জনপ্রিয় হয়ে পড়েছে এমন এক নেটওর্য়াক হল অনিয়ন নেটওর্য়াক। অনিয়ন মূলত মার্কিন নেভির জন্য তৈরী করা হলেও এই নেটওর্য়াক আজ বিশ্বব্যাপী ছদ্মবেশী নেট ব্যবহারকারীদের প্রথম পছন্দ। অনিয়নে সাধারণ কোন ব্রাউজার দিয়ে ঢোকা যায় না। এজন্য ব্যবহার করতে হবে টর ব্রাউজার। টর ব্রাউজার ব্যবহারকারীর পরিচয় লুকিয়ে ফেলে আর এর ফলে কারো পক্ষে ব্যবহারকারীর অবস্থান শনাক্ত করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। কেউ যখন টর দিয়ে কোন সাইটে ঢুকতে যাবে তখন টর ব্রাউজার তার এই রিকোয়েস্ট কঠিন এনক্রিপশনের মধ্য দিয়ে অনিয়ন প্রক্সিতে পাঠাবে। অনিয়ন প্রক্সিতে পাঠানো সেই ডেটা আর ডেটা থাকে না, সেটি দুর্বোধ্য এক স্ক্রিপ্টে পরিণত হয়। এবার অনিয়ন প্রক্সি এই ডেটা নিয়ে মূল ইন্টারনেটমূখো হয় যেখানে স্বেচ্ছাশ্রম দে’য়া সদস্যদের অনিয়ন রাউটারগুলো অপেক্ষা করছে। অনিয়ন রাউটারে প্রবেশের আগে অনিয়ন নেটওয়ার্কের প্রবেশপথে এই ডেটা আবার এনক্রিপশনের ভেতর দিয়ে যায়। নেটওর্য়াক থেকে বের হওয়ার সময় আরো একবার এনক্রিপশনের ভেতর দিয়ে যায়। পথিমধ্যে অনিয়নের বেশ কিছু রাউটারের ভেতর দিয়ে এনক্রিপশন হয় যেখানে এক এক রাউটারে এনক্রিপশন আউটপুট এক এক রকম এবং কোন রাউটারই জানে না যে ডেটা কোন রাউটার থেকে আসছে। সবশেষে ডেটা যখন প্রাপকের হাতে গিয়ে পৌঁছায় তা তখন ডিএনক্রিপশন প্রসেসের মাধ্যমে আদি অবস্থানে ফিরে আসে। এই রকম অনেকগুলো লেয়ার বা খোসা থাকার কারণেই এই নেটওর্য়াকের নাম অনিয়ন নেটওর্য়াক। এখন এই ডেটা চালাচালির সময় কেউ যদি এই ডেটা চুরি করতে সক্ষমও হয় তার পক্ষে এটা বের করা সম্ভব হবে না যে এটার প্রেরক কে বা প্রাপকইবা কে। কেননা অনিয়ন রাউটারগুলো নিজেরাই এটা জানে না। তবে হ্যাঁ, কেউ যদি দুই প্রান্তেই নজরদারী করতে পারে তাহলে সে বুঝতে পারবে সেন্ডার আর রিসিভার -এর লোকেশন কোথায়। এই ধরনের দুর্বোধ্য সিস্টেমের কারণেই এই সমস্ত নেটওর্য়াক সব সময়ই আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। গত কিছুদিন আগে সিল্ক রোডের উদ্ভাবক, রস উলব্রিচ্যাট এফবিআই কর্তৃক গ্রেফতার হয়। কিন্তু এফবিআই সিল্ক রোড নষ্ট করে দিলেও ডার্ক ওয়েব এর কিছুই করতে পারেনি। তবে সিল্ক রোড ২.০ খোলার প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই নেওয়া হয়ে গেছে ডার্ক ইউজারদের।
খারাপ ভালো সবটাই জানতে হয় সবসময়। কোথায় থামতে হবে সেটুকু অনুভব করতে পারাটা মানুষ হওয়ার অন্যতম শিক্ষা। নিজেকে বাঁচানোর জন্য হলেও বিপদ সম্পর্কে জানতে হয়। অমঙ্গলকে না চিনলে মঙ্গলের সাক্ষাত পেয়েও তাকে হারাতে হয়। বিজ্ঞান যেভাবে এগুচ্ছে তাতে করে হয়ত এই অন্ধকার জগতের রহস্য একদিন সম্পূর্ণ উন্মোচিত হয়ে যাবে। এখন শুধু সময় পেরোনোর অপেক্ষা।
এখনোও বুঝেননাই?
