ভিডিও গেমসে আবার রেটিং? অনেকের মনেই এই প্রশ্ন জাগতে পারে। গেমস তো গেমসই, এতে আবার রেটিং দেওয়ার কি দরকার? কিন্তু হ্যাঁ রেটিং দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ ভিডিও গেমস ইন্ডাস্ট্রি এখন আর আগের মতো ছোট্ট পরিসরে নেই। বর্তমান যুগের ভিডিও গেমসগুলো এক একটি হলিউডের ছায়াছবির থেকে কম যায় না। এখন কথা হলো, ভিডিও গেমস খেলে মূলত ছোট শিশু থেকে কিশোর বয়সী ছেলেমেয়েরা।
আর তাদের বাবা-মা নিশ্চয় চাবেন না যে তাদের ছেলেমেয়েরা ভিডিও গেমস থেকে কোনো খারাপ কিছু শিখুক বা ভিডিও গেমস খেলে বিপদগামী হয়ে যাক। যেমনটা হলিউডের ফ্লিমগুলো দেখানোর আগে বাবা-মা ফ্লিমটির রেটিং দেখে তারপর সিদ্ধান্ত নেন যে ফ্লিমটি তাদের ছেলেমেয়েদের দেখানো যাবে কিনা; ঠিক তেমনটি এই ভিডিও গেমসের ESRB রেটিং দেখেও অভিভাবকরা কিংবা গার্জিয়ানরা নির্দিষ্ট কোনো ভিডিও গেমের কনটেন্ট সম্পর্কে ধারণা পেতে পারেন।
আমার কথাই বলছি। আমি নিজে ভিডিও গেম খেলি সেই ২০০১ সাল থেকে যখন আমি ৬/৭ বছরের ছিলাম। তখনকার যুগে ভিডিও গেমস বলতে গাড়ি রেসিং, বাইক রেসিং, ছোট বল নিয়ে লাফালাফি (DX-Ball) এগুলোই খেলতাম। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে ২০১০ সালের পর যখন ভিডিও গেমস জগতে গ্রাফিক্স এর উন্নতি যখন ঘটতে থাকে তখন ভিডিও গেমস নিয়ে এই রেটিং ব্যবস্থা চালু করা হয়। কারণ ভিডিও গেমসে বর্তমানে ভায়োলেন্স, সেন্সিটিভ সিনারি থেকে শুরু করে অনেককিছুই চলে এসেছে। এগুলোকে হয়তো আমরা যারা প্রাপ্ত বয়স্করা তেমন গুরুর্ত্বের সহকারে নিচ্ছি না কারণ এগুলো আমাদের জন্য তেমন কোনো চিন্তার বিষয় না।
কিন্তু আপনার ছেলে-মেয়ে কিংবা আপনার ছোটভাই যখন এই একই গেম খেলতে তখন সমস্যায় পড়তে পারেন আপনি। বর্তমানে ভিডিও গেমস নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো শুধুমাত্র কিশোর বয়সের কিংবা ছোট বাচ্চাদের জন্য গেমস বানায় না, বরং বর্তমানে প্রাপ্ত বয়স্কদের ভিডিও গেমসে আকর্ষণ করার জন্যেও ভিডিও গেমস বানানো ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই একজন শিশুকে বা একজন কিশোরকে ভিডিও গেমসে আকর্ষিত করার জন্য তেমন কোনো কস্ট করতে হয় না কিন্তু একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষকে ভিডিও গেমসে আগ্রহ বাড়ানোর জন্য বর্তমানে ভিডিও গেমসগুলোতে গেম-প্লেতে অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে।
এখনকার দিনে ভিডিও গেমসগুলোতে যেমন আর আগের মতো সহজ গেম-প্লে নেই ঠিক তেমনটি গেমসগুলো বিভিন্ন গ্রাফিক্স সেন্সিটিভ সিনারি এবং ভায়োলেন্স সহ বিভিন্ন এডাল্ট সাউন্ড দিয়ে গেমস বানানো হচ্ছে।
তাই বর্তমান আপনি নিজের জন্য বা নিজের ছোট ভাই কিংবা নিজের ছেলেমেয়েদের জন্য যখন ভিডিও গেমের ডিক্স কিনতে যাবেন কিংবা নেট থেকে কোনো গেম ডাউনলোড করবেন তখন গেমটির ESRB রেটিং দেখে নিবেন। কিভাবে দেখবেন? আর এই ESRB রেটিং বিষয়টি কি? তা নিচে আলোচনা করছি;
Entertainment Software Rating Board বা ESRB হচ্ছে একটি অলাভজনক ভলেন্টিয়ার ভিক্তিক একটি সংস্থা যেটি ভিডিও গেমস এবং অ্যাপসে রেটিং বসিয়ে থাকে। ESRB রেটিংয়ে একটি নির্দিষ্ট গেমের বয়স সেটিং, কনটেন্ট সেটিং এবং ইন্টারএকটিভ সেটিং নিয়ে তথ্য দেওয়া থাকে। এই রেটিং দেখে যে কেউ কোনো নির্দিষ্ট একটি গেম বা অ্যাপের কনটেন্ট সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত একটি ধারণা পেতে পারবে।
ESRB একটি ভলেন্টিয়ার ভিক্তিক সংস্থা এবং সংস্থাটির বিভিন্ন ভলেন্টিয়ারদের দ্বারা কোনো ভিডিও গেম মুক্তি আগেই সে গেমটি নিয়ে একটি রেটিং দিয়ে দেয়। আপনারা অনেকেই শুনে থাকবেন যে, মুক্তির আগেই অনেকে নির্দিষ্ট গেমটি খেলে ফেলছে। আসলে তারা ওই গেমটির টেস্টিং করে থাকে এবং তাদের টেস্ট রেজাল্ট এই ESRB সংস্থায় পাঠায় ও পরবর্তীতে সংস্থাটি তাদের সাইটে (http://www.esrb.org) উক্ত গেমের একটি রেটিং বসিয়ে দেয়।
উল্লেখ্য যে আমেরিকায় এই সংস্থাটির রেটিং ছাড়া গেমের দোকানগুলোতে কোনো গেমসের ডিক্স রাখা হয় না এবং একই সাথে রেটিং ছাড়া কোনো ভিডিও গেমের লাইসেন্সও পাওয়া যায় না। ১৯৯৪ সালে Mortal Kombat গেমটির সেক্স এবং ভায়োলেন্স কনটেন্ট থাকার কারণে আমেরিকার সরকার গেমটির বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা করে।
এই কারণে ১৯৯৪ সালেই গঠন করা হয় এই Entertainment Software Rating Board। সরাসরি ভিডিও গেমটি খেলার থেকে মূল বোর্ডে কর্মকর্তারা গেমটির ফুটেজ দেখেন, গেমটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের কাছে বিভিন্ন প্রশ্ন পাঠান, গেমটির প্যাকেজিং বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেন এবং কোন সময় গেমটির স্টোরিলাইনের স্ক্রিপ্ট পড়ে থাকেন। মাঝেমাঝে গেমটিতে অন্তর্ভূক্ত গানগুলোর লিরিক্সও পড়ে থাকেন। তারপরে গিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে না আসতে পারলে ভলেন্টিয়ার গেমারদের দিয়ে বোর্ডটি গেমটিকে খেলিয়ে থাকে।
মূলত ৫ (পাঁচ) ধরনের ESRB রেটিং রয়েছে যেগুলো একটি গেমস ডিক্সে আপনি খুঁজে পাবেন। এগুলো হলো:
১) E (Everyone) - এই রেটিং প্রাপ্ত গেমসগুলো যেকোনো বয়সের যেকেউ খেলতে পারবে। এই রেটিং প্রাপ্ত গেমসগুলো নিয়ে অভিভাবকদের কোনো চিন্তার কারণ নেই
২) E 10+ (Everyone 10+) - এই রেটিং প্রাপ্ত গেমসগুলো সবাই খেলতে পারবে তবে ১০ বছর বা তার নিচের শিশুদের এই গেমসগুলো খেলতে দেওয়া উচিত নয়।
৩) T (Teen) - ১৩ বছরের নিচের কাউকে এই রেটিং প্রাপ্ত গেমসগুলো খেলতে দেওয়া ঠিক নয়। কারণ এই সকল গেমসে হাল্কা পাতকা ভায়োলেন্স, হার্ড ওয়ার্ড ইত্যাদি দেওয়া থাকে।
৪) M (Mature 17+) - শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদের জন্যই এই রেটিং প্রাপ্ত গেমসগুলো খেলা উচিত। কারণ এই সকল গেমসগুলোতে কোনো ফিল্টার ব্যবহার করা হয় না। ধরুণ একটি যুদ্ধের ময়দানে আপনি যুদ্ধ করছেন এবং এখানে আপনার কমান্ডার অবশ্যই শত্রুপক্ষকে কোনো “ভদ্র” গালিগালাজ করবে না!
৫) AO (Adult Only 18+) - এই রেটিং প্রাপ্ত গেমসগুলোর থেকে সবারই দূরে থাকা উচিত। কারণ এগুলো ১৮+ গেমস। এগুলোতে চরম মাত্রায় সেক্সুয়াল কনটেন্ট এবং অনান্য কঠিন কনটেন্ট থাকে। আমাদের অনেকেরই ভুল ধারণা থাকে যে এই ১৮+ গেমসগুলোতে শুধুই সেক্সুয়াল জিনিস থাকে। আসতে ঘটনাটা তা নয়। ধরুণ একটি ভিডিও গেম বানানো হয়েছে শুধুমাত্র হাসপাতালের লাশগুলো কাটা নিয়ে। এখন এই গেমটি অবশ্যই ১৮+ রেটিং পাবে কারণ কোনো শিশু বা কিশোর বয়সের কেউ এই দৃশ্য সহ্য করতে পারবে না।
এগুলো ছাড়াও আরো দুটি রেটিং রয়েছে যা সাধারণত খুব কম দেখা যায়, এগুলো হলো:
৬) EC (Early Childhood) - এই রেটিং প্রাপ্ত গেমসগুলো শুধুমাত্র একদম শিশুদের জন্য উপযোগী করে বানানো হয়েছে। অনান্য বয়সের ছেলেমেয়েরা যে এই গেমসগুলো খেলতে পারবে না সেটা নয়, তবে এই গেমসগুলো অনেক সহজ করে বানানো হয়েছে বিধায় শিশুদের ছাড়া এই গেমসগুলোর অনান্যদের কাছে বোরিং লাগবে। যেমন একজন প্রাপ্তবয়স্ক লোক কখনোই চাইবে না বিদ্যু, নেট খরচ করে “তরমুজ কুঁচি” করার গেমস খেলতে!
৭) RP (Rating Pending) - যখন কোনো ভিডিও গেম ESRB রেটিং ছাড়াই মুক্তি পেয়ে যায় তখন এই রেটিং দেওয়া হয়। মূলত পূর্ণাঙ্গ গেম মুক্তি পাবার আগে ডেমো বা খসড়া গেম মুক্তি দেওয়া হয় তখন এই রেটিং দেওয়া হয়।
বি:দ্র: এই রেটিংগুলো আপনি কোনো গেমের ডিক্স কেনার সময় ডিক্স বক্সের প্রথম মলাটের এক কোনায় পাবেন। ডিক্সটি উল্টালে পেছনের মলাটে ESRB কর্তৃক আপনি গেমটির সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত সারসংক্ষেপ পাবেন। এগুলোকে Content Descriptors বলা হয়। এগুলো হচ্ছে:
> Alcohol Reference - গেমটিতে অ্যালকোহলের দৃশ্য রয়েছে কিংবা গেমটির কোনো উপাদানে অ্যালকোহলের কথা উল্লেখ রয়েছে
> Animated Blood - গেমটিতে রক্তপাতের দৃশ্য রয়েছে কিন্তু রক্তকে বাস্তবসম্মত করে উপস্থাপন করা হয়নি।
> Blood - গেমটিতে রক্তপাতের বাস্ববসম্মত দৃশ্য রয়েছে
> Blood and Gore - গেমটিতে রক্তপাতের বাস্ববসম্মত দৃশ্য রয়েছে এবং শরীলের অঙ্গ-প্রতঙ্গের বিচ্ছিন্নের দৃশ্যও রয়েছে।
> Cartoon Violence - গেমটিতে ভায়োলেন্স দৃশ্য রয়েছে কিন্তু এগুলো কাটুর্ন চরিত্রের সাথে ঘটেছে।
> Comic Mischief - গেমটিতে ভায়োলেন্স দৃশ্য রয়েছে কিন্তু সেটা ক্ষতিকারক নয়।
> Crude Humor - গেমটিতে অভদ্র ডায়ালগ রয়েছে
> Drug Reference - গেমটিতে বেআইনি মাদকদ্রব্যের ছবি রয়েছে এবং মাদকদ্রব্যের কথা উল্লেখ্য রয়েছে
> Fantasy Violence - গেমটিতে কাল্পনিক ধাঁচের ভায়োলেন্স রয়েছে
> Intense Violence - গেমটিতে বাস্তবিক এবং মারাত্বক মানের ভায়োলেন্স রয়েছে
> Language - গেমটিতে মধ্যম মানের গালিগালাজ রয়েছে
> Lyrics - গেমটির মিউজিকে গালিগালাজ, সেক্সুয়াল, ভায়োলেন্স, অ্যালকোহল বা ড্রাগ ব্যবহারের কথা রয়েছে
> Mature Humor - গেমটির ডায়ালগে ১৮+ কথাবার্তা রয়েছে
> Nudity - গেমটিতে সরাসরি উলঙ্গমূলক দৃশ্য রয়েছে
> Partial Nudity - গেমটিতে হালকা মানের উলঙ্গমূলক দৃশ্য রয়েছে
> Real Gambling - গেমটিতে বাস্তবসম্মত জুয়া খেলা যাবে
> Sexual Content - গেমটিতে যৌন উত্তেজনামূলক দৃশ্য রয়েছে
> Sexual Themes - গেমটিতে যৌন উত্তেজনামূলক থীম ব্যবহৃত হয়েছে
> Sexual Violence - গেমটিতে ধর্ষণ বা অনান্য যৌন নিপীড়নমূলক দৃশ্য রয়েছে
> Simulated Gambling - গেমটিতে জুয়া খেলার উপাদান রয়েছে তবে এখানে বাস্তব লাইফের অর্থ দিয়ে খেলা যায় না
> Strong Language - গেমটিতে অশ্লীল গালিগালাজ রয়েছে
> Strong Lyrics - গেমটিতে অশ্লীল মিউজিক রয়েছে
> Strong Sexual Content - গেমটিতে বাস্তবিক মানের যৌন উত্তেজনামূলক দৃশ্য রয়েছে
> Suggestive Themes - গেমটি মধ্যম মানের গালিগালাজযুক্ত কথোপকথন রয়েছে
> Tobacco Reference - গেমটিতে Tobacco পণ্যের ব্যবহারের দৃশ্য বা পণ্যের প্রতি উদ্দেশ্যমূলক দৃশ্য রয়েছে
> Use of Alcohol - গেমটিতে অ্যালকোহল পানের দৃশ্য রয়েছে
> Use of Drugs - গেমটিতে মাদকদ্রব্য সেবনের দৃশ্য রয়েছে
> Use of Tobacco - গেমটিতে Tobacco পণ্য গ্রহণের দৃশ্য রয়েছে
> Violence - গেমটিতে রক্তপাতবিহীন ভায়োলেন্স রয়েছে
> Violence References - গেমটিতে ভায়োলেন্সের প্রতি ইঙ্গিত করার দৃশ্য বা ডায়ালগ রয়েছে।
উল্লেখ্য যে একটি গেমে উপরের একাধিক বর্ণানা রেটিং থাকতে পারে। এই রেটিং গুলো দেখে আপনি সহজেই বুঝে নিতে পারবেন যে একটি গেমে কি কি রয়েছে এবং গেমটিতে আপনার ছেলেমেয়ে বা ছোট ভাই কিংবা আপনার নিজের জন্য উপযুক্ত কিনা।
সাধারণত এই রেটিং গুলো আপনি গেম কেনার সময় গেম ডিক্স বক্সের সামনে দিকে পাবেন। আর গেমটিতে Content Descriptors থাকলে সেটা ডিক্স বক্সের পেছনে পাবেন। এছাড়াও রেটিং গুলো আপনি অফিসিয়াল ESRB Website এবং ফ্রি ESRB মোবাইল অ্যাপেও পাবেন।
তবে উল্লেখ্য যে আমাদের দেশে অরিজিনাল গেম ডিক্স খুব কম কেনাবেচা হয়ে থাকে তাই পাইরেটেড ডিক্স কেনার সময় ডিক্সবক্সে আপনি এই রেটিং গুলো নাও পেতে পারেন, কারণ পাইরেটেড ডিক্স বক্সের ডিজাইন আলাদাভাবে আমাদের দেশের “ট্যালেন্টেড গেম ডিক্স বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান”গুলো করে থাকে।
এক্ষেত্রে আপনি সরাসরি ESRB ওয়েবসাইট বা অ্যাপ থেকে উক্ত গেমটির নাম দিয়ে সার্চ করলেই গেমটির রেটিংস এবং বর্ণানা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য পেয়ে যাবেন।
টিউনটির শেষে এসে একটি কথা বলতে চাই তা হলো, এই ESRB রেটিং দেখে আপনি কোনো ভিডিও গেম সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা না পেলেও হালকা পাতলা ধারণা পেতে পারবেন যার মাধ্যমে গেমটি আপনার জন্য / আপনার সন্তানের জন্য / আপনার ছোট ভাইবোনের জন্য উপযুক্ত কিনা সেটার ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
তবে এখানেও একটি কথা রয়েছে। জনপ্রিয় গেমস সিরিজ কল অফ ডিউটি এবং গ্রান্ড থেফট অটো (জিটিএ) এর অধিকাংশ গেমসগুলো কিন্তু M রেটিং পেয়েছে, তার মানে গেমসগুলো ১৭ বছরের নিচে কারো খেলতে দেওয়া উচিত নয়। কিন্তু এই নিয়ম কতজনই মানছেন? দেখা যাচ্ছে আপনার ১১ বছরের ছেলে এখন ভাইস সিটি খেলছে, কিংবা আপনার ১৫ বছরের ছোট ভাইকে আপনি GTA V গেমসটি কিনে দিলেন! এক্ষেত্রে বলা যায় যে ভিডিও গেমসকে ভিডিও গেমসের মতোই দেখলে এই ঘটনাগুলো ঠিক আছে, কিন্তু আপনি নিশ্চয়ই চাইবেন না যে আপনার কিশোর বয়সের ছেলেমেয়ে কল অফ ডিউটি গেমসগুলো খেলে বাস্তবিক জীবনে কাউকে গুলি করতে চাক, বা জিটিএ সিরিজের গেমসগুলো খেলে রাস্তাঘাটে বিপদজনক গতিতে গাড়ি/বাইক/সাইকেল চালাক।
একটি শেষ কথা বলে আজকের টিউনটি আমি শেষ করছি। সেটা হলো বর্তমানে জনপ্রিয় প্রায় সকল গেমসই অনলাইন ভিক্তিক গেম। আর মনে রাখবেন অনলাইন ভিক্তিক কোনো গেমে আপনি সঠিক ESRB রেটিং পাবেন না। যেমন জনপ্রিয় অনলাইন গেম Fornite কিন্তু T (Teen) রেটিং প্রাপ্ত একটি গেম।
তাই অনেক অভিভাবক কিন্তু নিশ্চিন্তে তাদের কিশোর বয়সী ছেলেমেয়েদের গেমটিতে খেলতে দিচ্ছেন। কিন্তু গেমটির অনলাইন চ্যাটিং বা ভয়েস চ্যাটিংটি কিন্তু ESRB রেটিং করেনি এবং করতেও পারবে না। কারণ অনলাইন চ্যাটিং বা ভয়েস চ্যাটিং রেট করা আদৌ সম্ভব না। তাই বলা হয়ে থাকে Online Content is not rated by ESRB। এখন T (Teen) রেটিং প্রাপ্ত গেমে কেউ যদি অনলাইনে চ্যাটিংয়ে বা ভয়েস চ্যাটিংয়ে প্রাপ্ত বয়স্কের মতো গালিগালাজ শুরু করে তখন সেখানে এই রেটিংগুলো বৃথা হয়ে যায়।
আশা করবো আজকের টিউনটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। ছোট ভাই, নিজের সন্তানদেরকে ভিডিও গেমস কিনে দেবার আগে এবং অন্য কাউকে কিনে দেবার আগে অবশ্যই গেমটি নিজে খেলে দেখবেন; আর তা সম্ভব না হলে এই রেটিংগুলো একবার পরখ করে নিবেন এবং ১০ মিনিট ইন্টারনেটে সময় খরচ করে গেমটির সম্পর্কে নিজে নিজে একটু অনুসন্ধান করে নিবেন।
এই বলে আজকের টিউনটি আমি এখানেই শেষ করছি। আগামীতে অন্য কোনো টপিক নিয়ে আমি চলে আসবো আপনাদেরই প্রিয় বাংলা টেকনোলজি সোশাল প্লাটফর্ম টেকটিউনসে। টিউনটি ধৈয্য ধরে পুরোটা পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমি ফাহাদ হোসেন। Supreme Top Tuner, Techtunes, Dhaka। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 661 টি টিউন ও 428 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 149 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
যার কেউ নাই তার কম্পিউটার আছে!