বলিঙ্গার বেন্ড (Bollinger Band):
এটি ও টেকনিক্যাল এনালাইসিসের জনপ্রিয় একটি ট্রেডিং টুল। এই টুলটির মূল উদ্দেশ্য হল মার্কেট হাই এবং লো প্রাইস এর একটি তুলনামুলক পরিধি পরিমাপ করা। যা তিনটি বক্ররেখা (Curve)এর মাধ্যমে অঙ্কিত। অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট ডিবিয়েশন পরিমাপের মাধ্যমে তিনটি বক্ররেখা দিয়ে অঙ্গিত একটি সিকিউর প্রাইস বাউন্ডারি।
চিতে লক্ষ্য করুন... মাঝখানের রেখাটিকে মিডল বলিঙ্গার বলা হয় যা সোজাসুজি সিম্পল মুভিং এভারেজ এর কাজ করে থাকে এবং ডিফল্ট ২০-ডে পিরিয়ডে সেট থাকে আপনি চাইলে কাস্টোমাইজ করতে পারেন। দুটি স্ট্যান্ডার্ড ডিবিয়েশনে উপরের রেখাটিকে আপার বলিঙ্গার বলা হয় এবং নিচের রেখাটিকে লাওয়ার বলিঙ্গার বলা হয়। মার্কেট volatility যখন বাড়ে তখন Bands গুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে চওড়া হতে থাকে আবার যখন volatility কমে তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে Bands গুলো সঙ্কুচিত হতে থাকে। বলিঙ্গার বেন্ড ট্রেডিং এ সাধারণত দুধরনের ফরমেশন দেখা যায়। বলিঙ্গার বেন্ড বাউন্স এবং স্কুয়িজ।
বলিঙ্গার বেন্ড বাউন্সঃ
মার্কেট প্রাইস আপার বা লাওয়ার যে লাইনেই থাকুক না কেনো তা যখন ফিরে এসে মিডল বলিঙ্গারকে টাচ করে তাকেই বলিঙ্গার বাউন্স বলে। ঠিক এভাবে আপার বা লাওয়ার বলিঙ্গার এর মাধ্যমে পাইস যখন বার বার মিডল বলিঙ্গারকে টাচ করে তখন ছোট ছোট কিছু সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স তৈরি হয় আর এই সকল মিনি সাপোর্ট এন্ড রেসিস্টেনসকে ডায়নামিক সাপোর্ট এবং রেসিস্টেন্স বলা হয়। বলিঙ্গার বেন্ড বাউনস এর মাধ্যমে আপনি সহজে রেঞ্জবাউন্ড ট্রেডিং করতে পারেন ।
উপরের চিত্রে দেখুন... প্রাইস আপ বলিঙ্গার থেকে মিডল বলিঙ্গার আবার মিডল বলিঙ্গার থেকে আপ বলিঙ্গার আর মাধ্যমে বাউন্স করে করছে।
বলিঙ্গার বেন্ড স্কুয়িজঃ
হল এই ইন্ডিকেটরের আরেকটি রেগুলার আকৃতি যা মার্কেটের অবস্থাসংকট মুহূর্ত নির্দেশ করে। যখন দেখবেন আপার এবং লাওয়ার বলিঙ্গার লাইন দুটি একসঙ্গে ক্লোজ হয় তখনই এই অবস্থার সূচনা হয়। আর এই ধরণের পজিশন এর পরে মার্কেট যে কোন একটি ডিরেকশনে ব্রেকআউট করে, এবং অনেক লম্বা একটি মুভিং এর পরে প্রাইস আবার ব্যাক করে। বেশিরভাগ ট্রেডাররা এই সুযোগটির অপেক্ষায় থাকে। সাধারণত ক্যান্ডেল যখন আপার বেন্ড হয়ে স্কুয়িজ থেকে বের হয় তখন পরবর্তী মার্কেট ট্রেন্ড আপ হয় এবং ক্যান্ডেল যখন লাওয়ার বেন্ড হয়ে স্কুয়িজ থেকে বের হয় তখন পরবর্তী মার্কেট ট্রেন্ড ডাউন হয়।
