অনলাইনে কাজ করা বর্তমানে বহুল পরিচিত একটি পেশা। দক্ষতা অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকারের কাজ করে ঘরে বসেই হাজার হাজার ডলার আয় করা সম্ভব। বিশ্বের বিভিন্ন বড় বড় প্রতিষ্ঠান আউটসোর্সিং প্রজেক্টের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সারদের দ্বারা কাজ করিয়ে নিচ্ছে। এদের মধ্যে রয়েছে এয়ারবিএনবি, ড্রপবক্স প্রভৃতি। ২০১৭ সালের এক গবেষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশে তখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ফ্রিল্যান্সার কমিউনিটি ছিল। অর্থাৎ, পৃথিবীতে তখন যে সংখ্যক ফ্রিল্যান্সার ছিলেন, সেই হিসেবে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। প্রথম স্থানে ছিল ভারত। তৃতীয় যুক্তরাষ্ট্র। এই বিশাল সংখ্যক মানুষের অধিকাংশ বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং কাজ শুরু করেছেন। সেই ওয়েবসাইটগুলির ঠিকানা কী? জানতে চান?
এই টিউনে আমরা অনলাইনে ইনকাম করার সবচেয়ে জনপ্রিয় সাইটগুলোর মধ্য থেকে ৭টি ওয়েবসাইট নিয়ে আলোচনা করছি।
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং সাইট কোনটি? অন্তত আমার কাছে মনে হয় উত্তরটা হবে ‘আপওয়ার্ক’। এটি প্রথমে ওডেস্ক নামে কার্যক্রম শুরু করে। ২০১৫ সালে সাইটটি ওডেস্ক নাম পরিবর্তন করে আপওয়ার্ক নাম নেয়। তখন আরেকটি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম ‘ইল্যান্স’ আপওয়ার্কের সাথে একীভূত হয়। আপওয়ার্কে ফিক্সড এবং ঘন্টা ভিত্তিক (আওয়ারলি) রেটে কাজ পাওয়া যায়। এখান থেকে অর্থ তুলতে পেপাল, পেওনিয়ার এবং ব্যাংক ট্র্যান্সফার পদ্ধতি উপলভ্য আছে।
ফাইভারে ৫ ডলার থেকে শুরু করে ভাল অ্যামাউন্টের প্রজেক্ট টিউন করা হয়। লোগো ডিজাইন, ভয়েস রেকর্ড, আর্টিকেল লেখা, প্রভৃতির জন্য ফাইভার অত্যন্ত জনপ্রিয়। বায়াররা সরাসরি ফ্রিল্যান্সার সার্চ করেও প্রজেক্ট অফার করেন এই সাইটে। ফাইভারে সবই ফিক্সড প্রাইসের প্রজেক্ট (ঘন্টাভিত্তিক কোনো জব ফাইভারে এখনও আসেনি)। ফাইভার থেকে আয়কৃত অর্থ তোলার জন্য পেপাল, পেওনিয়ার এবং ব্যাংক ট্র্যান্সফার পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সার ডটকম হচ্ছে একদম প্রথম সারিতে থাকা একটি অনলাইন ভিত্তিক জব মার্কেটপ্লেস, যেখানে ফিক্সড প্রাইস এবং আওয়ারলি রেটের প্রজেক্ট পাওয়া যায়। এখানে প্রচুর অনলাইন জব রয়েছে, এবং ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যাও অনেক। কোম্পানিটির হেডঅফিস অস্ট্রেলিয়ায়। ফ্রিল্যান্সার ডটকম থেকে প্রাপ্ত প্রজেক্টে কাজ করে অর্জিত অর্থ উত্তোলন করার জন্য আছে পেপাল, স্ক্রিল, পেওনিয়ার এবং ব্যাংক ট্র্যান্সফার সিস্টেম।
লন্ডন, যুক্তরাজ্য ভিত্তিক পিপল পার আওয়ার হচ্ছে অনলাইনে আয় করার অন্যতম জনপ্রিয় সাইট। এখানে ফিক্সড প্রাইস ও আওয়ারলি রেটে প্রজেক্ট পাওয়া যায়। পিপল পার আওয়ার থেকে আয়কৃত অর্থ তোলার জন্য পেপাল, স্ক্রিল, পেওনিয়ার এবং ব্যাংক ট্র্যান্সফার পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন।
আপনি যদি ফ্রিল্যান্স ডিজাইনার হয়ে থাকেন, তাহলে ৯৯ডিজাইনস আপনার জন্য বেশ ভালো একটি কাজের জায়গা হতে পারে। এখানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বায়াররা প্রজেক্ট অফার করেন এবং পেশাদার ডিজাইনারদের দ্বারা লোগো, ওয়েবসাইট ও অন্যান্য গ্রাফিক ডিজাইন করিয়ে নেন। ৯৯ডিজাইনস থেকে আপনার অর্জিত অর্থ তোলার জন্য পেওনিয়ার এবং পেপাল ব্যবহার করতে পারবেন। ৯৯ডিজাইনস যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্র্যানসিস্কো ভিত্তিক একটি বহুজাতিক কোম্পানি, যা অনলাইন ডিজাইনের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত।
গুরু ডটকম হচ্ছে একটি অ্যামেরিকান ফ্রিল্যান্সিং সাইট, যেখানে ফিক্সড প্রাইস এবং আওয়ারলি- উভয় প্রকারের প্রজেক্ট পাওয়া যায়। গুরু ডটকম থেকে অর্থ উত্তোলনের জন্য পেপাল, পেওনিয়ার ও ব্যাংক ট্র্যান্সফার পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন।
বিল্যান্সার হচ্ছে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম যেখানে বিভিন্ন প্রকার দেশি প্রজেক্ট পাওয়া যায়। বিল্যান্সার দেশের বাইরে থেকেও ক্ল্যায়েন্ট ও ফ্রিল্যান্সার আনার পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছে। বিল্যান্সার ডটকমে মাইক্রো আকারের (১০০ টাকা) প্রজেক্ট থেকে শুরু করে অনেক বড় অ্যামাউন্টের প্রজেক্টও আসে। বর্তমানে এখানে শুধু ফিক্সড প্রাইসের জব আছে। আপনি চাইলে বিল্যান্সারে রেজিস্ট্রেশন করে আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন।
বিল্যান্সারের মাধ্যমে আয়কৃত টাকা আপনি ব্যাংক ট্র্যান্সফার, বিকাশ, অথবা সরাসরি বিল্যান্সার অফিসে গিয়ে সংগ্রহ করতে পারেন।
আপনি যদি অনলাইনে কাজ করতে ইচ্ছুক হন, তাহলে এই পোস্টটি আপনার উপকারে আশাকরি। আপনি আমার একটি ফাইবার একাউন্ট এ একটু ঘুরে আশাকরি অনেকটা আইডিয়া হবে আপনার। আপনার কোনো পরামর্শ থাকলে টিউমেন্টে জানানোর আমন্ত্রণ রইল। ধন্যবাদ।
আপনি কি অনলাইনে কাজ করেন? বা অনলাইনে কাজ করতে আগ্রহী?
আমি লিটন আকাশ। , চট্টগ্রাম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 5 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 3 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।