আকাশের মন ভাল নেই। অনেক্ষন ধরেই বসে বসে কি যেন ভাবল। ভাবনার আকাশ শুধুই কাল মেঘে ঢাকা। অনেক্ষন ভাবার পর পিছন থেকে মিরা কাঁধে হাত রাখল। সেই পরিচিত হাতের স্পর্শ তাই আকাশের ভাবের কোন পরিবর্তন হয়নি। মিরার কন্ঠে, “চল বিয়ে করব”।
এবার আকাশের ভাবের পরিবর্তন হল। ফিরে তাকাল ওর দিকে। আকাশেরও একই কথা, “চল”।
মিরা আকাশের হাত ধরে নিয়ে গেল অনেকদুরে। যেখানে স্বপ্নময় রাজ্য। আকাশ নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছে না যে ওযে ওর স্বপ্নের রাজ্যে চলে এসেছে। দাড়িয়ে সাগড় দেখছিল ও। মিরা পাশে দাড়িয়ে আছে। আকাশ দেখল মিরার হাতে একটি সুন্দর মালা। কিছু বলতে যাবে তার আগেই মিরা বলে ফেলল, “আকাশ এদিকে তাকাও, চোখ বন্ধ কর, তোমাকে মালা পরাব”।
আকাশ হাসি মুখে তাকাল ওর দিকে আর চোখ বন্ধ করল। নিমিষেই অন্ধকার আচ্ছন্ন করে ফেলল ওকে। নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। কারন মিরা গলার মালা দিয়ে আকাশের গলা চেপে ধরে রাখছে। আকাশের কিছুই করার ছিল না। মাটিতে লুটিয়ে ছটফট করছে। মিরা আকাশের মালাটা দিয়ে চেপে ধরেই আছে। যেন মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া প্রর্যন্ত ওর শান্তি নেই।
উপরের গল্পের প্রেক্ষাপট এবং আমাদের বর্তমান সরকার ও অনলাইন গনমাধ্যমের মত। আকাশের ভূমিকায় অনলাইন গনমাধ্যম আর মিরার ভূমিকায় সরকার। যেন ঢেকে নিয়ে গলায় ফাঁস দেয়ার মত।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই একটি সুর আমাদের কানে গেথে গিয়েছিল আর তা হল “ডিজিটাল বাংলাদেশ”।
কিন্তু এই ডিজিটালের যাতাকলে যে আমাদের মরতে হবে সেটা ভাবিনি কখনও। সরকার একটার পর একটা ডিজিটাল বাংলাদেশের পথ রুদ্ধ করে দিচ্ছে।
এবার সব ফালতু কথা রেখে চলুন কাজের কথায় আসি। বুধবার তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনলাইন গণমাধ্যমের সম্পাদক ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করেন তথ্য সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন। বৈঠকে খসড়া নীতিমালার কপি উপস্থিত সম্পাদকদের সরবরাহ করা হয়। খসড়ায় সরকারের পক্ষ থেকে উল্লেখ করেছে, অক্টোবরের মধ্যে সরকার অনলাইন গণমাধ্যম ‘নিয়ন্ত্রণে’ নীতিমালা চূড়ান্ত করতে যাচ্ছে। এ নীতিমালা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার বর্তমান সরকারের ঘোষণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেছেন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও অনলাইনের সঙ্গে যুক্ত সম্পাদকগণ। এ বিষয়ে একটি খসড়া ইতিমধ্যে তৈরি করা হয়েছে। ওই খসড়ার ভিত্তিতে আগামী ১০ দিনের মধ্যে মতামত দিয়ে অনলাইন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের বলা হয়েছে। খসড়ায় বলা হয়েছে, অনলাইন গণমাধ্যমের লাইসেন্স নেয়ার ক্ষেত্রে এককালীন পাঁচ লাখ টাকা তথ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে। পরে প্রতি বছর ৫০ হাজার টাকায় লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে।
কারা ছিল উক্ত সভায়:
উক্ত সভা থেকে বলা হয় বাংলাদেশের প্রথম সারির অনলাইন পত্রিকার প্রতিনিধীরা উপস্থিত ছিল সেখানে। আমার প্রশ্ন হল প্রথম সারির অনলাইন পত্রিকাগুলোকে সরকার কিভাবে পরিমাপ করল? ওয়েবের মান ও পাঠক সংখ্যার ভিত্তিতে না ওয়েবের মালিক বা সম্পাদকের ভিত্তিতে।
আমরা সাধারনত অনলাইনগুলোকে বিচার করি এলেক্সা র্যাকিং এর ভিত্তিতে। এ্যালেক্সা র্যাঙ্ক। ওয়েবসাইট এর জনপ্রীয়তা পরিমাপক একটি ওয়েবসাইট। এই সাইটের মাধ্যমে আপনি আপনার পছন্দের যে কোন ওয়েবসাইটের জনপ্রীয়তা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য পরিমাপ করা যায়।
এলেক্সা র্যাংকিং ৫০০ এর মধ্যে আমাদের দেশে প্রথম সাড়ির অনলাইন সংবাদ মাধ্যম হচ্ছে (প্রিন্ট মিডিয়ার অনলাইন সংস্করন ছাড়া) হচ্ছে:
১. বিডিনিউজ২৪ ডট কম (এ্যালেক্সা র্যাংক অনুযায়ী বাংলাদেশে অবস্থান ৮, পৃথিবীর মধ্যে ২১২৪)
২. বাংলানিউজ২৪ ডট কম (এ্যালেক্সা র্যাংক অনুযায়ী বাংলাদেশে অবস্থান ১৩, পৃথিবীর মধ্যে )
৩. বার্তা ২৪ ডট নেট (এ্যালেক্সা র্যাংক অনুযায়ী বাংলাদেশে অবস্থান ৩৩,পৃথিবীর মধ্যে ৩৩৬৯)
৪. শেয়ার নিউজ ২৪ ডট কম (এ্যালেক্সা র্যাংক অনুযায়ী বাংলাদেশে অবস্থান ১৩৩, পৃথিবীর মধ্যে ৩০,৩৫৬ )
৫. জাষ্ট নিউজ বিডি ডট কম (এ্যালেক্সা র্যাংক অনুযায়ী বাংলাদেশে অবস্থান ১৮৫, পৃথিবীর মধ্যে ৬৩,০৪৭ )
৬. বিডি২৪লাইভ ডট কম (এ্যালেক্সা র্যাংক অনুযায়ী বাংলাদেশে অবস্থান ৪২৫, পৃথিবীর মধ্যে ৭৬,৭৭৩)
যাদের ডাকা হয়েছিল তাদের মধ্যে বিডিনিউজ এবং বাংলানিউজ বাদে বাকিদের অবস্থান কোথায় তাই একটু তুলে ধরছি।
আইএনবি: এ্যালেক্সা র্যাংক অনুযায়ী বাংলাদেশে কোন অবস্থানি নাই, পৃথিবীর মধ্যে ১৮,৭৬,১১৭ ।
পিটিবিনিউজ: এ্যালেক্সা র্যাংক অনুযায়ী বাংলাদেশে অবস্থান ৪৯৭৫, পৃথিবীর মধ্যে ৮৫,০০৯৪।
প্রাইম খবর: এ্যালেক্সা র্যাংক অনুযায়ী বাংলাদেশে অবস্থান ২৬১৯, পৃথিবীর মধ্যে ১২২৭১৮১।
ঢাকানিউজ২৪: এ্যালেক্সা র্যাংক অনুযায়ী বাংলাদেশে অবস্থান ১০০৯৯, পৃথিবীর মধ্যে ৩৪১২৮৮।
যাদেরই ডাকুক আমার কোন অভিযোগ নেই। শুধু প্রথম সারি বলতে সরকার কি বুজিয়েছে সেই জন্যই উপরের বিষয়টি ব্যাখ্যা করলাম।
এই নিতীমালা কি ডিজিটাল বাংলাদেশের পথের অন্তরায়?
