সুপ্রিয় টেকটিউনস কম্পিউনিটি, সবাইকে আমার আন্তরিক সালাম এবং শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি কম্পিউটারে কাজে গতিশীলতা এবং সিস্টেম ইউটিলিটি সফটওয়্যারের সমাহার নিয়ে আমার চেইন টিউনের তৃতীয় পর্ব।
আমরা যারা কম্পিউটার ব্যবহার করি তাদের সব সময় প্রত্যাশা থাকে কম্পিউটার থাকবে সুপার ফাস্ট এবং নিরাপদ। এ কারনে আমরা অকারনে বিভিন্ন ইউলিটি সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকি। জানিনা আপনারা এসব সফটওয়্যার থেকে কে কতোটা উপকৃত হয়েছেন তবে আমি এগুলোর কোনটাই ব্যবহার করি না। মিছেমিছি কম্পিউটারকে সফটওয়্যার ঝুড়ি বানিয়ে লাভ নেই। আজ আমি আপনাদের সাথে সহজ কিছু টিপস এর সাথে কয়েকটা সফটওয়্যার শেয়ার করবো সেগুলো ব্যবহার করলে পিসির উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ার পরিবর্তে পিসি থাকবে ভারমুক্ত এবং অবশ্যই সুপার ফাস্ট। সবগুলোই ফ্রিওয়্যার তাই এগুলোর জন্য কোন প্রকার ঝুঁকিপূর্ণ মেডিসিন ফাইল ব্যবহার করতে হবে না। পাইরেটেড জাতিকে ফ্রিওয়্যারের সাথে পরিচয় করানোর নিমিত্তে এই সিরিজে এর আগে আরও ২টি টিউন প্রকাশিত হয়েছে।
চেইন টিউনের তালিকা থেকে থেকে টিউনগুলো দেখে নিতে পারেন
কম্পিউটারে আমরা মাঝেমাঝে অকারনে বিভিন্ন সফটওয়্যার ইনস্টল করে ফেলি। আবার অনেক সময় প্রয়োজনের কারনেই সফটওয়্যার ইনস্টল করি কিন্তু প্রয়োজন শেষ হলেও সফটওয়্যারটি পিসিতে থেকে যায়। নিজে নিজে কম্পিউটারের অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যার আনইনস্টল করতে গেলে মনে হয় সফটওয়্যারটি হয়তো আবার কাজে লাগবে। তাই আর সেগুলো রিমুভ করা হয় না। কিন্তু আপনারা জানেন কিনা জানিনা, পিসিতে যতো বেশি সফটওয়্যার থাকবে পিসি ততো বেশি স্লো কাজ করবে। কারন অনেক সফটওয়্যার ব্যাকগ্রাউন্ডে রান হতে থাকে ফলে র্যাম এর উপর চাপ সৃষ্টি হয়, সেখানে জায়গার ঘাটতি দেখা দেয়। তাছাড়া যখন কম্পিউটার অন করা হয় তখন সবগুলো সফটওয়্যার এক সাথে চালু হয়। আপনাদের এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে “Should I Remove It?” ইউটিলিটি সফটওয়্যারটি প্রয়োজন।
Should I Remove It? সফটওয়্যারটি আপনার পিসি স্ক্যান করে কোন কোন সফটওয়্যারগুলো আপনি ব্যবহার করেন না সেগুলো দেখিয়ে দিবে। ফলে আপনি খুব সহজেই নিশ্চিত হতে পারবেন যে এই সফটওয়্যারগুলো আপনি কখনো ব্যবহার করেন না। ফলে সেগুলো রিমুভ করে পিসিকে সুপার ফাস্ট রাখতে পারবেন। তাছাড়া কম প্রয়োজনীয় সফটওয়্যারগুলো কাজ শেষ হয়ে গেলে রিমুভ করে ফেলা সব সময় খুব ভালো প্র্যাকটিস হিসাবে গণ্য করা হয়। আশা করি কম্পিউটারকে পরিচ্ছন্ন রাখতে এই অভ্যাসটি করবেন।
কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ককে কেন জানি হাড্ডি বলতেই বেশি ভালো লাগে। কারন একটা কম্পিউটারের পারফরমেন্স অনেকটাই নির্ভর করে হার্ডডিস্ক এর উপর। সুতরাং হার্ডডিস্ককে যতোটা সম্ভব বেড সেক্টর মুক্ত, সর্বোচ্চ স্পেইস সম্বলিত এবং সর্বাধিক স্বাস্থ্য সম্মত রাখতে নিয়মিত ডিস্ক ডিফ্রাগমেন্ট করাটা জরুরী। এ কাজের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সফটওয়্যার হলো Defraggler। এটা আপনার সমস্ত হার্ড ড্রাইভ, এর পার্টিশন এবং আলাদা ফাইল ডিফ্রাগমেন্ট করে। তাছাড়া এটা আপনাকে হাড্ডির ড্রাইভ ম্যাপ এবং হেল্থ স্ট্যাটাস প্রোভাইড করবে যাতে আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন সত্যিই ডিফ্রাগমেন্টেশন প্রয়োজন কিনা।
সফটওয়্যারটি সম্পূর্ণ ফ্রি! শুধুমাত্র ডাউনলোড করুন, ইনস্টল করুন এবং সারাজীবন নিশ্চিন্তে ব্যবহার করুন। পিসি নিরাপদ থাকলে সেটাকে মনে হয় নিজেরই নিরাপদ থাকা। কারন কম্পিউটারতো আমাদের জীবনের একটা বড় অংশ, তাই না?
Betternet হলো আমার দেখা সবচেয়ে ভালো ফ্রিওয়্যার VPN। খুব কম মানুষ আছে যারা VPN এর জন্য ফ্রিওয়্যার প্রোগ্রাম ব্যবহার করে থাকেন। যার ফলে সফটওয়্যারের জন্য লাইসেন্স এবং পাইরেসির চিন্তায় সব সময় ব্যস্ত থাকতে হয়। কিন্তু Betternet আপনাদের প্রত্যাশার চাইতে একটু বেশিই দিবে মনে হয়। এর সাহায্যে যেকোন কান্ট্রি রেসট্রিকটেড ওয়েব সাইট অ্যানোনিমাসলি ভিজিট করতে পারবেন। এছাড়াও Betternet VPN ব্যবহারের ফলে আপনার যেকোন তথ্য থাকবে শতভাগ নিরাপদ। নিরাপদ ইন্টারনেট সার্ফিং এর জন্য আর কি চাই?
ব্যবহারের পূর্বে সফটওয়্যারটি সম্পর্কে তাদের অফিশিয়াল ওয়েব সাইট হতে বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন। যারা VPN সম্পর্কে কিছুই জানেন না তারা একটু গুগল মামুর সাহায্যে এ বিষয়ে নিতে পারেন। যেহেতু টিউনটি শুধু সফটওয়্যারগুলোর পরিচয় পর্বভিত্তিক তাই এখানে বেশি কিছু বলা নিস্প্রয়োজন মনে হয়। যাহোক, আপনাদের ইন্টারময় পৃথিবী আরও সুন্দর হোক এই কামনা করছি।
কম্পিউটারের যেকোন ফাইল কিংবা ফোল্ডারকে সেকেন্ড এর মধ্যে খুঁজে পেতে Everything এর কোন বিকল্প নেই। এটি এতোটাই দ্রতগতির এবং কার্যকর সফটওয়্যার যে, যেদিন থেকে এটা ব্যবহার করি সেদিন থেকে আমি ভুলেই গেছি কম্পিউটারের কোন ফাইল কোথায় রাখছি। কারন ছোট্ট একটা শর্টকাট দিয়ে সফটওয়্যারটি ওপেন করে সেকেন্ড এর মধ্যেই কাঙ্খিত ফাইল খুঁজে বের করা যায়। মাত্র কয়েক কিলোবাইট ক্ষমতার এই ছোট্ট সফটওয়্যার যে কতোটা কার্যকর সেটা ব্যবহার না করলে বুঝা যাবে না। তাছাড়া কেউ যদি Everything ব্যবহার না করে থাকেন তাহলে আমার মনে হয় তার জীবনটাই বৃথা। যাহোক, অফিশিয়াল লিংক হতে আপনার কম্পিউটারের কনফিগারেশন অনুযায়ী সফটওয়্যারটি ডাউনলোড করে নিন। আর সর্বোচ্চ ব্যবহারের জন্য এখানে ক্লিক করে এ বিষয়ে আমার প্রথম দিকের টিউনটি পড়ে নিন।
আজকের টিউনে আমি ছোট ছোট কিছু সফটওয়্যার আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। শুধু কোন সফটওয়্যারের কি কাজ এতোটুকুই বলেছি। আসলে এরচেয়ে বেশি বলা প্রয়োজন বোধ করলাম না। কারন সফটওয়্যারগুলোর সাইজেও যেমন ছোট তেমনি ব্যবহার পদ্ধতিও খুবই সহজ। শুধুমাত্র অকারন এগুলোর বর্ণনা দিতে গিয়ে আপনাদের ধৈর্য্যচ্যুতি আমার কাম্য নয়। যাহোক, সফটওয়্যারগুলো ব্যবহারে আপনাদের উপকার হলেই টিউনটি স্বার্থক। আপনি এর আগে এই সফটওয়্যারগুলোর কোনটি ব্যবহার করেছেন সেটা আমাকে অবশ্যই জানাবেন। তাহলে অন্তত ধারনা করা যাবে যে আপনাদের নতুন জিনিস দিচ্ছি নাকি পুরাতনকে ঘষে মেজে উপস্থাপন করছি।
টিউনটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে অথবা বুঝতে যদি কোন রকম সমস্যা হয় তাহলে আমাকে টিউমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না। কারন আপনাদের যেকোন মতামত আমাকে সংশোধিত হতে এবং আরো ভালো মানের টিউন করতে উৎসাহিত করবে। আর টিউনটিকে মৌলিক মনে হলে এবং নির্বাচিত টিউন হওয়ার উপযুক্ত মনে হলে নির্বাচিত টিউন মনোনয়ন দিতে ভুলে যাবে না যেন। সর্বশেষ যে কথাটি বলবো, আশাকরি এবং অপরকেও কপি পেস্ট টিউন করতে নিরুৎসাহিত করি। সবার সর্বাঙ্গিন মঙ্গল কামনা করে আজ এখানেই শেষ করছি। দেখা হবে আগামী টিউনে।
আপনাদের জন্য » সানিম মাহবীর ফাহাদ
➡ ইমেইলে আমার সকল টিউনের আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুনঃ টেকটিউনস » সানিম মাহবীর ফাহাদ 🙄
আমি সানিম মাহবীর ফাহাদ। সুপ্রিম টিউনার, টেকটিউনস, ঢাকা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 176 টি টিউন ও 3500 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 159 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আগে যা শিখেছিলাম এখন তা শেখানোর কাজ করছি। পেশায় একজন শিক্ষক, তবে মনে প্রাণে টেকনোলজির ছাত্র। সবার দোয়া প্রত্যাশি।
AWESOMEEEEE