(ইন্টারনেট ও ডাউনলোড বিষয়ে কয়েকটি কনফিউজিং পোষ্ট পরার পর, সঠিক তথ্য নিয়ে ব্যবহারকারীদের জন্য টিউন করার প্রয়োজন অনুভব করলাম। আসলে প্রযুক্তির সঠিক ও নির্ভুল জ্ঞান থাকা অনেক জরুরী। আমি প্রশ্নের আকারে ও সহজ ভাষায় বিষয়টগুলো প্রকাশের চেস্ঠা করবো।
হ্যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সম্ভব। ধরুন আপনি ২৫৬ কেবিপিএস (Kbps) এর একটি লাইন ব্যবহার করেন, কিন্তু স্পিড পান ১১-১২ KBps । এর অর্থ এটা নয় প্রভাইডার আপনাকে ১১-১২ KBps সরবরাহ করছে তাই আপনি এর বেশি পাবার ক্ষমতা রাখেন না। লাইনটি শেয়ার করে অনেকে ব্যবহার করার জন্য গড়পড়তায় আপনি ১১-১২ কেবিপিএস পাচ্ছেন।
কিন্তু, তাত্বিকভাবে আপনি ০ থেকে-সর্বোচ্চ ২৫৬ kbps পর্যন্ত যেকোনো স্পিড পাবার ক্ষমতা রাখেন। অর্থাৎ ০-৩২ KBps এর আশেপাশে ওঠানামা করবে (1 KBps=8kbps হিসাবে)
কিছু ফ্যাক্টরের আপগ্রেড করার মাধ্যমে আপনি নেটওয়ার্ক প্রদত্ত সর্বোচ্চ স্পিড পেতে পারেন।
1. আপনি যদি গ্রামীণফোনের EDGE কানেকশন ব্যবহার করেন তবে দেখবেন, একই সময়ে একই জায়গায়,
একটি NOKIA N 73 ব্যবহার করে ডাউনলোড স্পিড১৫ KBps হলে NOKIA 5800 তে পাবেন ২৫-২৯ KBps, যদিও দুটোই EDGE মডেম। এই তারতম্যের কারণ মডেমের Class এর পার্থক্য। EDGE Class 10 এর টেয়ে EDGE Class 32 এ বেশি স্পিড পাওয়া যাবে, কারণ এটি আলাদা আলাদা চ্যানেলের মাধ্যমে বেশি ডাটা শুষে নেয়। সহজ উদাহরণ দেই,
আপনি একটি ট্যাপ ছেড়ে এক বালতি পানি ভর্তি করতে যদি 10 মিনিট লাগলে, তাহলে 2 টি ট্যাপ ছাড়লে 5-6 মিনিটে বালতিটি ভর্তি হবে। অর্থাৎ লাইন যতবেশি হবে, সময় তত কম লাগবে। একইভাবে, চ্যানেল যত বেশি হবে, স্পিড তত বেশি পাওয়া যাবে। তাই ভালো মডেম আপনাকে ভালো স্পিড দেবে।
2. কেবল সংযেগের ক্ষেত্রে ADSL, ব্রন্ডব্যান্ড বা ডায়াল আপ এর কেবলের প্রধান উপাদান কপার ও অ্যালুমিনিয়াম। সুতরাং পুরোনো কেবলের রেজিস্টেন্স বা রোধ বেশি থাকবে এবং ডাটা প্রবাহ কমে যাবে। নতুন কেবলে পারফরমেন্স ভালো আসবে।
আবার কপার তারের চেয়ে ফাইবার অপটিক (অপটিক্যাল ফাইবার) এর রোধ অনেক কম, তাই কেউ যদি অপটিক্যাল ফাইবার দিয়ে সংযোগ নেয় (অনেক ব্যায়বহুল, তবে গ্রাহক চাইলে BTCL ব্যবস্থা করে দেয়) তবে আরো ভালো পারফরম্যান্স পাওয়া যাবে।
3. আপনার কম্পিউটারের প্রসেসর, RAM ইত্যাদি হার্ডওয়্যারের উপরও স্পিড নির্ভর করবে। ইন্টারনেট সিগন্যাল (ডাটা) গুলোকে কম্পিউটার পাঠের উপযোগী করতে প্রসেসর কাজ করে, আবার HTML ল্যাংগুয়েজে রূপান্তরেও এটি কাজ করে। তাই আপনার পিসি যত আধুনিক হবে, প্রসেসিং তত দ্রুত হবে, স্পিড ও তত বেশি হবে। এজন্য পেন্টিয়াম 3 মানের পিসিতে নেট ব্যবহার করে যে পারফরমেন্স পাবেন, আধুনিক পিসিতে তার চেয়ে কয়েকগুন বেশি ভালো পারফরমেন্স পাবেন।
4. বিভিন্ন ইন্টারনেটের সংযোগ (EDGE, ADSL, ব্রন্ডব্যান্ড বা ডায়াল আপ) এর জন্য আপনার পিসির একটি নির্দিষ্ট রেজিস্ট্রি কনফিগারেশন দরকার হয়। খারাপ করফিগারেশনের কারণে স্পিড কমে যায়। বিভিন্ন টিউনআপ সফটওয়্যার আপনার সংযোগ ও হার্ডওয়্যার বিবেচনা করে উপযোগী কনফিগারেশন প্রদান করে, ফলে স্পিড বেড়ে যায়। তাই এসব সফটওয়্যার একবারেই অকাজের, এমন বলা যাবে না।
হ্যা, জনপ্রিয় ডাউনলোড ম্যানেজার IDM একটি বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডাউনলোড সর্বোচ্চ 10 গুন পর্যন্ত বাড়াতে সক্ষম। বিশেষ প্রযুক্তিটি হচ্ছে, একটি ফাইলকে ভেঙ্গে কয়েক টুকরা করে সেই টুকরো গুলো আলাদা আলাদাভাবে ডাউনলোড করা।
ধরুন, দশজন লোক একটি দরজা দিয়ে বের হবে, তাহলে কিছুটা হলেও সময় বেশি প্রয়োজন।
কিন্তু আপনি যদি 10 টি দরজা বানিয়ে দেন, তাহলে 10 জন লোক একবারেই বেরুতে পারবে। সময় লাগবে কম।
একইভাবে, একটি সার্ভার থেকে আপনি একটি ফাইল নামাতে যে সময় লাগবে, সার্ভারে সেটি 10 টুকরো করে আলাদা আলাদা নামাতে সময় অনেক কম লাগবে।
তবে যেসব সাভার্রে ফাইলকে এভাবে ভাঙ্গা যায়না, সেখানে ইন্টারনেট ডাউনলোড ম্যানেজার দিয়ে ডাউনলোড স্পিড বাড়ানোর কোনো সুযোগ থাকেনা।
যেসব সাইটে ডাউনলোড রিজিউম বা পজ করা যায়, সেগুলোর সবগুলোই IDM এর এই প্রযুক্তিটি সমর্থন করে ফলে উচ্চগতিতে ডাউনলোড করা যায়।
----------------------------------------------------------------------------------
তথ্য ও প্রযুক্তির সাথে থাকুন, থাকুন জ্ঞানের সাথে। হ্যাপি নেটওয়ার্কিং।
-- নেট মাস্টার।
Author: Dr. Tanzil
আমি নেট মাস্টার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 64 টি টিউন ও 1834 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 9 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
অসাধারন তথ্য। ধন্যবাদ ভাইয়া ডাউনলোড স্পিড সম্পর্কে সঠিক ধারনা দেবার জন্য।