কেন এমন হয়? [পর্ব-০৩] :: সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের সময় আকাশ লাল দেখায় কেন?

সূর্যোদয় বা সূর্যাস্তের সময় সূর্য এবং এর চারপাশের কিছু অংশ আকাশ লাল দেখায়। এ দু'টি সময়ে সূর্য দিগন্তরেখার খুব কাছাকাছি অবস্থান করে বলে সূর্যরশ্মি ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন অপেক্ষাকৃত ঘন ও পুরু বায়ু স্তর ভেদ করে আমাদের চোখে এসে পৌঁছে। সূর্যের সাদা আলোর মধ্যে সাতটি রং মিশে আছে। বায়ু স্তরের ভাসমান ধুলিকণা ও অন্যান্য বস্তুর ক্ষুদ্র কণার ওপর সূর্যরশ্মি পড়লে এর বিভিন্ন রং বিভিন্ন কোণে বিচ্ছুরিত হয়। যে রংয়ের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য যত কম তার বিচ্ছুরণ বা বিক্ষেপন তত বেশি ঘটে এবং যে আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ যত বেশি তার বিচ্ছুরণ তত কম ঘটে। ফলে বায়ুমণ্ডলে ভাসমান ধূলিকণা, পানিকণা ইত্যাদির মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় সূর্যরশ্মির অপেক্ষাকৃত কম তরঙ্গদৈর্ঘ্য বিশিষ্ট বেগুনি, নীল, আসমানি প্রভৃতি বর্ণের আলোর বিচ্ছুরণ সবচেয়ে বেশি ঘটে। পক্ষান্তরে, লাল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেশি বলে এর বিচ্ছুরণ কম ঘটে এবং এটি সরাসরি পৃথিবীতে চলে আসে। আর এ কারণেই সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় সূর্য এবং এর চারপাশের আকাশ লাল দেখায়।
এখন প্রশ্ন হলো, সূর্যোদয় অপেক্ষা সূর্যাস্তের আকাশ বেশি লাল দেখায় কেন?
হ্যাঁ, স্নিগ্ধ সকালের সামান্য লাল আকাশ যতটা মনোরম, সন্ধ্যার লাল আকাশ ঠিক ততটা নয়। সূর্যোদয়ের লাল আকাশটা বেশ মনোমুগ্ধকর মনে হলেও সূর্যাস্তের পশ্চিম দিগন্ত যেন একটু বেশি লাল এবং কিছুটা তীব্র । এর প্রধান কারণ হলো, বিকেলের বাতাসে ধূলিকণা ও অন্যান্য উপাদানের পরিমাণ থাকে বেশি এবং সকালের বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ থাকে অপেক্ষাকৃত কম । সন্ধ্যা নামার পর রাত যখন গভীর হতে থাকে তখন আমাদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশ আস্তে আস্তে শীতল হয়ে আসতে থাকে। এই শীতল পরিবেশে বাতাসে ভাসমান ধুলিকণা ও অন্যান্য গ্যাসীয় উপাদান থিতিয়ে নিচে নামতে থাকে। ফলে সকালের পরিবেশটা হয় নির্মল ও পরিচ্ছন্ন। আর এই নির্মল বাতাসে সূর্য রশ্মির কম বিচ্ছুরণ ঘটে বলে সকালের লাল রং কিছুটা হালকা দেখায়। পক্ষান্তরে, সূর্যোদয়ের পর বেলা বাড়ার সাথে সাথে সূর্যের প্রখর আলো ও মানুষের কর্মচাঞ্চলের কারণে বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য উপাদানও চারপাশে ছাড়িয়ে পড়ে। ফলে সূর্যাস্তের সময় সূর্যরশ্মি বায়ুমন্ডলে বেশি বিচ্ছুরিত হয়ে পশ্চিম আকাশকে সকালের পূর্ব আকাশের চেয়ে অধিক গাঢ় লালে সজ্জিত করে।
===

পূর্ববর্তী টিউনসঃ

কেন এমন হয়? [পর্ব-০১] :: বিগ ব্যাং বা মহাবিষ্ফোরণ থেকে বিশ্বব্রহ্মান্ডের সৃষ্টি, এমনটি ধারণা করা হয় কেন?

কেন এমন হয়? [পর্ব-০২] :: পৃথিবীর অভ্যান্তর ভাগ এখনও এতটা উত্তপ্ত কেন?

Level 0

আমি অয়ন রহমান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 6 টি টিউন ও 12 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস