আসুন খুব সহজেই জেনে নিই বজ্রপাত কেন হয় (সহজ চিত্রের মাধ্যমে) !!!

আসসালামুআলাইকুম টেকটিউনস পরিবারের প্রিয় সদস্যগণ। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব মজার একটি তথ্য। বজ্রপাত কেন হয় এই সম্পর্কে আমাদের অনেকেরেই জানা নেই প্রকৃত কারনটা। আমরা অনেকে মনে করি মেঘে মেঘে ধাক্কা লাগলেই বোধ হয় বজ্রপাত সৃষ্টি হয়। আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষেরই এই ধারণা। মাটিতেই বা কেন এই বজ্র পড়ে তাও আমাদের অনেকেরই জানা নেই। আসুন তবে বুঝার চেষ্টা করি আসল ব্যাপারটা কী ?

মেঘ যখন আকাশে থাকে তখন এর দুইটা দিক বা অংশ আমরা বিবেচনা করতে পারি। স্বাভাবিকভাবেই দুইটা দিকের একটা থাকবে নিচের দিকে অর্থাৎ ভূপৃষ্ঠের দিকে এবং অন্য অংশ থাকবে উপরের দিকে তথা মহাকাশের দিকে। মেঘের নিচের অংশে সাধারণত  ঋণাত্ত্বক আয়ন আর উপরের অংশে থাকে ধনাত্বক আয়ন। নিচের চিত্রটা একটু লক্ষ্য করি-->

চিত্র থেকে আমরা সহজেই উপরের কথাগুলো বুঝতে পারি। চিত্রে দেখা যাচ্ছে মেঘের উপরের অংশে  ধনাত্বক আয়ন আর নিচের অংশে ঋণাত্বক আয়ন অবস্থান নিয়েছে।

এখন আমরা ভূপৃষ্ঠের কথা বিবেচনা করি। ভূপৃষ্ঠের মধ্যকার ধনাত্বক আয়নই মূলত ভূপৃষ্ঠে বজ্রপাতের কারণ। যখন আকাশে প্রচুর মেঘ জমে আর তা ভূপৃষ্ঠের খুব নিকটে চলে আসে তখনই বজ্রপাতের ঘটনাটা ঘটে। নিচের চিত্রটা লক্ষ্য করি-->

উপরের চিত্রে আমরা দেখছি মেঘের নিচের অংশে প্রচুর ঋণাত্বক আয়ন অবস্থান করছে যেগুলো অধিক পরিমাণ হয়ে যাওয়ায় অন্য কোথাও চলে যাওয়ার চেষ্টা করছে। আর এই আয়নগুলো যেহেতু ঋণাত্বক তাই স্বাভাবিকভাবেই এটি কোন ধনাত্বক পথের দিকে ছুটে যেতে চাইবে। যার ফলশ্রুতিতে এগুলো ভূপৃষ্ঠের ধনাত্বক আয়নের দিকে দ্রুত ধাবিত হয়।  কেননা আমরা জানি ধনাত্বক-ঋণাত্বক একে অপরকে আকর্ষন করে।  বজ্রপাতের বেলায় এটিই হয়। আসুন নিচের চিত্রটি দেখি-->

ঋণাত্বক আয়নের আগমন দেখে ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন পদার্থ থেকে সৃষ্ট ধনাত্বক আয়নগুলোও আর নিজেদের অবস্থানে থাকতে পারে না। এগুলোও তখন যথাসম্ভব উপরের দিকে  উঠে যায়।

আর যখনই মেঘে অবস্থিত ঋণাত্বক আয়ন আর ভূপৃষ্ঠের ধনাত্বক আয়নগুলো একে অপরের সংস্পর্শে আশে তখন ইলেক্ট্রনগুলো যাওয়ার রাস্তা খুজে পায়। তখনই আলো জ্বলে উঠে আর মেঘের ইলেক্ট্রনগুলো দ্রুত ভূপৃষ্ঠে চলে যায়। একেই আমরা বজ্রপাত বলি। নিচের ছবিটা দেখি আসুন -->

বজ্রপাতের সময় আলো জ্বলে, এর কারণ হল ইলেক্ট্রন যাওয়ার সময় প্রচুর পরিমণে শক্তি নির্গত করে, যার কিছুটা আলোক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।

আমার মনে হয় লেখাটি পড়ে বজ্রপাত কেন এই সম্পর্কে কিছুটা হলেও জানতে পেরেছেন। মেঘের মধ্যে কেনো বজ্রপাত হয়, এর উত্তরও একই। আমি আগেই বলেছি মেঘের মধ্যেও ধনাত্বক-ঋণাত্ত্বক অংশ থাকে। দুই খন্ড মেঘের মধ্যকার  ধনাত্বক-ঋণাত্বক প্রান্তের  যখন সংযোগ ঘটে তখন মেঘের মধ্যেও একই পদ্ধতিতে বজ্রপাত ঘটে। খুব সিম্পল খুব সহজ।

টিউনটি পড়ে কিছুটা উপকৃত হলেই লেখাটি সার্থক বলে মনে করব। কথা হবে অন্য দিন। আসব নতুন কোন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত আল্লাহ হাফিজ।

 

Level 0

আমি ফজলে রাব্বি শাফি। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 3 টি টিউন ও 8 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

হুম। সবকিছু বুজলুম, কিন্তু আউয়াজ অয় কেনু …. ¿?

শব্দ হয় কেন?

একমত হতে পারলাম না কারন আমরা তো জ়ানি পৃথিবী মুক্ত ইলেকট্রনের আধার । তো এখানে positive charge আসবে কিভাবে… ২য় মেঘে পজিটিভ ও নেগেটিভ চার্য আলাদা হয় কিভাবে??

    আপনার উপস্থাপিত ব্যাক্ষায় বেশ বড়সর ত্রুটি রয়েছে মনে হচ্ছে। কোড হাইড এর উল্লেখিত দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর আবশ্যক। সাথে সাথে আরেকটা বৃহৎ ত্রুটি আছে।

    // ইলেক্ট্রনের আগমন দেখে ভূপৃষ্ঠের প্রোটন কণাগুলোও আর নিজেদের অবস্থানে থাকতে পারে না। এগুলোও তখন যথাসম্ভব উপরের দিকে উঠে যায়। //

    প্রোটন কনা নিউক্লিয়াসে আবদ্ধ থাকে। এগুলো মুক্ত ইলেক্ট্রনের মত চলাচল করতে পারে না। প্রোটন নিউক্লিয়াস থেকে মুক্ত হতে পারে কেবল নিউক্লিয়ার রিএ্যাকশনের মাধ্যমে। এগুলোর উপরের দিকে ওঠার কোন প্রশ্নই আসে না।

      @শিহাব খান: আমি সময় নিয়ে পোস্টটি এডিট করব। এটা প্রোটন হবে না। ভূপৃষ্ঠের মধ্যকার বিভিন্ন ধরনের ক্যাটায়ন বা ধনাত্মক আয়ন হবে। ধন্যবাদ। আর বাকি প্রশ্নের উত্তরগুলি অন্য কমেন্টে দেখুন।

        @ফজলে রাব্বি শাফি: ধন্যবাদ। আপনি কমেন্টে যা যা বললেন সেগুলোই টিউনে দিয়ে দিলে সেটা অনেক সুন্দর হত।
        এখন টেকটিউনসের যা অবস্থা, প্রায় প্রতিদিনই ৫০-৬০ টা টিউন হচ্ছে তাতে পুরোনো টিউন নজরে আশার সম্ভবনা খুবই কম।
        তবুও এডিট করে দিলে টিউনটি ভালই হবে।

    @কোড হাইড:
    আপনার প্রথম ধারনা টা ভুল।
    পৃথিবী মুক্ত ইলেক্ট্রনের আধার নয়। তাহলে এটি নেগেটিভ চার্জযুক্ত হত। পৃথিবী নিউট্রাল, পজেটিভ বা নেগেটিভ কোন চার্জযুক্তই নয়।

    মুলত পৃথিবীর বিভব/potential শুন্য।

    তবে পজেটিভ চার্জযুক্ত কিছুকে পৃথিবীর সংস্পর্শে আনলে পৃথিবী থেকে কিছু ইলেক্ট্রন তাতে চলে যায়, আবার নেগেটিভ চার্জযুক্ত কিছুকে নিয়ে আসলে তা থেকে কিছু ইলেক্ট্রন পৃথিবীতে চলে আসে। তবে সুবৃহৎ পৃথিবীর জন্য এই চার্জ আদান-প্রদানের মান এতই নগন্য যে পৃথিবীর বিভব শূন্য থেকে বৃদ্ধি পায় না বা হ্রাস পায় না।
    যেমন আপনি সমুদ্রে এক বালতি পানি ঢাললে বা সমুদ্র থেকে উঠিয়ে নিলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতার পরিবর্তন হয় না তেমনি কিছু ইলেক্ট্রন এলে বা গেলেও পৃথিবীর বিভব শুন্যই থাকে।

    @কোড হাইড: বেপারটাকে সহজভাবে উপস্থাপন করতে যেয়েই প্রব্লেমটা হইছে। ভূপৃষ্ঠ বলতে এখানে পৃথিবী বুঝাইনি। বুঝাতে চেয়েছি ভূপৃষ্ঠের মধ্যকার ধনাত্মক আয়ন। ভূপৃষ্ঠের মধ্যে অনেক পদার্থই ক্যাটায়ন বা ধনাত্মক আয়ন হিসেবে বিরাজমান থাকে। এগুলোকেই বুঝানো হয়েছে। আশা করি বুঝেছেন।
    আর আকাশে মেঘ খন্ড খন্ড আকারে থাকে। ফলে একটা মেঘের উপরেও আরেকটা মেঘ থাকতে পারে। তখন একটি মেঘের ধনাত্মক প্রান্ত অপর মেঘের ঋণাত্মক প্রান্তর সংযোগ সাধনের ফলেই মেঘের মধ্যেও বজ্রপাত হয়।

@ চাদপুরের ইলিশ এবং সবুজ সাগর- যখন বজ্রপাতের ফলে আলোর সৃষ্টি হয় তখন সেই স্থানের তাপমাত্রা ১৬০০০-৬০০০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হয়ে যায়, যা কিনা সূর্যের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা থেকেও অনেক সময় বেশি হতে পারে। এই তাপমাত্রা তার আশেপাশের বাতাসকে উত্তপ্ত করে খুব দ্রুত। ফলে আশপাশের বাতাস সম্প্রসারিত হওয়া শুরু হয়। বলা বাহুল্য যে তাপমাত্রার মাত্রার তুলনায় বাতাসের সম্প্রসারণ ধীর গতিতে হয়। ফলে সেখানে বাতাসের মধ্যে বিস্ফোরণ ঘটে,ফলে শব্দের সৃষ্টি হয়। আশা করি বুজতে পেরেছেন।

Level 2

আপনার ব্যাখ্যাটা কতটুকু সঠিক জানিনা। অনেকেই দেখলাম সন্দেহ প্রকাশ করল। তবে সত্যি যদি এটিই বজ্রপাতের কারন হয়ে থাকে তাহলে খুব ভাল লিখেছেন।