নিজের অনেকগুলো পছন্দের ছবি আছে, আছে পছন্দের অডিও গান। ইচ্ছে হচ্ছে ছবিগুলো যুক্ত করে পছন্দের গানটি/গানগুলো দিয়ে একটি ভিডিও তৈরি করি। এটা কি সম্ভব? হ্যাঁ, করা যায়। একে আমরা ফটো এলবাম স্লাইডশো হিসেবে চিনি। খুব সহজে ছোট্ট একটি সফটওয়ার দিয়ে কাজটি করা যাবে। আর এর জন্য আপনাকে হতে হবে না কোন গ্রাফিক্স ডিজাইনার বা মাল্টিমিডিয়া এক্সপার্ট। সফটওয়ারটির নাম
Microsoft Photo Story3। এটি মুলত Windows Movie Maker এর উন্নত সংস্করণ। তাছাড়া ইন্সটল করার পর এটি Windows Movie Maker এর সাথে সংযুক্ত হয়ে এর কাজটাকে সহজভাবে ব্যবহারের উপযোগী করে তুলে।
কিভাবে করবেনঃ
আপনার ডিভিও ফাইলটি তৈরি করার জন্য যে ছবিগুলো দরকার তার Resolution ১২০০ পিক্সেল এর চেয়ে কম হলেই চলবে। এর চেয়ে বড়/ছোট করতে পারেন তাতে কোন অসুবিধা নেই। তবে বেশি বড় সাইজের ছবি ব্যবহার করলে আপনার ভিডিও ফাইলটি’র সাইজ বেশি হয়ে যাবে। আমরা সাধারণত ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে যে ছবিগুলো তুলি তার Resolution অনেক বেশি। এত বেশি বড় ছবি আমাদের দরকার নেই। তাই ছবিগুলোকে রিসাইজ করে নিতে পারেন
ফটোশপ বা
MSPhoto Resizer দিয়ে। আপনি যেকোনভাবে রিসাইজ করে নিলেই হবে। ধাপ অনুযায়ী কাজগুলো করে যান।
১। সফটওয়ারটি রান Next দিন।
২। ছবি যুক্ত করার জন্য উইন্ডো আসবে। Import Picture এ ক্লিক করুন।
আপনার ছবিগুলো কোথায় আছে ব্রাউজ করে দেখিয়ে দিন। ছবিগুলোর Thumbnails দেখা যাবে। উপরের +/- চিহ্নতে ক্লিক করে Thumbnails গুলো ছোট/বড় করা যাবে। পছন্দের ছবিগুলো সিলেক্ট করে OK দিন। ছবিগুলো আপনার টাইমলাইনে যুক্ত হবে।
৩। ছবিগুলো এড করার পর ছবিকে এডিট করার জন্য বেশ কিছু অপশন আছে এখানে। কোন ছবি ওল্টা-পাল্টা থাকলে ছবিটি সিলেক্ট করে Rotate করে নিন। এছাড়া ছবিকে Crop (ছবির নির্দিষ্ট অংশ কেটে নেয়া) করে নিতে পারেন। যে ছবিটিকে Crop করতে চান তা সিলেক্ট করে Edit এ ক্লিক করুন।
তারপর Crop এ টিক চিহ্ন দিন। তাহলে ছবিটি চারকোণা ধরে ড্রাগ করে Crop করে নিতে পারবেন। Crop করার সময় এর সাইজ দেখতে পাবেন। এছাড়া ওখানে Auto Fix, Add Effect অপশনগুলো ব্যবহার করে ছবিটিকে আরো মনের মত করে নিতে পারেন। এভাবে যতটা ছবি ইচ্ছেমত করে নিতে পারেন। কাজ শেষ হলে Save>Close দিন। এবার Next দিন।
৪। কোন ছবির উপর টেক্সট যুক্ত করতে চায়লে এই Step এ তা পারবেন। পছন্দের ছবিটি সিলেক্ট করে এর জায়গায় আপনার টেক্সটি যুক্ত করে দিন। টেক্সট যুক্ত করার পর উপরে/নিচে, ডানে/বামে নেয়ার জন্য Alignment tool আছে। তাছাড়া ফন্ট, টেক্সট কালার পরিবর্তন করে নিতে পারবেন। ছবিটি’র নিচে Effect এ ক্লিক করে পছন্দের Effect দিতে পারেন। কাজ শেষে Next দিন।
৫। এখানে বেশ কয়েকটি অপশন আছে। কোন ছবি’র সাথে যদি আপনার বিশেষ স্মৃতি জড়িত থাকে তাহলে তার সম্পর্কে কিছু কথা যুক্ত করে দেয়ার সুযোগ আছে এখানে। ছবিটি সিলেক্ট করে Record বাটনে ক্লিক করে মাইক্রোফোনে যা বলবেন তা রেকর্ড হবে এবং ভিডিওটি চলার সময় ঐ ছবিটি’র জায়গায় কথাগুলো শোনা যাবে। এমনকি আপনি যে কথাগুলো বলেছেন সেটি মনে রাখার জন্য এর জায়গায় কোন টেক্সট যুক্ত করতে পারেন। এর ফলে আপনি ধরে নিতে পারবেন যে এ ছবিটি সম্পর্কে আমি কিছু যুক্ত করেছি আর করার দরকার নেই। চায়লে সে বর্ণনা ডিলিট করতে পারবেন, নতুন রেকর্ডও করতে পারবেন, পারবেন Preview দেখতে।
গানটি এড করার পর আপনার টাইম লাইন দেখুন গানটি কতগুলো ছবি পর্যন্ত গেছে। যদি আপনার কম ছবি হয় তাহলে হতে পারে গানটি অর্ধেক। আবার বেশি ছবি হলে গানটি শেষ হওয়ার পরও ছবি থেকে যাবে কোন মিউজিক ছাড়া। তাই আপনি একটা একটা করে একাধিক গান এড করতে পারেন। যেমন আমি তিনটা গান এড করেছি কারণ আমার ছবি বেশি। এখানেও Preview দেখার সুযোগ আছে।
পছন্দের গান না থাকলে Create Music এর মাধ্যমে ডিফল্ট কিছু মিউজিক এড করতে পারেন। এখানে অনেক মিউজিক আছে। পছন্দ না হলে মিউজিক ডিলিট করতে পারেন। এবার Next দিন।
৭। এখানে বেশ কয়েকটি অপশন আছে সেভ করার। আপনি কোন কাজে ভিডিওটি তৈরি করতে চান। আমরা আমাদের কম্পিউটারের জন্য সেভ করতে চাই। তাই ডিফল্ট সেটিংস এ রেখে ব্রাউজ করে দেখিয়ে দিলাম কোথায় ফাইলটা সেভ করতে চায়। এরপর Next। তাহলে ফাইলটি তৈরি হতে থাকবে।
৮। ফাইলটি তৈরি হওয়ার পর Exit দিন।
Yes/No আসবে। এর মাধ্যমে আপনি আপনার কাজটি চায়লে সেভ করে রাখতে পারবেন। তাহলে পরবর্তীতে এটিকে এডিট করে আবার তৈরি করতে পারবেন। সেভ করতে চায়লে Yes আর না চায়লে No দিন।
একটু গবেষনা করলে আরো অনেক অপশন বের করতে পারবেন। আর একটু কষ্ট করলে চেয়ে থাকার মত একটি স্লাইড শো তৈরি করা কোন ব্যাপার নয়। অথচ টুলটি’র সাইজটাও এত বেশি নয়। হয়ত মাইক্রোসফটের জিনিস তাই। তবে এটি শুধু এক্সপিতেই চলবে এবং এক্সপি জেনুইন হতে হবে। আর
Microsoft Windows Media Player 10 বা পরবর্তী ভার্সন লাগবে।
এত জটিল করলে কি ভাবে পারব ভাই।