আমরা অনেকেই ফেসবুকে আমাদের বন্ধুদের কাজকর্ম দেখে অনেকটা ক্লান্ত !! ফেসবুক ১ বিলিয়ন এরও বেশি সক্রিয় ব্যবহারকারীদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক নেটওয়ার্ক। এর এই মহান জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে অনেকে তাদের ন্যক্কারজনক পণ্য বা প্রকল্প আপনার টাকা খরচ করে ব্যবহার করা ফেসবুক এর বাজারে ছড়িয়ে দেয় যা আপনার হোম পেইজ ভরিয়ে দেয়া সহ আরও কত কি করছে !!
যদি আমরা ১০ টি নিম্নোক্ত কাজ থেকে নিজেদের বিরত না রাখি তাহলে এমন একটি ঘটনা ভবিষ্যতে আপনি দেখবেন যখন আপনার বন্ধুরাই আপনার একাউন্ট এর জাহাজ থেকে ঝাঁপিয়ে পড়তেও দ্বিধা বোধ করবে না। অবিলম্বে আমাদের ফেইসবুকে সমস্ত বন্ধুদের সঙ্গে এই কাজগুলো বন্ধ করা উচিত!
তবে এই কথাগুলো শুরু করার আগে কিছু কথা বলে রাখা প্রয়োজন। 😎 এই টিউনটি কাউকে হেয় করা বা তার মনে কষ্ট দেয়ার উদ্দেশে রচিত নয়,শুধুমাত্র জানানোর উদ্দেশেই এটি রচিত। তার পরেও যদি এই টিউন এর কারণে কেও মর্মাহত বা আহত হন তাহলে টেকটিউনস কতৃপক্ষ বা আদিল কতৃপক্ষ দায়ী থাকিবেনা। 😐 ২০০৭ সাল থেকে ফেসবুক ব্যবহার করছি।অভিজ্ঞতা থেকেই শুধু নয় বরং অনেকের অভিমত থেকে এই টিউন লিখা।
আপনি আপনার ফ্রেন্ডলিস্ট এ যাদেরকে একেবারেই চিনেন না তাদেরকে আপনার ফটোতে ট্যাগিং করা বন্ধ করুন। যখন আপনার বন্ধুকে আপনি একটি ফটো ট্যাগ করেন তখন এমন একটি ফটো হওয়া আবশ্যক যেখানে ওই বন্ধুর ছবি আছে। অনেকে দেখা যায় মানুষকে দেখানো বা হাসানোর জন্য মজার বা এমনি কোন ফটো লিস্টের সব ফ্রেন্ড কে উদ্ধার করে ফটো তে ট্যাগ দেন। এটা অস্বাভাবিক! আপনি এই কাজ করতে গিয়ে কিছু মানুষ কে বিরক্ত করছেন নিজের অজান্তেই। এটা করলে নোটিফিকেশান বারে বার বার লাল বাতি জ্বলে যা বিরক্তের মুল কারন। অনেকে এটা না হতে ওই ফটো থেকে নিজেকে আনট্যাগ দেন। যদি এমনটা করেন তাহলে ফেসবুকে এটা দেখতে খারাপ দেখায়। তাই এটা না করায় ভাল।
আমরা সবসময় এক কাজে অনেকগুলো কাজ শেষ করতে পছন্দ করি আর সোশ্যাল মিডিয়াতে টা আরও বেশি পরিমাণে। আমরা যেকোনো কাজকে একটু ছোট করতে পছন্দ করি।আমরা মূলত টুইটার, ফেসবুক, Google +, ইত্যাদি ব্যবহার করি আর স্টাফে একই টিউন করি আর এইখানে ফেইসবুকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার টুইটারে করা টুইট পাঠানো যায় ফেইসবুকে না গিয়েই। যদি আপনি কোনও তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ এর মাধ্যমে ফেসবুকে গিয়ে টিউন করা অনেক কমিয়ে দেন তাহলে তা মূলত এই বুঝাই যে আপনি ফেইসবুক ছাড়ুন আর টুইটারে আসুন পাবেন যা ফেইসবুক কে অসম্মান দেখায়। আমার কাছে মনে হয় এই দিকে ফেইসবুক কাজটা ভুল করেছে। আমার এক বন্ধু টুইটারে টুইট করে আর তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফেইসবুকে যায় বলে সে ফেইসবুক ব্যবহার আগের মত করেনা। আমার কাছে বিষয়টা ভাল লাগেনি।
অনেক মানুষ কে এমনটা করতে দেখা যায়ঃ ধরুন,সে নিজে নতুন কেনা কাপড় এর ছবি তুললেন আর তা এফবি তে শেয়ার করলেন, কিছুক্ষন পর সে নিজেই তার ছবিতে লাইক দিল। অনেকে তার নিজের ছবিতে লাইক দেয় News Feed এ তার ছবি সবার সামনে আস্তে অথবা মানুষকে দেখাতে যে এই ছবি বেশি লাইক পেয়েছে। আপ্নি যখন নিজের ছবি শেয়ার করেন তখন স্পষ্টই আপনার কাছে তা পছন্দনীয় বলেই আপনি তা শেয়ার করলেন আর যখন আপনি নিজেই ওই ছবিতে লাইক দেন তখন আপনি লাইক পেতে ব্যাকুল যা আপনার হিনমন্নতার বহিপ্রকাশ। এমন কাজ কেও করবেন না যা অন্যদের কাছে অস্বাভাবিক।
দেখুন,সবাইকে তার ব্যবসার জন্য একটি পেইজ তৈরি করা প্রয়োজন, কিন্তু আপনার বন্ধুদের ওই ফেসবুক পেজে আমন্ত্রণ বন্ধ করুন.তার পরিবর্তে আপনি ওই পেইজে আপনার থাকা সব আকর্ষণীয় লিখা আর ছবি টিউন করুন এবং তা আপনার প্রোফাইল এ শেয়ার করুন (যা আপনার বন্ধুদের এটি দেখতে সাহায্য করবে), এবং যদি তা আকর্ষণীয় হয় তাহলে অবশ্যই তারা ওই পেইজ অনুসরণ করবে।
এটা আপনার গুন হবে আর থকন প্রত্যেক লাইক এর দাম থাকবে,হইত আপনি বলবেন ইনভাইট অপশন দিয়েছে কেন ?? আপনি একটি পেইজ বানিয়ে ও তাতে আমন্ত্রণ জানাতে পারেন কিন্তু সত্য বলতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে আপনার বন্ধুরা আপনার পেইজটি পছন্দ করবে না যা হয়তো আপনি চান না। পেইজে ভাল লিখা না দিয়েই যদি আপনি বন্ধুদের কাছে লাইক চান তাহলে তা ভিক্ষা চাওয়ার মতন। 😐 এটি করবেন না।
অনেকেই দেখা যায় আজকাল নিজে সেই অ্যাপ বা গেম ব্যবহার না করেই বন্ধুদের অ্যাপ রিকুয়েস্ট পাঠায়।বাংলাদেশের স্লো নেট এর যা অবস্থা তাতে ৮০% নেট ব্যবহারকারীর পক্ষে এইসব গেম খেলা অসম্ভব। এছাড়া এই দেশে অধিকাংশ ফেসবুক ব্যবহারকারী মোবাইল দিয়ে তা ব্যবহার করেন,সেখানে অ্যাপ রিকুয়েস্ট পাঠানোর আগে চিন্তা করা উচিৎ যাকে রিকুয়েস্ট পাঠালেন সে আসলে ওই অ্যাপ বা গেম খেলার মত স্পীড নেট ব্যবহার করে কিনা,তা না হলে আপনার পাঠানোটা পুরাই বৃথা। 😕 তাই এই কাজটা করুন তবে ভেবে চিন্তে করুন।
মূলত এই সাজেস্ট করার সেবা ত্খন ব্যবহার করা উচিৎ যখন আপনি এমন দুজন বন্ধুকে চেনেন যারা ফেসবুকে একে অপরের বন্ধু লিস্ট এ নাই(যদিও তারা একে অপরের বন্ধু) সেই খেত্রে। কিন্তু বর্তমানে অনেকে অপরিচিত অনেককে সাজেস্ট করে থাকেন যা অনেক spammers রা করেন। এতে করে তারা ওই ভিক্টিম এর একাউন্ট এ প্রবেশের প্রথম ধাপ সম্পন্ন করে। যাকে সাজেস্ট করলেন সে মনে করতে পারে আপনি অন্য কোন উদ্দেশে এই কাজটি করছেন যদি সে আপনাকে না চিনে। অনেকেই তাই এই কাজ অন্যদের করতে বারণ করেন এবং নিজেও অপছন্দ করেন।
এটা বেশির ভাগ মানুষ এর ক্ষেত্রে ঘটে। যাদের ফ্রেন্ড লিস্টে অপরিচিত বন্ধু আছে তারা বেশি ভুগেন এই সমস্যায়। প্রায় প্রতিদিনই একটা গ্রুপে যুক্ত হয়ে যান আপনার ইচ্ছা অনিচ্ছার গুরুত্ব না দিয়েই। আপনিও নিশ্চয় চান না যে আপনি ফেসবুক ব্যবহার করার সময় আপনার নোটিফিকেশন বারে কিছুক্ষন পর পর লাল বাতি জ্বলুক তাও আবার ওই গ্রুপ এর আপডেট এর কারণে। এমনটি হলে আস্তে করে ওই গ্রুপ থেকে Leave করুন আর পরবর্তীতে জেনো আর এড করতে না পারে সে ব্যবস্থা ও করে রাখুন। 😕
