প্রিয় টেকটিউনারর্স আশা করি সবাই ভালো আছেন।
আজ আমি আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি কম্পিউটার-এর ভাইরাস নামক কুখ্যাত প্রোগ্রাম-এর বিষয়ে কিছু আলোচনার বিষয় নিয়ে।
সংক্ষিপ্ত ভাবে বলতে গেলে ভাইরাস হচ্ছে কম্পিউটারের ক্ষতিকর কিছু প্রোগ্রাম। যা আপনার পিসিতে থাকা যেকোনো ডিফল্ট সিস্টেম পরিবর্তন করে পিসির যেকোনো সিস্টেম ব্যবস্থাকে সাময়িক বা অসাময়িকভাবে বন্ধ করে দিতে পারে। এক্ষেত্রে একটি উদাহরণ হচ্ছেঃ আপনার পিসিতে আপনি দেখলেন হঠাত কোনো একদিন কোনো সফটওয়্যার ইন্সটল দিতে গেলে তা ইন্সটল হচ্ছে না,পিসি হ্যাং হয়ে যাচ্ছে অতঃপর পিসি সাটডাউন হয়ে যায়। কিন্তু কোনো কিছু ইন্সটল না করলে সব ঠিকঠাক চলছে। আবার ইনস্টল করতে গেলেই পিসি পুনরায় হ্যাং হয়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তখন বুঝে নিতে পারেন পিসির কোনো প্রোগ্রাম-এর সেটিং ঠিক না থাকায় এমন হচ্ছে। এখন কথা হল আপনি তো কোনো সেটিংস-এ হাতই দেন নি তাহলে এমন হল কিভাবে? তাহলে বেসিক চিন্তা করলে বুঝে নিতে পারেন আপনার পিসি ভাইরাসের কবলে পড়েছে।(নিজস্ব অভিমত বুঝানোর জন্য)।
এক কথায় বা সংক্ষিপ্ত ভাবে বলতে গেলে পিসিতে মাউস-এর প্রতি ডাবল ক্লিকে ভাইরাস ছড়াতে থাকে।
উদাহরণঃ অনেকেই দেখেছেন সর্টকাট ভাইরাস যুক্ত পেন্ড্রাইভ কারো পিসিতে কানেক্ট করলে পিসিতে ভাইরাস ঢুকে সমস্ত সফটওয়্যারের আইকন বা ফাইল-এর সর্টকাট বানিয়ে দেয়। এমন হবার কারন একটাই তা হচ্ছে, আপনি পেন্ড্রাইভে ইন করার সময় ডাবল ক্লিক করেছেন যার ফলে ভাইরাস আপনার পিসিতে ইন করেছে। এরপর আপনি ফাইল ওপেন করছেন, ডাবল ক্লিক করছেন অনবরত আর কিছুক্ষন পর দেখছেন আপনার পিসির সব ফোল্ডার-এর মধ্যেই সর্টকাট ভাইরাস তৈরি হয়ে গেছে। কিন্তু আপনি ডাবল ক্লিক না করে রাইট বাটন ক্লিক করে ওপেন ডায়লগ আসলে তারপর তা লেফট বাটন প্রেস করে ওপেন করলে ভাইরাস এত ক্ষতি কোনোভাবেই করতে পারবে না। (পরিক্ষিত নিজস্ব অভিমত বুঝানোর জন্য)।
অনেকেই মনে করেন আমি পিসিতে নতুন উইন্ডোজ দিয়েছি আমার পিসির সব ভাইরাস মরে ছারখার হয়ে গেছে এখন অনেক মজা। না এমন মনে করলেই আপনার জীবনের সবচেয়ে বড় বোকামিতে আপনি নিজেই নিজের ক্ষতি ডেকে আনবেন তাও আবার মনের অজান্তেই। হ্যা পিসিতে নতুন উইন্ডোজ দেবার পর তা ১০০% ভাইরাস মুক্ত হয়েছে শুধু আপনার পিসির সি ড্রাইভ। এছাড়া অন্য ড্রাইভ-এ থাকা ভাইরাস কিন্তু দূর হয়নি। কেননা আপনি উইন্ডোজ দিতে শুধু বেসিকভাবে সি ড্রাইভটাকেই ফরম্যাট দিয়েছেন অন্য কোনো ড্রাইভ না। এখানে আরো একটা বিষয় হচ্ছে নতুন উইন্ডোজ দেবার পর পিসির অন্য যেমনঃ ডি-ই-এফ ইত্যাদি ড্রাইভে থাকা ভাইরাসগুলি জাস্ট কিছু সময়ার জন্য নিথর/অকার্যকর অবস্থায় হয়ে পড়ে রয়েছে। কিন্তু যখনই আপনি আবার সেই ড্রাইভে ইন করে ডাবল ক্লিক বা ভাইরাসযুক্ত ফাইল ওপেন দিবেন তখনই ভাইরাস কিন্তু আবার সক্রিয় হয়ে যাবে। সুতরাং উইন্ডোজ দিলেই ভাইরাস ১০০% ক্লিন হয় না (নিজস্ব অভিমত বুঝানোর জন্য)।
অনেক ভাই আছেন যারা অনলাইনে অনেকভাবে পেন্ড্রাইভ বুট করার সফটওয়্যার-এর কথা বলেন। সবার কথা মেনেই আমি অন্যভাবে বলছি, আমরা বেশিরভাগ মানুষই উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারে অভ্যস্ত। তাই পেন্ড্রাইভ বুট করার একটা সফটওয়্যার আছে যা কিনা সয়ং মাইক্রোসফট অনুমোদিত।সেই সফটওয়্যারের নাম হচ্ছে উইন্ডোজ ৭ ইউ.এস.বি ডিভিডি ডাউনলোড টুল। এটি অত্যন্ত ভালোমানের উইন্ডোজ আই এস ও ফাইল পেন্ড্রাইভে বুট করার জন্য কার্যকর সফটওয়্যার। চাইলে ডাউনলোড করে নিতে পারেন এখান থেকে।(নিজস্ব অভিমত বুঝানোর জন্য)।
ইন্সটল শেষে সফটওয়্যার ওপেন করে ব্রাউজ করুনঃ
আপনার ড্রাইভে থাকা উইন্ডোজ অপারেটিং-এর যেকোনো ভার্শন যেমন ৭,৮,৮.১,১০-এর আই.এস.ও ফাইল সিলেক্ট করুনঃ
তারপর ইউ এসবি ডিভাইস সিলেক্ট করে পেন্ড্রাইভ- ক্লিক করে বিগান কপিতে ক্লিক করুন ব্যাস ১০০% কপি হলেই দেখবেন পেন্ড্রাইভ বুটেবল হয়ে গেছেঃ
ভালো হয় পিসিতে নতুন উইন্ডোজ দেবার আগে অন্য একটি পেন্ড্রাইভে যেকোনো ১টি লেটেস্ট ভার্শন-এর এন্টিভাইরাস রাখা। অতঃপর নতুন উইন্ডোজ দেবার পর কোনো ডাবল ক্লিক না করে এন্টিভাইরাস থাকা পেন্ড্রাইভ-এ ইন করে এন্টিভাইরাসটি পিসিতে ইনস্টল করে পিসির ফুল সিস্টেম স্কেন করা। যেহেতু আমি আগেই বলেছি অন্য ড্রাইভে ভাইরাস থেকে যায় পিসিতে নতুন উইন্ডোজ দেবের পরেও আর তা তখন থাকে অকার্যকর অবস্থায়, সেহেতু এভাবে স্কেন করলে আপনার সব ভাইরাস ডিলিট করা সম্ভব হবে ৯৯.৯৯%। এতে করে একটু সময় লাগতে পারে তবে ভেবে দেখুন এতে করে আপনি কি পাচ্ছেন? একদম ফ্রেশ একটি উইন্ডোজ যা আপনি নিজেই দেখতে পারবেন।(নিজস্ব অভিমত বুঝানোর জন্য)।
পঞ্চম বিষয়ে তার উত্তর আপনি পেয়ে যাবেন। কিন্তু কিছু কথা আছে তা হল প্রতিদিন হ্যাকার নিত্যনতুন ভাইরাস তৈরি করে তা ইন্টারনেটের মাধ্যেমে ছড়িয়ে দিচ্ছে। তো আপনি দোকান থেকে এন্টিভাইরাস কিনে যদি ভাইরাস ডাটাবেজ আপডেট না করেন তা হলে পিসিতে ভাইরাস এটাক দিতেই পারে। কারন আপনার এন্টিভাইরাস-এর যেই ভার্শন আপনি পিসিতে ইনস্টল দিয়েছেন তার আপডেট ভার্শন-এর ভাইরাস আপনার পিসিতে ইন করলে তা আপনার ইন্সটল করা এন্টিভাইরাস কোনোভাবেই হয়ত ডিটেক্ট করতে পারবে না। তাই সবসময় ভাইরাস ডাটাবেজ আপডেট রাখুন।(নিজস্ব অভিমত বুঝানোর জন্য)।
ভাইরাস মানেই খারাপ। তবুও দেখা যায় আমরা অনেকেই আছি যারা কিছু প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার পিসিতে ইন্সটল করি তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে (ইন্টারনেট ডাউনলোড ম্যানেজার IDM)। তো আমরা জানি IDM ফুল ভার্শন করতে হলে আমাদের পেচ ফাইল ডাউনলোড করতে হয় এবং এই পেচ ফাইলও কিন্তু ভাইরাস। তবে এ জাতীয় ভাইরাস পিসিতে এন্টিভাইরাস ইন্সটল থাকলে তেমন কোনো ক্ষতি করতে পারে না।(নিজস্ব অভিমত বুঝানোর জন্য)।
সেক্ষেত্রে এন্টিভাইরাস পিসিতে ইন্সটল করা থাকলে আপনি কোনো ওয়েবসাইটে ইন করতে গেলে আর সেই ওয়েবসাইটে ভাইরাস থাকলে এন্টিভাইরাস স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনাকে ওয়ার্নিং দিবে যে এই ওয়েবসাইটে ভাইরাস আছে।তখন পিসির সুরক্ষার কথা ভেবে সেই সমস্ত ওয়াবসাইট-এ ব্রাউজ করা থেকে বিরত থাকুন।(নিজস্ব অভিমত বুঝানোর জন্য)।
তো প্রিয় টেকটিউন ভিউয়ার্স আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আমার এই টিউন হচ্ছে বিশেষ করে যারা কম্পিউটার জগতে নতুন তাদের জন্য। এক্সপার্ট ভাইদের জন্য না। আমার এই টিউন-এর বিষয়ে যেকোনো মুল্যবান মতামত জানাতে সবাই আমাকে টিউমেন্টস করতে ভুলবেন না।
আমি আমিরুল ইসলাম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 19 টি টিউন ও 26 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 5 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 2 টিউনারকে ফলো করি।
ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।