ফরেক্স বিগেনার টু প্রফেশনাল ট্রেডিং [পর্ব-০৫] :: ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস:ইকোনমিক ডাটা,গোল্ড এবং অয়েল ফান্ডামেন্টাল ফেক্টর

ফরেক্স বিগেনার টু প্রফেশনাল ট্রেডিং

ভালো এনালিস্ট হউন, সহজ ট্রেডিং করুন। একটু সময় নিয়েই এগুতে থাকুন আমি কনফার্ম আপনি ভালো করবেন, ফরেক্স আসলে কঠিন নয়। হতে পারে আমরা কঠিন করে চিন্তা করি অথবা সহজ করে শেখার সুযোগ পাই না  অথবা তাড়াহুড়ো কিংবা অতি মাত্রার উৎসাহ আমাদের খতির মূল কারন হয়। তাই  প্রথমে শিখুন, শিখুন এবং শিখুন ! বিডিফরেক্সপ্রো'র সাথেই থাকুন এবং ফরেক্সকে সহজ করে শিখুন।  আর প্রশ্ন করতে চাইলে কিংবা যদি ট্রেডারদের সাথে আপনার কোন সমস্যা বিষয়ক আলোচনা করে সমাধান নিতে চান তাহলে আলোচনা শুরু করুন।

ভুমিকাঃ

ফরেক্স মার্কেটের বেসিক টার্ম শেখা শেষে এখন জানা দরকার যে কিভাবে আপনি বুঝবেন মার্কেট এখন আপ এ যাবে কিংবা ডাউন এ যাবে, আন্দাজ বা ধারণা করেও তো আর ট্রেড করা যাবে না। তাই যদি হত তাহলে এত শিখারই বা কি দরকার। অর্থাৎ আমি বোঝাতে চাইছি আপনি কোন ট্রেড ওপেন করার আগে তার একটি ভালো ইফেক্টিভ বিশ্লেষণ করে নিতে হবে যেন আপনার অর্ডারটি পজেটিভ হয়। আর ফরেক্স মার্কেটে আপনি যত ভালো ট্রেন্ড বিশ্লেষক হতে পারবেন ততই ভালো প্রফিট করে নিতে পারবেন বা লসে পড়বেন না। আপনার প্রত্যেকটি অর্ডার আর পেছনে একটি ভালো গবেষণা থাকতে হবে। তখনই আপনি একজন ভালো ট্রেডার হতে পারবেন। যা হোক আর কথা না বাড়াচ্ছি না। ফরেক্স মার্কেটে মুলত এনালাইসিস এর জন্য অনেক পদ্ধতি আছে। আমরা একে একে পদ্ধতি গুলো আলোচনা করবো।

ফরক্সে ২ ধরণের এনালাইসিস এর মাধ্যমে আপনি ট্রেডিং শুরু করতে পারেন।

  • ১। ফান্ডামেন্টাল  এনালাইসিস
  • ২। টেকনিক্যাল এনালাইসিস

ফান্ডামেন্টাল এবং টেকনিকেল এনালাইসিস এর মধ্যকার পার্থক্যটা খুব সিম্পল। ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিসে প্রাইস যদি কোন নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট একটি ডিরেকশনে যায় তখন টেকনিকেল এনালাইসিস বলতে পারে ঐ প্রাইস এর ফাইনাল বা পরবর্তী মুভ কি হতে পারে। অনেকে প্রশ্ন করে যে কোন এনালাইসিসে ট্রেড করবো। বিষয়টিকে আলাদা না করে বরং দুটি মেথডকে একসাথে অর্থাৎ কম্বিনেশন করে ট্রেড করুন তাহলে আপনার ট্রেড হবে অনেক শক্তিশালী।

ফান্ডামেন্টাল  এনালাইসিসঃ


ফান্ডামেন্টাল  এনালাইসিসঃ

এককথায় ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস হল অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিক অবস্থা বিশ্লেষণে ভবিষ্যৎ কারেন্সি প্রাইস ভেলু  নির্ধারণ বা অনুধাবন করার একটি পক্রিয়া। আরো সহজ করে বলা যেতে পারে, কোন একটি দেশের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিক অবস্থার প্রেক্ষিতে ঐ দেশের কারেন্সি ভেলুর যে পরিবর্তন ঘটে এবং তা বিশ্লেষণ বা বের করার যে একটি উপায় তা-ই হল ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস।

ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিসের  মুল মন্ত্র হল ভালো অর্থনীতিতে কারেন্সি ভেলু বাড়বে এবং খারাপ অর্থনীতিতে ভেলু কমবে, যেমনঃ ইন্টারেস্ট রেইট, এমপ্লয়মেন্ট সিচুয়েশন, ট্রেড ব্যালেন্স, বাজেট, ট্রেজারি বাজেট এবং গ্রস ডোমেস্টিক প্রডাক্ট ইত্যাদির ভিবিন্ন প্রভাবই হল ভিবিন্ন ধরনের ফান্ডামেন্টাল ইস্যু। আরো যেসব বিষয় ফান্ডামেন্টাল এনালাইসেসের আওতায় পড়ে সেগুলো হলঃ

  • ১। গভমেন্ট ক্রাইসিস।
  • ২। সরকার বা মন্ত্রী পরিষদের বড় কোন পরিবর্তন।
  • ৩। দেশের অর্থনৈতিক সূচক প্রকাশনায়।
  • ৪। আন্তর্জাতিক দ্বন্দ্ব।
  • ৫। ইলেকশন পূর্ববর্তী সময়।
  • ৬। প্রাকৃতিক দুর্যোগ।

ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিসের  জন্য খুব বেশি সন্দিহানে না থেকে দু-তিনটি বিষয় ব্যাবহার এবং বিবেচনায় আপনি সহজে এই এনালাইসিস করে পারেন। সেগুলো হলঃ

ইকোনমিক ডাটাঃ

আসুন এইবার পরিচিত হই কিছু ইকোনমিক ডাটা লিস্ট এর সাথে যেসব ডাটা রিপোর্ট পাবলিশে মার্কেটের উপর ভিবিন্ন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। এবং রেগুলার নিউজ ট্রেডিং এ এই ধরনের রিপোর্ট এর উপর ভিত্তি করে আপনি মার্কেট অস্থিতিশীলতা বা মার্কেট ভলাটিলিটি বুঝে রিস্ক ফ্রী ট্রেড করতে পারবেন। আরেকবার বলে নেয় ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস হল দেশের বিভিন্ন অবস্থা প্রেক্ষাপটে অর্থনীতিতে এর ইমপ্যাক্ট কেমন হতে পারে তার একটি পক্রিয়া। তাই আপনার কাছে যত বেশি ইকোনমিক ডাটা থাকবে মার্কেটের গতিবিধি সম্পর্কে আপনি ততই প্রস্তুত থাকবেন। এই মুহূর্তে সবগুলো ডাটা হয়ত অপ্রয়োজনীয় লাগতে পারে তবে রেগুলার বেসিসে যদি সব গুলো মাথায় রাখতে পারেন তাহলে এর উপকারিতে আপনি নিজেয় টের পাবেন।

  • ১। Industrial production (world):  এই রিপোর্টটি প্রকাশে বোঝা যায় একটি দেশে নির্দিষ্ট সময়ে ফ্যাক্টরি প্রোডাকশন, মাইন প্রোডাকশন এবং ইউটিলিটি কেমন হয়েছে। কারন প্রডাকশন এর উপরও ইকোনমিক গ্রোথ ডিপেন্ড করে, আর ইকোনমিক গ্রোথ ভালো হলে বুঝতেই পারছেন তা কারেন্সিকে হিট করে।
  • ২। Producer price index(PPI): এটি একটি ইন্ডিকেটর যা প্রডিউসারদের গুডস স্টক লেভেল নির্দেশ করে। প্রডিউসারদের কাছে গুডস এর প্রাইস ঊর্ধ্বগতি অর্থাৎ কনসুমারদের চাহিদা বৃদ্ধির কারনে ঐ সব পণ্যর সেলিং ইন্টারেস্ট রেইট বৃদ্ধি পাওয়ার একটা আশংকা থাকে যা ফরেক্স মার্কেটে কমোডিটি যেমন, গ্যাস, ওয়েল এবং গোল্ড সহ বিভিন্ন কমোডিটি প্রোডাক্টের রেইট এর পরিবর্তন করে।
  • ৩। Productivity (world): এটি নির্দেশ করে যে ইনপুট এর তুলনায় প্রোডিউসড প্রোডাক্ট বা সার্ভিস রেইট কেমন। যদি প্রোডিউসড ভালো হয় তারমানে ঐ প্রোডাক্ট এর গ্রোথ ভালো এবং তা মার্কেটে বড় কোন তারতম্য না তৈরি করেই মুভ করবে।
  • ৪। Business inventories (world): এই রিপোর্টটির মাধ্যমে বোঝা যায় যে নির্দিষ্ট একটি সময়ে কি পরিমান প্রোডাক্ট প্রোডিউসড হয়েছে, কি পরিমান সেল হয়েছে এবং ভবিষ্যৎ বিক্রির জন্য কি পরিমান আছে ।  অর্থাৎ মার্কেট চাহিদা বোঝা যায় এবং তার উপর ভিত্তি করে রেইট উঠানামার হার পরিবর্তন হয়।
  • ৫। Durable goods (US): এই রিপোর্টটি মার্কেটে প্রোডাক্টের মেয়াদকাল তথা স্থায়িত্ব নির্দেশ করে, শেষ তিন-বছরের জরিপে মোট বিক্রয় হার কেমন ছিল। অর্থাৎ এটি নির্দিষ্ট একটি সময়ে প্রোডাক্ট প্রবৃত্তি এবং কনসুমার কনফিডেন্স এর রেকর্ড নির্ধারণ করে দেয় যাতে করে পরবর্তী সেল রেইট বা মার্কেট রেসপন্স বোঝা যায়।
  • ৬। Jobless claims (US):এটি সাপ্তাহিক মোট বেকারত্তের হার নির্ধারণ রিপোর্ট করে। যে নিউজটি প্রতি বৃহস্পতি রিলিস হয়।
  • ৭। Leading economic indicator index (world): জাপান এর অর্থনীতিতে সেবা খাতের কর্মক্ষমতা পরিমাপ করে।
  • ৮। TIC Data (US): মার্কিন সম্পত্তির পরিমান এবং মার্কিন বিদেশী গোষ্ঠীর পরিমান নির্ধারণ করে।
  • ৯। G7 meeting (world): এটি একটি মিটিং রিপোর্ট যা বিশ্বের ৭ টি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনীতি যেমন কারেন্সি ইস্যু সহ বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন অর্থনীতি সমস্যাগুলি নিয়ে আলোচনা করা হয়।
  • ১০। Oil prices (world) এই রিপোর্টটিতে ইউ.এস কারেন্সির সাথে নেগেটিভ কো-রিলেটেশন সম্পর্কিত কারেন্সি গুলোর তথ্য প্রকাশ করা হয়। যেমন ফরেক্স মার্কেটে অয়েল প্রাইস মুভমেন্ট আপ হলে ইউ.এস.ডি’র মুভমেন্ট ডাউন হয়।

উপরোক্ত ইকোনমিক ডাটা গুলো রিলিসে মার্কেট প্রাইস আর তারতম্য ঘটে কারেন্সি ভেদে, ফরেক্স মার্কেটের সেন্টিমেন্টাল বুঝে ট্রেড করার জন্য এই ডাটা রিপোর্ট গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।

 

গোল্ড এবং অয়েল ফান্ডামেন্টাল ফেক্টরঃ

 

ফরেক্স মার্কেটে গোল্ড এবং অয়েল এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। কারন এই দুটি কমোডিটিস ফরেক্স মার্কেটে ট্রেডিং সিদ্ধান্ত গ্রহণে নেতৃস্থানীয় নির্দেশক হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

গোল্ডঃ

নিচের চিত্রটি দেখুন...

বিভিন্ন দেশের মাইন প্রোডাকশনে ২০১১ সালের জরিপে এককভাবে চীন এগিয়ে আছে এবং দ্বিতীয় স্থান দখল করে আছে অস্ট্রেলিয়া এবং তৃতীয় হচ্ছে ইউ.এস। এভাবে বিভিন্ন বছর বিভিন্ন দেশের প্রোডাকশন সেই দেশের কারেন্সিকে হিট করে। লক্ষ্য করবেন, বেশিরভাগ সময়ে ইউ.এস GOLD এর বৃহৎ উৎপাদনকারী দেশ থাকা সত্ত্বেও  GOLD এর সাথে USD এর বিপরীত সম্পর্ক থাকে। এর পেছনে মুল কারন হচ্ছে GOLD’র প্রাইস সবসময় USD’র বিপক্ষে নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া আরো আকটি কারন হচ্ছে মাঝে মাঝে ইনভেস্টররা তাদের কেপিটেল কে USD থেকে GOLD এ স্থানান্তর করে রাখতে বেশি সেইপ মনে করে।

অয়েলঃ

সাধারণভাবে আমরা জানি অয়েল/তেল এর মূল্য বৃদ্ধিতে বিশেষ করে ট্রান্সপোর্টেশন কস্ট বেড়ে যায়। সাথে সাথে ফিনিশড প্রোডাক্ট যেমন ইউটিলিটি এবং হিটিং কস্ট ও বাড়ে। যার প্রভাব বিশেষ করে তেল নির্ভর অর্থনীতির দেশ যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত ও অন্যান্য উন্নত দেশের উপর পড়ে। কিন্তু ব্যতিক্রম হল কানাডা যা বিশের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল মজুদকারী দেশ এবং নিট অয়েল রপ্তানিকারক যার কারনে অয়েল প্রাইস এর সাথে কানাডিয়ান ডলারের একটি ইতিবাচক সম্পর্ক দেখা যায় যা অনন্য উন্নত দেশের মধ্যে দেখা যায় না।

সৌজন্যে : বিডিফরেক্সপ্রো.কম

Level 0

আমি এম হাফিজ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 22 টি টিউন ও 67 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Level 0

ভাই
শুন্দর পোস্ট হইছে । এভাবে চালিয়ে যান আমরা আছি আপনার সাথে ।
http://techorb4u.blogspot.com/ ব্লগ সাইট তা দেকতে পারেন ভালো লাগবে ।

Level 0

bro. Khub valolaglo. Khub monogog diye porsi…..