সেরা ৫ টি স্কিল, যেকোনো একটি দিয়ে আপনিও ফ্রিল্যান্সিং যাত্রা শুরু করতে পারেন

আসসালামু আলাইকুম, সবাই কেমন আছেন? আশাকরি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো আছেন আলহামদুলিল্লাহ। বরাবরের মতো আজকেও আরেকটি টিউন নিয়ে হাজির হয়ে গেলান আপনাদের মাঝে।

২০২৪ সালে যদি আপনি ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চান, তাহলে আপনাকে এমন একটা স্কিল বেছে নিতে হবে যেটি ২০৩০-২০৩৫ সাল পর্যন্ত মার্কেটপ্লেসে ভালো ডিমান্ড থাকবে। এরকম ৫ টি ডিমান্ডিং স্কিল নিয়ে কথা বলব আজকের এই টিউনে। যারা ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চাচ্ছেন তারা আজকের এই টিউনটি ফলো করে ভালো একটি আইডিয়া পেয়ে যাবেন। আজকের এই টিউনে আমি যে ৫ টি স্কিল নিয়ে আলোচনা করব এখান থেকে আপনি যেকোনো একটি শিখলেই ৫-১০ বছর ডিমান্ডের সাথে কাজ করে জেতে পারবেন। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে মূল টপিকে চলে যাই।

১. প্রথম স্কিল: সাইবার সিকিউরিটি অথবা এথিক্যাল হ্যাকিং

সাইবার সিকিউরিটি ও এথিক্যাল হ্যাকিং ২টি জিনিস কিন্তু একি। এটি হলো মূলত অনলাইন সিকিউরিটি বিষয়ক। বর্তমানে যে-সব স্কিল আছে এসব স্কিল নিয়ে মানুষ অনেক কাজ করছে এবং তারা প্রতিনিয়ত হার্ড কাজ করছে সাথে প্রতিনিয়ত মানুষ আসছে এসব স্কিলে। যে স্কিল যত বেশি সহজ সে স্কিলে মানুষ তত বেশি কাজ করতে আসে আর যেখানে মানুষ বেশি সেখানে কম্পিটিশন ও বেশি। সাইবার সিকিউরিটি যেহেতু একটু হার্ড, এটাতে মানুষ কিন্তু অন্য স্কিলের তুলনায় অনেক কম। আমি বলব এটা কাজ শুরু করলে মোটামুটি ২০ বছর এটার চাহিদা অনেক বেশি থাকবে। সাইবার সিকিউরিটি সম্পর্কে যদি আপনার কোন ধারণা না থেকে তাকে তাহলে গুগলে সার্চ করলে অথবা ইউটিউবে ভিডিও দেখলে ধারণা পেয়ে যাবেন।

অনেকেই মনে করেন যে সাইবার সিকিউরিটি অথবা ইথিক্যাল হ্যাকিং facebook হ্যাক করা, ইউটিউব অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা এরকম কিছু, আসলে কিন্তু মোটেও এরকম না। ইথিক্যাল হ্যাকিং হলো, যদি কারো ফেসবুক হ্যাক হয়ে যায় অথবা কোন ওয়েবসাইটের সিকিউরিটি প্রয়োজন তখন আপনি এই সাইবার সিকিউরিটি অথবা ইথিক্যাল হ্যাকিং করে আপনি সিকিউরিটি সেট করবেন। এটা যদি আপনি করেন তাহলে আমি বল পরবর্তী ১০-২০ বছর আপনার ক্যারিয়ার ফিক্সড করে ফেলেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে AI এসেছে তাই হয়ত এর মার্কেট কমে যাবে, আমি তো বলব এই সেক্টরে এরকম কিছু হওয়ার প্রশ্নই উঠে না, কারণ AI যারা তৈরি করছে বা এরকম কিছু যারা তৈরি করছে তাদের ও কিন্তু সিকিউরিটি প্রয়োজন।

