হ্যালো টেকটিউনস বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? নিত্য নতুন প্রযক্তি নাস্তার মাঝে ভালো আছেন আশা করি। আমি আইটি সরদার আছি আপনাদের সাথে ক্যারিয়ার নিয়ে আপনার কনফিউশন এবং বর্তমান ট্রেন্ডস নিয়ে কিছু কথা বলার জন্য। প্রিপারেশন নিয়ে বসুন ১৫-২০ মিনিট সময় নিয়ে পড়তে পারবেন এই হিসাবে।
🙂 এ টিউনটি আপনার জীবন এবং ক্যারিয়ারকে নতুন করে ভাবার জন্য, জীবনকে নতুন করে সেট-আপ দেওয়ার জন্য। আমি ধারণা দিবো, ডিসিশন নেওয়ার দায়িত্ব আপনার। আপনি যেখানেই পড়ুন না কেন, আর যাই করুন না কেন, টিউনটি আপনাকে নতুন করে ভাবতে শেখাবে। সেই সাথে বর্তমান কিছু জীবনদর্শী চিন্তা ভাবনার সাথে পরিচয় করিয়ে দিবে। অন্য দিকে আপনাকে দেখাবে কঠিন কিন্তু সত্য কিছু পথ। আপনি যদি ক্রিয়েটিভ বা ভিন্ন কিছু করার বা ভাবার প্ল্যান করে থাকেন তাহলে আপনাকে আগেই স্বাগতম জানায়। যাই হোক চলুন কথা না বাড়িয়ে মুল টপিকসে ফিরি। নির্দিষ্ট কোন ডিসিশন নেওয়ার আগে বা টিউমেন্ট দেওয়ার আগে টিউনটি সবটুকু পড়ার অনুরোধ রইলো।
অক্সফোর্ড ডিকশোনারি ক্যারিয়ারের সংঙ্গা দিয়েছেন এমন ভাবে, "Course or progress through life (or a distinct portion of life)". অর্থাৎ ক্যারিয়ার হলো আপনার জীবনের শিক্ষা এবং ফর্মাল পড়াশুনার সংমিশ্রণে নিজের আর্থিক/পারিপার্শ্বিক এবং ভবিষতের চালিকা শক্তি। তবে এমন কিছু করা যেটা দিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আপনাকে এবং আপনার কাজ দিয়ে উপকৃত হতে পারে। তবে সবসময় সবাই যে সেটা করতে পারে তা না। অনেকে বলতে পারেন ভাই নিজেই তো চলতে পারি না, তাহলে এতো কিছু মাথায় রাখি কি করে? আসুন ধীরে ধীরে জানি।
💡 আরেকটা ব্যাপার, এখানে উল্লেখিত সকল বিষয় আমার এই কয়েক বছরের আইটি জীবনে থাকার অভিজ্ঞতা থেকে নেওয়া। কোন কিছু আপনার মতের সাথে না মিললে সেটা আপনি স্কিপ করে যেতে পারেন, অথবা আমাকে টিউমেন্টে জানাতে পারেন। তাতে আমার, আপনার এবং অন্যান্যদেরও উপকার হবে।
এক্ষেত্রে সবাই বলবে যেটা আপনার ভালো লাগেে। আমার এক বন্ধু আছে, ও বলে আমার তো সারা জীবন সেন্ট মার্টিন দ্বীপে কাটিয়ে দিতে ভালো লাগে। আবার অনেকে বলে আমার তো ঘুমাতে ভালো লাগে। তখন?
মোট কথা এমন একটা সাবজেক্ট খুঁজে বের করা যেটার চাহিদা আছে আবার আপনার পড়তে, জানতে বা তার পিছনে সময় দিতে একঘেয়েমি লাগে না। সেটা কী কেউ জন্মগতভাবে পায়। আমি বলবো না। আমাদের ম্যাক্সিমাম পরিবার ছেলে-মেয়েকে ডাক্তার এবং ইনিজনিয়ার ছাড়া কিছু বানাবে কল্পনাও করে না। কিন্তু কেন ডাক্তার ইন্জিনিয়ার বানাতে চায়? (যদিও কোন সেক্টরে বানাতে চায় সেটা তারা জানে না। )
মূল কারণ তারা ছোটবেলা থেকে এদেরকে (ইন্জিনিয়ার বা ডাক্তার) অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বি দেখে আসছে। সেক্ষেত্রে আমরা অন্য কিছু/অন্য ক্যারিয়ার সম্পর্কে জানবো কীভাবে? যেমন ধরুন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বা কোন কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর বা সিনিয়র কর্মকর্তা, ডিফেন্সের সিনিয়র কর্মকর্তা, লেখক, চিত্রশিল্পী, তুখোড় সাংবাদিক ইভেন, নিজেই কোন কোম্পানীর মালিক এগুলো কী পেশা হিসাবে খারাপ।
আশাকরি করে, তবুও সে অন্য কিছু করতে চায়। কেন জানেন সেখানে তার মেলে ধরার ক্ষমতা কম। তাহলে নিজের পছন্দের গুরুত্ব দেওয়ার দরকার আছে কিনা? 😈
এবার আসি আপনার পছন্দ খুঁজে বের করবেন কীভাবে। মোটকথা নিজের পছন্দ জানতে হলেও আপনাকে ঠেকে ঠেকে শিখতে হবে। যেমন আপনি ভাবেছন আপনার কম্পিউটারের সামনে বসতে খারাপ লাগে না, তাহলে কম্পিউটারই আমার পেশা বানাবো। অথচ আপনি জানেন না এই কম্পিউটারেই একশোর উপরে ভিন্ন ভিন্ন কাজ করা যায়। যেমন, সফটওয়ার ইন্জিনিয়ারিং, ওয়েব প্রোগ্রামিং, হার্ডওয়ার ইন্জিনিয়ারিং, নেটওয়ার্কিং ইত্যাদি।
আবার এর মধ্যে আবার শ খানিক করে ভাগ আছে। যেমন, ওয়েব প্রোগ্রামিং এর মধ্যে পিএইচপি, পাইথোন, এএসপি ডট নেট, ফ্রন্ট ইন্ড, ব্যাক ইন্ড, ব্ল্যা ব্ল্যা. অর্থাৎ আপনাকে স্পেসিফিক হতে হবে। আপনি আসলে কোনটা শিখতে চান বা কোনটাই আপনার আগ্রহ আছে। আর সেটা জানতে হলেও আপনাকে পরিশ্রম করে অন্য কিছু সম্পর্কেও জানতে হবে। এখন প্রশ্ন হলো সেটা খুঁজে বের করবো কীভাবে? এটার সুবর্ণ সুযোগ আপনারা যারা এইসএসসি বা বিশ্ববিদ্যালয় লেভেলে এখনও পড়ছেন।
যদি এরও আগের ক্লাসে আপনি পড়েন তাহলে তো সোনায় সোহাগা, নিজেকে জানার আরও সময় পাচ্ছেন আপনি। আর এই সময়ে কিছু না কিছু পড়ুন জানুন, খোঁজ খবর নিন, বিভিন্ন আত্মকাহিনী পড়ুন। মোবাইলে শুধু গেমস্ আর ফেসবুক চালালেই আপনার পছন্দ খুঁজে পাবেন না। আপনাকে গুগল করতে হবে, পড়তে হবে। বেশি বেশি বই পড়ুন, পাঠ্য বই থেকে বের হতে শিখুন।
