অনলাইনে আয়ের কিছু কথা – ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও বিস্তারিত

টিউন বিভাগ ফ্রিল্যান্সিং
প্রকাশিত
জোসস করেছেন

প্রথমে সালাম নিবেন। বলে রাখি, আমি লিখালিখি করি না। তাই ছোট করে লিখছি। ফেইসবুকে এইগ্রূপে-ঐইগ্রূপে অসংখ্য লোক আছে, যারা কাজ করতে চাচ্ছেন বা কাজ দিচ্ছেন। আজ এই নিয়েই আজ আমার টিউন।

প্রথমত নিজের সম্পর্কে বলে নেয়
আমি ইন্টারনেট জগতে ২০১০ থেকে আছি এবং ইন্টারনেট আয়ে ২০১১ থেকে। সে সময়কার ইন্টারনেটের অবস্থার কথা আ নাই বা বলি, এখন সে কথা ভাবলে হাসি পায়।
বয়স ছিল তখন ১২-১৩। বাপের দেয়া হাত খরচে নেটের বিল দিতেই শেষ। মিডলক্লাস ফ্যামিলি, বাপের আয় নাই, কিছুতো একটা করতে হবে। তাই নেট থেকে ইনকাম করার পরিকল্পনা নিয়ে বসি। বিশ্বাস করেন বা নাই করেন, এই পর্যন্ত শ’খানেকের মতো আইটি ফার্ম-আইটি ইন্সটিটিউটে বিভিন্ন কোর্স করেছি। টাইপিং-গ্রাফিক্স ডিজাইন থেকে শুরু করে এমন কি প্রগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ পর্যন্ত। তবে কোনো তাটেও টিকতে পারি নি। কোর্স থেকে যা শিখেছি, জ্ঞান-ধারনা-আর আয় তার মধ্যই সিমাবদ্ধ্য থাকতো। ২০১৬ পর্যন্ত কোনো আয় করতে পারিনি, শুধু সময় নষ্ট করেছি। এদিকে পড়াশুনাও নষ্ট হয়ে গেছে। গোল্ডেনের স্টুডেন্ট থেকে ফেলুয়া ছাত্রে পরিনিত হই। সময় নষ্ট করেছি, ফেলুয়া ছাত্র হয়েছি বাট আফসোস হয়না। কারন সেই সময়টার বিনিময়ে মূল্যবান শিক্ষা পেয়েছি যা আমার সারাজীবন কাজে আসবে।

অনলাইনে আয়

অনলাই কাজ মানেই হচ্ছে ফ্রিল্যানসিং। এটি একটি মুক্ত পেশা। এই মুক্ত পেশা যেকোনো কিছুই হতে পারে। যেমন বলি, মার্কেটিং। সাধারনত অফলাইনে বা বাস্তবতায় ধরুন একটি কম্পানিতে চাকরি করেন। কম্পানি থেকে আপনাকে একটি প্রোডাক্ট দিলো যেটা সেল করলে আপনাকে ভালো একটা আমাউন্ট শেয়ার দিবে। ঠিক অনলাইনে মার্কেটিং করাও সেইম।
এই কি রিয়ালিটিতে আপনাকে অফিস-আদালত/মানুষদের সাথে চলাফেরা করতে হচ্ছে, বাট অনলাইননে কাজ শুধু ঘরে বসে করা। কোনো কিছুর জন্য বাস্তবতায় আপনাকে ধার ধারতে প্রয়োজন পড়বে নাই।
ফ্রিল্যানসিংয়ে অনেক ধরনের কাজ হয়। অর্থাৎ ঘড়ে বসে যে কাজ করবেন সেটাই ফ্রল্যানসিং। যদিও এগুলা কথা হয়তো শুনে শুনে কান ঝালা হয়ে গেছে তারপরও আয়ের কোনো উৎস দেখছেন নাহ। কারন আমিও এমন অন্যর অনেক বক-ঝকি শুনেছি, আমিও একজন অভিজ্ঞতা সম্পূর্ন।

