কেমন আছেন বন্ধুরা? আশাকরি ভালো। আজ কথা বলবো ২০১৭ সালের প্রায় সকল বাজেটের আল্ট্রা ওয়াইড অর্থাৎ অতি চওড়া কিছু মনিটর নিয়ে। তো চলুন শুরু করা যাক।
প্রথমত, একটা আল্ট্রা ওয়াইড মনিটর শুধু আভিজাত্যেরই অংশ নয় বরং একটি একটি বাড়ি বা প্রতিষ্ঠানের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। তাই যে কারণেই হোক অনেকেই এটি চায়। অনেক সময় আবার একটি কন্টেন্টকে একাধিক মনিটরে প্রকাশ করাটাও বেশ চাঞ্চল্যকর একটি ব্যাপার। সাধারণত, বিভিন্ন নিউজ চ্যানেলে বা লাইভ অনুষ্ঠানে অথবা কোনো ভিডিও টিউটোরিয়ালে অথবা কোনো মিউজিক স্টুডিওতে অথবা কোনো প্রফেশনাল গেইমার অনেকেই তাদের আভিজাত্য বা শৌখিনতা প্রকাশ করতে এই মনিটরগুলো স্থাপন করে থাকেন। আর দেখতেও এটি বেশ সুন্দর লাগে। ডেক্সটপের জন্য সবারই একটা করে এক্সটার্নাল মনিটর লাগেই। আর সেটা যদি হয় একটা আল্ট্রা-ওয়াইড মনিটর তাহলে ক্ষতি কী! তাই চলুন দেখে নেয়া যাক ২০১৭ সালের বিভিন্ন বাজেটের কিছু আল্ট্রা-ওয়াইড মনিটর।
আজকাল অনেকেই আল্ট্রা-ওয়াইড মনিটরের দিকে ঝুঁকছে। আপনার মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে 'কেন'? হুম। আপনি একটা ডেস্কটপ ব্যবহার করছেন, সুন্দর, পরিষ্কার। আবার যারা ছোট স্ক্রিনের ল্যাপটপ ব্যবহার করেন তাদের অনেকেরই ছোট জিনিস চোখে ধরেনা। তবে ও টি জি (অন দ্যা গো) সুবিধা থাকলে অনেকেই একটি এক্সটার্নাল মনিটর ব্যবহার করেন। আর বড় স্ক্রিন থেকে বেশ মানসিক কিছু সুবিধা পাওয়া যায়। তাছাড়াও ফটো বা ভিডিওর অনেক ডিটেইল আপনি মিস করবেন না একটা আল্ট্রা ওয়াইড মনিটর থাকলে।
যেখানে সাধারণত মনিটরের স্ক্রিনের অ্যাসপেক্ট রেশিও ১৬:৯ সেখানে আল্ট্রা-ওয়াইড মনিটরের অ্যাসপেক্ট রেশিও ২১:৯। আর একটা কথা খুব প্রচলিত আছে। সেটা হলো আপনার প্রতিষ্ঠানের ল্যাপটপের সংখ্যা দ্বারাই আপনার প্রতিষ্ঠানের উন্নতি বোঝা যায়। বিশেষ করে আই ও টি ক্ষেত্রে এটি বেশি প্রচলিত। আর সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো গেইমিং এর জন্য। তবে দুটি তথ্য মাথায় রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
আসলে এল জি ২ইউএম৬৮-পি-ই যে খুবই ভালো তা কিন্তু নয়। এর রিফ্রেশ রেট ৬০ থেকে ৭৫ হার্টজ এবং রেজ্যুলেশন ২৫৬০ x ১০৮০। যে বিষয়টার জন্য এটি উল্লেখযোগ্য সেটি হলো এর দাম। মাত্র $৪০০ ডলারের মধ্যে (প্রায় ৩২, ০০ টাকা) এরকম একটি ২৯ ইঞ্চি আল্ট্রা-ওয়াইড মনিটর পাওয়া বেশ সূলভই ধরা যায়।
তবে শুধুমাত্র ভিডিও কোয়ালিটির জন্য হলেও এটি অনেকে নিতে চাইবে না। সেক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম হিসেবে অনেকে স্যামসাং সি এফ ৩৯১ (Samsung CF391) নিতে চাইবে যেটা ৩২ ইঞ্চি বাঁকানো ডিসপ্লে দ্বারা তৈরি হয়েছে। তবে মাত্র ১০৮০পি রেজ্যুলেশনের কারণে এটি মার খেয়ে গেছে। কিছু দিক ব্যতীত সাধ্যের মধ্যে এল জি ২ইউএম৬৮-পি'ই সেরা। তবে এর চেয়ে আরো অনেক ভাল মানের মনিটর পাবেন।
বৈশিষ্টসমূহ
দুর্বল দিক
মাঝামাঝি দামের মধ্যে বেন কিউ এক্স আর ৩৫০১ টা বেশ ভাল মানের আল্ট্রা-ওয়াইড মনিটর। যারা গেইম খেলেন তাদের একদম জীবন্ত সবকিছু উপভোগ করতে পারবেন। তবে এর রেজ্যুলেশন যে খুব ভালো তা কিন্তু নয়। তবে এর রিফ্রেশ রেট ভাল, কানেক্টিভিটির দিক দিয়েও ভালো। শুধু তাই নয় ফ্রি তে এ এম ডি গেইমাররা সব গেইম খেলতে পারবেন। তবে এর রেজ্যুলেশন মুটামুটি মধ্যম মানের। এর মূল্য $৫৫৮ ডলার (প্রায় ৪৫, ০০০ টাকা)।
বৈশিষ্টসমূহ
দুর্বল দিক
