আপনার পছন্দের গেমস কোনটি?এই প্রশ্নের জবাবে বেশিরভাগ গেমারই বোধোহয় প্রথমে একটু হতবিহবল হয়ে যাবেন।অনেক গেমসই তো খেলেছি,কিন্তু এভাবে তো আসলে ভেবে দেখা হয়নি-এমনটাই বেশিরভাগ বলতে পারেন।আসলেই তো,প্রতি বছর কত কত গেমস রিলিজ হয়,অনেকগুলাই হয়তো আপনি খেলেছেন,এর মাঝে কোনটা যে আপনার মনে দাগ কেটেছে আর কয়টা কে আপনি মনে রেখে দিয়েছেন সত্যিই জটিল এক ভাবনার বিষয়।আমারো আজ হঠৎ মাথায় আসলো এত বছরের কম্পিউটার গেমিং-এর জগতে সেরা গেমস আসলে কোনগুলা?ঘাটা শুরু করলাম ইন্টারনেট।বেছে বেছে সেখান থেকেই সেরা দশ গেমসের কথা জানাবো আজ আপনাদের।
সেরা গেমস নির্বাচনের ক্ষেত্রে গেমস রিলিজের সময়,সেই গেমস নিয়ে গেমারদের উন্মাদনা,মানুষকে সে সময় কতটা আনন্দ দিয়েছে সে গেমস এইসব বিষয়কেই বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।আর রিলিজের অনেক বছর পর এসেও কি মানুষ সেই গেমসে আনন্দ পাচ্ছে কিনা সেরা গেমস নির্বাচনে সেটাকেও মাথায় রাখা হয়েছে।
ধরণঃ ফার্স্ট পারসন শ্যুটার
ডেভেলপারঃ ইনফিনিটি ওয়ার্ড
পাবলিশারঃ আক্টিভিশন
রিলিজঃ ২০০৩
রেটিং: ৮.৩
পেছন থেকেই শুরু করা যাক.তালিকার ১০ নাম্বার স্থানটি দখল করে আছে কল অফ ডিউটি।২য় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষিতে নির্মিত এই গেমস আপনাকে দিবে সত্যিকার যুদ্ধক্ষেত্রের উত্তেজনা,নিছকই গোলাগুলি আর হত্যা করছেন এমনটা মনে হবে না আপনার কাছে।গেমসের শুরুতেই বার্লিনের শেষ যুদ্ধের সময় কোনো এক যুদ্ধক্ষেত্রে আপনাকে বিমান থেকে প্যারাট্রুপার হিসেবে নামানো হবে।সাথে সাথে আপনি গেমসের অবিশ্বাস্য বাস্তব এক যুদ্ধক্ষেত্র আর সিনেমাটিক কাহিনীর মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলবেন।
আপনাকে সবচেয়ে মুগ্ধ করবে গেমসের বাস্তব আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স আর টিমওয়ার্ক।এখানে একা আপনি তেমন সুবিধা করতে পারবেন না।আরো আছে চমৎকার সাউন্ড ইফেক্ট যা আপনাকে দেবে অন্যরকম এক স্বাদ।আর যদি মাল্টিপ্লেয়ার গেমিং এর কথা বলেন তাহলে বলতে হবে তালিকায় আরো উপরে একে স্থান দিতে হবে আপনাকে।
ধরণঃ সিমুলেশন
ডেভেলপারঃ আক্টিভিশন
পাবলিশারঃ আক্টিভিশন
রিলিজঃ ১৯৯৫
রেটিং: ৮.৪
সিরিজের ১ম গেমসটি রিলিজ হয়েছিল ১৯৮৯ সালে।২য়টি বাজারে আসার আগেই তুমুল হইচই পড়ে গিয়েছিল বিশ্বব্যাপী,বিশেষত এর আকর্ষণীয় গেমপ্লের জন্য।এখনো সর্বাধিক বিক্রিত থ্রিডি কমব্যাট সিমুলেশন গেমসের কথা আসলে চলে আসে এই গেমসের কথা।
এখানে আপনাকে ভবিষ্যতের পৃথিবীর রবোটদের সাথে লড়তে হবে।আর আপনি হচ্ছে ব্যাটলম্যাক,প্রায় ৭০ তলা উচু যুদ্ধ রবোট।দুই গোষ্ঠীর মধ্যে রক্তাক্ষয়ী এক যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এগিয়ে গিয়েছে গেমসের কাহিনী।
ধরণঃ রিয়েল টাইম স্ট্র্যাটেজি
ডেভেলপারঃ ক্রিয়েটিভ এসেম্বলি
পাবলিশারঃ আক্টিভিশন
রিলিজঃ ২০০৪
রেটিং: ৮.৭
টোটাল ওয়ার সিরিজের ৩য় এই গেমসটিকে গেমপ্লের বিবেচনায় সর্বাকালের অন্যতম সেরা,নিখুঁত ও আকর্ষণীয় বলে বিবেচনা করা হয়।৪এক্স স্টাইলের ওভারওয়ার্ল্ড ম্যাপ,সাথে রিয়েল টাইম ব্যাটিলফিল্ড সবমিলিয়ে সুক্ষভাবে ডিজাইন করা এক পরিবেশ দেখতে পাবেন পুরোটা গেমস জুড়েই।
প্রাচীন রোমের খুটিনাটি অত্যন্ত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই গেমসে।শত্রুর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজন্স এখানে খুবই উন্নত তাই ভালো পরিকল্পনা না করে খেললে সাফল্য পাবেন না আপনি।আর গ্রাফিক্স ডিটেইলস এবং সাউন্ড এই দুই দিক দিয়েও অনেক এগিয়ে রয়েছে গেমসটি।
ধরণঃ একশন,এডভেঞ্চার
ডেভেলপারঃ মাইক্রোপ্রস
পাবলিশারঃ মাইক্রোপ্রস
রিলিজঃ ১৯৮৭
রেটিং: ৯.০
নামটা একটু অপরিচিত লাগতে পারে আপনার কাছে।আর তা হওয়াটাই স্বাভাবিক।রিলিজের সালটা দেখুন না একবার!অসাধারণ উদ্ভাবনী শক্তি আর অভূতপূর্ব সব অভিজ্ঞতার জঙ্ক এই গেমসটি রিলিজের দুই যুগ পরও আজো তাই মানুষের মনে জায়গা করে রেখেছে।
সপ্তাদশ শতাব্দীর ক্যারিবিয়ান সাগরে মড়তে হবে আপনাকে।গেমসটির কাহিনী বেশ নাটকীয়।৭০টি আলাদা দৃশ্য।বিভিন্ন জাহাজ,সমুদ্রতীরে যুদ্ধ করা এমন আরো অনেক কিছুই আপনাকে বাধ্য করবে,গেমসটিকে ভালবাসতে।
ধরণঃফার্স্ট পারসন শ্যুটার
ডেভেলপারঃ ভালভা সফটওয়ার
পাবলিশারঃ সিয়েরা স্টুডিওস
রিলিজঃ ১৯৯৮
রেটিং: ৯.২
এই গেমসকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেবার সাহস করবো না।বলা হয় যে ফার্স্ট পারসন শ্যুটিং গেমস দুনিয়াকে দুই ভাবে বিভক্ত করে রেখেছে হাফ লাইফ।নানা চড়াই-উতরাই,আর রোমাঞ্চের মধ্যে দিয়ে রচিত হয়েছে হাফ লাইফ গেমসের জটিল এক কাহিনী।অনেকেই একে বিগ বাজেট হলিউডি মুভির সাথে তুলনা করেন এই বিবেচনায়।
গেমসের শুরুতে আপনি গর্ডন ফ্রিম্যান নামের তরুন এক রিসার্চ এসোসিয়েটস এর ভূমিকায় নিজেকে পাবেন,আযার আসলে কোনো ধারনা নেই কি পরিমান ঝুকিপূর্ণ পরিবেশের মধ্যে আছে সে।একদিন এক আজব স্পেসিমেন নিয়ে গবেষনা করতে করতে কাহিনীর মারপ্যাচে আপনি চলে যাবে অন্য কোনো খানে যেখানে সবাই আপনার শত্রু।এরপর শুরু হবে আপনার বেঁচে থাকার লড়াই।
ধরণঃফার্স্ট পারসন শ্যুটার
ডেভেলপারঃ ডিজিটাল ইলিউশন
পাবলিশারঃ ইলেক্ট্রনিক আর্টস
রিলিজঃ ২০০২
রেটিং: ৯.৩
আবারো আরেকটি ফার্স্ট পারসন শ্যুটার গেমস স্থান করে আছে টপ চার্টে।নাম শুনেই বুঝতে পারছেন ২য় বিশ্বযুদ্ধ নিয়েই এই গেমসের কাহিনী।গেমাররা অনেকেই একমত এই এক ব্যাপারে যে এর মতো নেশা খুব কম গেমসেই খুজে পাওয়া যায়।একবার খেলতে বসলে কোনো কারন ছাড়া পিসি ছেড়ে উঠাটা বোধোহয় সম্ভব না কারো পক্ষেই।
গেমসের শুরু আপনি নিজেকে খুজে পাবেন যুদ্ধক্ষেত্রের একদম মাঝখানে যেখান থেকে জয় ভিন্ন কোনো পথ খোলা থাকবে না আপনার সামনে।এই গেমস্রে আরেক বলার মতো ফিচার হচ্ছে মাল্টিপ্লেয়ার মোডে ৬৪ জন একসাথে খেলতে পারার অভাবনীয় এক অভিজ্ঞতা।আকাশ,মাটি,পানি সবখানেই খেলতে হবে আপনাকে,রয়েছে ৩২ ধরনের যুদ্ধযান।সবকিছুতেই পরদর্শীতা দেখাতে পারলেই বেচে ফিরতে পারবেন আপনি।
ধরণঃ আরপিজি
ডেভেলপারঃ বায়োওয়ার
পাবলিশারঃ ইন্টারপ্লে/ব্ল্যাক আইসল স্টুডিওস
রিলিজঃ ২০০০
রেটিং: ৯.৪
১৯৯৮ সালে সিরিজের প্রথম গেমস রিলিজের ২ বছর পর বাজারে আসে এই গেমস।এবং স্থান করে নেয় সর্বকালের অন্যতম সেরা ডানজন,ড্রাগন এইজাতীয় কাহিনীভিত্তিক গেমসগুলার মধ্যে সেরা গেমস হিসেবে।দারুন কমব্যাট সিস্টেম,সুনির্মিত পরিবেশ,বিভিন্ন মিশন,আকর্ষণীয় কাহিনী সব মিলিয়ে সত্যিই গেমসটি অতুলনীয়।
গেমসের কাহিনী রচিত হইয়েছে সাউদার্ণ কিংডম অফ এম্নকে ভিত্তি করেযার রাজধানী শহর হচ্ছে এথকাটলা।শক্তি আর বিত্ত অর্জনের যুদ্ধে এই শহরেই প্রতি পদে পদে রহস্য আর রোমাঞ্চ অপেক্ষা করছে আপনার জন্য।সেসবকে পাশ কাটিয়েই আপনাকে হতে হবে সবার সেরা।
ধরণঃ স্ট্র্যাটেজি
ডেভেলপারঃ ফিরাক্সিস
পাবলিশারঃ ২কে গেমস
রিলিজঃ ২০০৫
রেটিং: ৯.৪
সিভিলাইজেশন সিরিজের গেমস ছাড়া যেকোনো গেমিং টপ চার্টই অপূর্ণ থাকে,আর যখন প্রশ্ন উঠে কোনটা সেরা গেমসের তালিকা নিয়ে তখন এইটা নিয়েই ঝামেলায় পড়তে হয় সিভিলাইজেশন সিরিজের কোনটাকে রেখে কোনটাকে বাদ দিবেন।শেষমেষ চার নাম্বার গেমসটিই স্থান করে নিয়েছে তালিকায়।কোনো সন্দেহ নেই যে পিসি গেমিং দুনিয়ায় সিভিলাইজেশন অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্ট্র্যাটেজি সিরিজ গেমস যেকোনো বিবেচনাইতেই।বিশ্বজুড়ে ৬ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছে গেমসটির।
সিভিলাইজেশনের আগের গেমসগুলার চেয়েও অনেক আপগ্রেড করা হয়েছে একে।স্বাচ্ছন্দের সাথে গেমস খেলা,নতুন নতুন টুল,ফিচার,সহজ উপায়ে বিচক্ষণতার সাথে আপনাকে আপনার শহর গড়তে হবে।পাশাপাশি মাল্টিপ্লেয়ার গেমিং-এও দারুন উপভোগ্য গেমসটি।সিরিজের এই গেমস থেকেই আপনি পাবেন থ্রিডি ওয়ার্ল্ড ডিটেইলস নতুন গেমপ্লে এক্সপেরিয়েন্স।যাই হোক সবচেয়ে কথা ঠান্ডা মাথায় ভেবে ভেবে গেমসটি খেলতে হবে আপনাকে,নতুবা জয়ের আশা ছাড়তে হবে।
ধরণঃ ফ্লাইট একশন
ডেভেলপারঃ লুকাসআর্টস
পাবলিশারঃ লুকাসআর্টস
রিলিজঃ ১৯৯৪
রেটিং: ৯.৮
স্পেস কমব্যাট গেমস এখন আর তেমন একটা আলোচিত না হলেও একটা সময় সেগুলোই ছিল হালের সবচেয়ে জনপ্রিয় গেমস।আশির দশক থেকেই বাজার মাত করে রেখেছিল একের পর এক জনপ্রিয় সব স্পেস ব্যাটল গেমস কিন্তু ১৯৯৪ এ এসে স্টার ওয়ার্স টাই ফাইটার আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে দেয়।
মহাজাগতিক দখলের পটভূমিতে নির্মিত এই গেমস এখনো এযাবতকালের অন্যতম সেরা গেমস হিসেবে বিবেচিত।উন্নত ফ্লাইট মেকানিক্স,দুর্দান্ত কমব্যাট,চমতকার সব মিশন,উত্তেজনাকর কাহিনী গেমসটিকে দিয়েছে অন্য এক মাত্রা,যেখানে গেমসটির প্রতিদ্বন্দ্বী গেমসটি নিজেই।
ধরণঃ স্ট্র্যাটেজি
ডেভেলপারঃ মিথোস গেমস
পাবলিশারঃ মাইক্রোপ্রস
রিলিজঃ ১৯৯৪
রেটিং: ৯.৮
কাকতালীয়ভাবে সেরা গেমসের শীর্ষ দুটি স্থানই দখল করে রেখেছে ১৯৯৪ সালে রিলিজ হওয়া দুটি গেমস।তবে এবারেরটি স্ট্র্যাটেজি।সেরা গেমস হিসেবে যেই গেমসটিকে আপনি দেখছে হয়তো হালের পিসিতে সেই গেমসটিকে চালাতেই পারবেন না আপনি কম্পাটিবিলিটির জন্য কিন্তু অনেকেই একমত যে এক্স-কম:ইউএফও ডিফেন্স তার নিজ অবস্থানে এতোটাই শক্তিশালী হয়ে আছে যে একে সেরা গেমসের খেতাব না দিয়ে আসলে অন্য কোনো উপায় নেই।কনসেপ্ট বিবেচনায় যেকোনো গেমিং প্লাটফর্মের জন্য বানানো গেমসগুলার মধ্যে এটি নিঃসন্দেহে সেরা স্ট্র্যাটেজি গেমস।
এখানে আপনাকে এলিয়েনদের বিশ্বব্যাপী আক্রমণকে প্রতিহত করতে হবে।যেখানে আপনাকে জটিল ভূমি থেকে ভূমি যুদ্ধ পরিচালনা থেকে শুরু করে হাইটেক রিসার্চ,রোলপ্লেয়িং,ট্যাকটিকস,লোমহর্ষক কাহিনী থেকে শুরু করে অনেক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়েই যেতে হতে পারে।কখনো আপনাকে বিদ্ধস্থ ইউএফও দখল করতে হবে আবার আবার বড় শহর রক্ষার জন্য এলিয়েনদের সাথে সম্মুখযুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হবে।সবমিলিয়ে বৈচিত্র্যের কোনো অভাব পাবেন না আপনি এই গেমসে।এতো কিছু করার পরে আবার যুদ্ধ পরিচালনার বাজেটটা নিয়েও কিন্তু ভাবতে হবে আপনাকে।সবমিলিয়ে আকর্ষণীয় কাহিনী আর যুদ্ধের বাস্তব অভিজ্ঞতার মিশেল এক্স-কম:ইউএফও ডিফেন্সকে দিয়েছে সর্বকালের সেরা পিসি গেমসের খেতাব।
র্যাংকিং তথ্যঃ ign.com
আমি সেতু। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 16 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 47 টি টিউন ও 466 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আছি কম্পিউটার আর ইন্টারনেটকে সাথে নিয়ে।ভালোবাসি নতুন আর আনকোরা সফটওয়ার নিয়ে কাজ করতে।ভালো লাগে হার্ডওয়ার নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে।পড়ছি বুয়েটে।কাজ করছি টেকনোলজি টুডে'র সহকারি সম্পাদক হিসেবে।কম্পিউটার-এর জগতে শুধু ঘুরেই বেড়াচ্ছি গত প্রায় ১২/১৩ বছর ধরে।কম্পিউটার নিয়েই কাজ করছি ৮/৯ বছর ধরে।জড়িত আছি বিভিন্ন দেশী-বিদেশী সাইট-এর সাথে।মোটামুটি দেশীয় কম্পিউটারের সবক্ষেত্রেই নজর রাখতে...
1-3 নাম্বার গেমের কথা জিবনেউ শুনিনাই!