তাড়াহুড়ো করার কোন দরকার নাই, আস্তে আস্তে প্রসিড হোন, একটু সময় নিয়েই এগুতে থাকুন আপনি অবশ্যই ভালো করবেন, কারন তাড়াহুড়ো কিংবা অতি মাত্রার উৎসাহ আপনার খতির মূল কারন হতে পারে। তাই বারবারই একটা কথার উপর বেশি বেশি নজর দিচ্ছি, তা হল প্রথমে শিখুন, শিখুন এবং শিখুন ! আর প্রশ্ন করতে চাইলে কিংবা যদি ট্রেডারদের সাথে আপনার কোন সমস্যা বিষয়ক আলোচনা করে সমাধান নিতে চান তাহলে আলোচনা শুরু করুন।
এর সহজ অর্থ হল লোন। আপনার মূলধন এর উপর কত গুন লোন আপনি ব্রোকার থেকে পাবেন ট্রেড করার জন্য । অর্থাৎ আপনার ছোট এমাউন্ট দিয়ে বড় পরিসরে ট্রেড করতে পারার সূবিধাই হল লিভারেজ। লিভারেজ ব্রোকার দ্বারা নির্দিষ্ট করা থাকে এবং একেক ব্রোকার একেক অনুপাতে লিভারেজ প্রদান করে থাকে।
লিভারেজ এর কমন অনুপাতগুলো হলঃ
এই অনুপাতের বাম অংশটি হল আপনার মূলধন এবং ডান অংশটি হল আপনার লিভারেজ।
এখন আপনি যদি ১০০ ডলার দিয়ে ট্রেড শুরু করেন এবং ১:৫০০ লিভারেজ নেন তাহলে $১০০X৫০০= $৫০০০০ পরিমান ট্রেড করার সামর্থ্য বা ক্ষমতা আপনার চলে আসবে $১০০ দিয়ে।
ফরেক্স মার্কেটে লিভারেজ এর ব্যাবহার যেমন আপনার জন্য সুবিধাদায়ক তেমনি ক্ষতিকারকও। আপনি $১০০ একাউন্টেতো ৫০০ লিভারেজ দিয়ে যেমন ৫০০ গুন লাভ এর চিন্তা করলেন তেমনি এটাও ভুলে গেলে চলবে না যে ট্রেড যদি আপনার প্রতিকুলে যায় তাহলে সেই পরিমান লস ও আপনাকে বহন করতে হবে। এখন প্রশ্ন করতে পারেন আপনার তো ৫০০ গুন লস হওয়ার মত মূলধন নেই। হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন , ট্রেড আপনার প্রতিকুলে গিয়ে যখনই আপনার মূলধন পরিমান লস স্পর্শ করবে তখনি আপনার ট্রেড ক্লোজ হয়ে যাবে। এইবার আপনার লিভারেজ যাই থাকুক না কেন।
তাই ট্রেড করার পূর্বে চিন্তা করে নিন আপনার মূলধন কত এবং সেই অনুপাতে কত লিভারেজ নিলে আপনি নিরাপদে ট্রেড চালিয়ে যেতে পারবেন। (উল্লেখ্য এই বিষয়টি বোঝার জন্য আপনাকে মানি ম্যানেজমেন্ট লেসনটি পড়তে হবে)।
হল কোন একটা পজিশন (অর্ডার) এর একদিনের বেশি মেয়াদকালে পরবর্তী সময়ের প্রাপ্ত বা পদত্ত লাভ। ফরেক্স মার্কেটে প্রতিটি মুদ্রা একটি নির্দিষ্ট ইন্টারেস্ট হারের সাথে সম্পৃক্ত থাকে। আপনার ট্রেড গুলো শুধুমাত্র দুটি কারেন্সির মাধ্যমেই ঘটে না বরঞ্চ এর ভেতর দুটি ভিন্ন ভিন্ন ইন্টারেস্ট রেইট ও কাজ করে। এই ইন্টারেস্ট রেইটে আপনাকে ইন্টারেস্ট দেওয়া বা নেওয়া হবে (১ বছর) ৩৬৫ দিন হিসেবে আপনার ট্রেডটি যতদিন রোলভার হবে ততদিনের জন্য।
আপনি ইন্টারেস্ট লাভ করবেন যদি আপনি হায়ার ইন্টেরেস্ট রেইট এর কারেন্সি ক্রয় করেন। আর আপনাকে ইন্টারেস্ট দিতে হবে যদি আপনি লাওয়ার ইন্টেরেস্ট রেইট এর কারেন্সি ক্রয় করেন।
আপনি ইন্টারেস্ট লাভ করবেন যদি আপনি হায়ার ইন্টেরেস্ট রেইট এর কারেন্সি বিক্রয় করেন। আর আপনাকে ইন্টারেস্ট দিতে হবে যদি আপনি লাওয়ার ইন্টেরেস্ট রেইট এর কারেন্সি বিক্রয় করেন।
উদহারনঃ যখন আপনি EUR/USD কারেন্সি পেয়ার এ USD এর বিনিময়ে EUR বায় করেন । EUR এর ইন্টারেস্ট রেইট যদি 4.00% হয় এবং USD এর ইন্টারেস্ট রেইট যদি 2.25% হয় তাহলে আপনি হাই ইন্টারেস্ট রেইট এ বায় করার মাধ্যমে ইন্টারেস্ট পাচ্ছেন।
ঠিক একইভাবে আপনি যখন EUR সেল করছেন তখন হাই ইন্টারেস্ট রেইট এ সেল এর কারনে আপনাকে ইন্টারেস্ট দিতে হবে বাৎসরিক হারে যতদিন রোলওভার করবেন ততদিনের জন্য।
ফরক্সে যত আলোচনা বা যত শিক্ষা সবই কিন্তু ট্রেড করে প্রফিট এর উদ্দেশে। আর এই ট্রেড মানে হল বায় অর্ডার অথবা সেল অর্ডার। ফরেক্স মার্কেটে ক্রয়-বিক্রয় এর ক্ষেত্রে বায় অর্ডার এবং সেল অর্ডার কথাগুলো বেশি রিলেভেন্ট। আমরা কখনও বায় অর্ডার করব কখনও বা সেল অর্ডার করব এটাইতো আমাদের মূল কাজ। আসুন এইবার জেনে নেয় এই অর্ডার গুলো আসলে কিভাবে কাজ করেঃ
ফরক্সে অর্ডার বলতে বোঝায় আপনি কখন ট্রেডে ডুকবেন এবং কখন ট্রেড থেকে বের হবেন। কত প্রফিট করবেন এবং কতটুকু লস মেনে নিবেন ইত্যাদি ।
উপরের কারেন্সি পেয়ারটি খেয়াল করুন,
EUR সেল/বিড = 1.4502 এবং USD বায়/আস্ক = 1.4505
ফরেক্স মার্কেটে প্রত্যেকটি অর্ডার এর মানে হল তার বিপরীত আরেকটি ট্রেড সয়ংক্রিয়ভাবে ঘটা। যা আপনার পরিলক্ষিত হবে না। এটাই ফরেক্স এর সিস্টেম । আবার মনে করিয়ে দিচ্ছি যে আপনি বায় এবং সেল এর মাধ্যমে মুলত একটি কারেন্সি দিয়ে আরেকটি কারেন্সিই সবসময় এক্সচেঞ্জ/বিনিময় করছেন। যেখানে আপনি এবং ব্রোকার দুটি পক্ষ।
বিডঃ হল বায়ার পয়েন্ট অব ভিউ এবং সেল হল আপনার (ট্রেডারের পয়েন্ট অব ভিউ ) অর্থাৎ বায়ার এই রেইটে বায় করতে রাজি আছে আপনি চাইলে এই রেইটে সেল করতে পারবেন।
আস্কঃ আবার আস্ক হল বায়ার পয়েন্ট অব ভিউ এবং বায় হল আপনার (ট্রেডারের পয়েন্ট অব ভিউ ) অর্থাৎ বায়ার এই রেইটে সেল করতে রাজি আছে আপনি চাইলে এই রেইটে বায় করতে পারবেন।
আপনি যখন বায় অর্ডার দেন তারমানে হল কৌওট কারেন্সি সেল করে বেস কারেন্সি ক্রয় করছেন। বিষয়টি নিপুনভাবেই ঘটবে। উপরের কারেন্সি পেয়ারটি মতে, আপনি বায় অর্ডার দিয়েছেন অর্থাৎ, ১ ইউনিট বেস কারেন্সি কেনার জন্য আপনি ১.৪৫০৫ পরিমান কৌওট কারেন্সি (ডলার) দিচ্ছেন ।
পরবর্তীতে দেখলেন প্রাইস ভেলু বেড়ে ১.৪৬০৫ উঠেছে তখন আপনি ট্রেডটি ক্লোজ করে দিলেন অর্থাৎ আপনি বেস কারেন্সি সেল করে ঐ পরিমান কৌওট কারেন্সি ক্রয় করছেন। ১ EUR ১.৪৫০৫ ডলারে কিনে ১.৪৬০৫ ডলারে ক্রয়কৃত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করলেন এবং ১০০ পিপস প্রফিট করলেন।
