গেমটির নাম শুনেই বুঝতে পারছো, গেমটিতে তোমাকে স্নাইপিং করতে হবে! তবে এটি কিন্তু অতি সহজ নয়! স্নাইপিং করার জন্য তোমার চাই প্ল্যান, ধৈর্য্য, এবং সঠিক সময়ের অপেক্ষা। কারণ একটি বুলেট কিন্তু ইতিহাস পাল্টে দিতে পারে!!
Sniper Elite সিরিজের তৃতীয় সংস্করণ Sniper Elite III গেমটি বাজারে এলো এ মাসের শুরুর দিকে। গেমটি ট্র্যাকটিক্যাল শুটার ধাঁচ ফিচার করে এবং গেমটি থার্ড পারসন ভিউ তে খেলতে হয়। গেমটি নির্মাণ করেছে রেবেলিওন ডেভেলপমেন্টস এবং প্রকাশ করেছে ৫০৫ গেমস।
২০১২ সালের Sniper Elite V2 গেমটির প্রিকুয়্যাল হিসেবে Sniper Elite III গেমটিকে সাজানো হয়েছে। প্রিকুয়্যাল মানে Sniper Elite V2 গেমটির ঘটনাচক্রের আগের কাহিনী নিয়ে সাজানো হয়েছে Sniper Elite III।
গেমটির পটভূমি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে ঘিরে, যেখানে তোমাকে “Office of Strategic Services” এর অফিসার কার্ল ফেয়ারবার্ন হয়ে খেলতে হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালিন অবস্থায় নর্থ আফ্রিকায় একটি দাঙ্গা চলে। সেখানে কার্ল অংশগ্রহন করে জানতে পারে যে, নাজিরা একটি গোপন শক্তিশালি অস্ত্র তৈরি করেছে।
গেমটি সত্যি কথা বলে কাহিনীচক্রের চেয়ে গেম-প্লে কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে! তবে গেমটির আসল মজা পাওয়া যাবে যদি গেমটি তুমি ১০৮০পি রেজুলেশনে ৬০ ফ্রেমস পার সেকেন্ডে খেলতে পারো!!
নির্মাতাঃ
রেবেলিওন অক্সফোর্ড
প্রকাশ করেছেঃ
৫০৫ গেমস
ইঞ্জিণঃ
Asura
খেলা যাবেঃ
প্লে-স্টেশন ৩,
প্লে-স্টেশন ৪,
এক্সবক্স ৩৬০,
এক্সবক্স ওয়ান এবং
মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ভিক্তিক পিসিতে
মুক্তি পেয়েছেঃ
জুলাই, ২০১৪ সালে
ধরণঃ
ট্যাকটিকাল শুটার,
স্টেলথ,
থার্ড পারসন
খেলার ধরণঃ
সিঙ্গেল প্লেয়ার,
মাল্টিপ্লেয়ার,
কো-অপারেটিভ
সিস্টেম রিকোয়ারমেন্টসঃ
উল্লেখ্য যে গেমটি ডাইরেক্স এক্স ১১ এর নিচে সমর্থন করে না তাই উইন্ডোজ এক্সপিতে তো গেমটি চলবেই না বরং উইন্ডোজ এর উন্নত সংস্করণেও নাও চলতে পারে যদি তোমার গ্রাফিক্স কার্ড ডাইরেক্স এক্স ১১ সমর্থণ না করে। এবং গেমটির জন্য তোমার হার্ডডিক্সে ১৮ গিগাবাইট ফ্রি খালি জায়গার প্রয়োজন পড়বে।
কমপক্ষেঃ
ইন্টেল ডুয়াল কোর অথবা এথলন ৬৪ এক্স২ ডুয়াল কোর প্রসেসর,
২ গিগাবাইট র্যাম,
জিফোর্স জিটি ৬৩৫ অথবা রাডিয়ন আর৭ ২৪০ ২গিগাবাইট ডিডিআর৩ গ্রাফিক্স কার্ড,
উইন্ডোজ সেভেন (৩২বিট) অপারেটিং সিস্টেম,
ভালো ভাবে খেলতে হলেঃ
কোর আই ৫ প্রসেসর,
৬ গিগাবাইট র্যাম,
জিফোর্স জিটিএক্স ৫৫০ টিআই অথবা রাডিয়ন এইচডি ৭৯৭০ গ্রাফিক্স কার্ড,
উইন্ডোজ সেভেন (৬৪বিট) অপারেটিং সিস্টেম,
গেমটির মূল গেমপ্লে Sniper Elite V2 ভিক্তিক হলেও তা আরো উন্নত করে আপগ্রেড করা হয়েছে। গেমটিতে প্লেয়ারকে বড়সড় ব্যাটলফিল্ড ম্যাপের মধ্যে দিয়ে খেলে যেতে হবে যেগুলো নর্থ আফ্রিকায় সেট করা হয়েছে।
গেমটিতে প্লেয়ারের প্রাথমিক অস্ত্র হিসেবে থাকছে স্নাইপার রাইফেল। এছাড়াও এডিশনাল সাইড আর্মস হিসেবে থাকছে সাবমেশিন গান এবং পিস্তল। এগুলোতে সাইলেন্সারও লাগানো যাবে অবস্থা ভেদে। হ্যান্ড গ্রেণেডের ক্ষেত্রে প্লেয়ার এগুলোকে ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করতে পারে কিংবা ল্যান্ড মাইন হিসেবে অথবা ডাইনামাইট হিসেবেও ব্যবহার করতে পারে।
শত্রুদের অবস্থান এবং মুভমেন্ট বোঝার জন্য বাইনোকুলার ব্যবহার করা যেতে পারে। আর স্নাইপার রাইফেল দিয়ে গুলি করার সময় প্লেয়ার ক্যারেক্টারকে অবশ্যই শ্বাস ধরে রেখে তারপর গুলি ছুঁড়তে হবে। প্রত্যেকটা অস্ত্রেরই বিভিন্ন পার্ট বা অংশ গেমটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। যেগুলো মৃত শত্রুর বডি থেকে লুট করা যেতে পারে এবং নিজের মতো করে উক্ত অস্ত্রটি সাজিয়ে নেওয়া যেতে পারে।
গেমটিতে রয়েছে স্টেলথ উপাদান। একটি লাল চোখের আইকন রয়েছে যা প্লেয়ারের অবস্থান সম্পর্কে তোমাকে জানাবে। এছাড়াও শত্রুদের মাথার উপরে একটি গোল মিটার থাকবে যেটি তাদের এর্লাট হবার অবস্থান তোমাকে জানাবে।
আর গেমটিতে স্নাইপারের উচ্চ শব্দ ব্যবহার করা যেতে পারো শটটিকে আরো একুরেট করার জন্য। তবে সেটা তোমার উপর নির্ভর করবে।
স্নাইপার দিয়ে হত্যা এবং স্টেলথ ভিক্তিক ক্লোজ-কমবাটের জন্য গেমটিতে রয়েছে পয়েন্ট সিস্টেম। যার মাধ্যমে তুমি গেমটিতে উচ্চ র্যাঙ্ক অর্জন করতে পারো। আর গেমটির বিভিন্ন ম্যাপে স্নাইপার নেস্ট, কালেকটর কার্ড সহ জার্নাল পেপার ছড়িয়ে ছিটিড়ে রয়েছে। এগুলোও সংগ্রহ করতে পারো গেমটির পুরো মজা পাবার জন্য।
Sniper Elite V2 গেমটির এক্স-রে কিল ক্যাম ফিচারটিও গেমটিতে ফিরে এসেছে আরো আপগ্রেডেড হয়ে!! যেখানে আগের গেমটিতে শুধু বডির পয়েন্ট অব ইম্প্যাক্ট অংশটি দেখাতো সেখানে এই গেমটিতে শত্রু বডির পুরো অংশটি এক্স-রে ক্যাম হিসেবে দেখা যাবে! আর প্লেয়ার যানবাহনকেও টার্গেট করতে পারবে তবে এবার শুধু ইঞ্জিণে গুলি করে যানবাহনটিকে নষ্ট করে দেওয়া যাবে।
Sniper Elite III গেমটি খেলা যাবে তোমার মতো করে, তোমার ইচ্ছে মতো! মানে তুমি চাইলে দূর থেকে শত্রুদের স্নাইপ করতে পারো কিংবা পাথর ছুড়ে তাদেরকে অন্যমনস্ক করতে পারো অথবা স্টেলথ হিসেবে তাদের পেছন থেকে ছুড়ির আঘাত দিতে পারো! স্টেলথ হিসেবে আরো ব্যবহার করতে পারো সাইলেন্সার যুক্ত অস্ত্র!
কিংবা গেমটি তুমি বাপের বেটা হিসেবে উড়াধুড়াও খেলতে পারো!! মানে একটি সাবমেশিন অস্ত্র নিয়ে “যারে পাই তারেই মারি” হিসেবেও খেলতে পারো! হাহাহা!
তবে এতকিছু করতে পারলেও গেমটির আসল মজা পাওয়া পাবে স্নাইপিং করে! কারণ গেমটিতে শত্রুর AI লেভেল কঠিনতর হিসেবে সাজানো হয়েছে। আর স্নাইপিং করতে যেয়ে বাতাসের ধরণ এবং সাউন্ড লেভেল তোমার ঠিক করে তবেই মারতে হবে। আর সাউন্ড লেভেল যদি তুমি নিয়ন্ত্রণ না করো তাহলে প্রথম শটে নিকটবর্তী সকল শত্রু তোমার অবস্থান নিয়ে জল্পনা-কল্পনা করবে, দ্বিতীয় শটে নিকটবর্তী সকল শত্রু তোমার অবস্থানে চলে আসবে (সাংঘাতিক!), আর তৃতীয় শটে ম্যাপের সকল শত্রুর তোমার সঠিক অবস্থান সম্পর্কে জেনে যাবে (মারাত্বক সাংঘাতিক!!)
আর শত্রুদের মানসিক পাগল হিসেবে সাজানো হয়েছে। ধরো তোমাকে তারা আবিস্কার করতো একটি পাহাড়ের উপরে। তাদের কাছে যদি স্নাইপার নাও থাকে তবেও পাহাড়ের নিচ থেকে তোমাকে গুলি ছুঁড়বে হয় সাবমেশিন অস্ত্র দিয়ে নয় পিস্তল দিয়েও!!
গেমটিতে লুকিয়ে থাকার একমাত্র উপায় হলো শব্দের নিয়ন্ত্রণ! মাঝে মাঝে আকাশের গর্জন এবং প্লেন যাবার সময় বিকট শব্দ হয় তখনই তোমার কাছে স্বাধীনতা থাকে যেকোনো শট নেবার!
তবে তোমার রক্তে যদি স্টেলথ না সহ্য হয় তবে নিয়ে নাও একটি মেশিন গান আর বেরিয়ে পড়ো “যারে পাই তারেই মারি” খেলতে!! 😀
ডাউনলোডঃ
গেমস জোন সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যা, পরামর্শ, অভিযোগ এবং অন্যান্য যে কোনো বিষয়ের জন্য গেমস জোন এর ফেসুবক পেইজ http://www.facebook.com/games.zone.bd তে যোগাযোগ করুন অথবা সরাসরি লেখক গেমওয়ালার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন http://www.facebook.com/talented.fahad
সময় পেলেই ঘুরে আসো গেমস জোনের সাইট থেকে : http://www.gamewala.net
আমি ফাহাদ হোসেন। Supreme Top Tuner, Techtunes, Dhaka। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 661 টি টিউন ও 428 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 149 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
যার কেউ নাই তার কম্পিউটার আছে!
শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ।