ঘরে বসে লিখে আয় করছি, আপনিও করুন, পেমেন্ট নিন Bkash, DBBL এ-০২-সফলতার শুরুর গল্প

টিউন বিভাগ ফ্রিল্যান্সিং
প্রকাশিত
জোসস করেছেন

গত দিন আপনাদের পূর্বাভাস দিয়েছিলাম, আপনাদের অনলাইনে আয়ের পথ সম্পর্কে বাতলে দিতে যাচ্ছি। হ্যা আজ তাই করব। তবে শুরু গল্পটা বলছি আগে। তখন কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। টাকা অনেক টাকা দরকার। গ্রাম থেকে কেবল এসেছি। তাই লক্ষ্মী বাজার থেকে উত্তরে গুলিস্তান আর পশ্চিমে সিকশন পর্যন্ত। মাঝে লালবাগ, সদর ঘাট, ইসলামপুর, আজিমপুর, এমন কোন জায়গা নেই টিউনার করলাম পড়াতে চাই, পড়াতে চাই লিখে। প্রায় ৫০টা কোচিং এ যোগাযোগ করলাম একটা চাকরির আশায়।

অতপর, একটা কোচিং এ চাকরি হলো, মাসে দুই হাজার টাকা সম্মানি সপ্তাহে মাত্র ছয় দিন যেতে হবে। শুরু করলাম সংগ্রাম। একটা বছর চলে গেল। না তখনও আমার ল্যাপটপ ছিল না। কিন্তু মোবাইল ছিলো একটা, সিম্ফনি টি৫০ মডেলের, যেটা কিনেছিলাম পিপিছি এর কাজ করার জন্য। সেই ব্যবসা লাটে যাওয়ায় সম্বল ছিল। ফ্রিলান্সিং শিখুন টাইপের, আয় করুন টাইপের লেখা সম্পর্কে লেখা পড়া জ্ঞান। ভরসা পাচ্ছিলাম না কোথাও। ইতোমধ্য শিক্ষক হিসবে নিজের আত্মবিশ্যাস তুঙ্গে। ধানমন্ডি একটা কোচিংয়ে চাকরি হয়ে যায়। সেখানে সকালে ক্লাস পাওয়ায় আস্তে আস্তে লালবাগের স্বল্প সম্মানির কোচিংটা ছেড়ে দেই। সুদিন আসতে শুরু। এখন বিকালে ঘুরাঘুরি আর আড্ডা মারি। বেমালুম ভুলেই গিয়েছিলা অনলাইনে আয়ের কথা। হঠাত একদিন সন্ধায় বন্ধু (আমার জ্ঞান গুরু) সিজার তালুকদারের সাথে কথা বলতে বলতে জিজ্ঞাস করলাম কি করছিস? সে বল্ল এসাইনমেন্ট লিখছি। পরের দিন আবার জিজ্ঞাস করলাম। উত্তর একই। তৃতীয় দিন বললেন রিপোর্ট করছি। আবার অন্য দিন বললেন, এসাইনমেন্ট করছি। এবার কাছ থেকে উকি মেরে বসলাম। দেখি সে বিবিএ রিলেটেড এসাইনমেন্ট করছে। জিজ্ঞাস করলাম, এটা কার এসাইনমেন্ট। এবার সে বললেন, আসলে আমি কাজ করছি, এসাইনমেনটের কাজ। এবার সে বললেন একটু কঠিন আর ক্রিটিকাল বিষয়, তাছাড়া পেমেন্টও একটু বেশি। ততদিনে আমি ২য় বর্ষের ছাত্র হয়েছি মাত্র। জিজ্ঞাস করলাম কত। উনি জানালেন ৫০০ টাকা প্রতি ৩০০০ শব্দ লেখার জন্যে, মানে প্রতি শব্দ লিখলে ১৬ পয়সা, এতো বিশাল আয়। একদিনে ৫ ঘন্টা কাজ করলেই পাঁচশ। বেশ, আমি তাকে বললাম, "আমাকে কাজ দে"। সে আমাকে বললেন পারবেনা। তাছাড়া য়ারো ঝামেলা আছে। আমি অনেক অনু্রোধের পরও উনি আমাকে কাজ দিলেন না। আমি সব ভুলে গিয়ে তাকে ফ্রি কাজ করে দিতে লাগলাম, আর উনিও আমাকে ভালো মন্দ খাওয়াতে লাগলেন। যেমন পেনাংয়ের, আফতাবের, পুরান ঢাকার বিরানী ইত্যাদি ইত্যাদি।

ততদিনে আমি প্রাথমিক অনে কিছুই জানি, যেমন, Cover Page, Assignment brief, Task, Question, section/ parts, Introduction, conclusion, Table of content, P/Pass mark, M/merit mark, D/Distinction mark, Citation, Reference, ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে ঠিক বুঝে উঠতে পারছিনা কিভাবে Content Develop করে, কিভাবে Rewrite করে,  কিভাবে Citation করে,  কিভাবে intext citation করে,  কিভাবে image/ graph add করে,  কিভাবে Table of Content করে,  কিভাবে Reference করে, আরো অনেক Advance বিষয়তো বাদই। তারপরও তার সমস্যার কারনে কাজ করে দিতে শুরু করলাম। পেমেণ্ট দিবে দিবে ভাবছি, কিন্তু এমন সময় এসে যমদূত এসে হাজির।

আর তার নাম Plagiarism। এই দোষে ২৪টা কাজ বাদ হয়ে গেলো। হতাস হয়ে পরলাম। ক্লায়েন্ট সিজারের  কাজ দেয়া, বিল এবং বিল দেয়া বন্ধ করে দিলো। আমার জন্য এখন সেও বেকার। ওদিকে কোচিং ছেড়ে দিয়েছিলাম। বেশি আয়ের আশায়। এবার তো গুরে বালিই না শুধু, গুরে আলকাতরাও বটে। আর আমি পুরাই হতাশ। ই্তোমধ্যে দেখা লতিফ ভাইয়ে সাথে (ভদ্রলোক এখন চিনে আছেন, আল্লাহ উনাকে হেফাজত করুন, আমিন)। উনি কাজ করাবেন। লোক খুজছেন। আমি একটু ভাব নিয়ে বললাম আমি তো প্রায় দুই বছর যাবত কাজ করছি। আমাকে দিতে পারেন। আগের কাজের স্যম্পল চাইলে, আগের কমপ্লিট করা ফাইল পাঠিয়ে দিলাম। ওগুলো Plagiarised ঠিকই কিন্তু, ভাইতো আর চেক করবেনা। তাই পাঠিয়ে দিলাম। এবার আরেক সমস্যা, উনি বিল বাড়িয়েছেন ৮০০ টাকা, কিন্তু করতে হবে সব। ঠিকভাবে না করতে পারায় প্রায় প্রতিদিনই বকাঝকা খাচ্ছি আর নতুন করে সিখছি। আসতে আসতে আমি উনার নির্ভরযোগ্য লেখক হয়ে উঠলাম।

এখন আমি কাজ করছি, আয় করছি আর সেই লতিফ ভাই আর বন্ধু সিজারে জন্য দোয়া করছি আল্লাহ যেন উনাদের ভালো আর সুস্থ রাখেন। সুখ, সম্মান আর সম্পদ দান করুন আমিন।

পরের টিউন হবে কাজ শেখার জন্য কি কি লাগবে এই বিষয়ে।

Level 0

আমি মোঃবিল্লাল হোসাইন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর 12 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 3 টি টিউন ও 1 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস