আধুনিক প্রযুক্তির যুগে গৃহিণী দের রান্নায় এসেছে অভিনব সব গেজেট। এর মধ্যে অন্যতম একটি গেজেট হলো ইনফ্রারেড কুকার। ইনফ্রারেড কুকার মূলত একটি ইলেকট্রনিক কুকার। বৈদ্যুতিক শক্তির সাহায্যে যে কোনো ধরনের রান্না করা যায় ইনফ্রারেড কুকারে। আধুনিক ডিজাইন ও ঝামেলাহীন রান্নার পদ্ধতি বিধায় বেশিরভাগ গৃহিনীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ইনফ্রারেড কুকার।
ইন্ডাকশন কুকারের বিভিন্ন অসুবিধা বিবেচনা করে অনেকেই এখন ইনফ্রারেড কুকার বেছে নিয়েছে৷ রান্না করার পদ্ধতি যেমন সহজ তেমনই সাশ্রয়ী মাধ্যম এটি। তবে সুবিধার পাশাপাশি রয়েছে বেশ কিছু অসুবিধাও। চলুন জেনে নেয়া যাক ইনফ্রারেড কুকার এর সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ।
জেনে নিন ইনফ্রারেড কুকার এর অভিনব সব সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে যা আপনাকে ইনফ্রারেড কুকার ব্যবহার করার জন্য অনুপ্রাণিত করবেই।
ইনফ্রারেড কুকারে যে কোনো পাত্রেই রান্না করা যায়। আলাদা করে বিশেষ কোনো পাত্র কিনতে হয় না। ফলে গ্যাস শেষ হয়ে গেলে সাথে সাথে ঐ পাত্র এনে ইনফ্রারেড কুকারে বসিয়ে দিতে পারবেন। পাত্রের নিচের অংশ সমতল হোক বা গোলাকার হোক এতে কোনো ধরনের সমস্যা হবে না। তবে অবশ্যই তাপ সহনীয় পাত্র ব্যবহার করতে হবে। যাতে করে কোনো দূর্ঘটনা না ঘটে।
ইনফ্রারেড কুকারে রান্না করতে সময় কম লাগে। কেননা এতে তাপ অন্যান্য চুলার থেকে তুলনামূলক বেশি। এতে আপনার সময় সাশ্রয় হচ্ছে পাশাপাশি বিদ্যুৎ খরচ কম হচ্ছে। সিলিন্ডার গ্যাসের সাথে তুলনা করলে দেখা যায় ইনফ্রারেড কুকার কয়েকগুণ সাশ্রয়ী। একমাস নিয়মিত ইনফ্রারেড কুকারে রান্না করলে সর্বোচ্চ তিনশত থেকে চারশত টাকা বিদ্যুৎ বিল আসতে পারে। অন্যদিকে একটি গ্যাস সিলিন্ডার কিনতে খরচ হয় এক হাজার তিনশত থেকে এক হাজার চারশত টাকা। এদিক থেকে দেখা যাচ্ছে ইনফ্রারেড কুকার খুব সাশ্রয়ী মাধ্যম।
ইনফ্রারেড কুকার ওজনে খুব বেশি ভাড়ি নয় এবং আকারেও ছোট। তাই কোথাও পারিবারিক পিকনিক করলে অথবা কয়েকদিন এর জন্য ট্যুরে গেলে এটি নিয়ে যেতে পারেন। সহজেই রান্না করে খেতে পারবেন। বাইরের খাবার কিনে খাওয়ার বাড়তি খরচ কমবে এবং সেইসাথে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে পারবেন।
চাইলে বাড়িতে বসে নিজেই বারবিকিউ তৈরি করে নিতে পারবেন ইনফ্রারেড চুলায়। এরজন্য থাকবে একটি বারবিকিউ স্ট্যান্ড। চুলা হিট করে তার ওপর বারবিকিউ স্ট্যান্ড বসিয়ে নিজের পছন্দ মতো বারবিকিউ বা তন্দুরি চিকেন রান্না করতে পারবেন। বারবিকিউ এর জন্য চুলা নিয়ে কোনো বাড়তি ঝামেলায় পড়তে হবে না।
সুবিধার পাশাপাশি ইনফ্রারেড চুলার কিছু অসুবিধা রয়েছে। দেখে নিন কোন কোন বিষয়ে অসুবিধায় পড়তে পারেন এবং তা থেকে সমাধানের পথ বের করার উপায়।
চুলার মাঝখানে গোলাকার অংশ অনেক বেশি গরম হয়ে যায়। মূলত এই তাপের মাধ্যমেই রান্না হয়ে থাকে। হঠাৎ দেখলে বোঝা যায় না এখানে কোনো তাপ রয়েছে। কিন্তু গরম কাচে হাত লাগলে হাত পুড়ে যাবে। এক্ষেত্রে অনেকসময়ই ভুলবশত দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।
অন্যান্য চুলার মতো ইনফ্রারেড চুলার কোনো ট্যান্ড বা উঁচু গঠন আকৃতি নেই। ফলে গোলাকৃতির পাত্র সমতল চুলার ওপর বসালে সেটি ভালোভাবে সেট হয় না। এক্ষেত্রে খাবার নাড়াচাড়া করতে সমস্যা হয়। কখনও কখনও পাত্র কাত হয়ে পড়ে যেতে পারে। এতে ঘটতে পারে নানা ধরনের দুর্ঘটনা।
ইনফ্রারেড কুকারের উপরের অংশ পুরোটাই গ্লাস দিয়ে তৈরি। তবে অবশ্যই এটি খুব মোটা ও টেকসই গ্লাস। কিন্তু অন্যান্য চুলা যেমন আঘাত লাগলে ভেঙে যাওয়া বা ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই, ইনফ্রারেড কুকার কিন্তু সেদিক থেকে পুরোপুরি আলাদা। কোনো ভাবে উঁচু স্থান থেকে পড়ে গেলে এটি ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। উত্তপ্ত কাচের ওপর ঠান্ডা পানি পড়লে এটি ফেটে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই ইনফ্রারেড চুলা ব্যবহারে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
সুবিধা অসুবিধা নিয়েই একটি ইলেকট্রনিক গেজেট মার্কেটে আসে। তাই নিজের অবস্থান বিবেচনা করে সঠিক পন্য বাছাই করতে হবে। একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে পারলে ইনফ্রারেড কুকার হতে পারে আপনার রান্নাঘরের গুরুত্বপূর্ণ ইলেকট্রনিক কুকার।
আমি শারমিন আক্তার। শিক্ষার্থী, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, গাজীপুর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 115 টি টিউন ও 29 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 6 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।