সবাই এক বাক্যে বলবে না । যদিও কিছু কিছু চামচা ধরনের লোক আছে যারা বলবেন হ্যাঁ। কারন তাদেরতো রাখাই হয়েছে তোষামোধ করার জন্য। ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রথম পদক্ষেপই হচ্ছে ইন্টারনেটের অবাধ তথ্য প্রবাহের সুযোগ রাখা। আর সরকার সেই পথকেই রোধ করে রাখতে চাইছে। কারন নষ্ট রাজনীতি। এই নষ্ট রাজনীতি আমাদের সমাজকে কুরে কুরে খাচ্ছে। তরুন সমাজের কাছে ঘৃনার আর এক নাম রাজনীতি।
সরকার দেড়িতে হলেও বুঝতে পারছে এখন দেশ যদি প্রযুক্তির দিক দিয়ে উন্নত হয়ে যায়, তাহলে সরকারের সকল অপকর্ম মুহুর্তেই সবাই জেনে যাবে। টিভি মিডিয়া, পত্র-পত্রিকা, রেডিও সহ যে কোন মিডিয়াকেই সরকার শক্তির মাধ্যমে মুখ বন্ধ করে রাখতে পারে, কিন্তু ইন্টারনেটের মাধ্যমেকে কী দিয়ে সরকার বন্ধ করবে? নেটে কোন কিছু ছড়িয়ে পড়লে তা কখনোই পুরোপুরি আটকানো সম্ভব নয়। তাই কোন সরকারই চাইবে না তার ভোট হারাতে আর এই জন্যই এখন পর্যন্ত আমাদের দেশে ইন্টারনেট সহজলভ্য হয়নি। আর সেখানে শুরুর মুখেই সরকার অনলাইন পত্রিকাগুলো বন্ধের পায়তারা করছে। এই জন্য আমরা বলতেই পারি বাংলাদেশ অনেক পিছিয়েই থাকবে!
একসময় অনলাইন বলতে আমরা বুঝি ফেসবুক আর বিভিন্ন খারাপ ওয়েব সাইট। সেই ধারনা থেকে বর্তমানে আমরা বেরিয়ে এসেছি। এক্ষেত্রে অনলাইন পত্রিকাগুলোর ভূমিকা অপরেসীম। কারন অনলাইন পত্রিকায় শুধু যে সংবাদ পরিবেশন করে তা নায় এতে দুনিয়ার সব আয়োজনই থাকে। সরকারকি চায়না সবাই সব কিছু জানুক, চিনুক।
প্রিন্ট মিডিয়ার মুখ বন্ধ:
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে, অনলাইন পত্রিকার মূখ রোধ করতে সরকার যে পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে তা নিয়ে প্রিন্ট মিডিয়া মুখ খুলছে না। বিষয়টা একদমই পরিস্কার। অনলাইন পত্রিকা প্রসার দিন দিন বারার কারনে প্রিন্ট মিডিয়া হারাচ্ছে তাদের পাঠক, গ্রাহক, বিজ্ঞপনদাতা। অনলাইন সংবাদমাধ্যম এখন পৃথিবীব্যাপী খুব দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে। ইউরোপে বেশির ভাগ পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণের প্রচারসংখ্যা এখন কমিয়ে আনতে হচ্ছে, তবে সেসব পত্রিকার প্রায় প্রতিটির অনলাইন সংস্করণে পাঠকের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। শুধু ইউরোপ নয়, এ অবস্থা অনেক দেশে এরকমই। আর তাই প্রিন্ট মিডিয়া চায় না অনলাইন পত্রিকার প্রসার ঘটুক। ওরা দেশের কথা বা জনগনের কথা ভাবে না ওরা ভাবে ওদের পিঠের কথা আর নিজের মাথার কথা।
অনলাইন সংবাদমাধ্যম এখন শুধু বিনামূল্যে কিংবা সহজলভ্য বলেই নয়, নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও সুবিধার জন্যই এটি দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। এখানে খুব সহজভাবে আরও বেশি সংবাদ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়। এর আরেকটি বড় সুবিধা হলো, এতে পাঠকেরও তাৎক্ষণিক মত প্রকাশের সুযোগ থাকে। এতে করে সংবাদের সঙ্গে পাঠকের দূরত্ব কমে।
অ-নির্ভরশীল একটি সূত্র থেকে জানা যায় সরকারের এই নিতীমালার পিছনে বড় বড় কয়েকটি প্রিন্ট মিডিয়ার হাত রয়েছে। যারা একাই দেশে রাজত্ব কায়েক করতে চায়। তারা চায় না দেশে কোন অবাধ তথ্য প্রবাহের কোন মাধ্যম থাকুক।
এই নিতীমালায় কার লাভ:
সরকার অনলাইন পত্রিকার যে নিতীমালাটি করতে যাচ্ছে তাতে যে কারো লাভ হচ্ছে না সেটা বলাই যাবে না। এই নিতীমালা দেখে অনেকেই খুশিতে আত্ত্বহারা হয়ে গেছেন। অনলাইন গণমাধ্যম ব্যাপক জনপ্রিয় একটি মাধ্যম। মুক্ত ও স্বাধীনভাবেই এই গণমাধ্যমকে চলতে দেয়া উচিত। আর্থিক বা অন্য কোন কারণে নিয়ন্ত্রণ আরোপ হলে অবাধ তথ্য প্রবাহ ব্যাহত হবে। এই নিতীমালায় যাদের লাভ হবে তাদের সংখ্যা নিহাত একদম কম। হাতে গোন ৩-৪।
যারা সরকারের চাটুকারিতায় মগ্ন। রাজনীতির ব্যারাজালে যাদের অবস্থান। যারা চায় না তারা ছাড়া আর কোন অনলাইন এ দেশে থাকুক।
তাদের খুশি হবার আর একটি কারন হল, তাদের অনলাইন পত্রিকা চালাতে নিজের গাটের পয়সা খরচ করতে হয় না। তাদের সাপোর্ট দেয়ার জন্য রয়েছে বড় বড় কোম্পানি।
আর একজনের এ ক্ষেত্রে লাভ হবে আর তারা হল ক্লিকবাজ কোম্পানি। যারা ক্লিক করলেই টাকা টাকা প্রদান করে। তারা এই অনলাইন নিতীমালা বন্ধ হবার সুবাধে এখানে কর্মরত লোকজনকে তাদের দলে ভেরানো চেষ্টা করবে।
নিতীমালায় যা আছে তা কতটুকু যুক্তি সংগত:
আমরা সবাই চাই প্রিন্ট মিডিয়া বা ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মত অনলাইন মিডিয়াতেও একটি সুন্দর নিতীমালা থাকুক। কারন নিতীমালা না থাকলে এর অপব্যাবহারও বারবে। সে ক্ষেত্রে বর্তমানে যে নিতীমালাটি সরকার করতে যাচ্ছে তা যক্তি সংগত নয়। এর প্রথম কারন হল সরকার অনলাইনের উপর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রন আরোপ করার জন্য এই নিতীমালাটি করেছে। গুটি কয়েক অনলাইন পত্রিকা ছাড়া কোন পত্রিকারই সামর্থ বা অর্থ নেই অনলাইনের জন্য লাইসেন্স নেবার।
অনলাইন পত্রিকা কোন গাড়ি বা যানবাহন নয় যে প্রতিবছর এর ৫০ হাজার টাকায় লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে। পৃথিবীর আর কোন দেশে এমন আছে বলে আমার মনে হয় না।
অনলাইন পত্রিকার নিতীমালা যদি সত্যিই কার্যকর হয় তাললে আমি বলব এ নিতীমালা শুধু যে অনলাইন পত্রিকার জন্য প্রযোজ্য হবে শুধু তাই নয়। এটা ব্লগ, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সাইট, স্বাস্থ্য বিষয়ক সাইট সব কিছুর উপর বাতলাবে। কারন সবাই তথ্য প্রকাশ করে। তাহলে শুধু সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রেই নিতীমালা সেটা প্রযোজ্য নয়।
এ ক্ষেত্রে প্রিন্ট মিডিয়ায় তথ্য বিষয়ক বা স্বাস্থ্য বিষয়ক কোন পাক্ষিক বা মাসিক পত্রিকার প্রকাশ করতে হয় তাহলে লাইসেন্সের প্রয়োজন পরে। তেমনি অনলাইনে এর বিস্তার রয়েছে সে ক্ষেত্রে তাদেরও লাইসেন্সের প্রয়োজন পরবে। আর যদি তাদেরও লাইসেন্সের প্রয়োজন পরে তাহলে একে একে বাংলাদেশের সকল ওয়েবসাইটের লাইসেন্স লাগবে।
যেভাবে নিতীমালা হতে পারে:
আমার দৃষ্টিকোন থেকে যদি অনলাইন পত্রিকার জন্য কোন নিতীমালা করতেই হয় তাহলে তা আয়ত্বের মধ্যে রেখে করতে হবে। কোন অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করা যাবে না। নিতীমাল ঠিক এমন হতে পারে:
১. কোন অললাইন সংবাদ মাধ্যম প্রকাশের ক্ষেত্রে একটি ট্রেড লাইসেন্স/ইন করপোরেশন সার্টিফিকেট মত ব্যাবস্থা রাখা যেতে পারে। নাম মাত্র মূল্যে এই লাইসেন্স প্রদান করতে হবে।
২. সরকার কর্তৃক রেগুলেটরি কমিটিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি রাখা যেতে পারে।
৩. যদি লাইসেন্স ফি নেয়ার প্রয়োজনি পরে তা সাধ ও সাধ্যে মধ্যে রাখতে হবে। কারন কোন অনলাইন এ দৈনিক পত্রিকার মত লক্ষ লক্ষ টাকা উপর্জনের উপায় নেই।
যদি এই নিতীমালা করাই হয় তাহলে যে সমস্যাগুলো হতে পারে:
অনলাইন পত্রিকাগুলোতে মূলত তরুনরাই বেশি কার্যকর। এখানে তরুন সমাজ দু-টাকা উপার্জন করে বেকারত্ব ঘোচানোর চেষ্টা করে। সে পথ বন্ধ হয়ে যাবে। তথ্য ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে মুখ থুবরে পরবে গোটা যুব সমাজ। সবে মাত্র অনলাইন পত্রিকা দাড়াতে শিখেছে এই পর্যায় তাকে হাটতে দেয়া উচিত। নয়ত প্রতিবন্ধি হয়ে ডুকড়ে ডুকড়ে মরতে হবে।
আমাদের দেশে জাতীয়, আঞ্চলিক মিলে যে ওয়েব সাইট রয়েছে তা অন্যাঅন্য দেশের তুলনায় অনেক কম। আর এই নিতীমালা হলে এর সংখ্যঅ ৩-৫ টির মধ্যে নেমে আসবে।
যারা অনলাইন পত্রিকা নিয়ে স্বপ্ন দেখে তাদের স্বপ্ন ভেঙ্গে সরকারের প্রতি বিরুপ ধারনার সৃষ্টি হবে। অনলাইন পত্রিকা দিয়ে যারা উপার্জন করে তাদের উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে যাবে ফলে তারা বেকার হয়ে পরবে।
এই নিতীমালা কতটুকু কার্যকর হতে পারে:
অনলাইন গনমাধ্যমের এই নিতীমালা কার্যকর কতটুকু হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না তবে বলা যায়। হাতে গোনা ৩-৫টি অনলাইন পত্রিকা বাদে সবগুলোই বন্ধ হয়ে যাবে যেগুলো বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত হয়।
একটি বিষয় মনে রাখতে হবে ওয়েবসাইটগুলো রেজিষ্ট্রেষন হয় বিদেশ থেকে। এ ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে যে পত্রিকাগুলো পরিচালিত হয় সে গুলো সরকার ইচ্ছে করলেই বন্ধ করতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে দেশে যে অনলাইন পত্রিকাগুলো আছে তারা প্রবাশীদের সাহায্য নিতে পারে পরিচালনা ক্ষেত্রে।
আঞ্চলিক অনলাইন পত্রিকারগুলোর উপর সরকার সম্ভাবত প্রভাব খাটাতে পারবে না। যা অত্যন্ত কষ্টস্বাধ্য ব্যাপার।
আমার জানা মতে প্রথিবীর কোন দেশেই অনলাইন পত্রিকায় এমন নিতীমালা নেই। আমাদের পাশ্ববর্তীদেশ ভারতেও চলছে অবাধ তথ্য প্রবাহের ধারা। তাহলে আমাদের দেশের মত একটি দেশে যেখানে অনেক পিছিয়ে সেখানে এমন একটি নিতীমালা সত্যি হাস্যকর।
অনলাইন মিডিয়ার ব্যাক্তিগনের মন্তব্য:
এস নিউজ ২৪ ডট কম সোহাগ আরেফিন বলেননঃ-আমি মনে করি এটা ভালো খবর নিতীমালা আমাদের জন্য দরকার নিতী মালা হলে আমরা একটা স্থানে অবস্থান করতে পারবো । তবে এই ভাবে হঠাৎ করে মোটা অংকের টাকা এটা সম্ভব নয়। আমরা এখান থেকে কয় টাকা আয় করি । আমাদের তো কোন ইনকাম নাই । আমার মনে হয় অনলাইন সম্পাদক গন এক সাথে বসে আলোচনা করলে ভালো হয় ।
বিডিপ্রেস ডট নেট, মাহমুদুর রহমান বলেন,- আমার মনে হয় এটা এরকম আইন হওয়া প্রয়োজন কিন্তু সেটা থাকতে হবে আমাদের আয়েত্বে। আমরা একটা অনলাইন পত্রিকা দিয়ে কয় টাকা আয় করি কিন্তু আয়ের চেয়ে ব্যায় যদি বেশি হয় তাহলে তো আমরা চালাইতে পত্রিকা চালাতে পারবো না।
ইউনাইটেড নিউজ,সনজিত বলেন - আমার মনে হয় নিতীমালা হউক নিতীমালা হওয়া জরুরী এটা আনলাইন কে আরো শক্তিশালী করবে। আমার মনে হয় আমাদের সাদ্ধের মধ্যে যদি এমাউন্ট টা থাকে তেমন কাজ আমাদের করতে হবে।
বিডিরিপোর্ট২৪ ডট কমে এম সাইফুল্লাহ বলেন, আমি মনে করি এটা কোন ভাবে সম্ভব নয় এটা বাস্তবায়ন যেন না হয় সেটার জন্য প্রয়োজনে আমরা আন্দোলন করবো সবাই মিলে।
নিউজ নেট ডট কম থেকে সাফী আল বলেন, আমরা সবাই যদি একসাথে আলোচনায় বসি তাহলে আমাদের সবার মতামত দিতে পারতাম। আর এই নিতীমালার সাথে আমি একমত হতে পারছিনা ।
ইন্টারনেটে বাংলাদেশের অবস্থান:
বিশ্বের উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান একেবারে শেষের দিকে । সু্ইজারল্যান্ড ভিত্তিক ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব ফাউন্ডেশন ৬০টিরও বেশি দেশের মানুষের মধ্যে ইন্টারনেটের ব্যবহার, এবং সমাজ ও রাজনীতিতে এর প্রভাব সম্পর্কে চালানো এক জরিপের পরে এ কথা বলেছে ।
কিন্তু ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব-এর উদ্ভাবক স্যার টিম বার্নারের ফাউন্ডেশনের ওয়েব ইন্ডেক্সে ৬১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৫৫তম, অর্থাৎ এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে বাংলাদেশ ইন্টারনেট ব্যবহারের দিক থেকে সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা দেশ। আর বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে ভারত ৩৩তম, পাকিস্তান ৪৪তম এবং নেপাল ৫২ তম অবস্থানে রয়েছে।
বাংলাদেশের বর্তমানে সরকারের অন্যতম বড় একটি প্রতিশ্রুতি ছিল দেশকে তথ্যপ্রযুক্তি সেবার আধুনিকায়নের মাধ্যমে 'ডিজিটাল বাংলাদেশে' রূপান্তর করা। এ ক্ষেত্রে এই নিতীমালা কি সত্যিই বাংলাদেশকে ডিজিটারে রুপান্তর করবে না এনালগে ফিরে যাবে?
তথ্যের অবাধ প্রবাহই সুশাসন প্রতিষ্ঠার একটি অন্যতম প্রধান উপাদান। অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করতে গণমাধ্যমই একই ভাবে অন্যতম শক্তিশালী ও বাস্তব মাধ্যম। মানুষের দোড়গোড়ায় তথ্য প্রবাহকে কে প্রবাহিত করার সহায়ক গণমুখি একটি গণমাধ্যম নীতিমালা প্রণয়নের উদ্দোগ্য প্রশংসনীয়।
শরীরের শিরা, উপ-শিরা যেমন- মানব দেহের প্রতিটি কোষে জীবনি শক্তি পৌঁছে দেয় তেমনি গণমাধ্যম সমাজ, প্রশাসন, দেশ ও বিদেশের তথ্য প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়। তাই গণমুখি অবাধ গণমাধ্যম নীতিমালা যেকোন রাষ্ট্রের জন্য আবশ্যক।
তবে অনলাইনের ক্ষেত্রে গনমাধ্যম নিতীমালা কতটুকু প্রযোজ্য তা আমার বোধগম্য নয়। তবে সরকারের কাছে আমার আবেদন সরকার যেন ডিজিটাল বাংলাদেশের চলার পথ বন্ধ করার মত কোন নিতীমালা না করে।
অনলাইন গনমাধ্যমের নিতীমালা হবে সাবলীর এবং সাধ্যের মধ্যে।
লেখক:
আমিরুল ইসলাম,
সম্পাদক,
বিডি২৪লাইভ.কম
* আপনাদের মন্তব্য প্রদান করতে এখানে ক্লিক করুন
আমি আকাশ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 30 টি টিউন ও 23 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
IndiaLink(Bangladesh) Package…
Ak…. Desh….. Digital Rate……..