অনেক দিন পর আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে, তাই অনেক ভালো লাগছে। মাঝখানে বিভিন্য সমস্যার কারনে নিয়মিত হতে পারিনি তবে এখন থেকে নিয়মিত হতে চেস্টা করবো। অবশ্যই আপনাদের অনুপ্রেরনা আমার কাজে লাগবে। যাই হোক আমার আজকের টপিক গ্রাফিক্স কার্ড। আজকে আমরা সহজ ভাবে জানবো এর খুঁটিনাটি।
সহজ বাংলায় যে কার্ড আপনার পিসির গ্রাফিক্স প্রোসেসিং করে এবং ভিডিও আউটপুট তৈরি করে তাকে গ্রাফিক্স কার্ড বলে। সহজ একটা উদাহরন দেই, আপনি যে মুভি দেখছেন সেটাও কিন্তু গ্রাফিক্স কার্ডের একটা কাজ, হয়তো বলতে পারেন আমার তো গ্রাফিক্স কার্ড নাই কিন্তু মুভি তো দেখতে পারি, কিছু গেম ও খেলতে পারি। সেক্ষেত্রেও আপনার পিসির ইন্টারনাল গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট কাজ করছে।
গ্রাফিক্স কার্ড আর জিপিইউ নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে প্রথমে সেটা দূর করা যাক। 😀
আপনি একটা গ্রাফিক্স কার্ড কিনলেন, সেটাকে কি জিপিইউ বলবেন নাকি গ্রাফিক্স কার্ড বা ভিডিও কার্ড বলবেন। ফ্যান ট্যান সহ সুন্দর যে সার্কিট বোর্ডটা আপনি কিনে এনে পিসিআই এক্সপ্রেস স্লটে লাগাচ্ছেন সেটাকে বলবেন গ্রাফিক্স কার্ড বা ভিডিও কার্ড.
আপনার সাধের ভিডিও কার্ডের ফ্যান আর হিটসিঙ্ক খুললে ভিউটা এই রকম হবে, দেখবেন চারকোনা প্রসেসরের মত একটা পার্টস লাগানো আছে সেইটাকে বলে গ্রাফিক্স প্রোসেসর অথবা জিপিইউ (GPU) (Graphics Processing Unit)। জিপিইউ কিন্তু আপনার প্রসেসর এবং মাদারবোর্ডের সাথে বিল্ট-ইন হিসাবে থাকতে পারে, এক্ষত্রে প্রসেসর এর একটা অংশ গ্রাফিক্স অথবা ভিডিও প্রসেসিং করে, আপনার পিসির র্যামের কিছু অংশ কাজকরে ভিডিও র্যাম(Vram) হিসাবে। তাই আপনি ভিডিও কার্ড ছাড়াও মুভি দেখা, গ্রাফিক্সের হাল্কা পাতলা কাজ অথবা ছোট খাট গেমস খেলতে পারেন। সেক্ষত্রে সেটিকে বলা হবে ইন্টারনাল জিপিইউ আর এখানে যেটি দেখছেন সেটি হচ্ছে এক্সটার্নাল জিপিইউ। এক্সটার্নাল জিপিইউ অবশ্যই ইন্টারনাল জিপিইউ থেকে বেশি শক্তিশালী।
মাদারবোর্ডের যে স্লটে গ্রাফিক্স কার্ড কানেক্টেড থাকে সেটিকে বলা হয় পিসিআই এক্সপ্রেস, স্লট টি দেখতে নিচের মত। বিভিন্য ভার্সনের পিসিআই এক্সপ্রেস স্লট আছে যেমন PCIe 1/1.1/2/3 ইত্যাদি।
বর্তমানের সব কার্ডই PCI Express 2.0 x16 or PCI Express 3.0 x16 স্লট ইউজ করে থাকে। দুটি স্লটের মাঝে বেসিক কোন পার্থক্য নেই, ফ্রেম রেটে অল্প কিছু ডিফারেন্স পাওয়া যায়। PCI Express 3.0 x16 স্লটে ব্যান্ডউইথ অ্যালোকেশন বেশী থাকে যা অনেকটা ডাটা ট্রান্সফার রেটের মত।
