মোবাইল আমাদের নিত্যদিনের নিয়মিত সঙ্গী। মোবাইল কেনার পূর্বে আমাদের কিছু জিনিস লক্ষ্য রাখা উচিত যাতে আপনার কষ্টের অর্জিত টাকার ব্যয় সঠিকভাবে হয়। নিচে সংক্ষিপ্তভাবে এগুলো তুলে ধরা হলো :
প্রসেসর : প্রসেসর মোবাইলের অন্যতম মূল অংশ। প্রসেসর এর উপর মোবাইলের পারফরম্যান্স নির্ভর করে। বর্তমানের বেশ কয়েক ধরনের প্রসেসর স্মার্টফোনগুলোতে দেখা যায়। যেগুলো হলো কোয়ালকাম স্ন্যাপ ড্রাগন, হুয়াই এর হাইসিলিকন, স্যামসাংয়ের এক সাইনাস এবং মিডিয়াটেকের হিলিও এবং অ্যাপলের A চিপসেট প্রসেসর।
কোয়ালকম স্ন্যাপ ড্রাগন : কোয়ালকম স্মার্টফোন জগতের অপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রসেসর নির্মাতা। ভালো পারফর্মেন্স ও পাওয়ার সেভিং এর জন্য কোয়ালকম প্রসেসর সুপরিচিত। কোয়ালকম সাধারণত 3 টাইপের প্রসেসর তৈরি করে যা হলো-
১.স্নাপড্রাগণ 6 সিরিজ :
এটি এই কোম্পানির এন্ট্রি লেভেল প্রসেসর। সাধারনত কম বাজেটের ফোনগুলোতে এই প্রসেসর বেশি দেখা যায়।
২.স্নাপড্রাগণ 7 সিরিজ :
এটি মিড বাজেট এর প্রসেসর। এর পারফরমেন্স সিক্স সিরিজ থেকে ভালো।
৩.স্নাপড্রাগণ 8 সিরিজ :
এই সিরিজে রয়েছে কোয়ালকমের ফ্ল্যাগশিপ প্রসেসর অর্থাৎ সবচেয়ে ভালো মানেরপ্রসেসর। বিভিন্ন কোম্পানির ফ্ল্যাগশিপ মোবাইলে এই প্রসেসর ব্যবহৃত হয়।
হাইসিলিকন :
এটি হুয়াই কোম্পানির নিজস্ব প্রসেসর। হুয়াই মোবাইলে সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে হাইসিলিকন কোয়ালকমের সাথে ভালো প্রতিযোগিতা করছে। হাই সিলিকন এর পারফরম্যান্স ভালো। হাই সিলিকনের বেশ কয়েকটি সিরিজ মোবাইলে দেখা যায় তার মধ্যে কিরিন 7 সিরিজ ও কিরিন 8 সিরিজ মিড বাজেটের ফোনে ব্যবহৃত হয়। 9 সিরিজ প্রিমিয়াম বাজেটের স্মার্টফোনে এই প্রসেসরটি ব্যবহৃত হয়।
এক্স সাইনাস প্রসেসর :
স্যামসাং এ প্রসেসর এর নির্মাতা। স্যামসাংয়ের সাধারণত 3 সিরিজের প্রসেসর দেখা যায়। এক সাইনাস 9 সিরিজ। এক্স সাইনাস 7 সিরিজ। এক্স সাইনাস 5 সিরিজ। এরমধ্যে এক্স সাইনাস 9 সিরিজ। গ্যালাক্সি s সিরিজে এক্স সাইনাস 9 সিরিজ প্রসেসর ব্যবহৃত হয়েছে।
মিডিয়াটেক হেলিও :
কম বাজেটের মোবাইল ফোন গুলোতে এই প্রসেসর বেশি দেখা যায়। হেলিও p সিরিজ, হেলিও x সিরিজ মিডিয়াটেকের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রসেসর। বর্তমানে হেলিও G90T রেডমি নোট 8 প্রো এ ব্যবহার করা হয়েছে।
অ্যাপল এ সিরিজ প্রসেসর :
এই প্রসেসর শুধুমাত্র অ্যাপলের মোবাইলে দেখা যায়। মূলত এই প্রসেসর অ্যাপলের হলেও তা তৈরি করে স্যামসাং এবং টিএমএসসি। A12 bionic বর্তমানে অ্যাপলের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রসেসর যা আইফোন 11 এ ব্যবহৃত হয়।
র্যাম :
মোবাইলের র্যাম যত বেশি হবে আপনার মোবাইলের পারফরম্যান্স তত ভালো হবে। বর্তমানে স্মার্ট ফোন কোম্পানিগুলো 2, 4, 6, 8, 10gb মডেলের স্মার্টফোন তৈরি করছে। ddr3 অর ddr4 এই দুই ধরনের র্যাম স্মার্টফোনগুলোতে বর্তমানে সর্বাধিক ব্যবহৃত। এদের মধ্যে ddr4 ram এর স্পিড সবচেয়ে বেশি।
ডিসপ্লে :
বর্তমানে এলইডি ও এলসিডি এই দুই ধরনের ডিসপ্লে মোবাইল ফোন গুলোতে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এদের মধ্যে এলইডি সর্বোত্তম। এলইডি ব্লাক থিমে পাওয়ার সেভ করতে পারে। আপনার ডিসপ্লের পিপিআই যত বেশি হবে ডিসপ্লে ততো নিখুঁত ভাবে যে কোন জিনিসকে আপনার সামনে উপস্থাপন করতে পারবে।
ব্যাটারি :
ব্যাটারির এম্পিয়ার যত বেশি হবে মোবাইলের চার্জ ততো বেশি থাকবে। বর্তমানে স্মার্টফোনগুলোতে 3000, 4000, 5000 এম্পিয়ার এর ব্যাটারি বেশি দেখা যায়। এরমধ্যে 5000 এম্পিয়ার ব্যাটারী ব্যাকআপ সবচেয়ে বেশি পাবেন।
ডিজাইন :
আকর্ষণীয় ডিজাইন মোবাইল বিক্রির অন্যতম নিয়ামক। বর্তমানে সামনে ও পিছনে গরিলা গ্লাস লাগানো মোবাইল বাজারে সর্বাধিক দেখা যায়। তাছাড়া ডিসপ্লের ক্ষেত্রে নচ ও নচ বিহীন এবং ওয়াটার ড্রপ ডিজাইন নতুন সংযোজন।
অপারেটিং সিস্টেম :
মোবাইলের অপারেটিং সিস্টেম যত লেটেস্ট হবে আপনার মোবাইল ব্যবহারের অভিজ্ঞতা তত ভালো হবে। অ্যান্ড্রয়েড টেন অ্যান্ড্রয়েডের নতুন অপারেটিং সিস্টেম।
বিল্ড কোয়ালিটি বা তৈরীর ধরন :
বাজারে দুই ধরনের মোবাইল পাওয়া যায় যার একটি হচ্ছে মেটালে তৈরি এবং অপরটি পলিকার্বনেট বা প্লাস্টিক তৈরি। তবে প্রিমিয়াম ফোনগুলো মেটালে তৈরি। বর্তমানে মোবাইলকে আরো আকর্ষণীয় দেখাতে মেটালের উপরে গ্লাস বসানো থাকে। কম বাজেটের ফোন গুলোতে সাধারনত প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয়।
আমি আবদুল্লাহ আল মামুন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 5 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 3 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।