আসসালামু আলাইকুম।
অনেকদিন পরে টেকটিউনসে ফেরা! সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আজকের টিউন।
প্রসঙ্গঃ অনলাইন মানি মেকিংয়ের কিছু দূর্লভ তথ্য!
অনলাইনে আয়ের নানা ধরণের মাধ্যমের সাথে আমরা পরিচিত। এখানে একেকজন একেক উপায়ে আয় করে চলেছে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন মানুষ অনলাইনে আয়ের দিকে ঝুঁকছেন। বিশেষ করে আমাদের দেশের মতো ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব বৃদ্ধির দেশে অনলাইনে আয়ের পথ হতে পারে আমাদের বেকারত্ব দূরীকরনের অন্যতম একটা উপায়।
আমি আজ অনলাইনে আয়ের এমন কিছু পথের কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো যার সাথে আমরা অনেকেই পরিচিত নই বা আংশিক পরিচিত। এবং প্রথমেই উল্লেখ করে রাখি আমি এখানে এমন কিছু অনলাইন আর্নিং সোর্স নিয়ে আলোচনা করবো যেগুলো মূলত বিজনেস, যেখানে আপনি বিনিয়োগ করবেন কম কিন্তু নিশ্চিত প্রফিট করবেন অনেক অনেকগুন বেশি এবং সেই বেশি প্রফিটের পরিমানটা এমন হতে পারে যা আপনার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্য।
তো আসুন শুরু করি।
প্রথমে আমি আলোচনা করবো HYIP নিয়ে।
আপনি কি জানেন HYIP কি?
HYIP এর পূর্ণরূপ হলো high yield investment program. এটি মূলত এক ধরণের ইনভেস্টমেন্ট ওয়েবসাইট। যেখানে আপনার সদস্যগণ আপনার কাছে বিনিয়োগ করবে প্রফিটের জন্য। HYIP এমন একটি ব্যবসা যেখানে আপনি আপনার বিনিয়োগকারীদের নিকট থেকে প্রচুর পরিমান অর্থ সংগ্রহ করতে পারেন যা আপনার ব্যবসায় বিনিয়োগ করে আপনি আপনার বিনিয়োগকারীদের সাথে লভ্যাংশ শেয়ার করবেন। সোজা বাংলায় বলতে গেলে বলতে হবে আপনি একটা ব্যবসা করবেন যাতে বিনিয়োগ করবে অন্যরা এবং তাদের সেই বিনিয়োগকৃত অর্থ আপনি আপনার ব্যবসায় খাটিয়ে আপনার কাছে বিনিয়োগকারীদেরকে প্রফিট দিবেন। অর্থাৎ অন্যের টাকায় আপনি ব্যবসা করবেন, তাদেরকে প্রফিট দিবেন এবং মাঝখান থেকে আপনি প্রচুর পরিমান লভ্যাংশ আপনার পকেটে রাখবেন। J
এখন সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন আসবে যে, কেন একজন বিনিয়োগকারী আমার ওয়েব সাইটে এসে বিনিয়োগ করবে?
এই প্রশ্নের সহজ উত্তর হলো- আপনি বিনিয়োগকারীকে আপনার ওয়েবসাইটে বিনিয়োগের জন্য উচ্চ লভ্যাংশ প্রদানের প্রতিশ্রুত দিচ্ছেন তাই বিনিয়োগকারী আপনার ওয়েবসাইটের মাধমে আপনার কাছে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হচ্ছে।
উদাহরণঃ ধরুন কোন একটা প্রতিষ্ঠান অফার করলো আপনি যদি তাদের ব্যবসায়ে ৮০০০ টাকা বিনিয়োগ করেন তাহলে তারা আপনাকে ডেইলি ৫% পে করবে মোট ৩০ দিন। ৮০০০ টাকার ৫০%=৪০০ টাকা। অর্থাৎ ৩০ দিনে আপনি টোটাল রিটার্ন পাচ্ছেন ৪০০*৩০=১২০০০ টাকা! তার মানে আপনি আপনার বিনিয়োগকৃত ৮০০০ টাকার ৫০% লাভ পাচ্ছেন মাত্র এক মাসে। অর্থাৎ আপনার ৮০০০ টাকা দ্বিগুন হিসেবে ফিরে আসছে আপনার কাছে মাত্র ২ মাসে!! ভাবতে পারেন?
হ্যাঁ, অবিশ্বাস্য লাগছে তো! লাগারই কথা। যদি HYIP প্রোগাম সম্পর্কে আপনার ধারণা না থাকে তাহলে অবাকই হওয়ার কথা। এমনও অনেক HYIP সাইট আছে যারা ডেইলি ১০% বা তার চেয়ে বেশি প্রফিট অফার করে! আমি চেষ্টা করবো এই টিউনে আমার সীমিত জ্ঞানে HYIP সম্পর্কে যা জানি (আমার অভিজ্ঞতা) তা শেয়ার করতে।
আপনি আরো অবাক হবেন জেনে যে এমন বহু HYIP ওয়েবসাইট আছে মাত্র কয়েকদিন বয়সেই তাদের কাছে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগকৃত অর্থের পরিমান কয়েক হাজার থেকে কয়েক লক্ষ ডলার পর্যন্ত (জ্বি, আবারও বলছি কয়েক হাজার থেকে কয়েক লক্ষ ডলার! নট টাকা!)।
প্রমাণ হিসেবে আপনি নিচের স্ক্রীনশটগুলো একটু দেখলেই বিষয়টা কিছুটা হলেও পরিস্কার হবে আশাকরি।
নতুন অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন যে- ভাইয়া, HYIP সাইটগুলো এই যে অতি উচ্চ প্রফিট অফার করে তারা কি সত্যিই বিনিয়োগকারীদেরকে ঐ হারে প্রফিট দেয়?
এক বাক্যে উত্তর- হ্যাঁ প্রফিট দেন। এবং প্রফিট দেন বলেই বিনিয়োগকারীরা HYIP এ বিনিয়োগ করে থাকেন।
প্রশ্নঃ HYIP সাইটগুলো তাদের প্রস্তাবিত উচ্চ হারের প্রফিট বিনিয়োগকারীদের কিভাবে দেয়? এত প্রফিট দেওয়া কিভাবে সম্ভব?
উত্তরঃ সত্যিই এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। HYIP সাইটগুলো সাধারণত যে পরিমান প্রফিট অফার করে তা বলতে গেলে অবিশ্বাস্য-ই!
এটা মূলত যার যার স্ট্রাটেজি। তবে সাধারণত অধিকাংশ HYIP এডমিন একজনের বিনিয়োগকৃত টাকা অন্যজনকে প্রফিট দিয়ে ব্যালান্স দাড় করে এবং সেটা কোন হাই প্রফিটেবল বিজনেসে ইনভেস্ট করে বিনিয়োগকারীদের টাকা পরিশোধ করে।
ধরুন আপনার হাইপ সাইটে ২য় দিন থেকে বিনিয়োগ শুরু হলো এবং দিন শেষে দেখলেন ৫০০ ডলার বিনিয়োগ হয়েছে। মনেকরি আপনার সাইটের ইনভেস্টমেন্ট প্লান ছিল ৬% ডেইলি। সেক্ষেত্রে যে বিনিয়োগকারী (বা যেসব বিনিয়োগকারী) এই ৫০০ ডলার বিনিয়োগ করলো তাদেরকে আপনি প্রতিদিন প্রফিট দিবেন ৫০০ ডলার এর ৬%=৩০ ডলার। অর্থাৎ আপনি যদি বিনিয়োগকারীদের ঐ ৫০০ ডলার তাদের ফেরত দিতে যান তাহলে সময় পাবেন ৫০০/৩০=প্রায় ১৭ দিন। এবার ভাবুন এই যে ১৭ দিন ধরে আপনি তাদের টাকা তাদেরকে ফেরত দিচ্ছেন এর ভিতরে আরও অনেক বিনিয়োগকারীই আপনার সাইটে ডিপোজিট করবে। এভাবে প্রতিদিনই আপনার ব্যালান্স বাড়তে থাকবে।
এখন আপনাকে সিদ্ধান্ত নিয়ে হবে এই বিপুল পরিমান টাকা আপনি কোথায় ইনভেস্ট করে বা কি ব্যবসা করে আপনার সাইটের মেম্বরদের টাকা পরিশোধ করবেন।
তবে এক্ষেত্রে আরেকটা কথা না বললেই নয় যে, এমন বহু হাইপ এডমিন আছেন যারা এর টাকা ওকে দিয়ে কিছুদিন মার্কেটে থেকে বিরাট অংকের একটা অর্থ হাতিয়ে নিয়ে মার্কেট থেকে হারিয়ে যান। যা সম্পূর্ণ অবৈধ্য আয়।
তবে আমার দৃষ্টিতে হাইপ সাইট থেকে প্রাপ্ত টাকা ফরেক্স ট্রেড করে খুব ভালোভাবে বিনিয়োগকারীদের প্রফিট দেওয়া সম্ভব।
বিঃদ্রঃ আমার এই টিউন পড়ে যদি কেউ হাইপ বিজনেস শুরু করেন এবং সেখানে অসদুপায় অবলম্বন করে কারো টাকা মেরে দেন সেক্ষেত্রে আমি কোন ধরণের দায়-ভার গ্রহণ করবো না। এখানে আইনগত দায়-ভারের কোন ব্যাপার নেই। কারণ সাইটগুলো এতটা সিকিউর করে করে করা হয় যে আপনাকে খুঁজে পাওয়ার কোন উপায় নেই। কিন্তু একজন মুসলিম হিসেবে প্রতারণার দায়ে, ঋণের দায়ে আপনাকে মৃত্যুর পরে হিসাব দিতে হবে। এবং আপনি প্রতারণা করলে সেই পাপের ভাগ আমি গ্রহণ করবো না। কারণ আমি শুধুমাত্র বিনিয়োগকৃত টাকার সঠিকভাবে ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীকে প্রফিট দেওয়ার পরামর্শই দিচ্ছি।
যাহোক, আজ এপর্যন্তই। আগামী পর্বে আলোচনা করবো কিভাবে এই হাইপ সাইট করতে হয়, আনুসঙ্গিক খরচ, প্লান, এই বড় ধরণের অর্থ কোথায় বিনিয়োগ করে বৈধ্যভাবে প্রফিট করে বিনিয়োগকারীদের টাকা পরিশোধ করা যায় ইত্যাদি নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন।
আর হ্যাঁ, HYIP সম্পর্কিত আপনার যেকোন প্রশ্ন করতে পারেন টিউমেন্টের মাধ্যমে। আমি দ্রুতই উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
ধন্যবাদ।
আমি এম কে রহমান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 15 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 48 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
প্রফেশনাল মানি মেকিং ওয়েবসাইট ডিজাইনার