অনেকে ফেসবুকে ইনবক্স করে (ইদানিং একটু বেশি, যে কারণে টিউনটা করা), কোন প্রোগ্রামিং এর ভবিষ্যতের চাহিদা বেশি? আসলে আমরা এটা জানি কোন ল্যাঙ্গুয়েজেরই কম চাহিদা না। সব কিছুতেই ভালো ক্যারিয়ার গড়া যায়। শুধু আপনাকে এক্সপার্ট হতে হবে। আপনি এমন কোনো লোক পাবেন না যে বলছে, আমি কম্পিউটারে বা অন্য ক্ষেত্রে এই এই কাজ জানি তবুও কোন কাজ পাচ্ছি না।
মোট কথা আমরা কম্পিউটার জানি, কিন্তু কম্পিউটারের কি জানি সেটা জানি না। আমরা যে কাজ জানি সেটার কোন প্রুভ আমারা দেখাতে পারি না। আপনি যে কাজ জানেন তার যদি কোন স্যাম্পল বা পোর্টফলিও বিল্ড করতে না পারলেন তাহলে কীভাবে কাজ পাবেন আপনি? আপনি কেমন কাজ জানেন যে কোন প্রমাণ আপনি দেখাতে পারছেন না। অর্থাৎ আপনার কাজের সুন্দর পোর্টফোলিও আপনাকে তৈরি করতে হবে। 😎
আপনি বিশ্বাস করবেন না, শুধুমাত্র ভালো ডিজাইন করতে পারে এমন ব্যক্তি দরকার প্রতিদিন একটা/দুইটা সার্কুলার বা পাসোর্নাল মেসেজ আসছে না আমি পাই না। ভালো পিএইচপি, পাইথন বা ডিজাইনার জানা লোক দরকার যার বেতন ৫০ হাজার প্লাস, অথচ সে রিকুয়ারমেন্ট কেউ ফুলফিল করতে পারছে না। দেশের বাইরে না ব্রাদার, আমাদের দেশেই এমন এক্সপার্ট লোক খুবই দরকার। খুবই অভাব এসব লোকের এদেশে।
এমনকি ভালো ইংরেজি জানে বা ম্যাথ জানে এমন লোকেরও খুব অভাব এদেশে। ভালো লিড দিতে পারে, নতুন নতুন প্ল্যান বের করে একটা কোম্পানীর ব্র্যান্ড ভ্যেলু বাড়াতে পারে, সেল টার্গেট বাড়াতে পারে এমন লোক আমাদের বাইরের দেশ থেকে হায়ার করতে হয়। আপনি বিশ্বাস করবেন না, কতো বড় বড় টিউনে আমাদের দেশে বাইরের দেশ থেকে অভিজ্ঞ লোক হায়ার করতে হয়। অথচ, এই সব কোম্পানী/আন্তর্জাতিক সংস্থা-সংগঠন আমাদের দেশে অভিজ্ঞ লোক না পেয়ে বাইরের দেশে যেতে বাধ্য হয়।
তাহলে কি শিখবো?
➡ আমার নিজের উদাহরণ দিয়ে শুরু করি, আমি এখন পর্যন্ত বলতে পারি না, আমি কোন বিষয়ে ক্যারিয়ার গড়ছি। অর্থাৎ আমি স্পেসেফিক কোন বিষয়ে এখন মার্কেটের চাহিদা মতো দক্ষ বলতে পারি না, তবে আমি মোটামুটি শিউর এখন আমি কোন দিকে যাচ্ছি, ভবিষ্যতে কোনটা নিয়ে আগাচ্ছি। ফলস্বরুপ বর্তমানে আমি ডেভলপিং, ডিজাইন, ভার্চুয়াল এসিস্টেন্ট, কন্টেন্ট ডেভেলপিং - মার্কেটিং এবং সার্চ ইন্জিন এর কাজ হরহামেশাই করছি এবং পাচ্ছি।
এমনকি বিশাল একটা রিসোর্স তৈরির চিন্তা ভাবনাও করছি। যদিও আমি জানি আমার এসব বিষয়ে মোটামুটি চালিয়ে নেওয়ার মতো জ্ঞান এখন আছে। তবুও বড় বড় ভাইদের, ইভেন কিছু কিছু ছোট ভাই এতো দক্ষ এসব কাজে, আমি নিজেকে এখনও দক্ষ বলতে সাহস পাই না। যদিও প্রতিনিয়ত নতুন জিনিস/টেকনিক শিখে এটা আমি কভার করার চেষ্টা করি/করছি।