উপরের চিত্রে দেখা যাচ্ছে আপার এবং লাওয়ার প্রাইস একসঙ্গে ক্লোজ হওয়ার কারণে দুটি বেড একই অবস্থায় অনেকক্ষণ মুভ আর পরে আপার বেন্ডের মাধ্যমে বায় ব্রেক আউট হল।
বিশেষ নোটঃ
প্রাইস যখন বলিঙ্গার বেন্ড লাইন এর বাইরে ক্লোজ হয় তখন মার্কেট আরো কন্টিনিউশন বোঝায়।
R.S.I –Relative Strength Index:
এটি একটি মোমেন্টাম ইন্ডিকেটর যা মার্কেটের প্রাইস ওভারবট এবং ওভারসল্ড অবস্থা বোঝায় এবং নির্দিষ্ট একটি সময়ের এভারেজ বায় এবং সেল এর সীমানা নির্দেশ করা পূর্বক ট্রেডিং এ সহায়তা করে থাকে। এই ইন্ডিকেটরটি 0 থেকে 100 রেঞ্জের মধ্যে এক একটি স্কেলে মার্কেটের এক একটি অবস্থার নির্দেশনা প্রদান করে থাকে।
স্কেল লেভেল অনুসারে সিগনালঃ
বায় ট্রেডঃ যখন RSI ওভারসল্ড লাইন ৩০ লেভেলের উপরের দিকে আড়াআড়ি (Cross) কেটে যাবে তখন বায় অর্ডার করতে পারেন।
সেল ট্রেডঃ যখন RSI ওভারবট লাইন ৭০ লেভেলের নিচের দিকে আড়াআড়ি (Cross) কেটে যাবে তখন সেল অর্ডার করতে পারেন।
RSI দিয়ে কিভাবে ট্রেড ক্লোজ করবেনঃ RSI যেমন খুব ভালো একটি ইন্ডিকেটর ট্রেডে এন্টার করার জন্য আবার তেমনি ভালো একটি ইন্ডিকেটর ও ট্রেড থেকে বের হওয়ার জন্য। অর্থাৎ এই ইন্ডিকেটরটি আপনাকে ট্রেডে ঢুকতে এবং বের হওয়ার সিগনাল দিবে। লক্ষ্য করবেন প্রাইস মুভমেন্টের উপর RSI প্রতিনিয়ত উপডেট হয় অর্থাৎ প্রাইস্ ট্রেন্ড আপ হলে RSI লাইন আপ ইন্ডিকেট করে আবার ডাউনট্রেন্ড হলে ডাউন ইন্ডিকেট করে, আপনি যখন বায় ট্রেড করবেন তখন আপনার লক্ষ্য থাকবে যে RSI ৭০ লেভেল ক্রস বা টাচ করেছে কি না সেই ক্ষেত্রে বেশি লাভের আশায় না থেকে ট্রেডটি ক্লোজ করে দিতে পারেন আবার যখন সেল ট্রেড করবেন তখন লক্ষ্য রাখবেন RSI ৩০ লেভেল টাচ করছে কি না সেই খেত্রেও আর বেশি লাভের রিস্ক না নিয়ে সেল ট্রেডটি ক্লোজ করে দিতে পারেন।
বাউন্স ট্রেডিং আর ক্ষেত্রে ট্রেড ক্লোজ করতে ৭০ বা ৩০ লেভেল পর্যন্ত অপেক্ষা করলে নেগেটিভ সুফল আসতে পারে সেই ক্ষেত্রে ৫০ লেভেলে ট্রেড ক্লোজ করে দিবেন। অর্থাৎ আপনার বায় ট্রেড হবে ৩০ লেভেল থেকে ৫০ লেভেল এবং সেল ট্রেড হবে ৭০ লেভেল থেকে ৫০ লেভেল।
এছাড়া RSI দিয়ে Divergence এবং Swing ট্রেড সহ অনেক স্ট্রেটিজিকেল ট্রেড করা যায় যা আমরা পরবর্তী এডভান্সড লেসনে সিখব।
ADX-Average Directional Index:
এই ইন্ডিকেটর দিয়ে একটি ট্রেন্ডের Strength (শক্তি) নির্ধারণ করতে পারবেন যে ট্রেন্ডটি কত শক্তিশালী বা কত দুর্বল। এই ক্ষেত্রে হাই রিডিং (High Reading) ট্রেন্ড একটি শক্তিশালী এবং লো রিডিং (Low Reading) ট্রেন্ড একটি দুর্বল ট্রেন্ডের ইঙ্গিত করে। এই ইন্ডিকেটরটি একটি এভারেজ ডিরেকশনাল লাইন সহ একটি প্লাস (+) ডিরেকশন এবং একটি মাইনাস (-) ডিরেকশন লাইনে তিনটি লেভেলের মাধ্যমে ট্রেডিং সিগনাল প্রদান করে।
লাইন পরিচিতিঃ
ADX লাইন = Generally White
+DI লাইন = Green
-DI লাইন = Red
লেভেল অনুসারে ADX ট্রেডিং সিগনালঃ
ü ADX লাইন ০-২৫ লেভেলের নিচে অবস্থান করলে – বর্তমান ট্রেন্ডটি খুবই দুর্বল বা ট্রেন্ড নাই।
ü ADX লাইন ২৫-৫০ লেভেলের মধ্যে মুভ করলে - বর্তমান ট্রেন্ডটি শক্তিশালী।
ü ADX লাইন ৫০-৭৫ লেভেলের মধ্যে মুভ করলে – ট্রেন্ড খুব শক্তিশালী।
ü ADX লাইন ৭৫-১০০ লেভেলের মধ্যে মুভ করলে – ট্রেন্ড সর্বোচ্চপরিমাণে।
ü +DI লাইন যদি –DI লাইন এর উপরে থাকে – আপট্রেন্ড পজিশন।
ü -DI লাইন যদি +DI লাইন এর উপরে থাকে - ডাউনট্রেন্ড পজিশন।
আর যখন দুটি DI লাইন ক্রসিং হয় তখন ট্রেন্ড চেঞ্জ হচ্চে বুঝতে হবে এবং তারপরেই নিশ্চিত হতে পারবেন যে পরবর্তী ট্রেন্ডটি কি হবে।
উপরের চিত্রমতে, -DI লাইন +DI লাইনকে ক্রস করে উপরে উঠছে যা ডাউনট্রেন্ড সিগনাল দিচ্ছে কিন্তু অন্যদিকে ADX লাইন ২০ লেভেলের নিচে চলে যাচ্ছে অর্থাৎ ট্রেন্ড সেল হলেও তা দুর্বল হয়ে যাচ্ছে, তাই এই অবস্থায় ট্রেড না করে ADX ভেলু ২০ লেভেলের উপরে উঠার জন্য অপেক্ষা করুন।
কখন ট্রেড করবেনঃ ADX -/+ লাইনের স্থান নির্ণয় এর মাধ্যমেই আপনাকে ট্রেডে ঢুকতে হবে। যখন ADX লাইন ২৫ লেভেল ক্রস করে এবং +DI লাইন –DI লাইন এর উপরে থাকে তখন বায় ট্রেড করবেন। বিপরীতভাবে ADX লাইন ২৫ লেভেল ক্রস করলে –DI লাইন যখন +DI লাইন এর উপরে থাকবে তখন সেল ট্রেড করবেন।
প্রথম প্রকাশঃ বিডিফরেক্সপ্রো.কম (বাংলাদেশের প্রথম লেসন ভিত্তিক ফরেক্স শিক্ষার সম্পূর্ণ কোর্স ১০০% ফ্রী - ফরেক্স ক্যাম্পাস )
আমি এম হাফিজ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 22 টি টিউন ও 67 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
ধন্যবাদ ভাই আমার এই সামান্যতম চেষ্টাকে সম্মান দেওয়ার জন্য। আপনি ফরেক্স এঁর বিগেনিং থেকে প্রফেশনাল সম্পূর্ণ কোর্স টি পেতে ভিজিট করতে পারেন। http://www.bdforexpro.com/forexcampus