ভাই রে, আপনার খাটের তলায় ইট দে’য়া না লোহা দে’য়া তাতো আমার জানার কথা না, সেটা তো থাকে ঢাকা, সেইটারে দেখতে হলে আমারে বিছানার পর্দা ওঠাতে হবে। তেমনি ধরেন আমেরিকার একটা সাইট আছে, যেটাতে বিমান বাহিনীর বিভিন্ন মিসাইলের তথ্য, কেমনে ব্যবহার করা হবে, কই ফেলা যাবে, এসব তথ্য রাখা আছে। আমেরিকান সরকার কি চাইবে যে কেউ খুঁজে পাক সেই তথ্য? উঁহু, সেটারে রাখা হবে অন্ধকারে, বা ডার্ক ওয়েবে। বুঝছেন?
খারাপ দিকঃ
ভালো দিকঃ
দরকারী দিকঃ
ডার্ক ওয়েব (Dark Web)
এতক্ষণে নিশ্চয়ই ডীপ ওয়েব সম্পর্কে ভালো একটা ধারণা পেয়ে গেছেন। কিন্তু ডীপ ওয়েবের মধ্যে আরো একটি অধ্যায় আছে যা সবার কাছে লুকায়িত হয়ে থাকে, তার নাম হলো ডার্ক ওয়েব বা ইন্টারনেটের কলঙ্কিত অংশ। ডার্ক ওয়েব সম্পর্কে শুধু এই টিউন থেকে জেনে রাখুন। শুরু করার আগে আপনাকে সতর্ক করে দিতে চাই যে, এই ডার্ক ওয়েব সম্পূর্ণ অবৈধ ইন্টারনেট। অসদুদ্দেশ্যে ডার্ক ওয়েব কখনই ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন না। পরের অংশে ডার্ক ওয়েব ব্যবহারের পদ্ধতিটা যদিও শিখিয়ে দেব ব্যবহার করা না করাডা টোটাল্লী আফনের মর্জি।
চলুন ডার্ক ওয়েব নিয়ে সামনে আগানো যাক। বাইসাব ডার্ক ওয়েবে মনে করুন যা ইচ্ছা তাই করা সম্ভব। ডার্ক ওয়েবে ড্রাগস ডিলিং, আর্মস ডিলিং সহ এমন এমন অসংখ্য অবৈধ কাজ সম্পন্ন করা হয় যার সম্পর্কে আজ এই টিউনে পুরোটা খুলে বলা সম্ভব নয়। তবে আশা রাখি কিছুডা ধারণা অবশ্যই পাবেন। ডার্ক ওয়েব ইন্টারনেটের সেই কালো অধ্যায় যেখানে যেকোনো কিছু যেকোনো সময় করা সম্ভব। ডার্ক ওয়েবও কিন্তু সাধারণ গুগলসার্চ করে কখনো খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়।
আর ডার্ক ওয়েব হল ইন্টারনেটের ওই অংশ যেখানে কনভেনশনাল উপায়ে আপনি ঢুকতে পারবেন না, প্রচলিত ব্রাউজারগুলো বা ব্রাউজারগুলো দিয়ে সেখানে প্রবেশ করতে পারেনা বা পারবেননা। সেখানে প্রবেশ করতে চাইলে আপনাকে বিশেষ সফটওয়্যার বা ব্রাউজার -এর সহায়তা নিতে হবে।
আগেই বলেছি সচরাচর সাধারণ সার্চ ইঞ্জিনগুলো তাদের সার্চ তদারকি করে এক ধরনের ভার্চুয়াল রোবট তথা Crawler দিয়ে। এই Crawler গুলো ওয়েবসাইটের HTML tag দেখে ওয়েবসাইটগুলোকে লিপিবদ্ধ করে। তাছাড়া কিছু কিছু সাইট থেকে সার্চ ইঞ্জিনে লিপিবদ্ধ হওয়ার জন্য রিকোয়েস্ট যায়। যে সমস্ত সাইট এডমিনগণ চাননা যে, তাদের সাইটটি সার্চ ইঞ্জিন খুঁজে পাক, তারা Robot Exclusion Protocol ব্যবহার করেন যা Crawler গুলোকে সাইটগুলো খুঁজে পাওয়া বা লিপিবদ্ধ করা থেকে বিরত রাখে। কিছু সাইট আছে ডাইনামিক অর্থাৎ নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ সাপেক্ষে এই ধরনের সাইটের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া সম্ভব, আর Crawler -এর পক্ষে এই সব করা সম্ভব হয় না। কিছু সাইট আছে যেগুলোতে অন্য সাইট থেকে লিংক সংগ্রহ করে। এগুলো বিচ্ছিন্ন সাইট, এগুলোও সার্চে আসে না। তাছাড়া বলতে গেলে সার্চ ইঞ্জিন টেকনোলজি এখনো তার আঁতুড় ঘর ছাড়তে পারেনি। সার্চ ইঞ্জিনগুলো Text ছাড়া অন্য ফরম্যাটে থাকা(যেমন ফ্ল্যাশ ফরম্যাট) ওয়েবপেইজগুলো খুঁজে পায় না!
