গুগল গ্লাস–আধুনিক বিজ্ঞানের বিস্ময়কর আবিষ্কার।

আস-সালামু-আলাইকুম,

প্রিয় টেকটিউনসবাসিরা,কেমন আছেন সবাই???আজ অনেক দিন পর টিউন করার জন্য একটু সময় বের করলাম।

আজ লিখবো গুগল গ্লাস নিয়ে।এই নাম শুনেননাই এমন লোক খুব কমই আছে।যাই হোক,শুরু করা যাক।তবে আগে থেকে বলে নেই যে টেকটিউনসে গুগল গ্লাস নিয়ে খুব একটা ভালো আর বিস্তারিত টিউন পাইনি।তাই এই টিউন লিখছি।ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে মাফ করে দিবেন।

গুগল গ্লাস কিঃ

গুগল গ্লাস হচ্ছে এক ধরনের তারযুক্ত কম্পিউটার যা OHMD প্রযুক্তির অর্থাৎ গুগল গ্লাস হচ্ছে এক ধরনের তারযুক্ত ও প্রজেক্টরযুক্ত চশমা।গুগল উদ্ভাবিত এই গুগল গ্লাস তৈরির প্রধান উদ্দেশ্য হলো প্রযুক্তির বাজারে ""Ubiquitous Computer"" এর প্রচলন করা।

একটি স্মার্ট ফোনে আপনি যা করতে পারেন তার সব কিছুই গুগল গ্লাসে করতে পারবেন।ফোন করা থেকে শুরু করে ছবি তোলা,ভিডিও করা,জিপিএস এর সাহায্যে এলাকা বের করা,গান শোনা ইত্যাদি ইত্যাদি।

এক নজরে গুগল গ্লাসঃ

  • নামঃ গুগল গ্লাস।
  • উদ্ভাবনকারিঃ গুগল।
  • প্রস্তুতকারকঃ ফক্সকন।
  • ধরনঃ Optical Head-Mounted Display Technology.
  • মুল্যঃ ১৫০০ ডলার।
  • অপারেটিং সিস্টেমঃ এন্ড্রোয়েড (ভার্সন ৪.০)।
  • চালিকা শক্তিঃ লিথিয়াম পলিমার ব্যাটারি।
  • সিপিউঃ ডুয়াল কোর, র‍্যামঃ ১জিবি, স্টোরেজঃ ১৬জিবি ফ্ল্যাশ মেমরি।
  • ডিসপ্লেঃ প্রিসম প্রজেক্টর ৬৪০X৩৬০ পিক্সেল।
  • ক্যামেরাঃ ছবিঃ৫মেগাপিক্সেল।ভিডিওঃ৭২০পি হাই ডেফিনেশন ভিডিও।
  • কানেক্টিভিটিঃ ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ, মাইক্রো ইউএসবি।
  • সেন্সরঃ এক্সেলারোমিটার, জাইরোস্কোপ, ম্যাগনেটোমিটার।
  • ওজনঃ ৫০গ্রাম।
  • সাউন্ডঃ বোন কনডাকশন ট্রানসডিউসার।
  • ওয়েবসাইটঃ  http://www.google.com/glass/start/

কিভাবে কাজ করেঃ

গুগল গ্লাসের ডান দিকে একটি ছোট প্রজেক্টর রয়েছে যার সাহায্যে সে স্মার্ট ফোনের ডিসপ্লের মতই কিন্তু তারহীন ভাবে দৃশ্য দেখায় যা এক কথায় অভাবনীয়।এছাড়া ইন্টারনেটের সাহায্যে ভয়েস কমান্ডের মাধ্যমে গুগল গ্লাস কাজ করে।

গুগল গ্লাসের ডান দিকে রয়েছে টাচ প্যাড যা হাতের ইশারায় ব্যবহারকারীকে নিয়ন্ত্রন করতে সাহায্য করে।

এছাড়া এই গ্লাসে রয়েছে ৫মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা যার সাহায্য আপনি ৭২০পি এর মত এইচডি ভিডিও করতে পারবেন সেটা ভয়েস কমান্ডের মাধ্যমে খুব সহজের নিয়ন্ত্রন করা যায় এবং এই গ্লাসে ১৬জিবি বিল্ট-ইন স্টোরেজ রয়েছে।

কিভাবে গুগল গ্লাস কিনবেনঃ

গুগল গ্লাস বানিজ্যিক ভাবে এখনো বাজারে ছাড়া হয়নি।যারা এটা ব্যবহার করছে তারা আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রেখেছিলো এবং এই গ্লাসের সবটাই এক ধরনের Prototype Device যা হয়তো আগামীতে বানিজ্যিকভাবেই বাজারে আসবে।তবে এটির মুল্য ১৫০০ ডলার,যা অনেক বেশি মনে হলেও যখন আপনি ব্যবহার করবেন তখন মনে হবে এই দাম দিয়ে গুগল গ্লাস ঠিকই আছে। 🙂

এই লিঙ্ক যেয়ে আপনাকে বুক করে রাখতে হবে http://www.google.com/glass/start/how-to-get-one/

ডিসপ্লেঃ

গুগল গ্লাস তার ""Explorer"" ভার্সনে Liquid Crystal on Silicon, LED illuminated Display ব্যবহার করছে।গুগল গ্লাসে প্রথমে LED illumination এর মাধ্যমে পোলারাইজড হয়ে Polarizing Beam Splitter(PBS) এর মাধ্যমে  Liquid Crystal on Silicon(LCoS) এ চলে যায়।এরপর সেটা আলোকে প্রতিফলিত করে সক্রিয় পিক্সেলে পরিনত করে ফেলে।তারপর Beam Splitter আলোকে আবার প্রতিফলিত করে ৪৫ডিগ্রী কোনে সেটা চোখে প্রজেক্টরে দেখায়।

সফটওয়্যারঃ

গুগল গ্লাস মোবাইলের মতই "এনড্রয়েড" অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে।অপারেটিং সফটওয়্যার এর ভার্সন ৪.০।এছাড়া কিছু সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশান গুলো আলোচনা করা হলোঃ

My Glass:

গুগল গ্লাসে My Glass এপসের মাধ্যমে ব্যবহারকারী তার গ্লাসকে কনফিগার ও ম্যানেজ করতে পারবে।

Voice Activation:

অনান্য টাচ ডিভাইসের থেকে গুগল গ্লাস অনেকটাই এগিয়ে।কারন এই "Voice Activation" এপসের মাধ্যমে ব্যবহারকারী কথা বলেই পুরো গ্লাসকে নিয়ন্ত্রন করতে পারে।যখন ব্যবহারকারী গ্লাসটি চোখে লাগিয়ে "O.K" বলে তখন গ্লাসটি আপনাআপনি চালু হয়ে যায়।এরপর যদি বলে " Take a Picture" অথবা "Record a Video" তাহলে সেটা ছবি তুলতে অথবা ভিডিও করতে পারে।এছাড়া এই ভয়েস কমান্ডের মাধ্যমে ব্যবহারকারী এসএমএস ও করতে পারে।

কিছু ছবি সমুহঃ

টুকিটাকি তথ্যঃ

  • গুগল গ্লাসের মুল্য ১৫০০ ডলার কিন্তু এর সাথে আরো ২০০+ ডলার যোগ করলে আলাদা ফ্রেম যুক্ত করা যায়।এই ফ্রেমের মধ্যে আছে ইতালির বিখ্যাত কোম্পানি Luxottica যারা Ray-Ban এর স্বত্বাধিকারী।
  • গুগল গ্লাস ২০১৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বাজারে ছিলো এবং বর্তমানে তারা বিক্রি বন্ধ রেখেছে।
  • গুগল গ্লাস ২০১২ সালের টাইম ম্যাগাজিন এর পুরুষ্কার "Best Invention of the Year 2012" লাভ করে।
  • ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ব্রিটেনে গাড়ি চালানো অবস্থায় গুগল গ্লাস ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
  • গুগল গ্লাসের ব্যবহৃত সেন্সর সমুহঃ জাইরোস্কোপ, এক্সেলারোমিটার, ম্যাগনেটোমিটার,প্রক্সিমিটি সেন্সর ইত্যাদি।

আজ আপাতত এইটুকুই।ভুল হলে দেখিয়ে দিবেন এবং ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

আমার পুর্ববর্তি টিউন সমুহ

আস-সালামু-আলাইকুম।

আল্লাহ হাফেজ।

Level 0

আমি ওমর ফারুক মুকুট। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 86 টি টিউন ও 2091 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

আমি মুকুট বলছি ঢাকার মানিক নগর থেকে।ভালোবাসি হাসতে।ভালোবাসি ঘুরতে,গান শুনতে ,ছবি দেখতে। অপছন্দ করি বেশি কথা বলতে।সুদ , সিগারেট ও এলকোহল কে ঘৃণা করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

ভালো লাগলো তাই সরাসরি প্রিয়তে, অনেক কিছু জানলাম।

Level 0

ভালো লিখেছেন।

onek sundor tune hoiche.chalie jan.

    @মাহমুদ কলি।: @frzban: @নুরমোহাম্মদ ভুইয়া: @Syber Fighter: সবাইকে ধন্যবাদ।