আইটি ইন্সটিটিউটের কথায় আসি

আমি আপনাদের বলেছি, এ পর্যন্ত অনেক ইন্সটিটিউটে অনেক কোর্স করেছি। কোনো কোর্সই কাজে আসে নাই! আইটি ইন্সটিটিউটের কাজই আপনাদের মতো বোকাদের হাত খোসিয়ে ব্যবসা করে খাওয়া! তাদের দিন চলে আপনার টাকায়, যেটার বিনিময়ে আপনি পান সপ্তাহে তিনদিন ঘন্টাখানেক কিছু অনুপ্রেরণা, মাইনষের থেকে ধার করে নেয়া অনুপ্রেরণা! বিল গেটস্‌ এর মতো মানুষকে অবজেক্ট বানিয়ে অনুপ্রেরণা করা! যেটা আপনাকে কোর্স চলাকলীন সময়ে আনুপ্রানিত করে, তারপর অনুপ্রেরণার বালও পান নাহ!
অনেক বকে ফেললাম! আর বলে নিজের মূল্যবান সময়টা গিলাবো না। আইটি ইন্সটিটিউট/বা যারা শিখায়া ব্যাবসা করে খায়, খাক তাদের নিয়া আমার কিছু বলার নাই। তাদের খিদা আছে বলেই তারা খায়। আমি শুধু এটাই বলবো, আপনা্রো খিদা থাকতে হবে, তাদের মতো। অনলাইন থেকে ইনকাম করে খেতে পারবেন।

আমার প্রথম আয়

২০১৬ পর্যন্ত আমি কিছু করতে পারি নি। কোর্সের পেছনেও অনেক টাকা নষ্ট করেছি, বিনিময়ে পাইনি কিছুই। কারন তারা যা শিখায় তা থাকে সীমাবদ্ধ। অর্থাৎ তারা নিজে যা জানে বা শিখায় তা সীমাবদ্ধ, এর বাইরে গেলে আপনার মাথায় কোনো কিছুই ঢকবে না। কারন আপনার জানা নেই। কিন্ত যদি আপনি একটু বুদ্ধিমান হোন তো করে খেতে পারবেন। বুদ্ধি বলতে তা অব্যশই টেকনোলজিতে বা টেকনিক্যালি হতে হবে।
যা কিছু শিখেছি সবকিছু ভুলে ২০১৬ সালের প্রথম দুমাস নিজেই নিজেকে স্টাডি করেছি। সেই দুমাস কারো হেল্প ছাড়াই ইন্টানেট আয়ের সমস্ত জ্ঞান লাভ করেছি। তারপরের তিন মাস খাটাখাটি করেছি, বিভিন্ন সেকটরে কাজ করেছি। তবে বছরের শেষের দিকে আমার প্রথম আয় হয়। প্রথম মাস ছিল ২, ০০০/- টাকা। পরের মাসে ৬, ৫০০/- আজ তা বাড়িয়ে দৈনিক $30-70 যেটা আমার একার আয় করা।
এর কিছু কাজের মাঝে আমাকে ইনভেস্টও করতে হয়েছে, আজও করতে হয়। টিম নিয়েও কাজ করেছি, পুরা একমাসে $2700 আয় করেছিলাম। তবে সেটাতে ইনভেস্ট করতে হয়েছিল হিউজ।