অথচ দেখুন কেউ একটা কোচিং সেন্টারে ভর্তি হওয়ার দিন থেকেই বলে বেড়াচ্ছে, আমি প্রোগ্রামার, আমি ডিজাইনার, আমি মার্কেটার। ফেসবুকের পর ফেসবুকে পো-স্ট দিচ্ছে এসব নিয়ে। একটা কথা মনে রাখবেন, বিকশিত হওয়ার আগে প্রকাশিত হওয়া আমাদের স্বভাব। তার থেকেও আগে আমরা টাকা ইনকাম করতে চাই। যেটা ঠিক না। সেহেতু আমি বলবো কয়েকটি বিষয় জানতে থাকুন, শিখতে থাকুন, তখন নিজেই বুঝে যাবেন কোন টা আপনি ভালো পারছেন, ভালো লাগছে, তখন সেটা নিয়ে ১/২ বছর ড্রাইভ দিলেই দেখবেন আপনি অনেক কাজ শিখে ফেলেছেন।
আপনার সার্টিফিকেট না থাকলেও অনেক কাজ পাচ্ছেন। দিন না ২-৩ বছর টাইম। দেখুন না বিশ্বাস করে আমাকে। তবে ধীরে ধীরে একটা স্পেসেফিক বিষয়ে কাজ জানুন, বেশি করে জানুন, গভীরে জানুন, স্যাম্ফল তৈরি করুন। দেখবেন কাজ আপনার হাতের নাগালে। আর টাকা, সেটা বাংলাদেশে ফাস্ট ক্লাস জব হোল্ডাররা যা পাচ্ছে তার থেকে কোন অংশে কম না। যদি উপরের বিষয় ফুলফিল করেও কাজ না পান বা পাচ্ছেন না নিচে টিউমেন্ট করুন তো বুঝি। আপনার কাজের ব্যবস্থা আমি নিঝে হ্যান্ডেল করবো।
শুধু মনে রাখবেন, বিকশিত হওয়ার আগে প্রকাশিত হইয়ো না। আর ইনকাম সেটা তো বিকশিত হওয়ার আগে কল্পনাও করবেন না।
ইদানিং খুব বেশি প্রশ্ন পাই ভাই কম্পিউটার সাইন্সের ভবিষ্যৎ কি আগের মতো আছে। এখানে কি ওয়েব ডিজাইন শেখায়? আমি কোনটা শিখলেই ৫-৬ মাসের মধ্যে ইনকাম করতে পারবো? টাইপিং কী শিখতে পারবো? আচ্ছা কম্পিউটার সাইন্স পড়লে কতো টাকা বেতন পাওয়া যায়? শুনলাম গ্রাফিক ডিজাইন এখানে ভালো করায় না? শুনলাম সিএসই পড়লেই ইনকাম শুরু হয়ে যায়? বাংলাদেশে কোন আইটি ট্রেনিং সেন্টার ভালো শেখায়? কি উত্তর দিবো বলেন?
আসলো কম্পিউটার সাইন্স একটা বিশাল পরিসর, এখানে ওয়েব ডিজাইন ক্ষুদ্র একটা পার্ট এবং সেটা এতোই ক্ষুদ্র যে ১% পার্সেন্ট বিষয়ও কম্পিউটার সাইন্সয়ের কারিকুলামের মধ্যে পড়ে না। এখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কপিউটার সাইেন্সর কোর্স কারিকুলাম দিলাম, বাংলাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় সকল আইটি সাবজেক্ট এই কারিকুলাম ফলো করে। হয়তো একটা দুইটা সাবজেক্ট এদিক-ওদিক হতে পারে বা অন্য নামে পড়ায়। দেখুন তো প্রযুক্তির কোন বিষয় এখানে শেখায় না। তবে এটা সত্যি কথা আপনি নিজে চেষ্টা না করলে এখান থেকে সার্টিফিকেট ছাড়া কিছুই পাবেন না। আর এ কারণেই সার্টিফিকেট ছাড়াও অনেকে এই সেক্টর দাপায়ে বেড়াচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও বেড়াবে। কারণ এখানে প্রাকট্যিকাল নলেজ ছাড়া কোন মূল্য নাই। :-(সেহেতু কম্পিউটার সাইন্স যতোগুলা বিষয় শেখায় তার যেকোন একটা ক্ষুদ্র বিষয় (যেমন প্রোগ্রামিং বা ওয়েব প্রোগ্রামি বা ডিজাইনিং বা আরও স্পেসেফিক) যদি আপনি শিখতে পারেন তবে মনে করবেন, আপনাকে আর জীবনেও পিছনে তাকাতে হবে না। কারণ দিন দিন (পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার আগ পর্যন্ত) কম্পিউটার রিলেটেড যেকোন বিষয়ের চাহিদা বহুল পরিমানে বাড়বে। কিন্তু ওই যে আপনাকে হাতে কলমে দক্ষ হতে হবে, নট বই কিনে কিনে মুখস্থ করা আর সার্টিফিকেট নিয়ে লাফালাফি করা।
বিশ্বাস করুন, অনেক গ্রাজুয়েট এখন সরকারি প্রতিষ্ঠানে টাইপিস্ট হিসাবে জবের এপ্লিকেশন করে। তাদের মধ্যে কম্পিউটার সাইন্স গ্রাজুয়েটও পাবেন। অর্থাৎ আপনি কম্পিউটার সাইন্স পড়েন আর না পড়েন আপনাকে দক্ষ হতে হবে, আপনাকে শিখতে হবে, আপনাকে প্রাকটিক্যাল বিষয় জানতে হবে। আপনাকে বিভিন্ন ধরনের বই পড়তে হবে, আপনাকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আইটি ট্রেন্ডসের সাথে তাল মেলায়ে চলতে হবে, শিখতে হবে।
আমি উপরে আগেই এ বিষয়ে অনেক বলেছি। তবু আবারও বলি মনে রাখবেন কম্পিউটার সাইন্সে একাডেমিক পড়াশুনার কোন গুরুত্ব নেই। আমি কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্র হিসাবে যেটা বুঝেছি বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের যে পরিমাণ টাইম নষ্ট করে দেয় ফর্মালিটি (এসাইনমেন্ট, ল্যাব, ভাইভা, যার কোনটাই বাস্তবের সাথে সামঞ্জস্য না) মেইনটেইনের জন্য ততদিন যদি একটা পারফেক্ট বিষয়ে সময় দিতো কেউ সে পৃথিবী সেরা হতো সেই বিষয়ে আমার বিশ্বাস। তবে পড়াশুনা ছেড়ে দেন আমি বলবো না। কমিউনিটি থেকেও অনেক শিক্ষা আছে। শুধু এটুকু বলবো কম্পিউটার সাইন্সের মতো টেকনিক্যাল বিষয়ের যেমন চাহিদা আছে, তেমনি এখানে আপনাকে হাতে কলম অভিজ্ঞ হতে হবে।
আমি সব সময় ড্রপ আউটদের দলে, কারণ এরা বাস্তবিক জ্ঞান রাখে বেশি [বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে গ্রাজুয়েশন শেষ করাটা লাভজনক, কখন কী সুযোগ আসে বলা তো যায় না]। আপনি যদি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নিতে পারেন, তবে কিছু বিষয়ে এগিয়ে থাকবেন। যেমন আপনি যদি চান, বিশ্বের বাইরে ভালো ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বেন, অথবা দেশের সরকারি আইটি সেক্টরে জব করবেন। তবে যদি শুধু ফ্রিল্যান্সিং বা বাংলাদেশ অথবা বিশ্বের যেকোন প্রাইভেট আইটি সেক্টরে যদি জব করতে চান, সেক্ষেত্রে আপনার সার্টিফিকেটের চেয়ে কাজ জানাটাই গুরুত্বপূর্ন। 🙄
মোট কথা, আপনি পড়াশুনা করার সুযোগ থাকলে অবশ্যই সেটা শেষ করেন আর সাথে সাথে আইটি নিয়ে পড়ে থাকুন। তাতে রেজাল্ট খারাপ হলেও আপনার যায় আসে না। আর যদি শুধু এক্সপার্ট হওয়ার মতো আত্মবিশ্বাস এবং সাধনা রাখতে পারেন, তবে বলবো লেগে পড়ুন কিছুই আপনাকে আটকাতে পারবে না।
