বেশ কয়েক মাস ধরেই দেশের ভিজ্যুয়াল আর প্রিন্ট মিডিয়ায় মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো নতুন এক বিজ্ঞাপনীয় যুদ্ধে নেমেছে। মিডিয়া দখলের প্রতিযোগিতায় প্রতিনিয়ত নিত্য নতুন কৌশল অবলম্বন করা আর বাহারীসব বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপনে গ্রাহক আকৃষ্ট করাই যেন এসব ফোন কোম্পানিগুলোর প্রধান কাজ হয়ে দাড়িয়েছে। এসবের ধারাবাহিকতায় নতুন কৌশলী বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে ‘কাস্টমার সার্ভিস’ নিয়ে। এতদিন পর্যন্ত এসব কোম্পানিগুলো তাদের বিভিন্ন প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপনীয় প্রচারে সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে তাদের প্রতিযোগিতা যেন শুধুই কাস্টমার সার্ভিস ডিপার্টমেন্ট নিয়েই। কিন্তু বাস্তবতা হলো এসব মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোর গ্রাহকদের প্রতিনিয়তই বিভিন্ন কারিগরি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। অথচ কারিগরি উন্নতির দিকে নজর না দিয়ে এসব কোম্পানিগুলো মেতেছে শুধু বিজ্ঞাপনীয় ‘কাস্টমার সার্ভিস’ নিয়ে। বিজ্ঞাপনে হাসি মুখে ‘কাস্টমার সার্ভিস’ দেখা গেলেও বাস্তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গ্রাহকরা সত্যিকার সার্ভিস থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
বাংলাদেশে মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে সেই শুরু থেকেই। নেটওয়ার্ক সমস্যা, কল ড্রপ, কথা শুনতে না পাওয়া, আজগুবি রকমের টাকা চার্জ হওয়া, দেরিতে এসএমএস পৌঁছানো, দুর্বল নেটওয়ার্ক ইত্যাদি শত অভিযোগে অভিযুক্ত এসব মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোর কারিগরি সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে আগ্রহটা যেন বরাবরই কম। তারচেয়ে সম্প্রতি কালে মেতে উঠেছে বিভিন্ন জায়গায় কাস্টমার কেয়ার সেন্টার করার প্রতিযোগিতায়। যেখানে সেবা পেতে হলে একজন গ্রাহককে স্বশরীরে হাজির হয়ে টোকেন মেশিন থেকে টোকেন নিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনতে হয়।
ইদানিং অবশ্য কেউ কেউ অন্য মোবাইল ফোন কোম্পানির কাস্টমার সার্ভিস ডিপার্টমেন্ট কে কটাক্ষ করেও বিজ্ঞাপনে জানাচ্ছে যে তারা মাত্র ১০ মিনিট অপেক্ষা করাবে তাদের গ্রাহককে। ভুক্তোভোগী গ্রাহকদের অভিযোগ প্রথমত মোবাইল কোম্পানিগুলো কাস্টমার কেয়ার সেন্টার নিয়ে প্রতিযোগিতায় না নেমে সত্যিকারভাবে টেকনিক্যাল সার্ভিস বাড়ালে গ্রাহককে আর কষ্ট করে যেতে হয় না। কিন্তু সত্যিকার কারিগরি সেবার মান না বাড়িয়ে অযথা গ্রাহকের ভোগান্তি কমানোর দিকে মোবাইল কোম্পানিগুলোর আগ্রহ বোধহয় শুন্যের কোঠায় ঠেকেছে।
ভুক্তভোগীদের কেউ কেউ টিউমেন্ট করেছেন যে, আসলে এত তাড়াহুড়ো করে বেশি বেশি কাস্টমার কেয়ার সেন্টার করার পেছেনে উদ্যেশ্যই হচ্ছে টেকনিক্যাল সার্ভিসের ত্রুটি - বিচ্যুতিকে জিইয়ে রেখে গ্রাহকদের দৃষ্টিভঙ্গিকে ভিন্ন দিকে মোড় ঘোরানোর। ভুক্তভোগি গ্রাহকদের কারো কারো অভিমত কাস্টমার সার্ভিস কে কেন্দ্র করে বিজ্ঞাপন বাবদ যে পরিমান টাকা ব্যয় করা হচ্ছে তার অর্ধেক টাকাও যদি টেকনিক্যাল সার্ভিসে জন্য ব্যয় করা হতো তবে গ্রাহক ‘কথিত’ সেবার জন্য এত বেশি কাস্টমার কেয়ার খোলার প্রয়োজন হতো না।
সার্বিক বিচারে এখনও মোবাইল ফোনের গ্রাহকরা তাদের বিভিন্ন ন্যয্য পাওনা থেকেই বঞ্চিত বহুলাংশেই। একজন গ্রাহক হওয়ার সাথে সাথেই তিনি ঐ কোম্পানির কাছ থেকে কতগুলো ‘মৌলিক’ অধিকার পাওয়ার দাবি রাখেন। কিন্তু ন্যায্য সেই ‘মৌলিক’ অধিকারগুলো পেতেও কতইনা যন্ত্রনা পোহাতে হয় সাধারণ গ্রাহককে। সাধারণ গ্রাহকদের দাবী কাস্টমার সার্ভিস বিভাগের বিজ্ঞাপনের অসুস্থ প্রতিযোগিতা অবিলম্বে বন্ধ করা উচিৎ। কারণ এর পেছনে যে পরিমান টাকা ব্যয় হচ্ছে তা সত্যিকার টেকনিক্যাল সার্ভিসে ব্যয় করলে গ্রাহক সেবার মান এমনিতেই বেড়ে যাবে।
সেক্ষেত্রে ঘটা করে বিজ্ঞাপন দিয়ে কোন কাস্টমারকে আমন্ত্রণ জানাতে হবে না সার্ভিস নেবার জন্যে। এটিই এখন মোবাইল ফোন অপারেটরদের কাছে সময়ের দাবিও বটে।
আমি দুরন্ত। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 16 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 9 টি টিউন ও 7 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
প্রযুক্তিতেই মুক্তি
দুরন্ত ভাই অ—– নে—–ক দিন পর লিখলেন। আপনার লেখার অপেক্ষা থাকি সবসময়। কাস্টমার সার্ভিস নিয়ে আগে এভাবে ভাবিনি। আপনার লেখা পড়ে চোখ খুলল। চালিয়ে চান সাথে আছি।
কিছু ভুল ইনফো আছে এতে সজীব ভাইয়ের মন্তব্যে। যেখানে বলা যায় পোস্ট পেইড থেকে গ্রামীিনের যেকোনো নাম্বর থেকে কাস্টমার কেয়ারে ফোন দিলে কোনো কল চার্জ নেই।
আর যটবেশী কাস্টমার কেয়ার বসানো হবে দেশে যে তত কর্মসংস্হান হচ্ছে সেটার ব্যাপারে কি কেউ খেয়াল করেছে?
ওরে দুরন্ত ভাই ফাটাইছে রে!