অনলাইনে ভিডিও স্ট্রিম করতে না পারার কারণসমূহ এবং তার সমাধান।

স্বাগতম, আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আমি আজ আপনাদের সাথে অনলাইনে ভিডিও স্ট্রিম করতে না পারার কারণ এবং তার সমাধান আলোচনা করব।

সাধারণত নিম্মোল্লিখিত কারণে অনলাইনে ভিডিও স্ট্রিম বাধাপ্রাপ্ত হয়।

১. স্লো ইন্টারনেট কানেকশন।
২. স্লো পিসি
৩. ভাইরাস সমস্যা।
৪. রাউটার অপ্টিমাইজ না থাকা।
৫. পুরনো মডেলের রাউটার ব্যবহার করা।

এখন আসুন জেনে নেই এসব সমস্যার সমাধান।

ইথারনেট কানেকশন ব্যবহার করা।

আপনি যদি অনলাইনেই সব ধরনের ভিডিও/ছবি দেখতে পছন্দ করেন কিংবা প্রায় সবসময়ই ইন্টারনেটে এধরনের কাজ কাজ সারেন তাহলে আপনি ইথারনেট ব্যবহার করুন। কারণ একটি wired-connection সবসময় ওয়াইফাই অথবা মোবাইল নেটওয়ার্ক থেকে দ্রুতগতির হয়ে থাকে। তাই চেশ্টা করুন আপনার পিসিকে ইথারনেটের সাথে যুক্ত করার। এতে আপনি যেসব ভিডিও স্ট্রিম তো ভালভাবে করতে পারবেনই, পাশাপাশি আরও সুবিধা পাবেন।

ওয়াইফাই কানেকশন ব্যবহার করা।

আপনি যদি ইথারনেট কানেকশন ব্যবহার করতে না পারেন তাহলে চেশ্টা করুন ওয়াইফাই কানেকশন ব্যবহার করেন। এধরনের কানেকশনের স্পিড ইথারনেট থেকে কম হলেও সাধারণ মোবাইল নেটওয়ার্ক থেকে ভালো। আর বাংলাদেশী মোবাইল নেটওয়ার্ক থেকে ওঠাইফাই যে শতগুণে ভালো তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।

ইন্টারনেট শেয়ারিং বন্ধ করুন।

আপনি যদি কম্পিউটারের সাথে এমন সব ডিভাইস সংযোগ করে থাকেন যেগুলো আপনার ইন্টারনেট ভাগ করে নেয়, তাহলে ভিডিও স্ট্রিমের পূর্বে সেসব ডিভাইস বিচ্ছিন্ন করুন কিংবা সেটিং থেকে Internet Sharing বন্ধ করে দিন। কারণ অনেক সময় এসব ডিভাইস একাই ইন্টারনেট ট্রান্সফার রেট রিজার্ভ করে নেয়। ফলাফল- ইন্টারনেট কানেকশন অসম্ভব রকমের স্লো। এমন অবস্হায় ভিডিও স্ট্রিমের প্রশ্নই আসেনা।

আপনার ইন্টারনেট Provider কে সমস্যা জানান।

আপনি যদি মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন এবং সবকিছু ঠিক থাকার পরও যদি মনে করেন আপনি আপনার কানেকশনে কাঙ্খিত স্পিড পাচ্ছেন না, তাহলে আপনার ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারকে বিষয়টি ফোন করে জানান। এতে তারা আপনার কানেকশনটি চেকআপ করে সমস্যাটি ধরিয়ে দিবে অথবা সমাধান করে দেবে। উল্লেখ্য যে, আপনি যদি ৩জি এরিয়ায় না থাকেন কিংবা ২জি ভলিউম ব্যবহার করে, তাহলে কোনো সমস্যা না থাকে সত্ত্বেও আপনি যথাযথ স্পিড পাবেন না।

অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম বন্ধ করা।

কম্পিউটারে চালুকৃত সকল অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম বন্ধ করে দিন। এসব প্রোগ্রাম চালু থাকার কারণে আপনার ইন্টারনেট কানেকশন যথেষ্ট ফাস্ট থাকার পরও ভিডিও স্ট্রিমের সময় আটকে যাবে বা ল্যাগ করতে থাকবে। তাছাড়া যে সকল গেমস এবং সফটওয়ার প্রসেসর সম্পূর্ণ লোড করে নেয় সেগুলোও ভিডিও স্ট্রিমের সময় বন্ধ করে রাখা জরুরী।

