কেন কিভাবে ! কম্পিউটার ও ইন্টারনেট

————————–— بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ ————————–—

সুপ্রিয় টেকটিউনস কমিউনিটি, সবাইকে আন্তরিক সালাম শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমার আজকের টিউনটি।

আমাদের এই বিশ্ব জগত এখন ২০১৫। আমরা সভত্যায় কতটা এগিয়েছি সেটা দেখানোর জন্যই আজকে আমার এই টিউনটি। আজ আমরা প্রথম এ জানবো আজকের এই কম্পিউটার থেকে শুরু  করে আবিষ্কার এর প্রথম কম্পিউটার এর ইতিহাস। চলুন তাহলে শুরু করা যাক !

কম্পিউটার এর ইতিহাস

বর্তমান প্রযুক্তিতে কম্পিউটারের অবদানের অন্তরালে রয়েছে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মানুষের নিরলস পরিশ্রম, উদ্ভাবনী শক্তি ও গবেষণার স্বাক্ষর। প্রাগৈতিহাসিক যুগে গণনার যন্ত্র উদ্ভাবিত বিভিন্ন কৌশল / প্রচেষ্টাকে কম্পিউটার ইতিহাস বলা যায়। প্রাচীন কালে মানুষ সংখ্যা বুঝানোর জন্য ঝিনুক, নুড়ি, দড়ির গিট ইত্যাদি ব্যবহার করত। পরবর্তীতে গণনার কাজে বিভিন্ন কৌশল ও যন্ত্র ব্যবহার করে থাকলেও অ্যাবাকাস (Abacus) নামক একটি প্রাচীন গননা যন্ত্রকেই কম্পিউটারের ইতিহাসে প্রথম যন্ত্র হিসেবে ধরা হয়। অর্থাৎ অ্যাবাকাস থেকেই কম্পিউটারের ইতিহাসের শুভযাত্রা। এটি আবিষ্কৃত হয় খ্রিষ্টপূর্ব ২৪০০ সালে ব্যাবিলনে। অ্যাবাকাস ফ্রেমে সাজানো গুটির স্থান পরিবর্তন করে গননা করার যন্ত্র। খ্রিস্টপূর্ব ৪৫০/৫০০ অব্দে মিশরে বা চীনে গননা যন্ত্র হিসেবে অ্যাবাকাস তৈরি হয়।

১৬১৬ সালে স্কটল্যান্ডের গণিতবিদ জন নেপিয়ার গণনার কাজে ছাপা বা দাগ কাটাকাটি/ দন্ড ব্যবহার করেন। এসব দন্ড নেপিয়ার (John Napier) এর অস্থি নামে পরিচিত।

১৬৪২ সারে ১৯ বছর বয়স্ক ফরাসি বিজ্ঞানী ব্লেইজ প্যাসকেল সর্বপ্রথম যান্ত্রিক ক্যালকুলেটর আবিষ্কার করেন। তিনি দাঁতযুক্ত চাকা বা গিয়ারের সাহায্যে যোগ বিয়োগ করার পদ্ধতি চালু করেন।

১৬৭১ সালের জার্মান গণিতবিদ গটফ্রাইড ভন লিবনিজ প্যাসকেলের যন্ত্রের ভিত্তিতে চাকা ও দন্ড ব্যবহার করে গুণ ও ভাগের ক্ষমতাসম্পন্ন আরো উন্নত যান্ত্রিক ক্যালকুলেটর তেরি করেন। তিনি যন্ত্রটির নাম দেন রিকোনিং যন্ত্র (Rechoning Mechine)। যন্ত্রটি তাত্ত্বিক দিক দিয়ে ভাল হলেও যান্ত্রিক অসুবিধার জন্য জনপ্রিয় হয়ে উঠেনি। পরে ১৮২০ সালে টমাস ডি কোমার রিকোনিং যন্ত্রের অসুবিধা দূর করে লিবনিজের যন্ত্রকে জনপ্রিয় করে তোলেন।

পৃথিবীর প্রথম কম্পিউটার (এনিয়াক)