আপনি যখন সেল অর্ডার দেন তারমানে হল বেস কারেন্সি সেল করে কৌওট কারেন্সি রিসিভ করছেন। এখানেও বিষয়টি নিপুনভাবে ঘটে। ধরি, এই মুহূর্তে EUR/USD মার্কেট প্রাইস ১.৪৫০২ ,আপনি বুঝতে পারলেন আগামী কয়েক ঘন্টার মধ্যে এই প্রাইস আরো কমবে। এখন আপনি লাভ করতে চান, তাহলে EUR/USD সেল মোডে অর্ডার করুন, সেল এর মানে হল আপনি EUR সেল করে USD ক্রয় করছেন, তাহলে ১ EUR সেল করে আপনি পাচ্ছেন ১.৪৫০২ ডলার।
পরবর্তীতে যখন প্রাইস কমে গিয়ে ১.৪৪০২ এ নেমে আসলো তখন আপনি ট্রেড ক্লোজ করে দিন। ট্রেড ক্লোজ করার মানে হল আপনি আপনার ডলারগুলো সেল করে সেই পরিমান EUR কিনে নিলেন। তাহলে পতন হল ১০০ পিপসের অর্থাৎ আপনি কয়েক ঘন্টা আগে ১ EUR সেল করে পেলেন ১.৪৫০২ ডলার আর এখন সেই ১ EUR কেনার জন্য আপনাকে দিতে হল তারচেয়ে কম ১.৪৪০২ ডলার।
আপনি যদি কোন ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ না করে আটোমেটিক ভাবে ক্লোজ করতে চান তখন আপনি টেইক প্রফিট বা স্টপ লস ব্যাবহার করতে পারেন।
মনে করুন আপনি একটি বায় ট্রেড ওপেন করেছেন ১.৩৫০০ এই ট্রেড থেকে যদি আপনি ৫০ পিপস প্রফিট করেন তাহলে আপনাকে ১.৩৫৫০ আসার পর ক্লোজ করতে হবে, এখন এমন অবস্থা যে আপনি ট্রেডের সামনে ও বসে থাকার মত সময় নাই ঠিক তখন আপনাকে ট্রেডটি মডিফাই করে ১.৩৫৫০ তে সেভ করে দিতে হবে, ব্যাস এইবার আপনাকে আর ম্যানুয়ালি ট্রেডটি ক্লোজ করতে হবে না, প্রাইস যখন ই আপনার টার্গেট রেইট টাচ করবে ট্রেডটি ৫০ পিপস প্রফিট নিয়ে নিজে নিজে ক্লোজ হয়ে যাবে।
ঠিক একই ভাবে আপনি চিন্তা করলেন যে আপনার ট্রেডটি যদি লস এ যায় তাহলে ৩০ পিপস লস করে তা অটোমেটিক ক্লোজ হয়ে যাক, সেইক্ষেত্রে ও আপনাকে ট্রেডটি মডিফাই করে আপনার ওপেন রেইট থেকে কমিয়ে অর্থাৎ ১.৩৪৭০ তে সেভ করে দিতে হবে।
আপনার সেল অর্ডার আর ক্ষেত্রে একইভাবে প্রফিট এর জন্য ওপেন প্রাইস এর নিয়ে টেইক প্রফিট সেট করুন এবং ওপেন প্রাইস এর উপরে স্টপ লস সেট করুন।
হল পুরপুরি স্বয়ংক্রিয় ভাবে আপনার ট্রেড টি ওপেন সহ টেক প্রফিট, স্টপ লস এবং ক্লোজ সবকিছুই আটোমেটিক ভাবে করা।
বেসিক কনসেপ্ট তো পেয়ে গেলেন আসুন এইবার একটু প্রাকটিকেল ফিল্ড থেকে ঘুরে আসি। এখন দেখাবো কিভাবে একটি ডেমো আকাউন্ট ওপেন করে এতক্ষণ যা শিখলেন তার বাস্তব রুপটা দেখে নেওয়া।
ও বলতে ভুলে গিয়েছি, ডেমো আকাউন্ট হল পুরোপুরি আপনার একটা রিয়েল আকাউন্ট এর সমরুপ পার্থক্যটা হল ডেমো আকাউন্টে আপনি ভার্চুয়াল মানি দিয়ে ট্রেড করতে পারবেন। আর রিয়েল একাউন্টে আপনাকে রিয়েল মানি দিয়ে ট্রেড করতে হবে।