PCI Express 2.0 x16 এর চেয়ে। কিন্তু মজার ব্যপার PCI Express 2.0 x16 তে যে পরিমান ব্যান্ডউইথ অ্যালোকেশন আছে সেটি বর্তমানের সবচেয়ে শক্তিশালী গ্রাফিক্স কার্ড ও ইউজ করতে পারেনা, PCI Express 3.0 x16 কে একধরনের বিজনেস পলিসিও বলতে পারেন। PCI Express 2.0 অথবা PCI Express 3.0 এর মাঝেও অনেক কাহিনি রয়েছে। স্লটের গায়ে অনেক সময় লেখা থাকে PCI Express 3.0 X8 অথবা X4, এগুলার মানে হল, X16 স্লট দিয়ে যে পরিমান ডাটা ট্রান্সফার হইয়, স্লট টি যদি X8 এ রান করে তবে সেই স্লট আর কম পরিমান ডাটা ট্রান্সফার হবে আর X4 এ আরো কম পরিমান, সহজ বাংলা কথায় X16 স্লট ছাড়া অন্য স্লটে কার্ড লাগালে গ্রাফিক্স কার্ডের পার্ফরমেন্স কমে যাবে। অনেক সময় দেখা যায় মাদার বোর্ডে ক্রস ফায়ার বা এসএলআই সুবিধা দেয়া আছে, দুইটা PCI Express 3.0 স্লট ও আছে। দেখা গেল একটা স্লট X16 আরেকটা স্লট X8 এ রান করে। তাহলে কাহিনি দাঁড়াচ্ছে, আপনি ক্রস ফায়ার বা এসএলআই ঠিকই করতে পারছেন কিন্তু সেকেন্ড কার্ড থেকে ভালো পার্ফরমেন্স পাচ্ছেন না। প্রোপার ভাবে ক্রস ফায়ার বা এসএলআই করতে দুইটা PCI Express 2.0/3.0 X16 স্লট প্রয়োজন। কিছুদিন পর AMD 300 সিরিজ রিলিজ হবে যেটা PCI Express 4.0 সাপোর্টেড হবে, 😀 😀
প্রায় সকলেই জানি বাজারে মুলত দুই কোম্পানীর গ্রাফিক্স কার্ড পাওয়া যায়,
এএমডি রেডন
এনভিডিয়া
ইন্টেল (বিল্ট-ইন গ্রাফিক্স)
এদের কাছ থেকে চিপ কিনে নিয়ে এসে বিভিন্ন সাব ভেন্ডর কোম্পানী যেমন স্যাফায়ার, এমএসআই, গিগাবাইট, হিস ইত্যাদি কোম্পানী কার্ডের কিছুটা মডিফিকেশন করে বিক্রি করে যেমন কিছুটা ওভারক্লক করে দিল সাথে কুলিং সিস্টেমটাও একটু ইম্প্রুভ করে দিলো। যাই হোক এসব বিষয়ে পরে আসছি।
Nvidea GTX 770 অথবা AMD 7970 এগুলা বলতে কিন্তু আমরা জিপিইউ বুঝি না, এগুলা হচ্ছে এক একটা ভিডিও কার্ড। প্রতিটা কার্ডের একটা কোড নেম থাকে। জিটিএক্স ৭৭০ ভিডিও কার্ডের জিপিইউ কে বলা হয় "GK104" একই ভাবে এএমডি ৭৯৭০ কার্ডের জিপিইউ হচ্ছে "Tahiti XT" এরা প্রায় প্রতি বছর পাল্লা দিয়ে নতুন নতুন জিপিইউ বাজারজাত করে, নতুন জিপিইউ গুলা সাধারনত একদম নতুন আর্কিটেকচার অথবা পুরানো আর্কিটেকচার গুলোর কিছুটা মডিফাইড ভার্সন হয়, যেমন AMD 7970Ghz Edition কার্ডের রিব্র্যান্ড হচ্ছে AMD R9 280X।
কার্ডের পার্ফরমেন্স অনেকাংশেই জিপিইউ আর্কিটেকচার এর উপর নির্ভর করে। বর্তমানের জিপিইউ গুলা ২-১ বছর আগের জিপিইউ এর চেয়ে অনেক শক্তিশালী, ভবিষ্যতেও সেম জিনিশ দেখা যাবে কারন প্রতি বছর যে হারে গেম ডেভলাপ হচ্ছে।
বাজারে যে গ্রাফিক্স কার্ড গুলা পাওয়া যায় সেগুলার কিছু স্প্যাসিফিকেশন থাকে নিচে দেওয়া হল, নিচে এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
আবার ফিরে আসি জিপিইউ বা গ্রাফিক্স প্রসেসরে। আমরা প্রায় সবাই সিপিইউ (CPU) বা প্রসেসর ইউজ করে থাকি। কেউ ডুয়েল কোর, কেউ কোয়াড কোর, কেউ হেক্সা কোর আবার কেউ কেউ আট কোরের প্রসেসর চালাই। যত বেশি কোর সংখ্যা, সেই সিপিইউ মাল্টি টাস্কিং তত ভালো। সাধারন প্রোসেসর এ সাধারনত ৮টা রিয়েল কোর এবং হাইপার থ্রেডিং এর মাধ্যমে সর্বোচ্চ ১৬টা ভার্চুয়াল কোর বা থ্রেড থাকতে পারে যা মাল্টিটাস্কিং এ খুব সহায়তা করে।
এবার আসি গ্রাফিক্স কার্ডের বেলায়। গ্রাফিক্স কার্ড যেহেতু কিছু স্প্যাসসিফিক অ্যাপ্লিকেশান এর জন্য ডিজাইন করা হয় তাই এর কোর সংখ্যা সিপিইউ এর তুলনায় অনেক অনেক বেশি এবং সাইজেও অনেক ছোট যাতে সবগুলা কোর ছোট সিলিকন চিপের মাঝে সঠিক ভাবে ফিট হয়।
এই বেশি সংখ্যক কোরের জন্য জিপিইউ তে বেশি সংখ্যক ট্রাঞ্জিস্টর থাকে। সিপিইউ এর তুলনায় এর সিলিকন ডাই এর মাঝে অনেক বেশি ট্রাঞ্জিস্টর থাকে। তাই এর তাপাত্রাও প্রসেসর এর তুলনায় অনেক বেশি থাকে।
এই গরম হওয়ার পিছনে আরো একটি কারন আছে। আপনি যখন গেম খেলেন অথবা গ্রাফিক্স রেন্ডারিং করেন তখন এটিকে কন্টিনিউয়াস প্রচুর পরিমান ডাটা প্রোসেস করতে হয়, আপনি যখন গেম খেলেন তখন জিপিইউ, সিপিইউ এর তুলনায় প্রায় ১০০ গুন বেশি ডাটা প্রসেস করে তাই এই তাপের উৎপত্তি হয়!
আমরা যারা একটু আধটু গ্রাফিক্স কার্ড নিয়ে ঘাটাঘাটি করি তাদের এই টার্ম গুলা জানার কথা, এগুলো আর কিছুই না উপরে বর্ননা করা "গ্রাফিক্স কোর"। এএমডি রেডন যে কার্ড গুলা বানায় সেইগুলার কোর কে বলা হয় "Stream processors "
এনভিডিয়ার পরিবর্তিত আর্কিটেকচারে এই "core" কে বলা হচ্ছে cuda cores, আপনারা একটু লক্ষ করলে দেখতে পারবেন যদি কাছাকাছি পারফরমেন্স এর দুটি Nvidea এবং AMD কার্ড তুলনা করেন তবে দেখবেন, Nvidea এর জিপিইউ গুলার কুডা কোরস এর সংখ্যা বেশ কম আবার AMD radedon এর "Streamprocessors" এর সংখ্যা তুলনামুলক অনেক বেশি। যেমন AMD Radeon HD 7970 3GB কার্ডটির 2048 টি stream processors আছে, যেখানে NVIDIA Geforce GTX 670 2GB কার্ডটির মাত্র 1344 টি Cuda Cores আছে. যদিও দুটি কার্ড প্রায় কাছাকাছি পারফর্মেন্স এর। সহজ ভাষায় বলি nvidea এর কোর গুলা একটু বড় সাইজের এবং বেশি শক্তিশালী এবং AMD এর কোর গুলার সাইজ ছোট এবং ছোট ছোট পাওয়ার এর তাই এরা সংখ্যায় তুলনামুলক অনেক বেশি।
এই টার্মটির সাথেও আমরা অনেকেই পরিচিত। কোর ক্লক বা কোর স্পীড বা ক্লক স্পীড হচ্ছে যে ফ্রিকোয়েন্সিতে জিপিইউ কোর গুলা অপারেট করে। এই ফ্রিকোয়েন্সিকে মেগাহার্য বা গিগাহার্যে প্রকাশ করা হয়, ব্যাপারটা অনেকটা সিপিইউ ক্লক স্পীড এর মত কিন্তু একটু ডিফারেন্স আছে, আপনি যখন হেভী গেমিং কিংবা গ্রাফিক্স রেন্ডারিং করবেন তখন জিপিইউ এর সবগুলা কোর ইউজ হবে। কিন্তু প্রসেসর এর ক্ষেত্রে সেটা হয় না, আপনার যদি ৮ কোর অথবা ১৬ থ্রেডের কোন প্রসেসর থাকে, বর্তমানের কিছু গেমস এবং গ্রাফিক্স এডিটিং সফটওয়্যার রিলেটেড বাদে বেশির ভাগ অ্যাপ্লিকেশানের ক্ষেত্রে সব গুলা কোর অথবা থ্রেড ইউজ হবেনা।
