আর্টিকেল লিখে আয় করার পূনার্ঙ্গ গাইডলাইন

Level 4
শিক্ষার্থী, ইস্টার্ণ রিফাইনারী মডেল হাই স্কুল, চট্টগ্রাম

আস্‌সালামু আলাইকুম, অনলাইয়ে আয়ের সবচেয়ে সহজ ও বিশ্বস্ত উপায় হলো কন্টেন্ট রাইটিং বা আর্টিকেল রাইটিং। বিভিন্ন ওয়েবসাইট এমনকি বড় বড় ফ্রিল্যান্সিং সাইট গুলোতেও আর্টিকেল লিখে আয় করা যায়। অনেক কন্টেন্ট রাইটারতো আর্টিকেল লিখে মাসে ৫০০ ডলার থেকে শুরু করে ১০০০ ডলার বা তার চেয়েও বেশি আয় করে থাকেন। আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং সাইট গুলোতে ভিজিট করে থাকেন তাহলে দেখবেন আর্টিকেল রাইটিং এর উপর হাজার হাজার ডলারের কাজ পড়ে আছে।

তাই আজকে আমি আপনাদের বলবো ২০২২ সালে ঘরে বসেই কিভাবে আর্টিকেল লিখে আয় করার যায় সেই সম্পর্কে। জানাবো আর্টিকেল রাইটিং কি? কিভাবে ভালো আর্টিকেল লিখতে হয়? আর্টিকেল লিখে কিভাবে আয় করা যায় ইত্যাদি।

আর্টিকেল রাইটিং কি? (What is Article Writting?)

আর্টিকেল রাইটিং হলো কোন ব্যক্তি, বিষয় বা বস্তু সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা। কোন বিষয়ের উপর আর্টিকেল লিখার জন্য সেই বিষয় সম্পর্কে পূর্ন জ্ঞান থাকতে হবে বা সেই বিষয় সম্পর্কে রিসার্চ করে পূর্ন ধারণা লাভ করতে হবে। আর এই জ্ঞান বা ধারণার আলোকে কোন বিষয় নিয়ে লেখাকে আর্টিকেল রাইটিং বলে।

একটা সময় ছিল যখন শুধু মাত্র পত্র-পত্রিকা বা ম্যাগাজিনে আর্টিকেল লেখা হতো। কিন্তু তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে এখন বিভিন্ন ওয়েবসাইট,  ফোরাম,  ফেইসবুক পেইজ/গ্রুপ, ডিজিটাল ম্যাগাজিন বা নিউস পোর্টালে আর্টিকেল পাবলিশ করা হয় এবং যেকেউ চাইলেই এই আর্টিকেল লিখতে পারে।

কিভাবে ভালো আর্টিকেল লিখতে হয়? (How To Write Good Articles?)

কয়েকটি স্টেপ বা পয়েন্ট ভালো করে অনুসরণ করেই আমারা ভালো আর্টিকেল লিখতে পারি।

  1. ছোট কিন্তু আকর্ষণীয় টাইটেল দিন :আপনার আর্টিকেলের টাইটেলই পাঠককে বলে দিবে আপনার আর্টিকেল কি সম্পর্কে। তাই আকর্ষণীয় টাইটেল রাখুন যাতে টাইটেল দেখে মানুষের মনে পুরো আর্টিকেল পড়ার আগ্রহ জন্মে এবং টাইটেল যতটুকু সম্ভব ছোট করার চেষ্টা করবেন। যাদি টাইটেল অনেক বড় হয় তাহলে মানুষ টাইটেল পড়েই বিরক্ত হবে।
  2. ছোট ছোট প্যারাগ্রাফ করে লিখুন : যখন আমাদের সামনে অনেক বড় একটি আর্টিকেল আসে তখন আমরা সেটি পড়তে বিরক্ত বোধ করি কিন্তু পুরো আর্টিকেলের প্রতিটা টপিককে ছোট ছোট প্যারাগ্রাফে ভাগ করে নিলে মানুষ তা পড়তে স্বাছন্দ বোধ করে। তাই চেষ্টা করবেন পুরো আর্টিকেল একসাথে না লিখে ছোট ছোট প্যারাগ্রাফ করে লিখার।
  3. হেডিং ব্যবহার করুন : একটি আর্টিকেলের মধ্যে অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। যদি প্রতিটা বিষয় নিয়ে একটি ছোট প্যারাগ্রাফ হয় তাহলে প্রতিটা প্যারাগ্রাফের একটি হেডিং দিন। এর ফলে প্যারাগ্রাফের হেডিংটি ঐ প্যারাগ্রাফে কি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে তা প্রেজেন্ট করবে।
  4. ছবি ব্যবহার করুন : আর্টিকেলে ভিতরে মাঝে মাঝে ছবি ব্যবহার করুন। এর ফলে আর্টিকেলটি দেখতে যেমন সাজানো গুছানো ও সুন্দর লাগবে তেমনি পাঠকরে পড়ার আগ্রহও বৃদ্ধি পাবে। কারণ মানুষ একাধারে লেখা পড়তে পছন্দ করে না। তাই অবশ্যই মাঝে মাঝে ছবি ব্যবহার করবেন এবং মনে রাখবেন ছবি যেন আপনার আর্টিকেলের টপিক রিলেটেড হয়।

কিভাবে আর্টিকেল লিখে আয় করার যায়? (How To Make Money By Writing Articles?)

প্রথমেই বলেছি আর্টিকেল রাইটিং হলো অনলাইনে আয় করার সবচেয়ে সহজ উপায় গুলোর মধ্যে অন্যতম। আর্টিকেল লিখে আয় করার জন্য আপনার কোন শিক্ষাগত যোগ্যতা কিংবা সার্টিফিকেট লাগবে না। শুধু যেই বিষয়ের উপর আর্টিকেল লিখবেন সেই বিষয় সম্পর্কে একটু ভালোভাবে রিসার্চ করে নিলেই হবে। আর্টিকেল লিখে বর্তমানে মানুষ ঘরে বসেই অনেক মোটা অংকের টাকা আয় করছে। চলুন দেখে নেওয়া যাক কিভাবে আর্টিকেল লিখে আয় করা যায়

১. ব্লগিং করে আয়

আর্টিকেল লিখে আয় করার সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হলো ব্লগিং। আপনি যদি কোন বিষয়ের উপর এক্সপার্ট হন তাহলে ঐ বিষয় নিয়ে একটি ব্লগ সাইট তৈরি করে সেখানে আর্টিকেল লিখে আয় করতে পারেন।

এক্ষেত্রে যারা ইংরেজিতে তেমন এক্সপার্ট না তারা চাইলে বাংলায়ও নিজেদের ব্লগে আর্টিকেল লিখতে পারে।

কন্টেন্ট রাইটার হিসেবে আয়

আর্টিকেল লিখে আয় করার আরেকটি জনপ্রিয় মাধ্যম হলো কন্টেন্ট রাইটিং। পৃথিবীতে ভালো মানের হাই কোয়ালিটির কন্টেন্টের অনেক দাম আছে। মানুষ হাজার হাজার টাকা দিয়ে কন্টেন্ট রাইটারদের হায়ার করে ভালো কন্টেন্টের জন্য।

আপনি যদি অনেক ভালো ইংরেজি কন্টেন্ট লিখতে পারেন তাহলে আপনি বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে একজন কন্টেন্ট রাইটার হিসেবে মানুষের কাছে আপনার কন্টেন্ট সার্ভিস হিসেবে বিক্রি করতে পারেন।

২. ই-বুক লিখে আয়

ই-বুক হলো একটি বইয়ের ডিজিটাল কপি। আপনি যদি ভালো আর্টিকেল লিখতে পারেন তবে আপনি ই-বুক লিখে আয় করতে পারবেন। যেহেতু মানুষ এখন বই থেকেও ই-বুক পড়তে পছন্দ করে তাই আপনি একটি ই-বুক লিখে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ই-বুক মার্কেট এমাজন কিন্ডেলে আপলোড দিতে পারেন।