অনেকে বার্তা প্রেরন করার সময় অনেক মানুষকে ওই বার্তাই যুক্ত করে। বার্তা প্রেরণে অনেক মানুষকে যুক্ত করা বন্ধ করুন যদি তারা আপনার ঘনিষ্ঠ না হয়। এটা করলে গ্রাহক ওই প্রেরক এর প্রতি বিরক্ত হয় এবং বার্তাকে গুরুত্ব দেয় না। যদি এমন কিছু বলার থাকে যা সবাইকে বলা প্রয়োজন তাহলে আলাদা আলাদা ভাবে সবাইকে তা প্রেরন করুন।
ফেসবুকে ইভেন্ট মানে কোন একটি মিলন-মেলায় আসার জন্য আমন্ত্রণ জানান,সেটা হতে পারে দাওওাত,ইফতার পার্টি ইত্যাদি। আর যদি এমন কোন ইভেন্ট এর আমন্ত্রণ পায় জার নাম "চল সবাই ভালবাসা-বাসি করি"। 😯 তাহলে কেমন লাগে,বুঝায় যায় ইভেন্ট এর ই ও বুঝেনা সে অথবা বুঝলেও মাথায় ভূত চেপেছিল ওই মুহূর্তে। 👿 এই ধরন এর কাজ করলে ফেসবুক এর বন্ধুরা আপনার সম্পর্কে খারাপ ধারনা পোষণ করতে শুরু করে। এই ধরন এর কাজ করা উচিৎ নয়।
আমরা অনেকে আমাদের নিজেদের ব্লগে আমাদের নিজেদের জনপ্রিয় করতে ফেসবুক,টুইটার ইত্যাদি সামাজিক সাইট এর লাইক,ফলো বাটন এর মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার করি যা ব্লগ এর মাধর্য নস্ট করা সহ সেই ব্লগ এর এডমিন সম্পর্কে বিরুপ ধারনা আনে ভিসিটর দের মধ্যে।
আপনার এমন কিছু করা উচিৎ নয় যা দেখতে খারাপ লাগার মত।এই ক্ষেত্রে বিভিন্ন পণ্যের বিজ্ঞাপন ও সোশ্যাল মিডিয়ার বাটন গুলোর ওই স্থানে থাকলে একই দশা হয়। সব মানুষ প্রয়োজনীয় জিনিস এর তালাশ করে,তাই এই বাটন গুলো এমন ভাবে ব্যবহার করুন যাতে ভিসিটররা পছন্দ করেই তাতে ক্লিক করে। তা নাহলে বুঝতেই পারছেন!
অনেকের প্রশ্ন হতে পারে এতো নিষেদাজ্ঞা দিলে তো আর ফেবু ইউস করতে হবেনা,ফেবুতে গিয়ে মশা মারতে হবে !! 😡 আমি বলি না !! মনে রাখবেন আপনার ফেবু একাউন্ট এর প্রতিটা কাজ আপনার Personality কে Show করে। তাই এমন কিছু করুন যা দেখে বা পড়ে মানুষ এর ভাল লাগবে আর এমনিতেই আপনার যেকোনো post এ লাইক দিতে মন চাইবে। আমি এমন কিছু পেইজ দেখেছি যেগুলো প্রথম দিকে মানুষ এর মন জয় করতে পারেনি কিন্তু তারা হাল ছেড়ে না দিয়ে তাদের ভাল লিখাগুলো প্রতিনিয়ত টিউন করতে থাকে,যাদের পেইজে এখন হাজার হাজার লাইক শোভা পায়। 😎
এটা মনে রাখবেন যে এই ১০ টি কাজ থেকে বিরত থাকলে আলাদা ভাবে spammers দের সনাক্ত করা যাবে নতুবা আপনিও ওদের দলে চলে যাবেন আপনি spammer না হয়েও !! কথা গেল বুঝাটা ???
এই টিউন সম্পর্কিত কোন অভিজ্ঞতা বা আপনার কোন টিউমেন্ট থাকলে অবশ্যই জানাবেন। ভালো থাকবেন আশা করি। আল্লাহ হাফেজ।
আমি আছি আপনার কাছাকাছি,শুধু খুজে নিন। 😎
আমি আদিল শাহরিয়ার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 4 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 20 টি টিউন ও 113 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি একটু বেশিই অসামাজিক।
Brabo ! (y)