এই সেক্টর অনেক ভালো, তবে আপনার যদি ইন্টারেস্টেড না থাকে তাহলে এই সেক্টরে না আসাই ভালো। অনেকেই আছেন যে কিছুদিন করার পর অনেক কঠিন লাগে তার জন্য এই সেক্টর থেকে তারা চলে যায়। আপনি গুগল, ইউটিউবে সার্চ করে যদি আপনার ভালো লাগে তাহলেই আসেন এই সেক্টরে। সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে কাজ করলে আপনি খুব ভালো লেভেলের আর্ন করতে পারবেন।

২. দ্বিতীয় স্কিল: ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট

ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট নিয়ে অনেকেই বলছে যে এই সেক্টর তো অনেক আগে থেকেই আছে তাই সামনের দিকে এটার ডিমান্ড আছে কি না। ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট বলতেই আসলে এটা না যে আপনি কোডিং করে কিছু তৈরি করবেন, HTML, CSS এত কিছুর দরকার হয় না। আপনি কোডিং ছাড়াই, CMS, ওয়ার্ড প্রেস এরকম অনেক কিছু নিয়ে কোডিং ছাড়াই আপনি কাজ করতে পারেন।

আপনার যদি মনে হয় যে আপনি, HTML, CSS এরকম কোডিং আপনি করবেন না তাহলেও কিন্তু আপনি বিভিন্ন CMS দিয়ে অনেক সাইট বানাতে পারবেন। কোডিং ছাড়ও ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্টে অনেক কাজ করা যায়। আর আপনার যদি মনে হয় যে আপনি একটু অ্যাডভান্স লেভেলে শিখতে চান তাহলে বলব আপনি থিম ডেভেলপমেন্ট এ যান অথবা ফুল কোডিং রিলেটেড কাজে যান, যেখানে আপনি বিভিন্ন ধরনের বাক ফিক্স করতে পারবেন, ফুল একটা ওয়েবসাইট বানাতে পারবেন, এই স্কিলে গেলেও আপনার ক্যারিয়ার অনেকটাই গড়ে ফেলবেন। এটা সেরা লেভেল এগুলোর মধ্যে টপ এ রয়েছে।

৩. তৃতীয় স্কিল: ডিজিটাল মার্কেটিং

ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে যদি কিছু বলতে হয়, তাহলে বলব যে এই স্কিলটা খুব ভালো চলছে বাংলাদেশ বলেন আর অন্য দেশে বলেন এটা দিন দিন বাড়ছে। ডিজিটাল মার্কেটিং এর ইউজার দিন দিন বাড়ছে কারণ হলো এটা মোটামুটি সহজ একটা স্কিল। আপনি ইউটিউবে SEO করেও ভালো লেভেলের আর্ন করতে পারবেন, আপনি ফেসবুকের মার্কেটিং বা আপনি ওয়েবসাইটের SEO করেও ভালো আর্নিং করতে পারবেন।

৪. চতুর্থ স্কিল: ভিডিও এডিটিং

আমার মতে ভিডিও এডিটিং হলো সব থেকে ডিমান্ডিং স্কিল। মার্কেটপ্লেসে ২০২০ সাল থেকে এই পর্যন্ত বিশাল ডিমান্ডের সাথে ঠিকে রয়েছে এই স্কিল, এই সেক্টর খুব শীঘ্রই গ্রো হতে পেরেছে। আমাদের দেশে যদিও ভিডিও এডিট করানোর মানুষের সংখ্যা কম কিন্তু অন্যান্য দেশে এটার বিশাল চাহিদা রয়েছে। একজন বড় ইউটিউবারের ও কিন্তু একজন ভিডিও এডিটরের প্রয়োজন হয়।

আপনি যদি মনে করে যে আমি নরমাল ভিডিও এডিটিং করতে পারি, আমি মোটামুটি কাঠ করতে পারি এগুলো কিন্তু না। আপনি প্রফেশনাল ভিডিও এডিটর হতে হবে তার জন্য আপনাকে একটি ভালো কোর্স করতে হবে এবং যথেষ্ট সময় দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। বড় বড় ইউটিউবারের ই-মেইল সংগ্রহ করে মেইল করলে এখান থেকে আপনি কাজ পেতে পারেন। আপনি যদি দৈনিক ১০ জনকে ১০ টি মেইল করেন তাহলে ৩০ দিনে ৩০০ টি মেইল করা হবে, এই ৩০০ টা থেকে কি আপনি কি দৈনিক ২ টা ও কাজ পাবেন না আমার মতে অবশ্যই পাবেন।

