এটি নিয়ে কোন সন্দেহ নেই যে ব্লগের ট্রাফিক বাড়ানোর ক্ষেত্রে গুগল সার্চ একটি অসাধারন উপায়। কারন এমন অনেক ওয়েবসাইট আছে যেগুলো হাজার হাজার ইউনিক ট্রাফিক পায় গুগল সার্চ থেকে। কিন্তু গুগল দিন দিন যে হারে কঠোর হচ্ছে তাতে গুগল থেকে ট্রাফিক আসা কমে যাচ্ছে । কিছুদিন আগেও গুগল এ পেজ রেঙ্ক পাওয়া তেমন কোন ব্যাপার ছিল না কিন্তু বর্তমানে গুগল পান্ডা এবং প্যাঙ্গুইন এর মত কিছু শক্তিশালী আপডেট এর কারনে এখন গুগল সার্চ এ ভাল অবস্থান পাওয়া বেশ কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এক্ষেত্রে অপেশাদার ব্লগাররা সবচেয়ে বেশী ভুগছে। তবে পেশাদার সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজারদের কিন্তু তেমন কোন অসুবিধা হচ্ছে না বলা যাবে না। তারাও কম বেশী ভুগছেন। কারন একসময় তেমন মানসম্মত নয় এমন ওয়েবসাইটকেও খুব সহজে সার্চে ভাল অবস্থানে এনে দিতে পেরেছেন। কিন্তু এখন আর এটা তেমন সম্ভবপর নয়।
গুগল এর নতুন আপডেট এ “কন্টেন্ট ইজ কিং” নীতিকে প্রাধান্য দিয়েছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় কিছু ব্লগার এই নীতিকে ঠিকভাবে ফলো করতে পারছে না। তাছাড়া কন্টেন্ট রাজা হলেও সঠিক পরিচর্যার অভাবে সেটি যত মানসম্মতই হোক না কেন, ভাল অবস্থানে যেতে পারবেনা। উদাহরন স্বরুপ বলা যায় অক্সিজেন এবং হাইড্রোজেনকে ১০০ বছর ধরে একসাথে ফেলে রাখলেও পানি তৈরি হবে না, যদি না সঠিক প্রভাবক থাকে।ঠিক এমনই অবস্থা কন্টেন্ট এর। সঠিক ভাবে অপ্টিমাইজ করতে না পারলেও সার্চ এ ভাল অবস্থান পাবে না। আমি আসলে এটি বুঝাতে চেয়েছি যে কন্টেন্ট যত ভাল মানের ই হোক না কেন যদি সঠিকভাবে এসইও না করা হয় তবে কোন লাভ ই হবে না। আর সঠিক ভাবে এসইও করা এখন আর সহজ নয়(প্রফেশনালদের ব্যাতিত), একটু নড় চড় হলেই ত গুগলের পান্ডা আর প্যাঙ্গুইন মিলে আপনাকে ব্যান করে দিবে অর্থ্যাৎ ইউ আর আউট অফ গুগল সার্চ!!!
গুগলের রিসেন্ট আপডেটে দেখা গেছে বেশ কিছু ব্লগ/ওয়েবসাইট যেগুলোর অবস্থান খুবই ভাল ছিল, তাদের পেজ রেঙ্ক হারিয়েছে। তাই এটি সহজেই বোঝা যাচ্ছে গুগল সার্চ থেকে আসা ট্রাফিক এর উপর নির্ভর করাটা মোটেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়। আর তাই আপনার ওয়েবসাইট/ব্লগের জন্য ট্রাফিক সোর্স হিসেবে সার্চ রেজাল্ট কে শুধু গুরুত্ব না দিয়ে অন্যান্য মাধ্যমগুলোকেও প্রাধান্য দেওয়া উচিত। তাছাড়া অনেক সময় দেখা যায় গুগল সার্চ এ ওয়েবসাইট ইন্ডেক্স না হওয়ার ফলে অনেকেই হতাশ হয়ে পরেন, এক্ষেত্রে নিচে বর্নিত ট্রাফিক সোর্স গুলোকে ফলো করলে আশা করি হতাশ হবেন না।
[বিঃদ্রঃ যাদের ওয়েবসাইট গুগল এ ভাল অবস্থানে আছে এবং যাদের এডসেন্স আছে তারা এগুলো না ফলো করলেও পারেন]
১। সোসিয়াল মিডিয়া
বর্তমানে অধিকাংশ মানুষই আধুনিক যোগাযোগ ব্যাবস্থার প্রতি ঝোকছেন। মানে ফেসবুক,টুইটার,মাইস্পেস,গুগল প্লাস,পিইন্টারেস্ট সহ বহু সোসিয়াল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইটকে তাদের যোগাযোগ এর মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছেন। আর এই সুযোগে সোসিয়াল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইট গুলোর মাধ্যমে বাড়িয়ে নিতে পারেন আপনার ব্লগের ট্রাফিক। আপনার সাইট গুগল এ ইন্ডেক্স হোক আর না হোক এই মাধ্যম থেকে আপনি পেতে পারেন বড় ধরনের ট্রফিক। তাছাড়া সোসিয়াল বুকমার্কিং ওয়েবসাইট গুলো হতে পারে আপনার ট্রাফিকের অন্যতম সোর্স। অনেকেই আছেন যারা স্টাম্বলআপন,ডিগ,রেড্ডিট,ফেসবুক,টুটার,গুগল প্লাস থেকে এত বেশী পরিমানে ট্রাফিক পান যা চোখ কপালে উঠার মতোই। তাছাড়া আপনার সাইট গুগল ব্ল্যাক লিস্ট এ চলে গেলেও ট্রাফিক এর ক্ষেত্রে এটিই হতে পারে অন্যতম সমাধান।
কিছু সোসিয়াল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইটের লিস্ট
http://facebook.com
http://plus.google.com
http://linkedin.com
http://vk.com
http://myspace.com
http://bebo.com
http://hi5.com
এবং কিছু বুকমার্কিং ওয়েবসাইটের লিস্ট
http://digg.com
http://diigo.com
http://reddit.com
http://stumbleupon.com
http://blinklist.com
২। অতিথী ব্লগিং
অতিথী ব্লগিং হতে পারে আপনার ব্লগের ট্রাফিকের অন্যতম সোর্স। অতিথী হিসেবে ব্লগিং করা শুধুমাত্র আপনাকে জনপ্রিয় ই করবেনা আপনার ব্লগের ট্রাফিক ও নিশ্চিত করবে। অতিথী ব্লগিং করতে যেয়ে আপনার ব্লগের ফ্যান ও পেয়ে যেতে পারেন যে কিনা আপনার ব্লগের রেগুলার ভিজিটর হয়ে যেতে পারে!! অতিথী ব্লগিং করতে চাইলে বেছে নিন জনপ্রিয় প্লাটফর্ম গুলো কারন এর ফলে ভিজিটর পাবেন বেশী। তবে কম জনপ্রিয় ব্লগ গুলো বেছে নিতে পারেন অতিথী ব্লগিং এর জন্য কারন যখন ব্লগ টি জনপ্রিয় হবে তখন আপনি ই হয়ে যেতে পারেন ব্লগটির অন্যতম আকর্ষন , ফলে ভিজিটর ও পাবেন বেশী । কে জানে একসময় পেয়ে যেতে পারেন পেইড ব্লগার হওয়ার অফার। তখন রথ দেখা আর কলা বেচা একসাথেই কিন্তু হয়ে যাবে!!!!!
৩। কমেন্টিং
ব্লগের ট্রাফিক বাড়ানোর ক্ষেত্রে কমেন্টিং ভাল ভুমিকা রাখতে পারে। বিভিন্ন ব্লগে কমেন্ট এ আপনার ওয়েবসাইট এর লিঙ্ক ব্যবহার করতে পারেন। তবে এটি অবশ্যই লক্ষনীয় যে আপনার কমেন্টটি যেন কখনো স্প্যামিংয়ের আওতায় না পড়ে। সবসময় রিলেটেড কমেন্ট করার চেষ্টা করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। কমেন্ট করার সময় ওয়েবসাইট ফিল্ডে আপনার ওয়েবসাইটের ইউআরএল টি ব্যবহার করুন, ফলে আপনার নামটি এঙ্কর টেক্সট হিসেবে কাজ করবে। তাছাড়া কমেন্টলাভ ইউজ করে এমনসব ব্লগে কমেন্ট এর মাধ্যমেও আপনি পেতে পারেন আশানুরুপ ট্রাফিক।
৪। ইউটিউব/ভিডিও ব্লগিং
একটু কৌশলের মাধ্যমে ইউটিউবও হতে পারে আপনার ব্লগের ট্রাফিকের অন্যতম সোর্স। ইউটিউব হচ্ছে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইট। ইউটিউব এ একটি চ্যানেল খুলে কোনমতে ভিডিও ভিউ বাড়াতে পারলেই কেল্লা ফতে। কারন আপনার চ্যানেল একবার জনপ্রিয় হয়ে গেলে ভিডিওর মধ্যে আপনার ওয়েবসাইটের লিঙ্কটি ব্যবহার করে পেতে পারেন আশানুরুপ ফল। তবে অনেকেই এটা মেনে নিতে নারাজ যে ইউটিউব থেকে আসলেই ভাল ট্রাফিক পাওয়া যায়। কিন্তু আমি এ মনে করি যে ইউটিউব থেকে আসলেই ভাল ট্রাফিক পাওয়া যায়। ইউটিউব এ আপনি কোন বিষয়ে দিতে পারেন কমপ্লিট টিউটরিয়াল। আর টিউটরিয়াল এ আপনার ব্লগের লিঙ্ক দিয়ে লিখতে পারেন “আরও জানতে উদাহরন.কম ভিজিট করুন” অথবা ভিডিউ স্টার্টিং এবং ইন্ডিং টাইম এ ১০/১৫ সেকেন্ড ধরে আপনার ব্লগের লিঙ্কটি দেখাতে পারেন, আশা করা যায় বেশ ভাল ট্রাফিক আপনি পেতে পারেন।
কিছু ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইট লিস্টঃ
http://youtube.com
http://blip.tv
http://vimeo.com
http://veob.com
http://viddler.com
৫। ফোরাম মার্কেটিং
ফোরাম এ সচরাচর দেখা যায় কোন টপিক নিয়ে আলোচনা করা হয়। আর সেই আলোচনায় জয়েন করে ও পেতে পারেন ভাল মানের ট্রাফিক। ফোরাম এ আপনার সাইন এ আপনার ব্লগের লিঙ্কটি ব্যবহার করুন। ফোরাম এ আপনি যেসব ব্যাপারে ভাল জানেন সেসব টপিক গুলোতে মন্তব্য করার চেষ্টা করুন। রিলেটেড এবং ইউনিক মন্ত্যব যেমন আপনার রেপুটেশন বাড়াবে তেমনি আপনার ব্লগ ট্রাফিক ও বাড়বে।
কিছু ফোরাম ওয়েবসাইট এর লিঙ্ক
http://forums.digitalpoint.com
http://sitepoint.com/forums
http://warriorforum.com
http://forum.triphp.com
৬। লিঙ্ক আদান-প্রদান
আপনার ব্লগের সমমানের ব্লগিং ওয়েবসাইট বা ভাল কোন ব্লগিং ওয়েবসাইটের সাথে যোগাযোগ করুন লিঙ্ক আদান-প্রদান এর জন্য। কারন লিঙ্ক আদান প্রদান করার মাধ্যমেও পেতে পারেন ভাল ট্রাফিক। তবে লিঙ্ক আদান-প্রদান এর ক্ষেত্রে অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন ব্লগের ডেইলি ইউনিক ভিজিটর কেমন,পেজ রেঙ্ক আছে কিনা, আপনার লিঙ্কটি কিভাবে কোন অবস্থানে রাখবে ইত্যাদি ব্যাপারে।
৭।আপনার ব্লগটিকে ডুফলো করে দিন
ডুফলো করার ব্যাপারটি হয়তবা অনেকেই মেনে নিতে পারবেন না । কিন্তু আপনি যদি আপনার ভিজিটরদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চান তবে আপনার উচিত আপনার ব্লগটিকে ডুফলো করে দেয়া কারন ভিজিটররা আপনার ব্লগে আসে বলেই হয়তবা আপনি দু/চারটে পয়সা কামাতে পারছেন অথবা আলেক্সাতে ভাল অবস্থানে আছেন বলে চিন্তা করছেন ফ্লিপাতে ওয়েবসাইটটি বিক্রি করার চেষ্টা করবেন। তাই আপনার লাভের পাশাপাশি ভিজিটরের লাভের চিন্তা করে আপনার ব্লগটি ডুফলো করে দিতে পারেন। এর ফলে আপনার ব্লগে আরো ভিজিটর বাড়বে। বিভিন্ন ওয়েবসাইটে হয়ত আপনার ব্লগটিকে ডুফলো ব্লগ লিস্টের তালিকায় ডুকিয়ে দিতে পারে। ফলাফল আরো বেশী ট্রাফিক। অনেকে বলতে পারেন স্প্যামিং বেড়ে যেতে পারে কিন্তু কমেন্ট মডারেশন ত আপনার হাতে, রিলেটেড কমেন্ট না হলে এপ্রোভ করছে কে!!
৮।প্রতিযোগীতার আয়োজন
আপনি যদি ব্লগের ট্রাফিক বাড়াতে ইচ্ছুক তাহলে আপনার উচিত হবে মাঝে মাঝে ছোট-খাট প্রতিযোগীতার আয়োজন করা। যেমন অতিথী ব্লগিং প্রতিযোগীতা,কমেন্টিং প্রতিযোগীতা ইত্যাদি। প্রতিযোগীতার পুরষ্কার হিসেবে ইন্টারেস্টিং কিছু রাখতে পারেন। তাছাড়া খরচ কমাতে চাইলে একজন স্পন্সর খুজে নিতে পারেন।
এ পর্যন্তই আজকে।কেমন হল মন্তব্য করে জানাবেন।
এই পোস্টটি সর্ব প্রথম ামার ব্লগে প্রকাশিত
আমি জিএমশুভ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 19 টি টিউন ও 96 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি জিএমশুভ। পড়ালেখার পাশাপাশি লেখা লেখি করছি। ভালবাসি টেকনোলজিকে। নেট ব্রাউজ করা আর বই পড়া আমার প্রধান সখ।আর ভালবাসি নতুন কিছু জানতে এবং অন্যকে জানাতে। ফেসবুকে আমি: http://facebook.com/gms.me
প্রিয় টিউনসে যুক্ত করলাম… অনেক ভাল লাগল, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ মুল্যবান টিউনটি করার জন্য। আমার সাইটা দেখে একটু পরামর্শ দিলে খুশি হব। http://www.bdinfotoday.com