উনিশ শতকের শুরুর দিকে আধুনিক একটি যন্ত্রের নির্মাণ ও ব্যবহারের ধারণা (যা কেবলমাত্র যান্ত্রিকভাবে, মানে যেকোনও রকম বুদ্ধিমত্তা ব্যতিরেকে, গাণিতিক হিসাব করতে পারে) প্রথম সোচ্চার ভাবে প্রচার করেন চার্লস ব্যাবেজ। তিনি এটির নাম দেন ডিফারেন্স ইন্জিন (Difference Engine)। এই ডিফারেন্স ইঞ্জিন নিয়ে কাজ করার সময় (১৮৩৩ সালে) তিনি অ্যানালিটিক্যাল ইন্জিন নামে আরও উন্নত ও সর্বজনীন একটি যন্ত্রে ধারনা লাভ করেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় যন্ত্র ও অর্থের অভাবে কোনোটির কাজই তিনি শেষ করতে পারেননি।

কম্পিউটার বিজ্ঞানের সত্যিকার সূচনা হয় অ্যালান টুরিং এর প্রথমে তাত্ত্বিক ও পরে ব্যবহারিক গবেষণার মাধ্যমে।

বিশ শতকের মধ্যভাগ থেকে আধুনিক কম্পিউটারের বিকাশ ঘটতে শুরু করে। ১৯৭১ সালে মাইক্রোপ্রসেসর উদ্ভাবনের ফলে মাইক্রোকম্পিউটারের দ্রুত বিকাশ ঘটতে থাকে। বাজারে প্রচলিত হয় বিভিন্ন প্রকৃতি ও আকারের কম মূল্যের অনেক রকম পার্সোনাল কম্পিউটার (Personal Computer) বা পিসি (PC)। সে সঙ্গে উদ্ভাবিত হয়েছে অনেক রকম অপারেটিং সিস্টেম, প্রোগ্রামের ভাষা, অগণিত ব্যবহারিক প্যাকেজ প্রোগ্রাম। এরসাথে ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটেছে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেটের এবং সংশ্লিষ্ট সেবা ও পরিসেবার। কম্পিউটার শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত ও সম্প্রসারিত হয়েছে অসংখ্য প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক কম্পিউটার শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান। সাম্প্রতিক কালে কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি (Information Technology) বা আইটি (IT) ব্যবসা-বাণিজ্যের বিরাট অংশ দখল করেছে এবং কর্মসংস্থান হয়ে পড়েছে অনেকাংশেই কম্পিউটার নির্ভর।

যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টেল কর্পোরেশন ১৯৭১ সালে মাইক্রোপ্রসেসর উদ্ভাবন করলে কম্পিউটারের আকৃতি ও কার্যক্ষমতায় এক বিরাট বিপ্লব সাধিত হয়। বাজারে আসতে শুরু করে মাইক্রোপ্রসেসর ভিত্তিক কম্পিউটার। ১৯৮১ সালে বাজারে আসে আই.বি.এম কোম্পানির পার্সোনাল কম্পিউটার বা পিসি। এর পর একের পর এক উদ্ভাবিত হতে থাকে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মাইক্রোপ্রসেসর এবং তৈরি হতে থাকে শক্তিশালী পিসি। আই.বি.এম কোম্পানি প্রথম থেকেই আই.বি.এম কমপ্যাটিবল কম্পিউটার (IBM compatible computer) তৈরির ক্ষেত্রে কোনো বাধা-নিষেধ না রাখায় এ ধরনের কম্পিউটারগুলির মূল্য ব্যাপকহারে হ্রাস পায় এবং এর ব্যবহারও ক্রমাগত বাড়তে থাকে। অন্যদিকে আই.বি.এম কোম্পানির পাশাপাশি অ্যাপল কম্পিউটার ইনকর্পোরেট (Apple Computer Inc) তাদের উদ্ভাবিত অ্যাপল-ম্যাকিনটোশ (Apple-Macintosh) কম্পিউটার বাজারে ছাড়ে। কিন্তু অ্যাপল কোম্পানি তাদের কমপ্যাটিবল কম্পিউটার তৈরির ক্ষেত্রে কোনোরূপ উদারতা প্রদর্শন না করায় ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারের মূল্য থেকে যায় অত্যধিক বেশি, যার ফলে অ্যাপল তেমন জনপ্রিয়তা লাভ করতে পারে নি। তবে বিশেষ ধরনের কিছু ব্যবহারিক সুবিধার কারণে মূলত মুদ্রণ শিল্পে অ্যাপল-ম্যাকিনটোশ কম্পিউটার ব্যাপকভাবে ব্যবহূত হতো।

বাংলাদেশে কম্পিউটারে ইতিহাস

বাংলাদেশে কম্পিউটার ব্যবহারের সূচনা হয় ষাটের দশকে এবং নববই-এর দশকে তা ব্যাপকতা লাভ করে।

দশকের মধ্যভাগ থেকে এ দেশে তথ্য প্রযুক্তি ব্যাপক পরিচিতি লাভ করতে শুরু করে। পাকিস্তান পরমাণু শক্তি কমিশনের পরমাণু শক্তি কেন্দ্র, ঢাকা-তে ১৯৬৪ সালে স্থাপিত হয় বাংলাদেশের (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) প্রথম কম্পিউটার। এটি ছিল আইবিএম (International Business Machines - IBM) কোম্পানির 1620 সিরিজের একটি মেইনফ্রেম কম্পিউটার (Mainframe Computer)। যন্ত্রটির প্রধান ব্যবহার ছিল জটিল গবেষণা কাজে গাণিতিক হিসাব সম্পন্নকরণ।

ষাটের দশকে দেশে ও বিদেশে বৈজ্ঞানিক গবেষণাসহ ব্যাংক-বীমা ও ব্যবসা-বাণিজ্যে দ্রুত প্রসার ঘটতে শুরু করে; এবং এজন্য রুটিন হিসাবের পরিমাণ যেমন বৃদ্ধি পায় তেমনি প্রয়োজন হয়ে পড়ে হিসাবে দ্রুততা আনয়নের। বড় বড় অনেক প্রতিষ্ঠানে হাতে-কলমে হিসাব পরিচালনা প্রায় অসম্ভব হয়ে ওঠে। এসময় দেশের কয়েকটি বৃহৎ প্রতিষ্ঠান ব্যয়বহুল মেইনফ্রেম কম্পিউটার স্থাপন করে। ষাটের দশকের শেষ দিকে তদানীন্তন হাবিব ব্যাংক IBM 1401 কম্পিউটার এবং ইউনাইটেড ব্যাংক IBM 1901 কম্পিউটার স্থাপন করে। প্রধানত ব্যাংকের যাবতীয় হিসাব-নিকাশের জন্য ব্যবহূত এসব কম্পিউটার ছিল তৃতীয় প্রজন্মের মেইনফ্রেম ধরনের।

স্বাধীনতার পূর্বে, ১৯৬৯ সালে পরিসংখ্যান ব্যুরোতে স্থাপিত হয় একটি IBM 360 কম্পিউটার। আদমজী জুট মিলেও এ সময় একটি মেইনফ্রেম কম্পিউটার স্থাপিত হয়েছিল। সীমিত পরিসরে হলেও স্বাধীনতা পূর্বকালে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, ফলিত পদার্থবিজ্ঞান, তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক্স কৌশল প্রভৃতি বিষয়ের পাঠ্যক্রমে কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার-এর অন্তর্ভুক্তি শুরু হয়। ১৯৭২-এর পর থেকে পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো নামক প্রতিষ্ঠানে স্থাপিত হয় IBM 370, IBM 9100 এবং IBM 4341 প্রভৃতি বৃহৎ কম্পিউটার।

