বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আশা করি আপনার সবাই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। কয়েকদিন হলো লেখালেখি করি না। পরীক্ষার ব্যস্ততা আর সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশে ইন্টারনেটে প্রচুর সুবিধার কারণে কয়েকদিন থেকে লেখা হয় নি। আজকে একটু সময় পেয়ে লিখতে বসে গেলাম। আমার লেখাগুলো একটু ভালো মানের করার জন্য চেষ্ঠা করে যাচ্ছি। তাই আপনাদের কোন সাজেশন আমার কাম্য রইলো। এবার আসল কখায় চলে আসি।
গুগলের নাম শুনেনি এমন পাবলিক সারা দুনিয়ায় পাওয়া যাবে কি না আমার সন্দেহ। ইন্টারনেটটাই মনে হয় গুগলের দখলে। এমন কোন সেবা নেই যা তাদের কাছে নেই। সার্চ ইঞ্জিন থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম পর্যন্তও তাদের দখলে। ইন্টারনেটের রাজ্যটার রাজা হচ্চে গুগল। তবে গুগলের রাজবাড়ীটা কেমন হবে একটু ভেবে দেখুন। আজকে আমি এই গুগলের রাজবাড়িটারই একটি অংশ আপনাদের দেখাবো। প্রত্যেক রাজারই যেমন আগে ফসল, পণ্য, জিনিসপত্র ইত্যাদি রাখার জন্য বিশাল গু_দামঘর থাকতো, তেমনি গুগলেরও রয়েছে সেই গু দামঘর। ইন্টারনেটের ভাষায় যাকে বলা হয় ডাটা সেন্টার।
আপনি যে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ফাইল, ফটো, ভিডিও ব্যবহার করছেন তা কিন্তু কোথাও না কোথাও সংরক্ষিত আছেই। মানে আপনি যদি অফলাইনে কোন গান শুনতে চান তাহলে সেই গান আপনার পিসির হার্ডডিস্কে থাকতে হবে। নয়তো আপনি তা শুনতে পারবেন না। তেমনি ইন্টারনেটে ব্যবহৃত ফাইলগুলোও কোন এক কম্পিউটারে সংরক্ষিত আছে। আর সেই কম্পিউটার ২৪ ঘন্টা ইন্টারনেটের সাথে কানেকটেড থেকে আপনাকে নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দিয়ে যাচ্ছে। অনলাইনের এইসব ফাইল সংরক্ষণ করার কম্পিউটারকে বলা হয় সার্ভার। একটি সার্ভার আপনার পিসির চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। ছোটখাটো কম্পানিগুলো একটি সার্ভার কিনে নেয় আবার একবারে ছোট কম্পানিগুলো একটি সার্ভার কয়েকটি অংশে ভাগ করে ভাড়া নেয়। একে বলা হয় হোস্টিং, এটা নিয়ে আর এগোচ্ছি না। যে জায়গায় এক বা একাধিক ওয়েব সার্ভার রাখা হয় তাকে বলা হয় ডাটা সেন্টার। একটি ডাটা সেন্টারে একটি থেকে কয়েক লাখ সার্ভার থাকতে পারে। আমরা যারা ওয়েব সাইট পরিচালনা করে থাকি তারা সবাই কোন না কোন কোম্পানি থেকে হোস্টিং নিয়ে থাকেন। এই হোস্টিং কোম্পানি গুলোর প্রত্যেকেরই রয়েছে প্রচুর সার্ভার সমৃদ্ধ ডাটা সেন্টার। আশা করি বিষয়টা বুঝতে পেরেছেন।
গুগলের তো আর সেবার অভাব নেই। কোটি ইউজারের প্রতি সেকেন্ডের ডাটা তাদের কাছে সংরক্ষিত হচ্ছে। এই প্রচুর ডাটাগুলো সংরক্ষণের জন্য তাদের রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত কয়েকটি ডাটা সেন্টার। চলুন এবার ঘুরে আসি গুগলের ডাটা সেন্টার থেকে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া, অরেগন, জর্জিয়া, দক্ষিণ ক্যারোলিনা এবং ওকলাহোমা অঙ্গরাজ্যে ছাড়াও বিদেশে ফিনল্যান্ড ও বেলজিয়ামে গুগলের সুবিশাল ডাটা সেন্টার রয়েছে। নিজেদের ডাটা সেন্টার প্রসঙ্গে সার্চ জায়ান্ট গুগল জানিয়েছে, কোনো ব্যবহারকারী যখন গুগলের সেবা ব্যবহার করে, তখন সে মহাবিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সার্ভার নেটওয়ার্কটিই ব্যবহার করছে। আর গুগলের এই টিউমেন্টে অসম্মতি জানানো যে কারো পক্ষে আসলেই কঠিন। তাদের সঙ্গে একমত না হয়ে উপায় নেই। ব্যবহারকারীদেরকে নির্ঝঞ্ঝাট সেবা প্রদানে ছবিগুলো গুগলের প্রচেস্টার আভাসমাত্র।
উপরে গুগলের ২টি ডাটা সেন্টারের বাইরে ছবি
শুধুই সার্ভার! এটি ৬০০ মিলিয়ন ডলার ব্যায়ে নির্মিত ডালাসে অবস্থিত এই গুগল ডাটা সেন্টার। এখানে খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টেরও প্রবেশাধিকার নেই! গুগল এর নিজস্সো প্রশিক্ষিত বাহিনী এই ডাটা সেন্টার এর নিরাপত্তা রক্ষায় নিয়োজিত।
গুগলের বিভিন্ন ডাটা সেন্টারের গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া রাজ্যে স্থাপিত গুগল ডাটা সেন্টার। ১ লাখ ১৫ হাজার স্কয়ার ফিট জায়গা জুড়ে অবস্থিত গুগলের এই ডাটা সেন্টারটি। এই সার্ভারগুলো ইউটিউব এবং সার্চের পারফরম্যান্স নিশ্চিত করে থাকে।
বিশাল হল, যতদূর চোখ যায় শুধুই সার্ভার আর সার্ভার.
ক্যাম্পাস নেটওয়ার্ক রুম, রাউটার এবং সুইচের। এখানকার নেটওয়ার্ক কানেকশন বাসা-বাড়ির ইন্টারনেট কানেকশনের চেয়ে ২ লাখ গুণ বেশি দ্রুতগতিসম্পন্ন।
অকার্যকর ড্রাইভ যে কোনো মুহূর্তে সাইট বসিয়ে দিতে পারে। গুগল জানিয়েছে, গ্রাহকদের তথ্য সুরক্ষিত রাখতে গুগল প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
একজন কর্মী সার্ভারের দেখাশুনা করছেন
এই রঙিন পাইপগুলোর মাধ্যমে ডাটা সেন্টারের পানি সরবরাহ করা হয়, ডাটা সেন্টার ঠান্ডা রাখার জন্য।
একটি সার্ভার এর মেরামত কাজ করছেন এক কর্মী।
যুক্তরাষ্ট্রে গুগলের অরেগন রাজ্যে অবস্থিত ডাটা সেন্টারটি মাদারবোর্ড রিপেয়ার করছে এক কর্মী। যদি সেটা রিপেয়ার না করা যায়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তা ধ্বংস করে ফেলা হয় এবং কাঁচামাল থেকে আবার নতুনভাবে প্রস্তুত করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনায় গুগলের ডাটা সেন্টারটিতে কাজ করছেন এক কর্মী। তিনি মেঝের নীচে থাকা পাইপের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের অরেগন রাজ্যে অবস্থিত গুগলের ডাটা সেন্টারের ছবি এটি। ডাটা সেন্টার শীতল করে বাষ্পয়িত ধোয়া বেরোচ্ছে।
ব্যবহারকারীরা যাতে দ্রুত ও ঝামেলাহীনভাবে যে কোনো তথ্য ব্যবহার করা পারে, সেজন্য গুগলে প্রতিটি ডাটা অনন্ত পক্ষে দুইটি সার্ভারে সংরক্ষণ করা হয়। এখানে গুরুত্বপূর্ণ ডাটার টেপগুলোর ব্যাকআপ রাখা হয়। এখানে একটি রোবটিক বাহু রয়েছে, যেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাকআপ টেপগুলো লোড এবং আনলোড করে থাকে।
ডাটা সেন্টার মনিটরের কন্ট্রোল স্টেশন। এখান থেকে সংশ্লিস্ট স্থানে ফোন এবং মেরামতের টিকেট যাচাই করা যায়।
https://www.youtube.com/watch?v=Y8Rgje94iI0
লেখায় কোন প্রকার ভুল থাকলে ক্ষমা সুন্দর দুষ্টিতে দেখবেন। আর লেখা সম্পর্কে যদি আপনাদের কিছু বুঝতে কোন অসুবিধা হয় তবে টিউমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। আপনাদের একটি মতামত আমাকে সামনে আরও সুন্দর কিছু উপহার দিতে উৎসাহ প্রদান করবে। আর যে কথা না বললেই নয়, তা হলো লেখা কপি পেস্ট বর্জন করা। ৩-৪ ঘন্টা একটানা লিখার পর কপি পেস্ট করলে পুরো পরিশ্রমটাই বৃথা যায়। সবাই ভালো থাকবেন। সকলের শুভ কামনা করে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।
আমি আতিকুর রহমান সোহেল। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 31 টি টিউন ও 289 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
খুব সাধারণ একজন । প্রযুক্তিকে ভালবাসি, এর জন্য সব কিছুই করতে পারি । জীবনের লক্ষ্য হিসেবে প্রযুক্তিকেই বেছে নিয়েছি । জানি না কতটুকু সফল হবো । তবুও সারা দিন রাত চলে আমার লক্ষ্য অর্জনের অবিরন্ত প্রচেষ্ঠা । হয়তো একদিন হবে সফল , নয়তো বিফল । তবুও যতদিন থাকবো, প্রযুক্তিকে ভালোবাসবো...
অসাধারণ !