কম্পিউটারের মেমরি ইউসেজ কমিয়ে আনুন।

অনেক ভারী ভারী সফটওয়ার বা গেমস শুধু প্রসেসর নয়, র্যাম অর্থাৎ মেমোরিও সম্পূর্ণ লোড করে নেয়। তাই আপনাকে এসকল সফটওয়ার বা গেইম মনিটর করতে হবে। এক্সেত্রে উইন্ডোজের জন্য Ctrl + Alt + Delete কী তিনটি একসাথে চাপুন। ম্যাক ওএস এর জন্য এখানে যান-Applications →Utilities → Activity Monitor। এভাবে আপনি টাস্ক ম্যানেজারে যেতে পারবেন। কোনো সফটওয়ার বা গেমস খুব দরকার না হলে টাস্ক ম্যানেজার থেকে বন্ধ করে দিন।

নিয়মিত ভাইরাস স্ক্যান করুন।

অনেক সময় ভাইরাস সংক্রমণের কারণেও অনলাইনে ভিডিও স্ট্রিম করা সম্ভব হয়না। কারণ তো সবার অজানা নয়। তারপরেও বলি। ভাইরাস খুব সুন্দরভাবেই আপনার কম্পিউটারের বারোটা বাজিয়ে দিতে পারে যার হাত থেকে কোনো কিছুই রক্ষা পায়না। তাই সবসময় একটি ভালো এন্টিভাইরাস ব্যবহার করবেন এবং নিয়মিত ভাইরাস স্ক্যান করে ক্লিন করবেন।

ব্রাউজারের ক্যাশ ক্লিয়ার করা।

অনলাইনে ভিডিও স্ট্রিম করতে না পারার অন্যতম কারণ নিয়মিত ব্রাউজারের ক্যাশ ক্লিয়ার না করা। তাই আপনার এধরনের সমস্যার জন্য এখুনি আপনার ব্রাউজারের Preference থেকে ক্যাশ সেটিং এ যান এবং ক্যাশ ক্লিয়ার করে দিন।

রাউটারের সেটিং অপ্টিমাইজ করা।

আপনি আপনার রাউটার যদি অপ্টিমাইজ না করেন তাহলেও প্রায় সময় ভিডিও স্ট্রিম করতে পারবেন না।তাই নিচের পদ্ধতি মেনে আপনার রাউটার অপ্টিমাইজ করে নিন।

১. আপনার রাউটার সেটিং এক্সেস করুন। রাউটারের সেটিংসে এক্সেস করতে হলে।ব্রাউজারে গিয়ে আপনার রাউটারের আইপি এড্রেস টাইপ করুন।

২. এখন আপনার ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে সেটিংসে লগিন করুন।এখন আপনি আপনার রাউটারের সেটিংস অপশনে চলে যাবেন।

৩. এখন সেটিং থেকে QoS বা Quality of Service অপশনটি অন করতে হবে। বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন ধরনের রাউটার থাকলেও সবগুলো রাউটারের সেটিং মেনু প্রায় একই রকম। তাই QoS বা Quality of Service অপশনটি খুজে পেতে তেমন কষ্ট হবেনা। কোথাও না পেলে মেনুগুলোতে খুজ করবেন। এই অপশনটি খুজে পেলে Turn On এ ক্লিক করুন। আপনি যদি এই অপশন খুজে নাও পান তাহলেও কোনো সমস্যা নেই। এক্ষেত্রে WMM অপশনটি অন করে দিন। কারণ এই দুইটি অপশনের কাজ প্রায় একই।

৪. এখন সম্ভব হলে Burst ACK অপশনটি অন করে দিন। QOS অপশনটি যেখানে পাবেন BURST ACK অপশনটিও তার আশেপাশে পেয়ে যাবেন। এই অপশনটি এনাবল করলে ভিডিও স্ট্রিমিং স্পিড অনেকটাই বেড়ে যাবে। কিন্তু এর কারণে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিবে। যেমন কানেকশন ড্রপ করা, range কমে যাওয়া। তাই এই সেটিং বদলানোর পূর্বে লিখে রাখুন যাতে কোনো সমস্যা হলে আগের মতো করে দিতে পারেন।

৫. আরও ভালো হয় আপনার পুরনো রাউটার হলে নতুন একটি কিনে ফেলা। ভালো স্পিড পাওয়ার জন্য 802.11nstandard (and not "802.11n draft") অথবা নতুন 802.11ac মডেলের রাউটার কিনতে পারেন।

টিউনটির মাধ্যমে আপনার উপকার হওয়ার মধ্যেই মূলত টিউনটির স্বার্থকতা নিহিত।তাই টিউনটি ভালো লাগলে অবশ্যই টিউমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন এবং কোনো ভূল হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।আজ এখানেই টিউনটি শেষ করলাম।খোদা হাফেজ।

ফেইসবুক এ আমি

Level 2

আমি জুবায়ের আহমদ শাকিল। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 58 টি টিউন ও 221 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস