বিচিত্র বিশ্ব [পর্ব-০৩] :: ছায়াপথ (Galaxy)

আস-সালামু-আলাইকুম।

কেমন আছেন সবাই?আশা করি আল্লাহ তায়ালার রহমতে ভালোই আছেন।

বিচিত্র বিশ্ব নিয়ে ধারাবাহিক টিউনের আজ লিখবো ৩য় পর্ব নিয়ে।আজকের বিষয় মহাকাশের ছায়াপথ।আপনাদের সাহায্য আর দোয়া পেলে আরো ভালো লিখতে পারবো আশা করি।

ছায়াপথঃ

  • Galaxy শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ থেকে।ছায়াপথ হলো বিশাল আকারের তারা ব্যবস্থা যা তৈরি হয় তারা, প্রচুর পরিমান গ্যাস এবং ধুলার সমন্বয়ে।
  • মিলিয়ন, বিলিয়ন, ট্রিলিয়ন তারার সমন্বয়ে ছায়াপথের আকার ও আকৃতির সৃষ্টি হয়।
  • কিছু ছায়াপথ আছে যাকে সক্রিয় ছায়াপথ বলা হয় তাদের রয়েছে অপ্রত্যাশিত শক্তি যা ব্ল্যাক হোল থেকে উৎপত্তি হয়।
  • এছাড়া কিছু ছায়াপথ আছে যা ছায়াপথ সংঘর্ষ থেকে সৃষ্টি হয়।

মহাবিশ্বে ছায়াপথের সংখ্যাঃ

আমাদের মহাবিশ্বে ছায়াপথের আসল সংখ্যা কত সেটা কেউ বলতে পারবেনা।কারন জ্যোতির্বিদেরা যতই মহাবিশ্বের দিকে তাকাচ্ছে আর খোজ করছে ততই তারা নতুন নতুন ছায়াপথ আবিষ্কার করছে।মহাবিশ্বের এখনো অনেক যায়গা আছে যেটা বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করতে পারেনি এবং কিছু কিছু যায়গা আছে যেখানে টেলিস্কোপ দিয়ে দেখা যায়না।জ্যোতির্বিদদের হিসাব অনুযায়ি আনুমানিক ১২৫ বিলিয়ন ছায়াপথ রয়েছে মহা বিশ্বে। !!!!!!!!!

ব্ল্যাক হোলঃ

  • ব্ল্যাক হোল হলো একটা এলাকা যেখানে ভয়াবহ মধ্যাকর্ষন শক্তি তার আশেপাশের সব কিছু কে নিজের দিকে টেনে এনে তার কেন্দ্রবিন্দুর একটা ছোট ছিদ্র দিয়ে নিচের দিকে ঢুকিয়ে ফেলছে।
  • এটাকে ব্ল্যাক বলা হয় কারন এটা আলোকে শুষে নিচ্ছে এবং আলো আর বেরোতে পারছেনা।
  • একটি ব্ল্যাক হোল তখনি সৃষ্টি হয় যখন একটা বড় তারা বিস্ফোরিত হয়।এই বিস্ফোরন কে বলা হয় সুপারনোভা।

খালি চোখে ছায়াপথ দেখাঃ

পৃথিবী থেকে ৩টি ছায়াপথ খুব সহজেই খালি চোখে দেখা যায়।সবচেয়ে ভালো যায়গা হলো মেরু অঞ্চল।

  • ১) এন্ড্রোমেডা।
  • ২) বিশাল মেগালানিক(Magellanic) মেঘ।
  • ৩) ছোট মেগালানিক(Magellanic) মেঘ।

রাতের আকাশে ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখতে পাবো যে অনেক তারামন্ডল রয়েছে।যখন অমাবশ্যা থাকে তখন ভালো করে দেখা যায়।সেখানে আনুমানিক ২০০-৫০০বিলিয়ন তারা মন্ডল রয়েছে যা খালি চোখেই দেখা যায়।

অতীতের কিছু তথ্য কণিকাঃ

  • ১৭৮৪ সালঃ উইলিয়াম হার্শেল প্রথম কৃষ্ণগহ্বর (Milky Way) এর আকার ও আকৃতি অনুমান করেন।কিন্তু তিনি ভুল তথ্য উপস্থাপন করে বলেছিলেন যে আমরা এর মধ্যে অবস্থান করছি।
  • ১৯১৭ সালঃ ক্যালিফোর্নিয়ায় মাউন্ট উইলসন পাহারের চূড়ায় হুকার টেলিস্কোপ (Hooker Telescope - 8.2-ft) দিয়ে পর্যবেক্ষনের সময় প্রথম Andromeda Nebula ছায়াপথ দেখে প্রমানিত হয় যে ছায়াপথ (Galaxy) এবং কৃষ্ণগহ্বর (Milky Way) একে অন্যের থেকে আলাদা।
  • ১৯২৪ সালঃ এডউইন হাবল প্রমান করেন যে মহাবিশ্বে আরো অনেক ছায়াপথ রয়েছে যার প্রকার ভেদে রয়েছে বিভিন্ন আকার ও আকৃতি।
  • ১৯৮৫ সালঃ ভেরা রুবিন আবিষ্কার করে দেখান ছায়াপথের অনেক অংশে কালো জিনিস বিদ্যমান।

কিছু ছায়াপথের ছবিঃ

স্পাইরাল গ্যালাক্সিঃ

বেয়ার্ড স্পাইরাল গ্যালাক্সিঃ

ইলিপ্টিক্যাল গ্যালাক্সিঃ

ইরেগুলার গ্যালাক্সিঃ

সাইড থেকে ছায়াপথ দেখতে কেমনঃ

পার্শ থেকে দেখলে দেখা যায় ছায়াপথ একটা ফ্ল্যাট ডিস্ক এর মত। ১,০০,০০০ আলোকবর্ষ বিস্তৃত এবং ৪,০০০ আলোকবর্ষ গভীর।(এক আলোকবর্ষ=৯.৪৫ মিলিয়ন মিলিয়ন কিলোমিটার)। ছায়াপথের মাঝে রয়েছে ব্ল্যাক হোল যা সুর্যের থেকে ৩ মিলিয়ন বেশি শক্তি সম্পন্ন।

সুত্রঃEvery Fact you Never wanted to Know থেকে এবং ইন্টারনেট থেকে।

আজ এই পর্যন্তই।আগামী পর্বে নতুন কিছু নিয়ে আলোচনা করবো।সবাইকে ধন্যবাদ কষ্ট করে পড়ার জন্য।

Level 0

আমি ওমর ফারুক মুকুট। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 86 টি টিউন ও 2091 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

আমি মুকুট বলছি ঢাকার মানিক নগর থেকে।ভালোবাসি হাসতে।ভালোবাসি ঘুরতে,গান শুনতে ,ছবি দেখতে। অপছন্দ করি বেশি কথা বলতে।সুদ , সিগারেট ও এলকোহল কে ঘৃণা করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

মহাকাশ আমার একটি অতি আগ্রহের বিষয়। এটা আমার ছোটবেলা থেকে থাকলেও এটাকে আমার profession হিসাবে নিতে পারি নি। আমার একটি ব্যক্তিগত কল্পনাঃ পৃথিবী সৃষ্টি হয় প্রায় ৪৫০ কোটি বছর আগে আর জীবের সৃষ্টি মাত্র ৫০ কোটি বছর আগে আর মানুষের সৃষ্টি এই সেদিনের কথা। আমার মনে হয় মঙ্গলে প্রানের সন্ধান যারা করছেন তাদের হয়ত এইরকম কয়েকশো কোটি বছর অপেক্ষা করতে হতে পারে। যখন এই কয়েকশো কোটি বছরের সঙ্গে মানুষের আয়ুর বছর তুলনা করি তখন সব হিসাব গুলিয়ে যায়।

    @writerbuddha: মানুষের সৃষ্টি এই সেদিনের কথা কিন্তু তারপরেও সেটা অনেক লাখ বছর হয়ে গিয়েছে মনে হয়।পৃথিবীর বাইরে আর কোথাও প্রানের অস্তিত্ব থাকুক না কেনো,তারা কোন ভাবেই মানুষের সমতুল্য বা মানুষ থেকে অধিক বুদ্ধিমান হতে পারবেনা।

    ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।