বাংলা সফটওয়্যার উদ্ভাবনের ইতিহাস

কম্পিউটারে প্রথম বাংলা লেখা সম্ভব হয় ১৯৮৭ সালে এবং এ সাফল্যের কৃতিত্ব মাইনুল ইসলাম নামক একজন প্রকৌশলির। তিনি নিজের উদ্ভাবিত বাংলা ফন্ট ‘মাইনুলিপি’ ব্যবহার করে অ্যাপল-ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারে বাংলা লেখার ব্যবস্থা করেন। এ ক্ষেত্রে বাংলার জন্য আলাদা কোনো কি-বোর্ড (keyboard) ব্যবহার না করে ইংরেজি কি-বোর্ড দিয়েই কাজ চালানো হয়েছিল। ইংরেজি ও বাংলার আলাদা ধরনের বর্ণক্রম এবং বাংলার যুক্তাক্ষরজনিত সমস্যা সমাধান করা হয়েছিল ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারের চার স্তর কি-বোর্ড (4 layer keyboard) ব্যবহারের সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে। মাইনুলিপির পর পরই ‘শহীদলিপি’ ও ‘জববারলিপি’ নামে আরও দুটো বাংলা ফন্ট উদ্ভাবিত হয় এবং একই পদ্ধতিতে ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারে ব্যবহূত হয়। পরবর্তী বছরে অর্থাৎ ১৯৮৮ সালে আনন্দ কম্পিউটার্স নামক একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে তৈরি হয় অ্যাপল-ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারে ব্যবহার উপযোগী প্রথম ইন্টারফেস ‘বিজয়’। এ সময়েই প্রথম বাংলা কি-বোর্ড লে-আউট তৈরি হয়। প্রথম পর্যায়ের বাংলা কি-বোর্ডগুলির মধ্যে ‘বিজয়’ এবং ‘মুনীর’ উল্লেখযোগ্য। ইন্টারফেস পদ্ধতিতে বাংলা ফন্ট ও বাংলা কি-বোর্ডকে কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেমের (Operating System or OS) সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয় এবং এ কি-বোর্ডকে ক্রিয়াশীল করে ও ফন্ট নির্বাচন করে কম্পিউটারে বাংলা লেখা যায়। বিজয় ইন্টারফেসটি ছিল ম্যাকিনটোশ ভিত্তিক এবং অ্যাপল-ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারের মূল্য অত্যধিক হওয়ায় এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিলো সীমিত, মূলত প্রকাশনার কাজেই তা ব্যবহূত হতো।

আই.বি.এম কম্পিউটারের ব্যবহারকারী আগাগোড়াই বেশি এবং এ বিপুলসংখ্যক ব্যবহারকারীর কথা বিবেচনা করেই ১৯৯২ সালের প্রথম দিকে ‘বর্ণ’ নামে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলা ওয়ার্ডপ্রসেসিং সফটওয়্যার উদ্ভাবন করে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের দুজন ছাত্র রেজা-ই আল আমিন আব্দুল্লাহ (অংক) ও মোঃ শহীদুল ইসলাম (সোহেল)। প্রতিভাবান দু কিশোর প্রোগ্রামারের নিজস্ব প্রতিষ্ঠান সেইফওয়ার্কস-এর পক্ষ থেকে এ স্বয়ংসম্পূর্ণ ওয়ার্ডপ্রসেসরটির উদ্ভাবন ছিল বাংলা সফটওয়্যারের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী ঘটনা। ওয়ার্ডপ্রসেসরটি ছিল ‘ডস’ (Disk Operating System - DOS) ভিত্তিক, কিন্তু প্রোগ্রামটির নিজস্ব আঙ্গিক ছিল উইন্ডোস (Windows)-এর মতো। বর্ণ-তে তিন ধরণের কি-বোর্ড ব্যবহার করা যেতো মুনীর, বিজয় এবং ইজি কি-বোর্ড (easy keyboard)। বর্ণ সফটওয়্যারটিতে কি-বোর্ড পুনর্গঠনের (customise) সুবিধাও অন্তর্ভুক্ত ছিল। অর্থাৎ, কেউ ইচ্ছা করলে নিজের পছন্দ বা সুবিধা অনুযায়ী নতুন কি-বোর্ড লে-আউট তৈরি করে নেওয়ার স্বাধীনতা ছিল। পরবর্তীতে মাইক্রোসফট কর্পোরেশন ক্রমাগত উন্নত থেকে উন্নততর সংস্করণের ওয়ার্ড প্রসেসর বাজারে ছাড়তে থাকলে ১৯৯৩ সালে বাংলা ফন্ট ও বাংলা কি-বোর্ডকে আই.বি.এম কম্পিউটারের আধুনিক অপারেটিং সিস্টেম ‘মাইক্রোসফট উইন্ডোজ’ (Microsoft Windows)-এর সঙ্গে ব্যবহারের জন্য ইন্টারফেস ‘বিজয়’ উদ্ভাবিত হয়। এর পর ১৯৯৪ সালে ‘লেখনী’ নামেও একটি ইন্টারফেস তৈরি হয়। যদিও ‘আবহ’ (১৯৯২-এর শেষে উদ্ভাবিত) আই.বি.এম কম্পিউটারে ব্যবহার উপযোগী প্রথম ইন্টারফেস, কিন্তু কিছু ত্রুটির কারণে এটি তেমন একটা ব্যবহূত হয়নি।

 

আশা করি টিউনটি দেখে বুঝতেই পারছেন আজকের বিশ্বে আমরা কোথায় দাড়িয়ে ! আর তাহলে ভাবুন ২০৫০ সাল এ কোথায় দাড়াবো। যাইহোক এভার আসা যাক আজকের ইন্টারনেট এবং সেইকাল এর ইন্টারনেট এর ইতিহাস সম্পর্কে জানুন ও দেখুন!!

ইন্টারনেটের ইতিহাস

ইন্টারনেটের ইতিহাস শুরু হয়, ইলেকট্রনিক কম্পিউটারের অগ্রগতির সাথে সাথে ১৯৫০ সালে। ইন্টারনেট সম্পর্কে জনসাধারণ প্রথম ধারণা প্রবর্তিত হয়েছিল, যখন কম্পিউটার বিজ্ঞান অধ্যাপক লিওনার্ড ক্রাইনরক তার গবেষণাগার ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেস (ইউসিএলএ) থেকে অর্পানেটের মাধ্যমে একটি বার্তা স্ট্যানফোর্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআরআই) তে পাঠান। নেটওয়ার্ক সরঞ্জামের দ্বিতীয় অংশ সেখানে স্থাপিত করা হয়েছিল। ১৯৬০ সালের শেষ দিকে এবং ১৯৭০ সালের প্রথম দিকে প্যাকেট সুইচিং নেটওয়ার্ক যেমন ইউকের এনপিএল, সিক্লিডিস, মেরিট নেটওয়ার্ক, টিমনেট এবং টেলেনেট এর অর্পানেটে, মার্ক I বিভিন্ন প্রোটোকল ব্যবহার করে উন্নত করা হয়। অর্পানেট বিশেষ নেতৃত্ব দেয় ইন্টারনেটওয়ার্কিং এর প্রোটোকলের উন্নয়নের জন্য, যেখানে নেটওয়ার্কসমূহের একাধিক পৃথক নেটওয়ার্ক একটি নেটওয়ার্কের সাথে যোগ করা যেতে পারে।

অর্পানেটের অ্যাক্সেসের জন্য ১৯৮১ সালে একে সম্প্রসারিত করা হয়, যখন ন্যাশনাল সাইন্স ফাউন্ডেশন (এনএসএফ) কম্পিউটার সাইন্স নেটওয়ার্কের (সিএসএনএটি) উন্নয়ন করে এবং আবার ১৯৮৬ সালে যখন এনএসএফনেট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গবেষণা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সুপার কম্পিউটার সাইটগুলোতে সংযুক্ত হওয়ার সুযোগ দেয়। ১৯৮০ সালের শেষের দিকে এবং ১৯৯০ সালের শুরুর দিকে বাণিজ্যিক ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারীরা (আইএসপির) আবির্ভাব হতে থাকে। ১৯৯০ সালে অর্পানেট কর্মবিরত করা হয়। ১৯৯৫ সালে ইন্টারনেটকে বানিজ্যিক পণ্যে পরিণত হয়, যখন এনএসএফনেট কর্মবিরত হয়, ইন্টারনেট ব্যবহারের বাণিজ্যিক বহন শেষ নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে ফেলা হয়।

১৯৯০ সালের মাঝামাঝি থেকে, ইন্টারনেট সংস্কৃতিতে ও বানিজ্যে এবং কাছাকাছি-তাৎক্ষণিক যোগাযোগ যেমন, ইলেকট্রনিক মেইল, ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং, ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রোটোকল (ভিওআইপি) "ফোন কল", দ্বি-মুখ ইন্টারেক্টিভ ভিডিও কল এবং ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবসহ ইন্টারনেট ফোরাম, ব্লগ, সামাজিক নেটওয়ার্কিং পরিষেবা এবং অনলাইনে কেনাকাটার ওয়েব সাইটসমূহে একটি বিপ্লবী প্রভাব বিস্তার করে।

গবেষণার এবং শিক্ষা সম্প্রদায় অব্যাহত বিকাশ এবং উন্নত নেটওয়ার্ক যেমন, এনএসএফস'র অতি উচ্চ-দ্রুতগতির ব্যাকবোন নেটওয়ার্ক পরিষেবা (ভিবিএনএস), ইন্টারনেট২ এবং জাতীয় ল্যামডারেল ব্যবহার করে। বড় ধরণের তথ্য আদান-প্রদান হয়ে থাকে উচ্চতর গতিসম্পন্ন ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্কের মধ্যে যা ১-Gbit/s, ১০-Gbit/s, বা আরও বেশি হয়।

আজ ইন্টারনেট অনলাইন তথ্য, ব্যবসা, বিনোদন এবং সামাজিক নেটওয়ার্কিং এর জন্য ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে।

 

প্যাকেট সুইচিং

|thumb|right|Len Kleinrock and the first Interface Message Processor. একটি লজিক্যাল নেটওয়ার্কের সাথে কিছু ভিন্ন ভিন্ন ফিজিক্যাল নেটওয়ার্ক যুক্ত থাকবে নেটওয়ার্ক তৈরীর জন্য এটা ছিল একটি সমস্যা, যেটা প্যাকেট সুইচিং ধারনাকে এগিয়ে আনে। ১৯৬০ দশকের সময়, পল ব্যারন (আরএএনডি কর্পোরেশন) আমেরিকান মিলিটারির জন্য একটি নেটওয়ার্ক উৎপাদন করেন। ব্যারনের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পাঠানো তথ্য ভাগ হয়ে যেত, তিনি এটিকে ম্যাসেজ-ব্লক নামে দেন। স্বাধীনভাবে, ডোনাল্ড ডেভিস (ন্যাশনাল ফিজিক্যাল ল্যাবরেটরি) একটি অনুরূপ নেটওয়ার্ক ভিত্তি প্রস্তাব এবং বিকশিত করে, যার নাম দেন প্যাকেট-সুইচিং, শব্দটি যা এটার জন্য উপযুক্ত ছিল। লিওনার্ড ক্লেইনরক (এমআইটি) এই প্রযুক্তির গাণিতিক ত্বত্ত তৈরী করেন। টেলিফোন এর সার্কিট-সুইচিং প্রযুক্তির তুলনায় প্যাকেট-সুইচিং প্রযুক্তি ছিল ভাল, ব্যান্ডউডথের যথাযথ ব্যবহার এবং দ্রুত সাড়া পাওয়া যেত।

প্যাকেট সুইচিং হল একটি দ্রুত স্টোর-এবং-সামনে নেটওয়ার্কিং নকশা যেটা ম্যাসেজগুলোকে ভাগ করে আরবিট্রারি প্যাকেটগুলোয় পরিণত করে, রাউটিং ডিসিশন এটা তৈরী করে প্রতি প্যাকেটে। প্রথমদিকের নেটওয়ার্কগুলো ম্যাসেজ সুইচ ব্যবস্থা ব্যবহার করত, যেটায় শক্ত একটি রাউটিং গঠন সিঙ্গেল পয়েন্ট ভুলের প্রবনতা থাকত।

 

ইন্টারনেট তৈরীতে নেটওয়ার্কসমূহ

এনপিএল

১৯৬৫ সালে ন্যাশনাল ফিজিক্যাল ল্যাবরেটরি (যুক্তরাজ্য) ডোনাল্ড ডেবিস প্রস্তাব করেন জাতীয় তথ্য নেটওয়ার্ক যেটা হবে প্যাকেট সুইচিং কে ভিত্তি করে। এটি জাতীয়ভাবে গ্রহন করা হয়নি, কিন্তু ১৯৭০ এ তিনি নকশা করেন এবং তৈরী করেন মার্ক-১ প্যাকেট সুইচ নেটওয়ার্ক যেটা ল্যাবরেটরির কাজে ব্যবহার করা হয় এবং এভাবে প্রমান করেন যে এটা চালান যায়।১৯৭৬-এ ১২টি কম্পিউটার এবং ৭৫ টি টার্মিনাল ডিভাইস একত্র করা হয় এবং ১৯৮৬ সালে ইন্টারনেট এর জায়গা দখল করে নেয়ার আগ পযর্ন্ত আরো যোগ করা হয়।

সাইক্লেডস

এটি ছিল একটি প্যাকেট সুইচিং নেটওয়ার্ক যার নকশা এবং পরিচালনা করেন একজন ফ্রেন্ঞ্চ গবেষক লুইস পোওজিন। এটার প্রথম বিশদব্যাখ্যা করা হয় ১৯৭৩-এ, এটা তৈরী করা হয়েছিল অর্পানেট শুরু করার বিকল্প হিসেবে এবং নেটওয়ার্ক ভিত্তিক গবেষনাকে সহায়তা প্রদান করতে। এটাই প্রথম নেটওয়ার্ক যেখানে হোস্টরা (নেটওয়ার্কের জায়গায়) তাদের পাঠানো ডাটার নির্ভরযোগ্যতার জন্য দায়ী থাকত। অনির্ভরযোগ্য তথ্য পাঠানোর জন্য অনির্ভরযোগ্য ডেটাগ্রাম এবং এন্ড টু এন্ড প্রোটোকল ব্যবস্থা দায়ী।

 

নেটওয়ার্কের ইন্টারনেটে রূপান্তর (১৯৭৯-১৯৯০)

টিসিপি/আইপি
Map of the TCP/IP test network in February 1982

লাতিন আমেরিকা

অন্যান্য অঞ্চলের সাথে, লাতিন আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান ইন্টারনেট অ্যাড্রেসেস রেজিস্ট্রি (LACNIC) এই এলাকার আইপি ঠিকানা, জায়গা এবং অন্যান্য মূল্যবান তথ্য ব্যবস্থাপনা করে। এটির মূল কার্যনিবার্হী ভবন উরুগুয়ে, এটি ডিএনএস রুট, রির্ভাস রুট এবং অন্যান্য সেবা দিয়ে থাকে।

গোফার থেকে ডব্লিউডব্লিউডব্লিউ

This NeXT Computer was used by Sir Tim Berners-Lee at CERN and became the world's first Web server.

অনলাইন জনসংখ্যা ভবিষ্যদ্বানী

জুপিটার রিসার্চ দ্বারা পরিচালিত একটি গবেষনায় দেখা যায় যে, জনসংখ্যার ৩৮% অনলাইন ব্যবহার করলে এটা বুঝা যাবে যে, ২০১১ তে, পৃথিবীর জনসংখ্যার ২২% লোক ইন্টারনেট ব্যবহার করবে নিয়মিত। রিপোর্টে বলা হয় ১•১ বিলিয়ন লোক নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহার করে। গবেষনার জন্য জুপিটার রিসার্চ অনলাইন ব্যবহারকারীদের কে জনসংখ্যা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে যারা প্রতিদিন ইন্টারনেট ব্যবহার করে। এতে সেলুলার টেলিফোন বাদ দেয়া হয়েছে শুধুমাত্র বহুল ব্যবহৃত ইন্টারনেট প্রবেশের মাধ্যমকেই গননা করা হয়েছে যেমন- মডেম।

মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট

ইতিহাস ধারা

ইন্টারনেটের ইতিহাস ধারা উন্নয়নের কিছু ধারনা উঠে এসেছে। বিশেষত, ইন্টারনেট উন্নয়নের দলিলপত্র খুজে পাওয়া কঠিন, অনেক কারনে, যার মধ্যে আছে কেন্দ্রীয় দলিল পত্রের অভাব যেটা ইন্টারনেটের উন্নয়নে অবদান রেখেছে।

 

সর্বশেষ কথা :

আজকের টিউনটি করতে বিভিন্ন স্থান থেকে তথ্য খুজে বের করে আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। জানি না কেমন হয়েছে। ভালো হলে অবশ্যই টিউনমেন্ট/টিউমেন্ট এর মাধ্যমে জানাবেন। আপনাদের টিউনমেন্ট/টিউমেন্ট পেলে আরো নতুন টিউন করতে ভালো লাগলে। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ্য থাকবেন এই কমনায় আসকের মতো বিদায় নিলাম।

 

ফেসবুক টুটইটার | আমার ব্লগ

 

Level 2

আমি তাহসিন হামিম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 12 টি টিউন ও 6 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

আমি খুব সাধারন একজন। প্রযুক্তি নিয়ে লেখালেখি করতে ভালো লাগে । এর থেকে বেশি কিছু বলার নাই।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

আসাধারণ টিউনটি এর জন্য ধনবাদ।

অনেক ভালো লাগলো টিউনটি দেখে ধন্যবাদ।

অনেক সুন্দর লিখেছেন হামিম ভাই প্রিয়তে নিলাম।

আসাধারণ টিউন!

অনেক সুন্দর টিউন ভালো লাগলো।