তবে যারা ফরেক্সে নতুন পা দিয়েছেন তাদের প্রতি অনুরোধ ভুলেও প্রথম অবস্থাই রিয়েল মানি দিয়ে ট্রেড করতে যাবেন না। ভালো ভাবে বিষয়টি জেনে মিনিমাম ৩ মাসের একটা ভালো অনুশীলন এবং প্রাকটিকেল অভিজ্ঞতা না নিয়ে রিয়েল ট্রেড করবেন না। মোটকথা যতক্ষণ বা যতদিন পর্যন্তও আপনি ডেমো আকাউন্টে এভারেজে প্রফিট রাখতে রাখছেন না ততদিন পর্যন্ত রিয়েল মানি দিয়ে ট্রেড করার দরকার নেই।
ডেমো ট্রেড আর রিয়েল ট্রেড যে ট্রেডই করুন বা কেন আপনার ট্রেডিং ফ্লাটফর্ম বা মেটা ট্রেডার সফটওয়্যার টি লাগবে। মেটা ট্রেডার হল ট্রেডের মূল হাতিয়ার। আপনার সবকিছুই এই সফটওয়্যারের একটা আকাউন্ট আর মাধ্যমে পরিচালিত হবে। এই বার আপনি যে ব্রোকারে ট্রেড করতে চান সেই ব্রোকার এর মেটা ট্রেডার সফটওয়্যার টি ডাউনলোড করে ইন্সটল করে নিন। আমি ইনস্টা ট্রেডার সফটওয়ার দিয়ে দেখাচ্ছি ।
মেটা ট্রেডার সফটওয়্যার টি ওপেন করার পর ফাইল মেনু থেকে Open An Account এ ক্লিক করে আপনার personal Details সহ প্রয়োজনীয় ইনফরমেশন দিন
Next …… Next দিয়ে আপনার লগইন নেইম এবং পাসওয়ার্ড সংরক্ষণ করে Finish দিন।
আপনি যে পরিমান ভার্চুয়াল মানি সিলেক্ট করেছেন সেই পরিমান মানি সহ একটি আকাউন্ট তয়রই হয়েছে।
এইবার নতুন কোন ট্রেড ওপেন করতে টুলবার থেকে New Order সিলেক্ট করুন ...
দেখবেন নিচের অংশে Order প্যানেল এ আপনার নির্দিষ্ট ট্রেডটি ওপেন হয়েছে , এইবার ট্রেড মডিফাই করতে আপনার ওপেন ট্রেড এর উপর ডাবল ক্লিক করুন ...............
এখানে Type অপশন থেকে Modify Order সেলেক্ট করে টেইক প্রফিট, স্টপ লস সেট করে বড় হলুদ বাটনে ক্লিক করার মাদ্ধমে সেভ করুন।
ম্যানুয়ালি ট্রেড ক্লোজ করতে ও ট্রেড এর উপর ডাব্ল ক্লিক করে বড় হলুদ বাটনে ক্লোজ ক্লিক করার মাধ্যমে ট্রেড ক্লোজ করতে পারবেন।
লং : আপনি যদি মনে করেন যে বেস কারেন্সির বর্তমান দাম থেকে আরো বাড়বে তখন আপনি বায় অর্ডার দিতে পারেন অর্থাৎ আপনি কৌওট কারেন্সি বিক্রি করে দিয়ে বেস কারেন্সি ক্রয় করলেন। মানে লং অর্ডার করলেন। আবার দাম বাড়ার পর বেশি দামে বিক্রি করে প্রফিট করে নিলেন। বায় এর আরেকটি নাম হল লং। Buy = Long
শর্টঃ ঠিক একইভাবে আপনি যদি বোঝেন বেস কারেন্সির বর্তমান দাম আরো কমে যেতে পারে তখন আপনি সেল অর্ডার দিবেন। অর্থাৎ আপনি বেস কারন্সি বিক্রি করে দিয়ে কৌওট কারেন্সি বায় করলেন। এবং কম দামে বেস কারন্সি ক্রয় করে প্রফিট করে নিলেন। সেল এর আরেকটি নাম হল শর্ট । Sell = Short.
তারমানে দাড়ালো, বায় অর্ডার করে দাম বৃদ্ধিতে আপনি প্রফিট করবেন এবং দাম কমে গেলে আপনি লস করবেন। বিপরীতভাবে সেল অর্ডার করলে দাম কমলে আপনি প্রফিট করবেন এবং দাম বাড়লে আপনি লস করবেন।
সৌজন্যে : বিডিফরেক্সপ্রো.কম
আমি এম হাফিজ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 22 টি টিউন ও 67 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
ভাল লাগলো……ধন্যবাদ ।