যাইহোক, যারা স্পামিং করে তাদের কথায় বলি

ফেইসবুকে অনেক পোস্টই আমার চোখে পড়ে- “অনলাইনে আয় করতে চাই/করবো কীভাবে”, “কোনো অ্যপে ভালো কাজ/কোন সাইট ট্রাস্টেড” ইত্যাদি ইত্যাদি। সে টিউনের টিউমেন্টে কেউ কেউ হ্যানত্যান বইলা ফেইক/অ্যাপ/পিটিসি টাইপের লিংক বসায়া দেয়। যারা এমন ফেইক/অ্যাপ/পিটিসি টাইপের এগুলা আজেবাজে সাইটে কাজ করার টিউন বা টিউমেন্ট এর নামে স্পামিং করে তাদের দেখলে আমার হাসি পায়। মাঝমধ্য ভাবি এরা যদি কোনো জংঙ্গিগোষ্টি থেকে এমন কোনো কন্ট্রাক পেতো যে তাদের জংঙ্গি নিয়োগ লাগবে, তাহলে এরা যাদের টার্গেট করতো নির্ঘাত ব্রেইন অয়াশ করে জংঙ্গি কইরা ছাড়তো। যদিও এমন টিউমেন্ট/টিউমেন্ট যারা করে তাদের ফ্রিল্যানসিংয়ে জ্ঞান লিপ্ত।

যারা নতুন-কাজের খোঁজে আছেন

পত্রিকা/বিজ্ঞাপণ দেখে হাজার হাজার ইন্টারভিউয়ের পরও কোনো কাজ না পেয়ে বেকার হয়ে পড়ে থাকতে হয়; শেষে শাহবাগের মোড়ে “কোটা সংস্কণ” বা “বেকারত্ব দুরীকরন” নিয়া আন্দোলন করতে চলে যান! বেকার বেকারই রয়ে যাবেন; শত ইন্টারভিওয়েও চাকরি পাবেন নাহ, যদি না আপনার খিদা থাকে। কাজের খিদা থাকতে হবে, যেমনটা একটু আগেই বলেছি।
যদি আমি ৫ বছর পর আয়ের মুখ দেখি তো আপনিও পাবেন। তবে সময়টা ডিপেন্ড করে আপনার খিদার উপর। আইটি ফার্ম গুলা সামান্য জেনেও ব্যাবসা করে খায়, আপনি কেনো পারবেন নাহ! আপনার খিদা থাকলে চেষ্টা থাকবে, আর চেষ্টায় সফলতা আনবে।
অবশেষে, আপনাদের শুধু এটাই বলবো, কাজের খোঁজ বাদ দিন। আর কোনো স্পামারদের পাল্লায় পড়বেন নাহ। গ্রফিক্স/ওয়েব/প্রগ্রামিং/মার্কেটিং ইত্যাদি যেটাতে আপনার জ্ঞান-ধারণা সহজলাভ্য মনে হয় তার যে কোনো একটি সেক্টরে পড়াশুনা করুন। কাজ করুর, চেষ্টা করতে থাকুন- সফলতা আসবেই।

সর্বশেষ কথা

এখন আমি র্মাকেটিং ও ডেভেলাপিং করছি। আপনাদের উৎসাহ পেলে ফ্রি টাইমে ধাপে ধাপে কাজের টিউটোরিয়াল দিবো।
আর রমজান মাসে বড় আয়ের জন্য মার্কেটিং সেকটরে ইনভেস্ট করেছি। এর জন্য কিছু ওয়ারকার প্রয়োজন। বাসা থেকেই কাজ করবেন, তবে ব্রডব্যান্ড কানেকশান থাকতে হবে। কাজ শিখিয়ে দেয়া হবে, এ নিয়ে পরবর্তীতে টিউন করবো।

ফেইসবুকে আমার সাথে যুক্ত হোন এবং কোনো তথ্য জানার থাকলে ফেইসবুকে নোক দিন- Mrz Chowdhury

আমার ফ্রিল্যানসিং সাপোর্ট Group (সম্পূর্ন বিনামূল্যে এবং লেনদেন মুক্ত) এ যুক্ত হোন - Freelancing Support Bangladesh

ধন্যবাদ, সবাই ভালো থাকবেন।

Level 0

আমি এম আর এক্স। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 3 টি টিউন ও 5 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Puro tune porlam,valo laglo,ashob tune pore agroho niye jogajog kori,dhorao khai,dekhi apni ki help korte paren.

    ধন্যবাদ। জীবনে কত ধরা খেতে হবে তার সীমা নেয়, আমিও খেয়েছি।
    আর আমি যতটুকু পারি চেষ্টা করবো আপনাদের সাপোর্ট দেয়ার।