৫. পঞ্চম স্কিল: সফট স্কিল

সফল স্কিল কিন্তু যে কেউ শুরু করতে পারে এবং যে কেউ শুরু করতে পারে। উপরে যে ৪ টি স্কিল নিয়ে কথা বললাম এগুলো শিখতে মোটামুটি অনেক সময়ের প্রয়োজন। সফট স্কিল আপনি খুব সহজেই শুরু করতে পারবেন বা শিখতে ও পারবেন। যেগুলো হার্ড স্কিল না এগুলোকে সফট স্কিল বলা হয়। উপরে যে স্কিল গুলো নিয়ে কথা বললাম এগুলো মোটামুটি হার্ড স্কিলের মধ্যেই পড়ে। হার্ড স্কিলের কিন্তু ডিমান্ড ও অনেক বেশি রয়েছে। কমিউনিকেশন, ম্যানেজ করার ক্ষমতা, ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এরকম সিম্পল কোন একটা কাজ সফট স্কিল।

এগুলোতে অনেক আগেও মানুষ কাজ করত এখন ও করে এবং ভবিষ্যতে ও এর চাহিদা থাকবে। একজন ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট কিন্তু অনেক কিছু করতে পারে। সে ই-মেইল সেন্ড করতে পারে, সে প্রজেক্ট ম্যানেজ করতে পারে, ডাটা এন্ট্রির কাজ করতে পারে, ই-মেইল মার্কেটিং করতে পারে এরকম অনেক টুলস আছে যেগুলো একজন ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজ করতে অয়ারে, আর শুধু ম্যানেজ করার জন্য কিন্তু লোক হায়ার করে থাকে। বড় বড় কোম্পানিতে ও অনেক ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট চাকরি করে থাকে। সফট স্কিলের মাধ্যমে আপনি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে জয়েন হতে পারেন।

ফ্রিল্যান্সিং করে অনেক মানুষ তাদের ক্যারিয়ার গড়তে সক্ষম হয়েছে। বর্তমানে চাকরি পাওয়া বিশাল পাহাড় সমতুল্য, তাই আপনিও যদি ভেবে থাকেন যে ফ্রিল্যান্সিং পেশা হিসেবে বেছে নিবেন তাহলে ২০২৪ সালের ফ্রিল্যান্সিং জগতে আপনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আজ আমি ৫ টি ডিমান্ডিং স্কিল নিয়ে আলোচনা করেছি। আপনি এই ৫ টি স্কিল থেকে যেকোনো একটি নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারেন। মনে রাখবেন স্কিল যত হার্ড হবে আপনার ক্যারিয়ার ততই উন্নত হবে, তাই যথেষ্ট সময় দিয়ে ভালো কোন স্কিল নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করুন।

আমি যে ৫ টি ডিমান্ডিং স্কিল নিয়ে আলোচনা করেছি এগুলো সম্পর্কে গুগল অথবা ইউটিউবে সার্চ করলে ভালো ধারণা পেয়ে যাবেন, এবং সম্পূর্ণ ধারণা পাওয়ার পর যেটি আপনার ক্যারিয়ারের জন্য বেস্ট মনে হবে সেটি নিয়ে কাজ শুরু করুন। আশাকরি আজকেরবেই টিউন থেকে আপনারা সবাই উপকৃত হবেন।

আজকের মতো এখানেই বিদায় নিলাম দেখা হবে আবার নতুন কোন টিউনে ভালো থাকুন সবাই, খোদা হাফেজ।

Level 7

আমি মাহবুব আলম তারেক। Sonic টিউনার, টেকটিউনস, সিলেট। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 95 টি টিউন ও 129 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 7 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 3 টিউনারকে ফলো করি।

I am a Graphics Designer, and have worked on a few other Web Sites.


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস