হ্যালো টেকটিউনস কমিউনিটি, কেমন আছেন সবাই? প্রযুক্তির নিত্য নতুন স্বাদের সাথে নিজেকে মানিয়ে চলছেন আশা করি। তাছাড়া আপনাদের অনেক দিনের চাওয়া টেকটিউনসের রেজিস্ট্রেশন প্যানেল যেহেতু খুলে দিছে সেহেতু এখন তো আপনাদের আনন্দের সীমা নেই। যাইহোক আমার আজকের টপিকস একটু ভিন্ন আপডেট প্রযুক্তি কিন্তু সবার পরিচিত জিনিস নিয়ে। 😕
আমরা অনেকেই টরেন্ট ব্যবহার করি বা অনেকে বুঝি না বলে টরেন্টের ধারে কাছে যায় না। কিন্তু বুঝতে হবে টরেন্ট হলো আধুনিক প্রযুক্তির একটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার। যেটা ফাইল শেয়ারিং সিস্টেমকে একদম চেঞ্জ করে দিছে। এতো দ্রুত এবং আধুনিক পদ্ধতিতে বড় বড় গিগাবাইটের ফাইল শেয়ার করার জন্য আসলেই টরেন্টকে সব প্রযুক্তির একটু উপরেই রাখতে হয়। আসুন তাহলে দেরি না করে গুটি গুটি পায়ে টরেন্ট প্রযুক্তির আদ্যোপান্ত জেনে আসি।
বর্তমানে টরেন্ট খুব পরিচিত শব্দ বিশেষ করে যদি মুভি ডাউনলোডের চিন্তা মাথায় আসে। বড় সাইজের ফাইল, ভিডিও বা সফটওয়্যার ডাউনলোডের জন্য টরেন্ট খুব বেশি ব্যবহারিত হয়।
টরেন্ট ফাইল আসলে কিছুই না শুধু মাত্র একটি ওয়েব এড্রেস যেটা ফাইলের লোকেশনটি নির্দেশ করে। ২০০১ সালে টরেন্ট প্রযুক্তি আবিষ্কার করেন ব্রাম চোহেন (Bram Cohen)। তাহলে কীভাবে টরেন্ট কাজ করে কিংবা এতো দ্রুত ডাউনলোডই বা হয় কীভাবে? নিচে সব প্রশ্নের উত্তর থাকছে। 😈
এখন আমাদের জানার বিষয় টরেন্ট কীভাবে আমাদের এতো ডাটা সেভ করে বা দ্রুত ফাইল ডাউনলোড করে। মূলত টরেন্ট Peer to peer শেয়ারিং মেথড অনুসরণ করে ফাইল ডাউনলোডের সময়। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ডাউনলোডের উপর ভিত্তি করে এটা ডাটা ব্যবহার কমিয়ে দেয়।
১) একটি সার্ভারে ডাটা রাখা থাকে। সেই এড্রেস আমরা টরেন্ট ফাইল আকারে ডাউনলোড করি।
এখন ধরুন আপনি একটি মুভি ডাউনলোড করতে চান।
২) এখন মুভিটি সার্ভারে আছে আর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সেটি ডাউনলোড করা হচ্ছে। আবার অনেক কম্পিউটার থাকবে যাদের মুভি ডাউনলোড শেষ হয়ে গেছে। আবার কেউ হয়তো অর্ধেক ডাউনলোড করে ফেলছে অথবা কেউ শেষের কাছাকাছি ডাউনলোডের। এখন যেহেতু সবাই একই ফাইল বিভিন্ন কম্পিউটার থেকে ডাউনলোড করছে। সেহেতু আপনি ডাউনলোডের সময় যতোগুলো কম্পিউটারে ঐ মুভির ফাইল আছে সবগুলো কম্পিউটার থেকে আপনার ফাইল ডাউনলোড হতে থাকবে। অর্থাৎ ঐ মুভির লিঙ্ক সম্বলিত সকল পিসি সার্ভার হিসাবে কাজ করবে। ফলে আপনি খুব দ্রুত যেকোনো কিছু টরেন্ট থেকে ডাউনলোড করতে পারেন ফলে আপনার ডাটা ব্যবহার এবং খরচ অনেক কমে আসে। আপনি ফাইল দ্রুত ডাউনলোড করতে পারেন।
আরেকটু ভালো বুঝতে,
আপনি নিচের ছবিগুলো খেয়াল করলে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। দেখুন সেখানে প্রথম মেইন সার্ভার থেকে ১, ২ এবং ৩ নম্বর কম্পিউটার কোন ফাইল বা মুভি ডাউনলোড করা শুরু করেছে। তারপর পরবর্তীতে আরও ৩ থেকে ৪ টি কম্পিউটার মেইন সার্ভার প্লাস পূর্বেই ডাউনলোড শুরু করা কম্পিউটার সার্ভার থেকে সাহায্য নিচ্ছে। আর আপনিও এসে মেইন সার্ভার সহ বাকিসব কম্পিউটার থেকে ডাটা হেল্প নিয়ে ডাউনলোড করছেন।
আচ্ছা আপনার কম্পিউটারও কি তাহলে সার্ভার হিসাবে কাজ করে টরেন্ট থেকে ডাউনলোডের সময়?
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যেহেতু যারাই ডাউনলোড করছে তাদের সবার পিসি সার্ভারে রূপ নিচ্চে তাহলে আমার পিসিও কি সার্ভার হয়?
অবশ্যই! আপনি যখন কোন মুভি বা সফটওয়্যার টরেন্ট থেকে ডাউনলোড করবেন তখন দেখবেন ডাউনলোড হওয়ার সময় পাশে কতো স্পিডে আপলোড হচ্ছে সেটাও দেখাবে। যেটা আপনার পিসি সার্ভার থেকে অন্য একজন সাহায্য নিয়ে দ্রুত ঐ ফাইল ডাউনলোড করছে। ফলে আপনার পিসিও সার্ভার হিসাবে কাজ করছে। নিচের ছবি দেখুন,
টরেন্ট থেকে কিছু ডাউনলোড করার সময় কিছু কমন শব্দ থাকে যা হয়তো আমরা বুঝে উঠতে পারি না বা বুঝতে চেষ্টাও করি না। কিন্তু আজকে আমরা সেগুলো সম্পর্কে জানবো।
আপনি যদি কখনও কোন টরেন্ট সাইট থেকে কিছু ডাউনলোড করেন তাহলে দেখবেন শেষে লেখা আছে “please SEED” এটা আসলে কি? আমি নিজেও আগে ভালো জানতাম না এই ওয়ার্ডটি (মেহেদী ভাই কনসেপ্টটা ক্লিয়ার করে দিছিলো)।
SEED হল যারা ইতিমধ্যে ফাইল ডাউনলোড করে ফেলছে তারা করেন, যাতে যারা এখনও সেই ফাইলটি ডাউনলোড করছেন তারা ডাউনলোড শেষ হওয়া পিসি থেকে হেল্প নিয়ে সেই ফাইল ডাউনলোড করতে পারেন। (ঐযে সম্পূর্ণ ডাউনলোড হওয়া পিসি পূরা সার্ভার হয়ে গেছে ঐ ফাইলের জন্য) যেটা আপনার দ্রুত ডাউনলোড করতে সুবিধা করবে।
Peers হলো যারা এখনও সম্পূর্ণ ফাইল ডাউনলোড করেন নি, কিন্তু খন্ড খন্ড পার্ট আছে তাদের কাছ থেকে আপনি Peer এর মাধ্যমে ঐ পার্টগুলো ডাউনলোড করা।
যে ব্যবহারকারি ডাউনলোড করেই টরেন্ট ফাইল ডিলিট করে দিচ্ছেন বা ইন্টারনেট ডিসকানেক্টের জন্য Seed করেন না সেই পিসিকে বোঝায়। এটা ডাউনলোড স্পিড কমিয়ে দেয়।
Up Limit হলো আপনার পিসি থেকে ডাউনলোড শেষেও কতো দ্রুত Seed হচ্ছে তাঁর পরিমাপ।
কি আপনারও মন চাই টরেন্ট ফাইল তৈরি করতে। আসলে বড় বড় সাইজের ফাইল আপনি যদি একাধিক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে চান তাহলে আপনি নিজেই টরেন্ট ফাইল তৈরি করার মাধ্যমে তা শেয়ার করতে পারেন। তাহলে সহজে সেটা সবাই দ্রুত ডাউনলোড করতে পারবে। কিন্তু কীভাবে? আসুন তাহলে চোখের এক পলকে টরেন্ট ফাইল তৈরি করা শিখে ফেলি। 😎
১) আপনার utorrent সফটওয়্যার ওপেন করুন এবং নিচের ছবির মতো File>Create new torrent এ ক্লিক করুন।
২) একটি পপ-আপ উইন্ডো ওপেন হবে। যেখানে আপনার ফাইল ইনফরমেশন দিয়ে সেভ করতে হবে।
৩) পরবর্তী উইন্ডোতে আপনার ফাইলের ধরন নির্বাচন করুন।
৪) তারপর উপরের ছবির মতো Create and Save এ ক্লিক করুন এবং আপনি যাদেরকে সেই ফাইল শেয়ার করতে চান লিঙ্কটি শেয়ার করলেই তারা ফাইল বিদ্যুৎ গতিতে আপনার নিজস্ব টরেন্ট থেকে ডাউনলোড করতে পারবে।
কি আর কোন সমস্যা টরেন্ট নিয়ে? মনে হয় না। আসলাম টরেন্ট সম্পর্কে জানাতে আর আপনার টরেন্ট তৈরি করা শেখায়ে বিদায় নিচ্ছি।
আপনাদের একটা প্রশ্ন করে বিদায় নিবো,
বলুনতো টরেন্ট প্রযুক্তি কতো সালে আবিষ্কার হয়? আপনার টিউমেন্টের সাথে উত্তর থাকলে বুঝবো আপনি টিউন পড়ে মতামত দিয়েছেন। 🙄
ভার্সিটির সময় হয়ে গেছে। একটু পরে ভার্সিটি যেতে হবে। সেখানে শুধু জ্ঞান খেতে হবে আর মুখস্ত সাথে পরীক্ষা! যেকারণে আপনাদের সাথে থাকতেই বেশি মজা লাগে। যাইহোক কেমন লাগলো এবং কোন কিছু জানার আছে কিনা আমাকে মতামতে জানাবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে। 😉
আমি আইটি সরদার। Web Programmer, iCode বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 261 টি টিউন ও 1750 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 22 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি ইমরান তপু সরদার (আইটি সরদার),পড়াশুনা করেছি কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি নিয়ে; পেশা কন্টেন্ট রাইটার এবং মার্কেটার। লেখালেখি করি নেশা থেকে ফেব্রুয়ারি ২০১৩ থেকে। লেখালেখির প্রতি শৈশব থেকেই কেন জানি অন্যরকম একটা মমতা কাজ করে। আর প্রযুক্তি সেটা তো একাডেমিকভাবেই রক্তে মিশিয়ে দিয়েছে। ফলস্বরুপ এখন আমার ধ্যান, জ্ঞান, নেশা সবকিছু...
thanks bro