আপনি জানেন কি World Health Organization ভিডিও গেমের আসক্তিকে একটি মানসিক রোগ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে? অনান্য মানসিক রোগের মধ্যে এখন ভিডিও গেমের আসক্তিও অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। আজ আমি আপনাদের জন্য নিয়ে এলাম এরকমই ভিডিও গেমে আসক্ত কিছু লোকের কথা এবং তারা কিভাবে এই আসক্তি থেকে বেরিয়ে এসেছেন সেটাও আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। উন্নত বিশ্বে এই ভিডিও গেমের আসক্তি থেকে মুক্ত হবার জন্য আলাদা ট্রিটমেন্ট সেন্টার রয়েছে। যুক্তরাজ্যের এমনই একটি ট্রিটমেন্ট সেন্টারের একজনের কথা নিয়ে আজকের এই টিউনটি আমি শুরু করছি:
ইভান (ছদ্মনাম) ১৯৯৫ সালে ২০ বছর বয়সী একজন চটপটে তরুণ ছিলেন। তিনি যুক্তরাজ্যের একটি শহরে বসবাস করতেন। অনেকদিন ধরেই কম্পিউটার সাইন্সে আগ্রহ থাকায় এই লাইনেই পড়াশোনা করেছেন এবং তখন একটি কোম্পানিতে কম্পিউটার নিয়ে কর্মরত ছিলেন। আর অন্য সবার মতোই দিনে বেশির ভাগ সময় কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করতে করতে এক সময় ভিডিও গেমের প্রতি ধীরে ধীরে চলে আসতে থাকে। সপ্তাহের ছুটির দিনে ভিডিও গেমস খেলা শুরু করেন তিনি। পরবর্তীতে ভিডিও গেমে মজা পেয়ে বসেন এবং আস্তে আস্তে তিনি প্রতিদিন ভিডিও গেম খেলা শুরু করেন। প্রতিদিন কাজ সেরে বাড়ি ফিরেই অবসর সময়কে ভিডিও গেম খেলায় ব্যয় করতেন তিনি। এভাবেই করেই তিনি দিন দিন ভিডিও গেমের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে তিনি অফিসে যখন কাজ করতেন তখন তার মনে ভিডিও গেমস খেলার শখ জেগে উঠতো এবং আস্তে আস্তে ঘরে এসে অবসর সময়ের সাথে সাথে অনান্য সময়গুলোও তিনি ড্রিংক্স পান করতেন আর ইন্টারনেটে ভিডিও গেমস নিয়ে বসে পড়তেন। তার অফিসের কাজ, তার ফ্যামিলির প্রতি তার দায়িত্ববোধ সবকিছুই তার লোপ পেয়ে বসে।
ভিডিও গেমস অবশ্যই সুস্থ বিনোদনের জন্য ভালো কিন্তু ভিডিও গেমের অনলাইন উপদানগুলো ব্যবহারের ব্যাপারে তিনি সবাইকে সচেতন করেছেন। এই অনলাইন গেমিংয়ের কারণেই তিনি ভিডিও গেমের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েন এবং পরবর্তীতে তার জীবনে, তারপরিবারের জীবনে দুগর্তি নেমে আসে। আপনি জানলে অবাক হবেন যে বিশ্বে প্রতিদিন নিয়মিত অনলাইন গেমস খেলেন এমন লোকের সংখ্যা কোটিরও উপরে। কিন্তু তাদের মধ্যে কিছু কিছু মানুষ রয়েছেন যারা ভিডিও গেমকে বিনোদনের জায়গায় না রেখে আসক্তির জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন। আর কোনো কিছুর আসক্তিই ভালো নয়। চলে আসি ইভানের বাকি ঘটনায়।
ভিডিও গেমের প্রতি আসক্তি তার দিন দিন বাড়তেই থাকে। তিনি ডাইনিং রুম থেকে তার নিজের রুমে কম্পিউটারকে সরিয়ে নিয়ে আসেন। প্রতিদিন মধ্যরাত পর্যন্ত তিনি ভিডিও গেম খেলতে যতক্ষণ না তিনি ঘুমে তলিয়ে যেতেন। আর প্রতি শুক্র-শনি বার ছুটির দিন থাকায় শুক্রবার সকালে ভিডিও গেমে বসতে আর শনিবার মধ্যরাতে গিয়ে উঠতেন। শুধুমাত্র বাথরুম লাগলেই তিনি কম্পিউটার ছেড়ে উঠতেন। ভিডিও গেমের নেশা তাকে এমনভাবেই পেয়ে বসে যে একসময় তিনি ঘুমকে সরিয়ে রাখার জন্য ড্রাগ নেওয়া শুরু করেন। তিনি নিয়মিত ড্রাগ নেওয়া শুরু করেন যাতে তিনি রাতে ঘুমিয়ে না পড়েন এবং আরো বেশি করে যাতে অনলাইনে ভিডিও গেম খেলতে পারেন।
পরবর্তীতে তিনি চাকুরি হারান এবং একই সাথে দুঃখজনকভাবে তার ফ্যামিলিও তাকে ছেড়ে চলে যায়। উল্লেখ্য তার নিজের সন্তান ছিলো। তিনি বলেন যে একজন বাবা হিসেবে সন্তানের প্রতি যে দায়িত্বগুলো ছিলো, বাবা হিসেবে একটি পরিবারকে দেখভাল করার যে দায়িত্বটুকু ছিলো তিনি এই ভিডিও গেমের নেশার কারণে তা করতে পারেননি।
উপরের চিত্রটি যুক্তরাজ্যে অবস্থিত Primrose Lodge এর। এই প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে ভিডিও গেমস আসক্তের চিকিৎসা শুরু করেছে। কিন্তু সংস্থাটির স্টাফদের থেকে জানা গেছে যে বিগত ২/৩ মাস ধরে গেমিং রোগীদের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে যা গত ১ বছরের মোট রোগীর থেকেও সংখ্যায় বেশি। সংস্থাটির সিনিয়র থেরাপিষ্ট Matthew Preece জানান সংস্থায় ভর্তিকৃত রোগীদেরকে অনান্য মানসিক রোগীদের মতোই ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয়। প্রথমে রোগীকে একাকি ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে গ্রুপ সেশনে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদেরকে তিনি DBT বা Dialectical Behavioural Therapy দিয়ে থাকেন। এই থেরাপিতে কিভাবে নিজের মনকে শান্ত রাখা যায়, কিভাবে ইমোশনকে কনট্রোলে রাখা যায় এগুলোই শিক্ষা দেওয়া হয়। ইভান বর্তমানে একটি রিকোভারী সংস্থায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন এবং ধীরে ধীরে তার জীবনকে স্বাভাবিক পর্যায়ে আনার চেষ্টা করছেন।
স্কুল কলেজের পড়াশোনা এবং ভিডিও গেমস এই দুটি বিষয় নিয়ে ব্যালেন্স করতে সবসমই স্টুডেন্টদেরকে হিমশিম খেতে হয়। কিন্তু তাইওয়ানীয় কিশোর Hseuh Jun-Chen এই ঘটনাটিকে মারাত্বক একটি পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। Hseuh Jun-Chen এর বাবা তার মাত্রারিক্ত গেমসের খেলা এবং পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে দেখে তাকে পড়াশোনায় মনোযোগী হতে বলেন এবং পর্যাপ্ত পরিমাণের ঘুমের জন্য বকা দেন। কিন্তু Hseuh Jun-Chen আর কথা শোনেনি। এই বিষয়ে বাবার উপর রাগ দেখিয়ে সে নিজেকের আগুণে পুড়িয়ে দেয় এবং করুনভাবে মৃত্যুবরণ করে। পরবর্তী দিন সকালে Hseuh Jun-Chen এর বাবা ছেলেকে ঘরের কোথাও খুঁজে না পেয়ে আশেপাশে খোঁজা শুরু করেন এবং ঘর থেকে ৩০০ মিটার দূরে ছেলে পুড়ে যাওয়া মৃতদেহ খুঁজে পান।