এ বিষয়ে আমি কখনও কথা বলি না। শুধু বলবো ইচ্ছা থাকলে নিজে শেখা শুরু করুন। ওসব দিকে যেয়ে কিছু সময় নষ্ট করার কোন মানে হয় না। যদিও আমরা ফ্রি পাইলে লোভ সামলাতে পারি না। মনে রাখবেন, আপনার কম্পিউটার সাইন্সে শেখাটা জরুরী, আর এখানে সেটা নাই বললেই চলে। আর যারা এখানে শেখায় (আমার পরিচিত অনেকেই আছে) তারা এখানে অনেকটা জব হোল্ডার হিসাবে আছে। তাই সুযোগ থাকলে অন্য ওয়ে (গুগল, ইউটিউব) এ লেগে পড়ুন।
হয়তো ইন্টারনেট কানেকশনের জন্য কিছু খরচ হবে। তবে ৬ মাস-১ বছরের আশা দিয়ে যারা শেখায়, তারা সঠিক না মনে রাখবেন। তাহলে ১৬-১৭ বছর ধরে কেউ শুধু পড়ুাশুনায় করতো না। যেহেতু একাডেমিক পড়াশুনার জন্য ১৫+ বছর ওয়েট করতে পারেন একটা ২০-২৫ হাজার টাকার চাকরি করার জন্য, তাও আবার ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা ঘুস দিয়ে। সেহেতু এখানে ২-৩ বছর আর লাখ খানিক টাকা খরচ করে লেগে থাকতে কে নিষেধ করেছে। যদি ঘুস ছাড়া ৫০ এর কাছাকাছি ব্যবস্থা হয়ে যায়।
সকল টেকনিক্যাল বিষয়ের গুরুত্ব অনেক বেশি এবং দিন দিন ফর্মাল পড়াশুনার মূল্য কমতে থাকবে। সেহেতু হাতে কলমে শেখায় এবং বিশ্বের জন্য দরকার এমন সাবজেক্ট খুঁজে বের করুন। আর কিছু কিছু সাবজেক্ট আছে যেটা ক্রিয়েটিভ প্লাস লিডারশিপ বা বর্তমান প্রয়োজন - যেমন, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট, নার্সিং, স্বনির্ভর কৃষি বিজ্ঞান ও ফার্মিং, উন্নয়ণ অধ্যয়ন, বিজনেস মার্কেটিং এরকম সময় উপযোগী বিষয়ও পড়তে পারেন।
তবে কোথায়ও সার্টিফিকেটের জন্য শুধু পড়বেন না, এক্সট্রা নলেজ নিন, দেখবেন সেম সাবজেক্ট থেকে আপনি এগিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আর একটাই পরামর্শ ফেসবুকে একটু কম সময় দিয়ে গুগলকে বেশি টাইম দিন। গুগলে মনের যতো জিজ্ঞাসা/ প্রশ্ন করুন। ঠিক আমাকে বা আমাদেরকে যেভাবে করেন। আমরা আপনাকে ভুল গাইডলাইন দিতে পারি তবে গুগল কখনও দিবে না। দিন শেষে ল্যারি পেইজ আর সার্জিও ব্রিনকে ধন্যবাদ দিতে ইচ্ছা করবে এই মহাবিশ্বের জ্ঞান ভান্ডার এক জায়গায় করার জন্য। 🙂
আমার ইচ্ছা নাই তবুও কম্পিউটার সাইন্সে ক্যারিয়ার গড়বোঃ
দরকার কী? চাহিদা বেশি? তার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্য সাবজেক্টে পড়ুন। অনেক অনেক চাকরি আছে যার জন্য তেমন কোন টেকনিক্যাল জ্ঞান লাগে না। তবে পড়াশুনা করেন। শুধু একাডেমিক না আরও যা মন চায়। আপনি জানবেনও না কখন আপনি ভালো একটা দিকের সন্ধান পেয়ে গেছেন। ভালো একটা চাকরির সুযোগ পেয়ে গেছেন। এখন বলতে পারেন কি পড়বো। সেটার জন্যও গুগল আছে। আপনার জানার আগ্রহ টপিকস দিয়ে লিখুন।
দেখবেন শত শত রেজাল্ট দেখাচ্ছে। শুধু বাংলাদেশের না হার্ভার্ডের শিক্ষক, স্ট্যানফোর্ডের শিক্ষক এরাও আপনাকে টিপস্ দিচ্ছে। আর কিচ্ছু দরকার আপনার? সব সময় শুধু বড় ভাই খুঁজবেন না, আজকে যারা বড় ভাই এই বিষয়ে ভালো করতেছে তারাও সেমভাবে এসেছে। আপনি ভালো কাজ শিখে গেলে দেখবেন বড় ভাইরা এমনি আপনাকে বিভিন্ন প্রোগ্রামে ইনভাইট করতেছে। আসলে এটা আগ্রহের ব্যাপার আর বুদ্ধি দিয়ে খুঁজে বের করে নেওয়ার দরকার। বাকিটা পরিশ্রম।
আর সময় পেলে টেকটিউনস থেকেও টিপস্ নিতে পারেন। বাংলায় এর থেকে সমৃদ্ধ এবং পুরাতন সার্চ ইন্জিন আর পাবেন না। তবে আপনাকে টেউটিউনস থেকেও সার্চ করে বের করে নিতে হবে, সার্চ করা শিখতে হবে। তবে আমি নিজে ফেসবুক ইউজ করলেও জুকার মামু এবং ফেসবুক দুইটাই আমার অপছন্দ। আমি আমার বিশ্ববিদ্যাল হিসাবে গুগলকে সব সময় সবার উপরে রাখি। আমি বিশ্বাস করি, স্লো লার্নিং এর জন্য ইনস্টেকটিউনসউট। ফাস্ট লার্নিং এর জন্য ইন্টারনেট (জাকির ভাই) 😀 আমি অ্যাড করি এভাবে, বাস্তমধর্মী এবং নিজের ইচ্ছামতো লার্নিং এর জন্য ইন্টারনেট। আর সেটা অবশ্যই গুগল, উদোমী, ইউটিউব, কোয়ারা এবং টেকটিউনসের মতো কিছু জায়গার। আর গুগলকে আমি বেশি ভালোবাসি কারণ এখানে আসল ছাড়া নকল জিনিসের ভাত নাই। 😛
"I always thought money was something just to make me happy. But I've learned that I feel better being able to help my folks, 'cause we never had nothing. So just to see them excited about my career is more of a blessing than me actually having it for myself." -Kendrick Lamar
"If you want to shine like a sun, first burn like a sun."
"Man needs his difficulties because they are necessary to enjoy success." - APJ Abdul Kalam
অন্যের পছন্দের চিন্তায় বেঁচে না থেকে নিজেরটা খুঁজে বের করুন। মনে রাখবেন, আমরা সব সময় সেভ সাইডে থেকে জব খুঁজি (যেমন সরকারি জব) কিন্তু এর বাইরে যে কতো বড় বিশ্ব তা একটু ঝুঁকি নিয়ে দেখতে পারি না। কষ্ট হলেও চেষ্টা করুন না একবার, লেগে থাকুন না ১-২ বছর। এই জীবন আপনার তো, এটা তো আর সেকেন্ড টাইম ফিরে পাওয়া সম্ভব না। মনে রাখবেন, কষ্ট করে একটা নতুন জিনিস শুরু করলেন মানে আপনার আশপাশের মানুষ আপনার কাছ থেকে জানতে চাইবে, আপনাকে মেন্টর হিসাবে মানবে।
আপনার সার্কেলে খুব কম মানুষ/বন্ধু পাবেন যারা আপনার মতো কোন এক্সছেপশনাল কাজ করছে। আর একটু দেরি হলেও কিন্তু খুব লস না, ঠিক এই স্যাগানো বাঁশের সত্য গল্পের মতো। 😛 এমন কিছু চিন্তা করুন যা আপনার আশপাশ বা অনেকে কল্পনায় করতে পারে না।