প্রথমেই বলে রাখি পিসি ম্যাগ এই ডেল ৩৪ আল্ট্রাশার্প ইউ ৩৪১৫ ডব্লিউ-কে ৫ এর মধ্যে ৪.৫ রেটিং প্রদান করেছে। তাই এটি সম্পর্কে নতুন করে আর বলার কিছুই দেখি না। আর পিসি ম্যাগ এর অডিও কোয়ালিটির খুব দারুণ প্রশংসা করেছে। তবে কালার, সুবিধা সবকিছুর দিক বিবেচনা করলে বেশ ভালোই। তবে একটা বিষয়ে অনেকের পছন্দ নাও হতে পারে। আর সেটা হলো সাইড মাউন্টেড ইউ এস বি পোর্ট নেই এতে। তাই $৭৬০ ডলারে (প্রায় ৬২০০০ টাকা) এটা নেওয়ার চেয়ে এর চেয়ে আরো কমদামে আরো অনেক আল্ট্রা-ওয়াইড মনিটর পাওয়া যাবে। তবে কালার প্যালেট আর পারফর্মেন্স এর দিক চিন্তা করলে এটা বেশ ভাল মানের এটি মনিটর।
বৈশিষ্টসমূহ
দুর্বল দিক
আপনি যদি বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে থাকেন তবে আপনার জন্য স্যামসাং সি এফ ৭৯১-ই বেস্ট হবে। এজন্য $৮০০ ডলার (প্রায় ৬৫, ৫০০ টাকা) খরচ করতে হবে আপনার। আর এটা সস্তা কোনো মডেল না। এর ৩৪ ইঞ্চি বাঁকানো আল্ট্রা ওয়াইড স্ক্রিন আর ১০০ হার্টজ এর রিফ্রেশ রেট এবং ৪এমএস রেসপন্স টাইম সত্যিই অতুলনীয়। আর এর ৩৪৪০ x ১৪৪০ ডব্লিউ ও এইচ ডি রেজ্যুলেশন তো অসাধারণ। আর এতে যুক্ত হয়েছে কোয়ান্টাম ডট টেকনোলজি যা আপনাকে দেবে ১২৫ পারসেন্ট আর জি বি কালার স্পেস।
সি নেট এদের সাইজ ও রিফ্রেশ রেটের বেশ প্রশংসা করেছে। এ এম ডি রেডন কার্ডও এর প্রশংসা করেছে এর কালার কোয়ালিটির। তবে সি নেট এর ইউ এস বি পোর্ট পছন্দ করে নি। মাত্র দুইটা ইউ এস বি পোর্ট।
একাধিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে এবং সিঙ্ক করে অনেক ফ্রি গেইম খেলা যাবে। এর মূল্য $৮২২ ডলার (প্রায় ৬৭, ০০০ টাকা)।
বৈশিষ্টসমূহ
দুর্বল দিক
এককথায় একে বলা যায় সবচেয়ে সেরা আল্ট্রাওয়াইড মনিটর। আর এর রিফ্রেশ রেট অবাক করা ২০০ হার্টজ। এটি প্রায় সব দিক দিয়ে উন্নত মানের। উচ্চ কনট্রাস্ট রেশিও, উজ্জ্বল ডিসপ্লে সবচেয়ে বেশি উপযোগী হলো গেইমিং প্যানেল এর জন্য।
নিম্নমানের পিক্সেল ডেনসিটি হলেও এর মূল্য পড়বে $৮০০ ডলার (প্রায় ৬৫, ৫০০)। আর এর মনিটরও বেশ ভালো উচ্চমানের পারফর্মেন্স দেয়। অ্যাসার জেড ৩৫ কে আসলে মূল্যায়ন করা বেশ কঠিন। তবে আপনি যদি গেইমার হয়ে থাকেন, তাহলে এটি না কেনাই ভাল হবে আপনার জন্য।
বৈশিষ্টসমূহ
দুর্বল দিক
সর্বোপরি, প্রথমত আপনি কোন্ কাজে এটি ব্যবহার করতে চান সেটি আগে দেখুন। এরপর সেই কাজের ধরন অনুযায়ী বাছাই করুন যে আপনি কোনটা নিতে চান। আর এ সকল ব্যাপারে সিদ্ধান্তটা অনেক ভেবে চিন্তে নিতে হয়। তাই যাই করুন, সবকিছু ভেবে চিন্তে তারপরই আল্ট্রা-ওয়াইড মনিটর কিনুন।
পরিশেষে, টেকটিউনস হলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কে জানার এক সুবিশাল প্ল্যাটফর্ম। প্রতিনিয়তই থাকবেন নতুন নতুন জ্ঞানের মধ্যে। জানবেন অজানাকে। তবে হ্যাঁ। শুধু জেনেই বসে থাকবেন না। এই জ্ঞানগুলো ছড়িয়ে দিন তাদের নিকট যাদের কাছে এই টিউনগুলো পৌঁছানো সম্ভব হয় না। জ্ঞান নিজের কাছে রাখার জিনিস না। ছড়িয়ে দিন আশেপাশে যারা আছে সবার মাঝে। প্রযুক্তিকে ভালবাসুন, প্রযুক্তির সাথে থাকুন। টেকটিউনসের সাথে থাকুন।
আজকের মতো এ পর্যন্তই। সামনে আবারও হাজির হবো নতুন কোনো তথ্য নিয়ে। আর টিউনটি কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না। টিউন বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে নিচে টিউমেন্ট বক্সে প্রশ্নটি করুন। এছাড়াও ফেইসবুকে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
ফেইসবুকে আমি: Mamun Mehedee
আমি মামুন মেহেদী। Civil Engineer, The Builders, Bogra। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 4 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 92 টি টিউন ও 360 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 12 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
আমি আপনার অবহেলিত ও অপ্রকাশিত চিন্তার বহিঃপ্রকাশ।