মজার ব্যাপার হলো আগে পরিচিত বা সুনামধন্য লেখদের বই বেশি বিক্রি হতো কিন্তু বর্তমানে যদি আপনি আপনার ই-বুকের কন্টেন্ট হাই কোয়ালিটির হয় এবং সঠিক মার্কেটিং করতে পারেন তাহলে সেটিও অনেক ভালো বিক্রি হবে।

৩. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়

আর্টিকেল রাইটিং ইন্ডাস্ট্রিতে সহজ ভাবে বেশি আয়ের সুযোগ রয়েছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে। আপনি যদি ভালো রিভিউ আর্টিকেল লিখতে পারেন তাহলে এমাজন, দারাজ ইত্যাদির মতো যেকোন অ্যাফিলিয়েট নেটওর্য়াকের কোন পণ্যের রিভিউ লিখে ঐ পণ্য কেনার লিংক দিয়ে আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে হাজার হাজার ডলার আয় করতে পারেন।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংকে সহজ ভাবে বেশি আয়ের সুযোগ বলা হয় কারণ এর জন্য পরিশ্রম করতে হয় একবার কিন্তু ইনকাম হয় বারবার।

৪. ফ্রিল্যান্সিং করে আয়

আপনি মানসম্মত আর্টিকেল লিখতে পারেন তবে আপনি বিভিন্ন ফ্রিল্যান্স সাইট গুলোতে আর্টিকেল লিখে আয় করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে ইংরেজীতে দক্ষ হতে হবে। একবার যদি আপনি এই মার্কেটপ্লেস গুলোতে নিজের অবস্থান তৈরি করে নিতে পারেন তাহলে আপনার আর টাকার কথা চিন্তাই করতে হবে ন।

৫. গেস্ট টিউনিং করে আয়

গেস্ট টিউনিং হলো অন্যের ওয়েবসাইটের জন্য আর্টিকেল লেখা। এমন অনেক ব্লগার আছেন যাদের ব্লগ সাইটে লিখার জন্য তারা সময় পায় না। তাই তারা তাদের সাইটে অন্যদের দিয়ে লিখায় এবং প্রতি আর্টিকেল বাবদ নির্দিষ্ট পরিমানের কিছু টাকা রাইটারদের দেয়।

গেস্ট টিউনিংয়ের সুবিধা হলো নিজে কোন সাইট তৈরি না করে অন্যের সাইটে আর্টিকেল লিখে আয় করা যায়।

শেষ কথা

আর্টিকেল লিখে বর্তমানে অনেকে রাইটাররা অনেক টাকা আয় করছে। আপনিও তাদের মতো অনেক টাকা আয় করতে পারবেন। তবে পরিশ্রমও তাদের মতো করতে হবে। প্রথম প্রথম টাকার চিন্তা করবেন না। আগে আর্টিকেল লিখা শুরু করুন এবং নিজের রাইটিং স্কিলকে ডেভলপ করুন। দেখবেন টাকা আপনার পিছনে ছুটছে।

আমার এই পোস্টটি এতক্ষণ পড়ার জন্য ধন্যবাদ। টিউমেন্ট করে জানান কোন মেথডটি আপনি পছন্দ করেছেন আর্টিকেল লিখে আয় করার। পরবর্তী আর্টিকেল এই সম্পর্কে আরো কিছু লিখব সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

Level 4

আমি মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ। শিক্ষার্থী, ইস্টার্ণ রিফাইনারী মডেল হাই স্কুল, চট্টগ্রাম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 22 টি টিউন ও 29 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 8 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

Assalamu Alaikum everyone, I am Mohammad Habib Ullah, a lifelong learner. I'm not particularly eager to brag about myself. Because I believe that if my work and skills do not speak for me, then I have nothing to say for myself.


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

হেড ২ কিভাবে লিখবো ভাই মোবাইল দিয়ে।আর টিউমেন্ট করলে কি টাকা কাটে??