আপনার প্রচলিত ওয়েব ব্রাউজার দিয়ে এই সমস্ত সাইটে ঢুকতে পারবেন না। এরা ইন্টারনেটের সমস্ত প্রথার বাইরে অবস্থান করে, অগ্রাহ্য করে সকল নিয়ম কানুনকে। আর এদের ঠিকানাও থাকে এতটাই উদ্ভট প্রকৃতির যেমনঃ sdjsdhsjhsuyumnsdxkxcoioiydsu67686hsjdhjd.onion যে সাধারণ মানুষের পক্ষে এগুলো মনে রাখা খুবই কঠিন। এই অংশটিই ইন্টারনেটের প্রকৃত অদৃশ্য অংশ। বিশেষ কিছু জ্ঞান- দক্ষতা যেমনঃ প্রোগ্রামিং, নেটওয়ার্কি প্রক্সি সেটিং সম্পর্কিত অভিজ্ঞতা না থাকলে আপনি এই নেটওর্য়াকে প্রবেশ করতে পারবেননা কোন কালেই। এই অংশের আরেকটি বিশেষত্ব হল এরা ওর্য়াল্ড ওয়াইড ওয়েবের সাইটগুলোর মত টপ লেভেল ডোমেইন যেমন.com ব্যবহার না করে “Pseudo Top Level Domain” ব্যবহার করে যা কিনা মূল ওর্য়াল্ড ওয়াইড ওয়েবে না থেকে দ্বিতীয় আরেকটি নেটওর্য়াকের অধীনে থাকে। এ ধরনের ডোমেইনের ভেতর আছে Bitnet, Onion, Free Net প্রভৃতি।
যদি আপনি ডার্ক ওয়েব ব্যবহার করতে চান তবে আপনার প্রয়োজন পড়বে ইন্টারনেট বিশেষ একটি ব্রাউজার, যা ইন্টারনেটে টর (TOR) ব্রাউজার নামে পরিচিত, এবং আপনি যদি এই টর ব্রাউজার ব্যবহার করেন তবেই ডার্ক ওয়েবে যেকোনো কিছু অ্যাক্সেস করতে পারবেন। কিন্তু আবার বলে রাখছি এটি ব্যবহার করা সম্পূর্ণ অবৈধ। সকল প্রকারের ব্লাক মার্কেট অবস্থান করে ডার্ক ওয়েবে। টর ব্রাউজার আপনার অ্যাড্রেসকে অনেক অনেক লোকেশনে ব্রাউজ করিয়ে তবেই কাঙ্ক্ষিত ওয়েব অ্যাড্রেসে পৌঁছে দেয়। আপনার গন্তব্যে যে ইউজার থাকে সে-ই শুধু আপনাকে ট্রেস করতে পারে। তাছাড়া এমনি যে কেউ আপনাকে ট্রেস করতে পারবে না। টর প্রথম প্রথম আবিষ্কার হয়েছিলো ইউএস নেভী’র জন্য। কিন্তু এটি বর্তমানে একদম ওপেন একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। গোটা ইন্টারনেট জগতে জালের মতো ছড়িয়ে আছে এই ডার্ক ওয়েব এবং একে নিয়ন্ত্রণ করা অনেক মুশকিলের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকার ডার্ক ওয়েব ধীরে ধীরে বন্ধ করছে। কিন্তু এখনও ডার্ক ওয়েবের অস্তিত্ব রয়েছে। তবে আমি বলবোনা যে একদম টর ব্রাউজারই ব্যবহার করবেন না। টর ব্রাউজার আপনি ভিপিএন হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন এবং এটির মাধ্যমে সার্ফেস ওয়েব ও ডীপ ওয়েব অ্যাক্সেস করতে পারেন। ভুলেও কিন্তুক আন্দাজে ডার্ক ওয়েবের দিকে পা বাড়াবেন না।
আহেন চলেন তাইলে আইজক্যা টর্চ লাইট দিয়া খুঁইজ্যা নেই ডার্ক ওয়েবের ডার্ক সাইটগুইল্যা। হেরবাদে ঐড্যা নিয়া কিছু স্টাডি করি। হ্যারপরদ্যা নাহয় আন্ধার জগতে ঢুকা যাবে। যারা জানেননা ডার্ক ওয়েব কী তাদেরকে বলে রাখি ডার্ক ওয়েব হল ইন্টারনেটের সেই অংশ যেটা আগেও একবার কইছি ভিজিবল ওয়েবের চেয়ে ৫০০ গুণ বড় যেখানে আপনি চিরাচরিত স্বাভাবিক উপায়ে ভিজিট করতে পারেননা- পারবেনওনা।
৫০০ গুন বড় শুনে যারা ভ্রু কুঁচকাচ্ছেন তাদের বলি মুড়ির ঠোঙা রেখে একটু ঢুকে দেহেন ডার্ক ওয়েবে। তারপর বলবেন মামা কী খেইলটাইনা দেখাইলা!
কী হয় ডার্ক ওয়েবে?
হি হি হি হি হি.!
এইটা কী জিগাইলেন মাম্মা? আগে কিন্তুক অ্যাকবার কইছি!
ডার্ক ওয়েবে কী হয়না তাই কন। এইহানে সবই হয়। সব। গাঞ্জা, হেরোইন থেকে শুরু করে এ.কে. ৪৭, রকেট লাঞ্চার, সুপারী কিলার সুপারী হ্যাকার, সবই পাওন যায় এহানে।
এইইানে যে পরিমাণ হ্যাকিং টেকনিক রমরমিয়ে বিক্রি হয় তা সাধারণত দৃশ্যমান ওয়েবে আফনের মাথা সারাডা জীবন কুটলেও পাবেন না। রয়েছে নিষিদ্ধ বই ও দ্রব্যের সম্ভার। মুখে কিছু কমু না। চুপচাপ নিচের লিঙ্কগুলা ক্লিক কইরা দেইখ্যা আসেন অথবা নিচের ছবিগুল্যা দ্যাখলে নিজেই বুঝবার পারবেন কীসের হাট বাজার এহানে বসে!
কী বুঝলেন বাইসাব?
পিলে চমকাইয়া গ্যাছে?
চলেন এইবার অন্ধকার ওয়েবের উপর টর্চ লাইট দিয়া আলোকপাত করি।
কী মাম্মা ভয় পাইছেন? ফায়ারফক্স খুলবার লাগছেন। হে হে হে হে হে.!
চিপাগলিতে কি ভুঁড়িওয়ালা পুলিশ দৌঁড়াইতে পারে? চলেন উহারে দৌঁড়ানী দিয়া ইট্টু ছিপছিপা দাবাং কপ বানাইয়া ফালাই। ফায়ারফক্সের আন্ধা চোখ দিয়্যা ডার্ক ওয়েবের কুনু সাইটের একটা এলিমেন্টও দ্যাখা যাইত ন’। দেখতে চাইলে আফনেরে টর (TOR- The Onion Router) ব্রাটব্রাউজারখান ওপেন করতে হইবেক!
টর ব্রাউজার ফায়ারফক্সের উপর কাজ করে। টরের ডার্ক ওয়েবে যাওয়ার ক্ষমতা আছে কিন্তু ফায়ারফক্সের নাই।
তো আহেন টর ব্রাউজারটা আগে ডাউনলোডাই.
বিঃদ্রঃ লেখাটি শুধু মাত্র এডুকেশন পারপস। কোনো ধরনের ঝামেলায় জড়িত হলে আমরা কোনো মতে ধায়ী নয় ^_^
এই গেমটি শুধুমাত্র বুদ্ধিমানদের জন্য!(টিউন টি পড়তে এখানে ক্লিক করুন)
(লেখাটি http://www.compuartsdigital.com/ থেকে কালেক্ট করা হয়েছে)
আমি ১৩৩৭ টিউনস। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 8 টি টিউন ও 3 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 2 টিউনারকে ফলো করি।
গেম প্রেমিক