ইংল্যান্ডের Chris Staniforth একজন চটপটে তরুণ যার ভিডিও গেমের প্রতি আসক্তি ছিলো। তবে ভিডিও গেমকে সে গেমের জায়গাতেই রেখেছিলো এবং বাস্তবিক জগতকেও তার জায়গায় রেখেছিলো। সে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার গেমিং প্রোগ্রামেও চান্স পেয়ে গিয়েছিলো। মানে হচ্ছে ভিডিও গেম নিয়ে তার উজ্জল ভবিষ্যৎ ছিলো। কিন্তু ভিডিও গেমের প্রতি অতিরিক্ত নেশা তার জীবনে করুন পরিণতি নিয়ে আসে। দিনে ১২ ঘন্টা করে ভিডিও গেম খেলা তার জীবনে একটি স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে পড়েছিলো। এরকমই এক রাত্রে গেম খেলার সময় সে তার বুকে ব্যাথা অনুভব করা শুরু করে এবং তাৎক্ষনিক সে গেম বন্ধ করে শূয়ে পড়ে। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে বুকের ব্যাথা সাড়াতে পারলেও পরবর্তীতে ঘটে এক করুন ঘটনা। ওই সকালে সে একটি চাকুরির ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছিলো। আর জব সেক্টারের বাইরেই সে হঠাৎ মৃত্যুর কোলে ঢেলে পড়ে। পরবর্তীতে তার এই হঠাৎ মৃত্যুর কারণ হিসেবে জানা যায় সে তার পাঁয়ে deep vein thrombosis বা রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধার কারণে সে মৃত্যু বরণ করে। একই স্থানে অনেকক্ষণ বসে থাকার কারণে তার পাঁয়ে এই deep vein thrombosis রোগটি হয়।
এই ঘটনাটি যেকোনো বাবার কাছেই সাংঘাতিক লাগতে পারে। একটি বড়দিনের সন্ধ্যায় James Dearman তার সন্তানকে বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়তে বলেন এবং তিনি ও তার স্ত্রী ভিডিও গেম খেলতে বসে পড়েন। মাত্র ছয় বছর বয়সের ছেলে সামনে যেকেউ ভিডিও গেমস খেললে সে তাকিয়ে থাকবেই। কিন্তু James Dearman বার বার ছেলেকে বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়তে বলার পরেও যখন দেখলেন যে ছেলে যাচ্ছে না তখন রাগের বসে তিনি ছেলের উপর বসে পড়েন এবং গেম খেলতে থাকেন। সোফার উপর ছেলেকে শুয়ে রেখে তার উপর James Dearman বসে গেম খেলতে থাকেন। ৩৭০ পাউন্ড বা প্রায় ১৬৮ কেজি ওজনের James Dearman বুঝতে পারেননি যে তার ছেলে শ্বাঁস নিতে পারছে না। পরবর্তীতে টের পেলেও অনেক দেরি হয়ে যায়। শ্বাঁস রোধ হয়ে ছেলেটি মারা যায়। তবে পরবর্তীতে ৯১১ য়ে ডায়াল করেও কোনো লাভ হয়নি। হাসপাতালের ডাক্তাররা ছেলেকে মৃত ঘোষনা করেন।
জনপ্রিয় ভিডিও স্ট্রিমিং প্লাটফর্ম Twitch য়ে নিয়মিত লাইভ ভিডিও স্ট্রিমিং করতেন Brian Vigneault। ২০১৭ সালে তিনি একটি ২৪ ঘন্টা ব্যাপী ভিডিও গেম লাইভ স্ট্রিমিং করার উদ্যোগ নেন। এই স্ট্রিমিং থেকে প্রাপ্ত সকল অর্থ তিনি Make-A-Wish ফাউন্ডেশন নামের দাতব্য সংস্থায় দান করবেন বলেও জানান তিনি। কিন্তু এটি করতে গিয়ে ঘটে করুন ঘটনা। ২৪ঘন্টা ব্যাপি লাইভ স্ট্রিমিংয়ের ২২তম ঘন্টায় তিনি সিগারেট খাওয়ার জন্য হালকা বিরতি নেন এবং পরবর্তীতে আর ফিরে আসেন না। পরবর্তী দিনের সকালে তার বাসা থেকে জরুরীভাবে ডাক্তারদের খবর দেওয়া হয় এবং ডাক্তাররা তার বাসায় এসে তাকে মৃত ঘোষনা করেন। পরবর্তীতে জানা যায় যে ঘুম না আসার কারণে তিনি fentanyl নামের একটি ড্রাগ নিয়মিত নিতেন এবং সে রাতে তিনি অতিরিক্ত পরিমাণের ডোজ নিয়ে বসেন।
যারা অনলাইনে ভিডিও গেম খেলে থাকেন তারা নিশ্চয়ই জেনে থাকবেন যে অনলাইন ভিডিও গেম সহ বর্তমান যুগের অধিকাংশ গেমে আলাদা করে ভাচুর্য়াল কারেন্সি থাকে। যেখানে টাকা ভরে নিয়ে গেমাররা নির্দিষ্ট গেমটির বিভিন্ন উপাদান কিনে থাকে। এবারের ঘটনাটি ঘটেছে ভিয়েতনামের Hanoi শহরের একটি রাস্তায়। ১৩ বছর বয়সী Dinh the Dan ভিডিও গেমের জন্য টাকা সংগ্রহ করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে এবং রাস্তায় ৮১ বছরের একজন বৃদ্ধাকে দড়ি দিয়ে মেরে ফেলে! তারপর বৃদ্ধার পার্স থেকে ১০, ০০, ০০ Dong (৬.২০ মার্কিন ডলার) চুরি করে নেয় ছেলেটি। কিন্তু ঘটনাটি এখানেই শেষ হয়না। পরবর্তীতে বৃদ্ধাকে Dinh the Dan তার বাসার কাছেই একটি স্থানে পুঁতে ফেলে। কিন্তু শেষমেষ সেখানকার স্থানীয় পুলিশ ব্যাপারটি উন্মোচন করে ফেলেন।
ছোট ভাই ভিডিও গেম খেলছিলো। গেমের সাউন্ড লেভেল একটু বেশি থাকায় বড় ভাই ছোট ভাইকে বলে সাউন্ড কমাতে। কিন্তু এ নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে রাগারাগি শুরু হয়। কিন্তু দুঃখজনক ভাবে রাগারাগি পরবর্তী পর্যায়ে হাতাহাতিতে রূপান্তর নেয় এবং ঘটনাচক্রে ১৯ বছর বয়সী ছোট ভাই Luke Marshall একটি কুড়াল নিয়ে বড় ভাইয়ের দিকে কোপ মেরে বসে। ঘটনায় বড় ভাই কবজিতে এবং পায়ে আঘাত পান। পরবর্তীতে পরিবারের করা মামলায় ছোট ভাইকে second-degree assault এর জন্য জরিমানা করা হয়।
World of Warcraft ভিডিও গেমে আসক্ত ছিলো একটি কিশোর ছেলে। গেমটিতে তার পছন্দের চরিত্র চিলো Elf। গেমটিতে দিনে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় দিতো সে। তার অভিভাবকরা এই বিষয়টি নজরে নেন নি। ২০০৪ সালের ২৭ ডিসেম্বরে ছেলেটি ২৪ তলা বিল্ডিংয়ের জানালা দিয়ে লাফ দেয় এবং সাথে সাথে মৃত্যুর কোলে ঢেলে পড়ে! ঘটনার পর ছেলে অভিভাবকরা গেমটিকে মৃত্যুর জন্য দায়ী করেন। সুইসাইড করার কিছুক্ষণ আগেও ছেলেটি গেমে তার বাকি সদস্যদেরকে goodbye জানিয়ে যায় এবং বলে যে সে Elf এর সাথে দেখা করতে যাচ্ছে।
আসক্তি বা নেশা জিনিসটাই হচ্ছে একটি খারাপ জিনিস। কোনো কিছুরই আসক্তি ভালো না। সেটা ভিডিও গেমের প্রতিও প্রযোজ্য। উপরে উল্লেখিত কাহিনীগুলো বাইরের দেশের ঘটে যাওয়া বাস্তব ঘটনা। কিন্তু আমাদের বাংলাদেশেও ভিডিও গেমের প্রতি আসক্তি নিয়েও এইরকম করুন এবং সাংঘাতিক ঘটনা রয়েছে যা অনেক সময়ই খবরে উঠে আসে না। আমার নিজের দেখা দুটি ঘটনা বলে আজকের টিউনটি শেষ করছি। প্রথম ঘটনাটি সিলেটের, তখন ২০১২ সাল; আমি তখন সবে মাত্র HSC পাশ করেছি। সিলেটের হবিগঞ্জ শহরে আমার একজন ব্যক্তির সাথে পরিচয় হয় যিনি তার জীবনের ৫টি বছর এই ভিডিও গেমের প্রতি নষ্ট করেছেন। প্রফেশনাল ভিডিও গেমের নাম তো শুনেছেন। ভিডিও গেমকে যারা পেশা হিসেবে বেছে নেন তাদের কে প্রফেশনাল ভিডিও গেমার বলে। এগুলো বাইরের দেশে অহরহ হচ্ছে। কিন্তু এক্ষেত্রে বাংলাদেশে এখনো কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। ভদ্রলোক তার জীবনে চাকুরিরত অবস্থায় একটি অনলাইন ভিডিও গেমের প্রতি আসক্ত হয়ে যান এবং মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেন যে এই গেমটি খেলে তিনি টাকা ইনকাম করবেন, মানে এই গেমের প্রোফেশনাল গেমার হবেন। এই বলে তিনি তার জীবনের ৫ টি বছর এই গেমের প্রতি ব্যয় করেন এবং ফলাফল আসে শুণ্য! তিনি পরবর্তীতে শ্বশুরবাড়ীর আর্থিক সহায়তায় হবিগঞ্জ অঞ্চলে একটি সাইবার ক্যাফে ও কম্পিউটারের দোকান দেন এবং সেখানেই ২০১২ সালে তার সাথে আমার পরিচয় হয়েছিলো।
দ্বিতীয় ঘটনাটি খুলনার। এটি বেশিদিন আগের না। ২০১৭ সালের শেষের দিকে ঘটনা এটা। খুলনা সদরে একটি গেমিং ক্যাফেতে আমার এলাকার এক বড় ভাই মাঝে মধ্যে এসে গেম খেলতেন। কিন্তু তার গেমের প্রতি নেশা এতটুকু তা আমার ঘটনাটি না দেখলে জানা ছিলো না। তিনি তার অসুস্থ মা কে হাসপাতালে (২৫০ বেড হাসপাতাল, খুলনা) ভর্তি করিয়ে দিয়েই চলে আসেন গেমের ক্যাফেতে! অর্থ্যাৎ যেখানে মাকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর মায়ের চিন্তায় কোনো সন্তানই ঘরে পর্যন্ত খেতে আসে না সেখানে তিনি ভিডিও গেম খেলতে ১০ মাইল দূরে গেমিং ক্যাফেতে চলে এসেছেন। বাংলাদেশে ভিডিও গেম নিয়ে এরকমই ঘটনা অহরহ ঘটছে। হয়তো কোনটি আমরা জানি আবার কোনটি আমাদের জানা থাকে না। আশা করবো আজকের টিউনটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। টিউনটি সম্পর্কে কোনো কিছু বলতে চাইলে নিচের টিউমেন্ট বক্সে টিউমেন্ট করতে পারেন। আজ এ পর্যন্তই। আগামীতে অন্য কোনো টপিক নিয়ে আমি চলে আসবো আপনাদেরই প্রিয় বাংলা টেকনোলজি সোশাল প্লাটফর্ম টেকটিউনসে। টিউনটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমি ফাহাদ হোসেন। Supreme Top Tuner, Techtunes, Dhaka। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 661 টি টিউন ও 428 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 149 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
যার কেউ নাই তার কম্পিউটার আছে!