আমার সব সময়কার প্রিয় উক্তি Think Different. ও আচ্ছা স্টিভ জবসের স্ট্যানফোর্ডের কনভোকেশনের একটা দারুন জিনিস কালেকশনে আছে আমার। আপনারা দেখে নিতে পারেন এখান থেকে, গুগল করলেও পাবেন। পড়াশুনা, ক্যারিয়ার এবং জীবন নিয়ে এ রকম ভালো লেখা আমি খুব কমই দেখেছি।
আর যেটা বলছিলাম, বিকল্প ভাবুন। যেটাই করেন না কেন বিকল্প হিসাবে কিছু রাখুন। সেটা পড়াশুনাও হতে পারে। যেটা বিপদের দিনে আপনাকে কাজে দিবে, আপনার সেকেন্ড ইনকাম সোর্স হিসাবে পাশে দাঁড়াবে। কারণ আপনাকে পড়ে গেলে চলবে না। যতই ঝামেলাই আসুক আপনাকে উঠে দাঁড়াতে হবে। তবেই তো জীবনটা উপভোগ্য। আর পারলে ফেসবুকের বিকল্প হিসাবে কোয়ারা (Quora - Follow me) ব্যবহার করতে পারেন। ফেসবুকের কিছু কর্মী ফেসবুকের খারাপ দিক (বিতর্ক আছে) অনুমান করে এটা তৈরি করেছিলেন। আর বললাম তো বাংলা ভাষায় টেকটিউনস্ বিশ্ববিদ্যালয় তো আছেই। 🙂 আসল কথা আপনাকে যেকোন জায়গা থেকেই হোক আপনাকে আপডেট নলেজ রাখতে হবে, শিখতে হবে। তবেই আপনি এগিয়ে যাবেন।
আবারও বলছি, ক্যারিয়ার মানেই টাকা ইনকাম নয়, ক্যারিয়ার মানেই টাকার জন্য অপছন্দের কাজ করে যাওয়া নয়। ক্যারিয়ার মানে যথাসম্ভব চেষ্টা করা নিজের পছন্দের, প্রয়োজনে সেমি-পছন্দের কাজ করা। শুধু মনে রাখবেন, টাকা ইনকামের পাশাপাশি এক-দুই জন মানুষকে হেল্প করতে পারার তৃপ্তি অন্যরকম।
সো, ভাই ব্রাদার, আপনার নেক্সট ক্যারিয়ার পরিকল্পনা কি আমাদের টিউমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। হয়তো ভালো কিছু গাইডলাইন সেখানেও পেয়ে যেতে পারেন আমার বা অভিজ্ঞদের কাছ থেকে। সর্বোপরি ভালো থাকবেন আর ভালো কিছুর সাথে থাকবেন সবসময়। আমাকে কোন জিজ্ঞাসা করতে চাইলে এখানে টিউমেন্ট করুন। আমি সময় মতো চলে আসবো, ও হ্যাঁ আমি ফেসবুকেও আছি। 😀 আর অনেক বড় টিউন তো অনিচ্ছাকৃত ভুল-ত্রুটি মার্জনীয়। ধন্যবাদ সবাইকে।
ভালো লাগলে শেয়ার করুন।
আমি আইটি সরদার। Web Programmer, iCode বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 261 টি টিউন ও 1750 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 22 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি ইমরান তপু সরদার (আইটি সরদার),পড়াশুনা করেছি কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি নিয়ে; পেশা কন্টেন্ট রাইটার এবং মার্কেটার। লেখালেখি করি নেশা থেকে ফেব্রুয়ারি ২০১৩ থেকে। লেখালেখির প্রতি শৈশব থেকেই কেন জানি অন্যরকম একটা মমতা কাজ করে। আর প্রযুক্তি সেটা তো একাডেমিকভাবেই রক্তে মিশিয়ে দিয়েছে। ফলস্বরুপ এখন আমার ধ্যান, জ্ঞান, নেশা সবকিছু...
ভাই খুব ভালো লাগল পোস্টা,অনেক কিছু জানার আসে অনেক কিছু বুঝার আছে। পোস্টা এত ভালো লাগছে যে কয়েকটা লাইন বানি হিসেবে ধরে রেখেছি।