হ্যালো টেকটিউনস কমিউনিটি, কেমন আছেন সবাই? টেকটিউনসের সাথে প্রযুক্তির নিত্য নতুন আবিস্কার এবং প্রযুক্তি ক্যারিয়ার গড়ার সুত্র ধরে সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন আশা করি। আরে টেকটিউনসের মতো প্লাটফর্মে থেকে আপনি প্রযুক্তির এই সম্ভাবনাময় যুগে সামনে এগিয়ে যাবেন না তা কিন্তু হয় না! আসলে টেকটিউনস আমাদের নিত্য নতুন প্রযুক্তির উৎকর্ষতা এবং প্রযুক্তিময় জীবন দিয়ে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে সহযোগিতা করছে।
যেখানে ভবিষ্যৎ বিশ্ব প্রযুক্তি ছাড়া অচল, সেখানে প্রযুক্তি না জেনে চলবেন কীভাবে? আমি গত কয়েক দিন আগে ১০ বছর বা তাঁরও পরে যে জব বিশ্ব লিড দিবে শিরোনামে একটি টিউন করেছিলাম যেখানে প্রযুক্তি নিয়ে পড়াশুনা করা বা যারা প্রযুক্তি নিয়ে পড়াশুনা করে না কিন্তু সাথে সাথে প্রযুক্তির জ্ঞান রাখে তাদের জন্যই ভবিষ্যৎ বিশ্ব অপেক্ষা করছে বলে গবেষকদের মত ছিল। 😈
সেহেতু আপনি কোথায় পড়াশুনা করেন বা কোন সাবজেক্টে পড়াশুনা করেন এটা ব্যাপার না, আপনাকে বিশ্বের নিত্য নতুন জবের সাথে নিজেকে মানিয়ে আপনাকে অবশ্যই প্রযুক্তির সাথে থাকতে হবে।
আজকে আপনি যদি ব্যাংকের ম্যানেজার হন বা অন্য কোন কর্পোরেট জব করেন আপনি প্রযুক্তি জ্ঞান ছাড়া কি নিজেকে অন্য কলিগদের সাথে মানিয়ে নিতে পারবেন? কখনই না। আপনার প্রমোশন বা নতুন কিছু প্রাপ্তির জন্য এই প্রযুক্তিই আপনাকে এগিয়ে দিবে বহু দূরে। যেটা আপনি অন্য কোন বিষয়ে অভিজ্ঞ হলে পাবেন না। সেহেতু নিজের ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে প্রযুক্তিতে দক্ষ করে তুলবেন আশা করি। 💡
আমরা যারা প্রযুক্তিপ্রেমী তারা সবাই কোন না কোন স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র? অবশ্যই! তবে বাংলাদেশের পড়াশুনার মান এতো তত্ত্বীয় ধর্মী যে এখানে হাতে কলমে শেখা বা বাস্তব ধর্মী প্রশিক্ষণ পাওয়া আদৌ কতোটা সম্ভব?
আমি বলবো বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর এখানে এক চেটিয়া দোষ নাই। আসলে আমাদের শিক্ষার মান সার্বিকভাবে উন্নত হচ্ছে না। আমরা একজন স্টুডেন্ট হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমন কিছু শিখতে পারি না যা আমাদের দূর ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বা দূর ভবিষ্যতের কথা বলবে।
কারণ একবার আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের কাছে ২০১২ সালের দিকে শুনেছিলাম বিভিন্ন দেশের শিক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে। (তিনি শিক্ষা ব্যবস্থার গবেষক ছিলেন তখন) সেখানে তিনি আমাদের মাঝে চীনের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করছিলেন। 🙄
“চীনের স্টুডেন্টরা আমাদের মতো পড়াশুনা করে, তাদেরও আমাদের মতো আন্তর্জাতিক মানের বই আছে, কিন্তু তাদের সেই পাঠ্য বই যেটা স্কুলে পড়ানো হবে সেটা কেউ বাসায় নিয়ে যেতে পারবে না। তাদের সবার জন্য স্কুলেই পার্সোনাল ডেস্ক আছে, যার ভেতর তাদের সকল বই খাতা যা পড়াশুনার জন্য দরকার ওখানে থাকবে, শিক্ষক বুঝাবেন, আপনি বুঝবেন। ঐখানেই কিছু মৌখিক পরীক্ষা বা আলোচনা হবে সবার মধ্যে, সেখান থেকে জানা বা বোঝার উপর শিক্ষক তাঁকে মার্ক দিবেন, সে বাড়ি চলে যাবে স্কুলের বই ছাড়া, বাড়ি যেয়ে সে তাঁর পছন্দ মতো বই পড়বে, তাঁর পছন্দের যেকোনো কাজ করবে, খেলবে এবং শিখবে। ঠিক পরবর্তী দিন একই ভাবে স্কুলে এসে স্কুলের শিক্ষক যা পড়াবেন সেটাই তাদের বুঝে ওখানেই উত্তর দিতে হবে, শিক্ষক সাথে সাথে ছাত্র মুল্যায়ন করবেন। বাড়ি নিজেদের ইচ্ছামতো পড়াশুনা বা প্রাক্টিক্যাল কাজ শেখা বা খেলাধুলা করা ছাড়া কোন কাজ নেই। ” 😎
যেদিন আমি গল্পটা শুনেছিলাম সেইদিন থেকে মনে হতো আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাও যদি এমন হতো তাহলে আমাদের ঘরে ঘরে আজ বিজ্ঞানী থাকতো, লেখক থাকতো, ইঞ্জিনিয়ার থাকতো, কৃষিবিদ থাকতো, পরিচালক থাকতো, উদ্যোক্তা থাকতো। কিন্তু আমরা কি তাঁর কিছুই পেয়েছি? 😉
স্বাধীনতার পর থেকে দেখান তো বাংলাদেশে কোন বৈজ্ঞানিক জন্ম নিয়েছে যিনি বিশ্ব ব্যাপি সমাদৃত। সম্ভব না, কারণ আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা। এখানে না পারবেন মন খুলে কিছু শিখতে না পারবেন নিজের মতো কিছু জানতে। শুধু ক্লাস, ক্লাস, ক্লাস আর এক্সাম, পরীক্ষা আর রেজাল্ট! কি করবো এই রেজাল্ট আমরা? যদি সেটা আমাদের মনের পরিপূর্ণ বিকাশ না ঘটায়।
বাংলাদেশের সাহিত্য সব সময় উন্নত। সমগ্র বিশ্বে বাংলা সাহিত্য নিয়ে গবেষণা হয়। একজন ভালো সাহিত্যিক বা লেখক দেখান তো ভালো ভাবে পড়াশুনা শেষ করছিলেন। পারবেন না। কারণ সৃষ্টি করতে গেলে সৃষ্টির রহস্য জানতে হয় নিজের বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকতে হয় প্রত্যেক কাজে। যা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা দিতে পারে না। তাই এখন আর নতুন ভালো লেখকও জন্ম নেন না, বিজ্ঞানী তো দূরের কথা! 😳
এবার আসি প্রযুক্তি জ্ঞানের দিকে। আমি যখন প্রথমে প্রযুক্তি নিয়ে খুব ঘাটা ঘাটি শুরু করলাম তখন বাংলাদেশের অনেক প্রযুক্তিবিদ বা প্রযুক্তি জ্ঞানীকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করতাম। বেশির ভাগ একটা কথা বলতেন, গুগল করেন। গুগল করেন। আমি পড়লাম মহা চিন্তায়। কেন শুধু গুগল করবো? আর আমিতো গুগল করতে হয় কীভাবে সেটাই তো ভালোভাবে জানি না। তাহলে কি করবো? গুগলে সার্চ করা শিখবো কীভাবে?
হ্যাঁ! কথা যা শুনছেন সব সত্য। তখন (এখনও) ইংরেজিতে এতো বেসিক লেভেলের আর্টিকেল পাইতাম না। এতোদিনে টেকটিউনসের সাথে পরিচিত হয়ে গেছি। একদিন টেকটিউনসে একটা টিউন পড়েই শিখে গেলাম গুগল করা সম্পর্কে। তারপর থেকে আমি প্রতিনিয়ত গুগল করে চলেছি। 🙄
আরেকটা কথা কি জানেন গুগলে বেশির ভাগ আর্টিকেল খুঁজে বের করতে সমস্যা হয়, কারণ আপনি বেসিক না জানলে গুগল থেকে বেসিক জানা খুব কষ্টসাধ্য। কারণ এখানে বেশিরভাগ রাইটার তাদের এডসেন্স বা এফিলিয়েট নিয়ে চিন্তিত। তারা শুধু কন্টেন্ট অপ্টিমাইজ করে এডওয়ার্ডস অনুসারে।
যেকারনে পরবর্তীতে আমি কোন বিষয় গুগল করার আগে সেই বিষয়ে বেসিক কিছু জানার জন্য টেকটিউনস সার্চ করি। ফলে টেকটিউনস থেকে বেসিক শিখে, আমি গুগল করা শুরু করলাম। শিখছি, শিখছি আর শিখেই চলেছি। 😈
একদিন আবিষ্কার করলাম টিউটোরিয়াল মানের যেকোনো আর্টিকেল গুগল থেকে খুঁজে পাওয়ার চেয়ে টেকটিউনসের চেইন টিউন বা পর্ব ভিত্তিক টিউন কম গুরুত্বপূর্ণ না। সেখান থেকেও মিডিয়াম লেভেলের শিক্ষা খুব ভালো ভাবেই পাওয়া যায়।
গত বছর হঠাৎ চীনের শিক্ষা পদ্ধতি নিয়ে একটা ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেখেছিলাম। সেখানে আমার স্যারের উপরের গল্পটি বলা ছিল। আর বিঃদ্রঃ দিয়ে লেখা ছিল আমি জানি না এই শিক্ষা ব্যবস্থা হুবহু চীনে এখন আছে কিনা, তবে বইয়ের বদলে নাকি স্টুডেন্টরা এখন ল্যাপটপ ক্লাসে রাখে? আজকে আমার আর সেটা জানতেও ইচ্ছা করে না। আজকের প্রযুক্তি শেখার জন্য আমাকে আর চীনের স্টুডেন্টকে হিংসাও করতে হয় না। কারণ এতোদিনে আমি টেকটিউনসকে পেয়ে গেছি। সেখান থেকে শিখে চলেছি প্রতিনিয়ত। 😛
সেই সাথে আছে আমার গুগল। গুগল থেকে শিখি, টেকটিউনস থেকে শিখি। মাঝে মাঝে কিছু নিজের জানা টেকটিউনসে টিউনের মাধ্যমে শেয়ার করি।
আজ তাই আমার বিশ্ববিদ্যালয় লাগে না প্রযুক্তি শেখার জন্য। ১০০+ প্রযুক্তির বিভাগ আছে আমাদের টেকটিউনসে। যেটা শিখতে মন চাই। ঢুকে পড়ি সেই বিভাগে। নিজে জানি। যেটা বুঝতে সমস্যা হয় গুগলে একটু সার্চ করি। টিউনারকে টিউমেন্ট করি। ব্যস এভাবে দিনের পর দিন আমার শেখা চলে যাচ্ছে।
তাইতো বলি টেকটিউনস এবং গুগল দুইটাই আমার কাছে বিশ্ববিদ্যালয়। ঠিক যেমন বিশ্ববিদ্যালয় আমি চাইতাম, সেই রকমই। আমার মনের মতো বিশ্ববিদ্যালয়। 😉 এখানে পেয়েছি স্বীকৃতি যা আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ও দেই নি। ট্রাডিশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি শুধু সার্টিফিকেটের জন্য। আর শেখার যা তা এই টেকটিউনস এবং গুগল থেকে।
টেকটিউনস বিশ্ববিদ্যালয় না থাকলে আজকে বাংলাদেশের মানুষ এই প্রযুক্তি বিশ্বে ফ্রিতে প্রযুক্তি না শিখতে পারলে টিকে থাকতো কীভাবে? 😯
এই উত্তর আপনাদের মুখ থেকে শুনতে ইচ্ছা করছে।
আমার মতো কার কার প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় টেকটিউনস। টিউমেন্ট করে জানিয়ে দিন আজ বিশ্বকে, নিজের কিছুটা প্রাপ্তি তৃপ্তির সাথে শেয়ার করুন আজ আমাদের মাঝে।
আর আসুন সবাই এক সঙ্গে আবৃত্তি করে উঠি,
"বিশ্ব জোড়া পাঠশালা মোর টেকটিউনসের আমরা ছাত্র
প্রযুক্তি জানতে বাংলার মানুষ হবে না দমবার পাত্র!" 😉
টেকটিউনস; যেখানে চলে প্রযুক্তি নাস্তা। বাংলাদেশে প্রথম ডিজিটাল প্রযুক্তি বিষয়ক পাঠাগার। আমি বলি ডিজিটাল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
ধন্যবাদ সবাইকে! 🙄
আমি আইটি সরদার। Web Programmer, iCode বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 261 টি টিউন ও 1750 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 22 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি ইমরান তপু সরদার (আইটি সরদার),পড়াশুনা করেছি কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি নিয়ে; পেশা কন্টেন্ট রাইটার এবং মার্কেটার। লেখালেখি করি নেশা থেকে ফেব্রুয়ারি ২০১৩ থেকে। লেখালেখির প্রতি শৈশব থেকেই কেন জানি অন্যরকম একটা মমতা কাজ করে। আর প্রযুক্তি সেটা তো একাডেমিকভাবেই রক্তে মিশিয়ে দিয়েছে। ফলস্বরুপ এখন আমার ধ্যান, জ্ঞান, নেশা সবকিছু...
ধন্যবাদ ।