শুধু মাত্র ক্লক স্পীড দিয়ে দুটি কার্ডের পার্ফরমেন্স এর কম্প্যায়ার করাটা বোকামি হবে। আমরা সবাই জানি, ডুয়েল কোরের 3Ghz আর কোর আই ৫ এর 3Ghz সমান পারফর্মেন্স দেয় না, গ্রাফিক্স কার্ডের ক্ষেত্রেও তাই। সেম দুটি কার্ড বা কাছাকাছি পার্ফরমেন্স এর দুটি কার্ডের মাঝে কোর ক্লকের কম্পেয়ার চলে, যেমন AMD 7970 কার্ডটি 1000Mhz এ যে পারফর্মেন্স দিবে 1150Mhz এ তার থেকে কিছুটা ভালো পারফর্মেন্স দিবে। আবার যেমন Nvidea GTX 760 কে ওভারক্লক করলে সেটা Nvidea GTX 770 স্টক পার্ফরমেন্স কে টাচ করে, ওভার ক্লকিং এর বিষয়ে বিস্তারিত পরে আলোচনা করছি।
এই ফিচারটি Nvidea এবং AMD এর নতুন ফিচার, যা অনেকটা ইন্টেলের টার্বো বুস্ট টেকনোলজির মত। যখন প্রয়োজন হয় তখন গ্রাফিক্স কার্ডের কোর ক্লক স্পীড অটোমেটিক ভাবে কিছুটা বেড়ে যায় ফলে কার্ডের পার্ফরমেন্সও অনেকটা বেড়ে যায় যা গেমারদের জন্য খুবই দরকার। তবে এই ফিচারের ফলে কার্ডের পাওয়ার কনসাম্পশন কিছুটা বেড়ে যায় সাথে টেম্পারেচার ও খানিকটা।
Video Memory বা Video Ram বা VRam, আমাদের কাছে আরেকটি পরিচিত টার্ম। যেমন AMD 7750 1GB, AMD 7970 3GB, Nvidea GTX Titan 6GB, এখানে 1GB, 3 GB আর 6GB হচ্ছে কার্ডের ভিডিও মেমরী।
এটি অনেকটা আমাদের সিস্টেম র্যামের মত, এই VRam কার্ডের টেম্পোরারী ডাটা স্টোরেজ হিসাবে কাজ করে। আরো সহজ বাংলায় গ্রাফিক্স কার্ডের র্যাম কে VRam বা ভিডিও র্যাম বা ভিডিও মেমরি বলে।
একটি কার্ডের অনেক সময় দুটি ভার্সন থাকে যেমন GTX 770 কার্ডের এর ২জিবি এবং ৪জিবি দুটি ভার্সনই আছে। অনেকে মনে করে থাকেন এই VRam এর উপর কার্ডের পারফর্মেন্স নির্ভর করে থাকে। যত বেশি VRam, কার্ড তত ভালো, আসলে ব্যপারটি ঠিক না। একটি কার্ডের পারফর্মেন্স নির্ভর করে ওভার অল The number of cores, memory size/type/speed, আর মেইনলি জিপিইউ আর্কিটেকচার এর উপর। প্রশ্ন আসতে পারে যে তাহলে এই মেমরির কাজ কি। উত্তর হচ্ছে আপনি যখন বা মাল্টি মনিটরে অথবা উচ্চ রেজুলেশনে (1920X1080) বা (2560X1600) এর উপরে হাই টেক্সচার ডিটেইল, যেমন ফুল আল্ট্রা সেটিংস গেম খেলবেন তখন অতিরিক্ত VRam কাজে আসে, তখন ১জিবি এর বেশি VRam দরকার হয়। সাধারনত (1920X1080) বা ফুল এইচডি রেজুলেশনে বর্তমানের গেম গুলা আল্ট্রা সেটিংসে খেলতে 4জিবি এর বেশি VRam এর দরকার নেই, রিসেন্ট কিছু গেম যেমন জিটিএ ফাইভ, 1080p তে ৬জিবির উপর VRam কনসিউম করে, ফুল আল্ট্রা সেটিংস এ। তবে মনে হয় আগামী ২-১ বছরের মাঝে এই থিওরি চেঞ্জ হবে, দেখা যাবে তখনকার স্ট্যান্ড্যার্ড vRAM হবে ৮-১২ জিবি।
সোজা কথায় গ্রাফিক্স কার্ডের র্যামের স্পীড কে মেমরী ক্লক স্পীড বলে। এটি সাধারনত Mhz এ প্রকাশ করা হয়। এর অর্থ গ্রাফিক্স কার্ড কত দ্রুত র্য্যমের মধ্যে যে ডাটা টেম্পোরারি স্টোর হয়ে আছে, সেটাতে এক্সেস করতে পারে, মানে কি হারে ডেটা আদান প্রদান করবে। মেমরি ক্লক স্পীড বেশি হলে গ্রাফিক্স কার্ড দ্রুত ডাটা এক্সেস করতে পারে, কম মেমরী ক্লক স্পীড এর তুলনায়। সে ক্ষেত্রে ওয়েটিং টাইম ও কমে যায়। তাই মেমরি ক্লক স্পীড বাড়লে কার্ডের পারফর্মেন্স ও বৃদ্ধি পায়।
ক্লক স্পীড আর ডাটা রেট এর মাঝে একটা কনফিউশন আছে যেটা অনেকেই বুঝতে পারেনা। GDDR5 টাইপের মেমরি এর ক্ষেত্রে, এই ক্লক স্পীড সাধারনত 1000-1400 Mhz এর মাঝে থাকে। অনেক সময় কার্ডের স্প্যাসিফিকেশনে লেখা থাকে "datarate" বা "effective clockrate"। GDDR5 টাইপের মেমরিকে "quad pumped" বলা হয়, কারন এর একটি ক্লক সাইকেলে, ৪টি ডাটা প্যাকেট ট্রান্সফার হয়। সুতরাং 1000Mhz মেমরি ক্লক এর Data rate বা effective clockrate হবে 4000Mhz। মানে মুল ক্লক স্পীড এর ৪ গুন। এর অর্থ প্রতি সেকেন্ডে জিপিইউটি ৪০০০ মিলিয়ন ডাটা ট্রানজেকশন করতে সক্ষম। অনেক সময় কার্ড ম্যানুফেকচার মেমরি ক্লক স্পীড কে বিভিন্য ভাবে উল্লেখ করে, তাহলে কিভাবে বুঝবেন কোনটা আসল ক্লক স্পীড আর কোনটা ডাটা রেট, GDDR5 কার্ডের ক্ষেত্রে,
এটি হচ্ছে গ্রাফিক্স কার্ডটি কি টাইপের মেমোরী বা র্যাম দিয়ে গঠিত। অনেকটা সিস্টেম র্যামের মত, র্যাম যেমন DDR, DDR2, DDR3 হয়, কার্ডের বেলাও একই ঘটনা। DDR মানে হল Double Data Rate। বর্তমানে বাজারে GDDr3 এবং GDDR5 গ্রাফিক্স কার্ডই বেশি পাওয়া যায়।
GDDR4 কার্ড খুব রেয়ার, ATI X1950 কার্ডটি GDDR4 er। বর্তমানে পাওয়া যায়না, GDDR5 গ্রাফিক্স কার্ড অবশ্যই GDDR3 কার্ড এর চেয়ে ভালো। এই মেমরি টাইপের সাথে, মেমরী ক্লক স্পীড লিমিট এবং ব্যান্ডউডথ লিমিট এর সম্পর্ক আছে। পার্ফরমেন্স এর ক্ষেত্রে GDDR5>GDDR4>GDDR3>DDR2>DDR।
কিছুদিন পর এএমডি HBM (High Bandwidth Memory) নামে এক টাইপের মেমরী নিয়ে আসছে, এটি নতুন ধরনের এক মেমরী চিপ যেটি GDDR5 এর চেয়ে ৯ গুন দ্রুত বলে দাবী করা হচ্ছে, যা কার্ডের পার্ফরম্যান্সে এক বিপ্লব নিয়ে আসবে বলে ধারনা করা যাচ্ছে, যা মেমরী পাওয়ার কনসাম্পশন ও অনেক কমিয়ে দিবে।
আমরা হরহামেসাই বলে থাকি যে গ্রাফিক্স কার্ডটি 128bit, 256bit, 384bit বা 512bit এর। এখানে 128bit, 256bit বা 384bit হচ্ছে কার্ডের Bus width. Bus Width হচ্ছে প্রতি মেমরি ক্লক সাইকেলে মেমরীতে স্টোর থাকা যে পরিমান ডাটা তে জিপিইউ এক্সেস করতে পারে। নন টেকনিক্যাল ভাবে যদি বুঝাই Memory যদি পাইপের ভিতর দিয়ে সঞ্চালিত পানি কল্পনা করেন তবে Memory bus width হবে সেই পাইপের সাইজ। বেশি bus width মানে বড় পাইপ আর কম bus width মানে ছোট পাইপ। পানি বেশী আছে কিন্তু পাইপ ছোট, পানি ভালো ভাবে আসবে?? আসবে না। তাই মেমরীর পরিমান বেশী হলে ফুল পার্ফরমেন্স পেতে হায়ার bus width জরুরী। অনেক সময় লো ইন্ড কার্ড Nvide GT630, "4GB" মেমরী দিয়ে দেয়, এটি ইউজ লেস কারন, এটি 128-Bit এর, এই bus width দিয়ে 4GB ইউটিলাইজ হবে না। মানে সেই ছোট পাইপ থিওরী। হায়ার রেজুলেশনে গেম খেলতে বেশি Bus Width অবশ্যই জরুরি, 1080p রেজুলেশনে ভালো ভাবে গেম খেলতে মিনিমাম 256bit Bus width এর কার্ড দরকার। চার্টটি দেখলে হাল্কা আইডিয়া পাবেন। তবে একটা কথা আছে চার্ট টি তে হাল্কা এডিট করতে হয়েছে, কারন যে কার্ড একসময় হাই এন্ড ছিলো সেটি এই জামানায় মিড রেঞ্জ হয়ে গেছে, আবার দেখা যাবে এখন যে কার্ড গুলা হাই এন্ড, সেগুলা ২ বছর পর লোয়ার মিড রেঞ্জ বা মিড রেঞ্জ পজিশনে আছে। যা দিন কাল দেখা যাচ্ছে, কিছুদিন পর মনে হয় প্রতি বছরই গেমার দের কার্ড চেঞ্জ করা লাগবে। 😛
Bus width (GPU) | Typical videocard using it |
---|---|
128 bit | Typically low end cards have a 128 bit memory bus. examples are HD 7730, HD 6670, HD 7750, HD 7770 |
192 bit | Low-midrange cards typically have this, for example the GTX 460 GTX 660 . The GPU on the GTX 460 can also support a 256 bit bus but this requires additional RAM chips bringing the memory up to 1GB for the 256 bit version. |
256 bit | Midrange cards typically have this, examples are the HD 7870 and GTX 760. GTX 670 Some high end cards also have this bus width but typically their memory runs at a higher clockspeed requiring more expensive GDDR5 chips. |
320 bit | Lower Midrange, for example the GTX 570 uses a 320 bit memory bus. |
384 bit 512 bit | High End cards like the GTX 770, GTX 680 and the HD 7970Ghz. AMD R9 280X, HD 7950 . Extreme High end cards like AMD R9 290X, AMD R9 290. |
Memory bandwidth হচ্ছে জিপিইউ প্রতি সেকেণ্ডে যে পরিমান মেমরিতে এক্সেস করতে পারে। এটি Bus width এবং Memory Datarate এর একটি কম্বিনেশন, এটি সাধারনত GB/sec এ প্রকাশ করা হয়। যত বেশি Memory bandwidth তত বেশি গ্রাফিক্স কার্ডের পারফর্মেন্স। মজার একটা হিসাব দেখাই আপনাদের, মেমরি ক্লক 1200Mhz হলে ডেটা রেট হবে 4X1200=4800Mhz। যার মানে কার্ডটি প্রতি সেকেন্ডে 4800 million ডাটা ট্রানজেকশন করতে সক্ষম। ধরুন কার্ডটি 512 biT Bus Width এর, মানে প্রতিটি ট্রানজেকশন 512bit এর। তাহলে কার্ডটির টোটাল মেমোরি ব্যান্ডউয়িথ হবে, 4800X512= 24,57,600 million bits per second. আমরা জানি 8bit= 1byte, ৮ দিয়ে ভাগ করে পাই 3,07,200 million bytes per second, বা 307.2 GB/sec
জিপিইউ প্রতি সেকেন্ডে যে সংখ্যক টেক্সচারড পিক্সেল রেন্ডার করতে পারে, এটি সাধারনত Gigatexel per sec দিয়ে প্রকাশ করা হয়।
অনেক সিম্পল একটা টার্ম, আপনার কার্ড ম্যাক্সিমাম কত রেজুলেশন সাপোর্ট করে সেটা বুঝায়, একটি কার্ডে সাধারনত একাধিক আউটপুট পোর্ট থাকে এবং প্রত্যেক পোর্টের ম্যাক্সিমাম রেজুলেশন সমান হয় না।
সেটা ভিজিএ পোর্টের জন্য এক রকম, ডিভিআই এর জন্য এক রকম আবার এইচডিএমআই অথবা ডিসপ্লে পোর্টের জন্য এক রকম।
টার্মটা সম্পর্কে একটু ভুল ধারনা থাকতে পারে অনেকের, যে গ্রাফিক্স কার্ড ফুল লোডে যে পরিমান পাওয়ার কনজিউম করে, সেটা তার TDP, আসলে সেটা হবে না। এটা হচ্ছে কোন কার্ডের যে কুলিং সিস্টেম আছে সেই কুলিং সিস্টেম একটা নির্দিষ্ট ওয়াট পর্যন্ত থারমাললি জেনারেটেড হিট বের করে দিতে সক্ষম। যেমন আসুস জিটিএক্স ৯৮০ কার্ডটির ম্যাক্সিমাম TDP হছে ১৬৫ ওয়াট, তার মানে আসুসের ঐ জিটিএক্স ৯৮০ এর কুলিং সিস্টেম, ১৬৫ ওয়াট পর্যন্ত থারমাললি জেনারেটেড হিট বের করে দিতে সক্ষম।
এই টার্মটির সাথে আমরা কম বেশি সবাই পরিচিত, একই ক্যাটাগরির দুইটি এএমডি কার্ড একত্রে ইউজ করলে সেটাকে বলে ক্রস ফায়ার, আর এনভিডিয়া কার্ডের বেলায় সেটা এসএলআই। এখানে একটি মজার ব্যাপার আছে, ধরুন আপনি জিটিএক্স ৯৬০ এর দুটি কার্ড এসএলআই করলেন একটি কার্ড ২জিবি ভার্সন অপরটি ৪জিবি ভার্সন, হিসাবে তো টোটাল vRAM ৬ জিবি পাবার কথা,
কিন্তু টোটাল vRAM হবে ২জিবি, দুটো ৪জিবি কার্ড ইউজ করলে হবে ৪জিবি, একই কাহিনী কোর ক্লকের ক্ষেত্রেও। আবার ধরা যাক একটি কার্ড ইউজ করে কোন গেমে ফ্রেম পাচ্ছেন প্রতি সেকেন্ডে ৫০ করে, দুটি কার্ড লাগালে তো ১০০ ফ্রেম পাওয়ার কথা কিন্তু পাওয়া যাবে ৮০-৮৫ ফ্রেম, মানে ক্রস ফায়ার বা এসএলআই করে দুটো কার্ডের পুরো পারফর্মেন্স পাওয়া সম্ভব না। কিছু লস হবেই, এটা নিয়ে গবেষনা চলছে, কিছুদিন পর হয়তো এই সমস্যা গুলি সলভ হয়ে যাবে।
আমরা হরহামেশাই শুনে থাকি সিপিইউ কিংবা জিপিইউ ওভারক্লকিং এর কথা এটি হচ্ছে একটি নির্দিস্ট পাওয়ার লিমিটের মাঝে ম্যানুয়ালি জিপিইউ এর কোর ক্লক অথবা মেমরী ক্লক স্পীড বৃদ্ধি করা, স্বভাবতই কার্ডের পার্ফরমেন্স ১০-১৫% পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। কিন্তু কিছু সমস্যা তো থাকেই, না বুঝে ওভার ক্লক করলে জিপিইউ বার্ন করার সম্ভাবনা থাকে+ "ম্যানুফেকচারার রেটেড ম্যাক্সিমাম ভোল্টেজ" এর চেয়ে বেশী ভোল্টেজ বাড়িয়ে ওভার ক্লক করলে কার্ডের ওয়ারেন্টি বাতিল হয়ে যায়, যদিও বাংলাদেশের সার্ভিস সেন্টারের লোকজন ধরতে পারেনা। ওভারক্লক করলে স্বাভাবিকের তুলনায় প্রচুর হিট জেনারেট করে। তবে কোন কার্ড নির্দিস্ট লিমিট পর্যন্ত ওভার ক্লক করা যায়, এর বেশি ওভারক্লক করলে সিস্টেম স্ট্যাবল থাকেনা+কার্ডটির ক্ষতি হতে পারে।
তবে কুলিং সিস্টেম ইম্প্রুভ করলে কোন নির্দিস্ট কার্ডের ওভার ক্লকিং লিমিট বেড়ে যায়। যেমন GTX 980 কার্ডটির ক্ষেত্রেই,
দুই কোম্পানির সেম কার্ডের ম্যাক্সিমাম ওভারক্লক ভ্যালু ভিন্ন, এর কারন হচ্ছে কুলিং সিস্টেম। আবার,
Evga GTX 980 hydro copper ওয়াটার কুল্ড এডিশন কোর ক্লক ওভারক্লক করে 1550Mhz পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যায় ওয়াটার কুলিং সিস্টেমের কারনে।
সোজা টার্ম, মানে জিপিইউ কি পরিমান পাওয়ার কনসিউম করছে সেটা, সাধারনত ২ ধরনের পাওয়ার কনসাম্পশন পাওয়া যায়, IDLE Power consumption & Max Power consumption. কোন কার্ড সিস্টেম লোড না থাকলে যে পাওয়ার কনসিউম করে সেটা তার IDLE Power consumption, আর ম্যাক্সিমাম ফুল লোডে যে পাওয়ার কনসিউম করে সেটা তার Max Power consumption, সাধারনত Max Power consumption এর উপর ভিত্তি করে পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট সিলেক্ট করা উচিত।
এবার আসি কার্ডের পাওয়ার কানেক্টরের বিষয়ে, কার্ডের পাওয়ার কানেক্টর মুলত দুই ধরনের হয়
6 pin Connector= 75w
8 pin Connector= 150w
On board pcie lane= 75w
কোন কোন কার্ডে দুইটি 6 pin connector থাকে, কোন কার্ডে একটি আবার কোন কার্ডে দুইটি 8 pin connector থাকে, আবার কোন কার্ডে একটি 8 pin connector ও একটি 6 pin connector থাকে। আবার কোন কার্ডে connector ই থাকে না, সেই কার্ড গুলা অবশ্য লো ইন্ড কার্ড এবং সেগুলা On board pcie lane থেকে পাওয়ার কালেক্ট করে। পাওয়ার কানেক্টর দিয়ে কার্ডে কত পাওয়ার ঢুকছে সেটা বুঝা যায়,
যেমন MSI GeForce GTX 980 Gaming কার্ড টিতে দুইটি 8 pin কানেক্টর দেয়া আছে, তার মানে 2X150= 300W+ On board 75W= 375W পাওয়ার সরবরাহের ব্যবস্থা আছে, কিন্তু কার্ডটির MAX power consumption = ~ 198 Watts, ওভারক্লক করলে আরো ২০-৩০ ওয়াট বেশি লাগবে তাই দুইটি 8 pin Connector ইউজ করা হয়েছে সেফটির জন্য। পাওয়ার কানেক্টর দেখে জিপিইউ এর MAX power consumption কিছুটা অনুমান করা যায়।
তো এই হচ্ছে গ্রাফিক্স কার্ডের মোটামুটি বেসিক খুটিনাটি, কিছু ইনফরমেশন ও ছবি গুলো ইন্টারনেট থেকে কালেক্ট করা হয়েছে।
কৃতজ্ঞতাঃ আসিফ ভাই (Vanguard)
আজকে এই পর্যন্তই, ভবিষ্যতে আবার দেখা হবে
আমি শুভ্র আকাশ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 72 টি টিউন ও 1922 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
ভালো টিউন ।