এই মুহুর্তে কোটি কোটি মানুষ মোবাইলে কথা বলছে,কিছু মানুষ মোবাইল ব্যবহার করে আমার লেখাটি পড়ছে।কেউবা আড়ালে প্রেমিকের সাথে কথা লম্বা করছে।
কয়েকজন মানুষ মোবাইল ফোনের মাধ্যেমে অপরকে ধমক দিচ্ছে,কেউবা মোবাইল দিয়ে খুশির খবর বিতরন করছে।
হ্যাঁ মোবাইল ফোন…মোবাইল ছাড়া আমরা একটি দিনও চলতে পারি না,এটা প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে আমাদের অভ্যাসের সাথে মিশে গেছে।
রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর মানুষটি বারাক ওবামাও মোবাইল ফোনে কথা বলে, আপনিও কথা বলেন,শিক্ষিত কিংবা অশিক্ষিত বলে কোন বিভেদ নেই,সবাই এটি ব্যবহার করতে জানে। কেউ কেউ ফেইসবুকে স্টাটাস দেয়,কেউ আবার টুইটারে টুইট করে।কেউ মোবাইলে টাকা পাঠায় কেউ আবার মোবাইলে চাঁদা তুলে।
সব মিলিয়ে কথা একটাই,মোবাইল আমাদের লাগবেই প্রয়োজনে কিংবা অপ্রয়োজনে ।
না মোবাইল আমাকে চালাচ্ছে না,আমার ইশারায় এটি মুহুর্তে বদলাচ্ছে সভ্যতা,পাল্টে দিচ্ছে অভ্যাস।প্রতিটি আঙ্গুলের চাপেই এটি তৈরী করছে নতুন এক কাহিনী,নতুন এক ইতহাস।
পৃথিবীর বেশির ভাগ মোবাইল ব্যবহার কারী মোবাইল ফোন আবিস্কার এর সম্পূর্ণ ইতিহাস জানে না,কখনো মনে প্রশ্ন ও হয়তো জাগে না,আর কারো মনে প্রশ্নটি আসলেও গুগলে সার্চ করে“who invented the mobile phone”
ফলাফল যা আসে তাতে শিউর হওয়া যায় যে সর্বপ্রথম মোটোরোলা কোম্পানিতে কর্মরত ডঃ মার্টিন কুপার এটি আবিস্কার করেন বা তিনি এটার উদ্ভাবক।তিনি ১৯৭৩ সালের এপ্রিলে প্রথম সফল ভাবে এই ফোনের মাধ্যমে কল করতে সক্ষম হন।
যদিও আমরা এর শুরুর দিকটা যানি না বা মোবাইল ফোনের আবির্ভাব কোথা থেকে কিংবা কিসের উপর ভিত্তি করে মোবাইল ফোন কাজ করে তারও সঠিক ইতিহাস জানি না।
সাবিনা মোবাইল দিয়ে সামাজিক ওয়েবসাইটে ব্রাউজ করে,জামান মোবাইল দিয়ে উইকিপিডিয়া থেকে তথ্য নেয়,করিম মোবাইলে গান শুনে আর ফারজানা মোবাইলে দুবাই প্রবাসী স্বামীর সাথে কথা বলে।
কোন তার নেই,কোন শব্দ নেই,মোবাইল বাটনে চাপের সাথে পৃথিবীর কোন পরিবর্তন ও নেই।তো কিভাবে এই ডিভাইসটি কাজ করছে,কিভাবে এটি হুকুম তামিল করছে!
এপ্রিলের ১৪ তারিখ ১৯১২ সাল,নর্থ আটলান্টিক সাগর
কনকনে ঠান্ডা শিতের রাতের সাখে বরফের উসকানী,ভয়ানক অমানবিক রাতের সাথে ভেসে চলছে জাহাজ।
টাইটানিক সদ্য নর্থ আটলান্টিক ডর্ক ত্যাগ করলো।
একদম নতুন একটি রেড়িও,যা বজায় রেখেছিল টাইটানিক থেকে কার্লিফোনিয়াতে নিয়মিত যোগাযোগ। সিনিয়র ইংরেজ অপারেটর জ্যাক ফিলিপস ছিলেন কমিউনিকেশন সেকশনের দায়িত্বে। তিনি মোর্স কোড পদ্ধতিতে মেসেজ আদান প্রদান করতেন।
না কাজ করছে না,ডায়ালিং চললেই তবুও কোন ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে না। আজকের যুগে প্রতিমুহুর্তে কোটি কোটি কল আসছে আর রিসিভ হচ্ছে।
অথচ টাইটানিকের রেড়িও কমিউনিকেশন পদ্ধতি ছিল ওয়ান ওয়ে পদ্ধতি,মানে লিমিট সিস্টেম। যেখানে ব্যবহারের জন্য ছিল শুধুমাত্র একটি ফ্রিকুয়েন্সী। যখন কোন বার্তা আসে তখন আর কাউকে বার্তা পাঠাতে পাঠানো যেতো না।
সেই রাতে ফিলিপস চেষ্টা করেই চলেছেন কার্লিফোনিয়াতে সবচেয়ে শক্তিশালী ট্রান্সমিটিং ষ্টেশনের কাছে বার্তা প্রেরন করতে।
কি নিরুপায় রাত,এবার ফিলিপস সাদা কাগছে মেসেজ লিখেছেন পাঠানোর জন্য “we are surrounding by ice ”
কিন্তু কোন মেসেজ পাঠানো যাচ্ছে না,কোন প্রকার সংযোগ ও পাওয়া যাচ্ছে না। ফিলিপস ডায়াল করছে আর বিরক্ত মুখে বলছে “shut up ! i am busy now”
ঠিক তখনি একটি বার্তা পৌছে গেছে রেড়িও ষ্টেশনে। আর ফিলিপস এর বার্তাটি ছিল “shut up ! i am busy now”
ফিলিপস জানতো সামনে কি গঠতে চলেছে,অপারেটর তার মেসেজ টি পেয়ে সব কিছু ঠিক আছে মনে করে
সেই দিনের মত তার কাজ শেষে ভেবে বাতি নিভেয়ে চলে গেলেন।
৪৫ মিনিট পরে......
সত্যি কি অমানবিক ! বলা নেই কওয়া নেই সামান্য অসর্কতার জন্য হুট করেই বরফের সাথে ধাক্কা খেলে টাইটানিক। তখনি ফিলিপস বুঝতো পারলো তার অসর্কতাটি ছিল ডায়ালিং অবস্থায় “shut up ! i am busy now”
একটি ভুলের মাঝে দিয়ে আজকে একটি ইতিহাস সৃষ্টি হচ্ছে,অনেকগুলো প্রান চলে যাচ্ছে আর কোর্লিফোনিয়ার অপারেটর রা ঘুমাচ্ছে।
পরবর্তীতে ২টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়,অপারেটর দের যথাসময়ে যোগাযোগ করতে সমস্যা হওয়াতে সমস্যা এত বড় আকারে রুপ নিয়েছিল বলে ধারনা করা হয়।
আজকের আধুনিত যোগাযোগ ব্যবস্থা সত্যি অনেক ধার দেনা করেই বেড়ে উঠেছে। তখনকার দিনে যদি মাল্টিপল ফ্রিকুয়েন্সী সিস্টেম থাকতো তবে হয়তো সেদিনের শেষ মেসেজটি টাইটানিকের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াত না।
টাইটানিকের বিদায়ের ১০০ বছর পরে আমেরিকা আয়োজন করে ইউএসএ প্যাভিলিয়ন ২০১২,যেখানে ৭৮ শতাংশ মানুষের কাছে মোবাইল ফোন ছিল,প্রায় ৬০ শতাংশ ইউজার একসাথে গ্লোবাল নেটওয়ার্ক একসেস করতে পারে।বার্তা প্রেরন এবং গ্রহন করতে পারে।
প্যাভিলিয়নের ভেতরে উপরের দিকে বসানো হয়েছিল পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এলইডি স্ক্রিন। ওই স্ক্রিনে দেখা যেত বহু ছবি,যেগুলো ওই এক্সপোতে আসা দর্শনার্থীদের স্মার্ট ফোনে ধারন করা রিয়েল টাইম ফটো।
টাইটানিকের ষ্টেশন থেকে সিঙ্গেল রেড়িও সিগন্যাল আর আজকের ষ্টেশন থেকে প্রতি সেকেন্ড ১০ হাজার কোটি সিগন্যাল।টাইটানিক ডুবির ১০০ বছর পরে আজ ম্যাগাজিনের কভার বদলে গেছে,বদলে গেছে বার্তা আদান প্রদান ব্যবস্থা।
আপনি মোবাইলের রিসিভ বাটনে চাপ দিয়েছেন,একটি সিগন্যাল চলে গেছে আপনার নিকটবর্তী টাওয়ারে,সেখানে থেকে তার সাথে যুক্ত থাকা আরেকটি টাওয়ারে,সেখান থেকে সাবষ্টেশনে আবার টাওয়ারে …..প্রাপকের নিকটবর্তী টাওয়ারে এবং পরবর্তীতে প্রাপকের ফোনে। যদি ভাবা হয় তবে মনে করা হবে যেন একটা কল করার পর কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে উত্তর এর জন্য,অথচ আমরা কল্পনা করার চেয়েও দ্রুত আমরা উত্তর পাচ্ছি। বাটন চাপের সাথে সাথেই নেটওয়ার্কি আর ডিভাইসটি তার কাজ করে যাচ্ছে।
আজকে আমরা মাল্টিচ্যানেল মোবাইল কমিউনিকেশন পদ্ধতি ব্যবহার করছি,
কিভাবে টাইটানিকের এক চ্যানেল ফ্রিকুয়েন্সি থেকে মাল্টি চ্যানেল ফ্রিকুয়েন্সি আসলো,জানতে হলে চলে যাবো পূরোনো দিনে।
সবে মাত্র ২য় বিশ্বযুদ্ধ চলছে,ত্যকালীন আমলে রেড়িও সিগন্যাল ব্যবহার করে হেলকপ্টার থেকে ভূমিতে যোগাযোগ করা হতো,এটা কোন নতুন পদ্ধতি নয়,কিন্তু প্রায়ই এই সিগন্যাল জ্যামিং সমস্যার কবলে পড়তো।
বিনোদন ভালোবাসে না এমন মানুষ খুব কম,আর এসব মানুষের বেশির ভাগ মানুষের কাছে কোন না কোন নায়ক নায়িকা প্রিয়।আমরা সব সময়ে নিজেদের পছন্দের তালিকায় শির্ষে রাখি কোন কোন ষ্টারের নাম।
বর্তমান যুগের বেশির ভাগ মানুষই ৪০ এর দশকের কোন হলিউড নায়িকার নাম মনে রাখবে না,হয়তো চিনবেও না।
৪০-৫০ এর দশকে পৃথিবীর সকল দেশের হলিউড মুভি প্রেমিকরা ,যারা একজন নায়িকার নাম তাদের হ্রদয়ে গেথে
রেখেছিল তার নাম “হেডি লেমার”
একজন মার্কিন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী।,জন্ম ১৯১৩ সালে অষ্ট্রিয়ার ভিয়েনাতে,বাবা ছিলেন ব্যাংকার ।
লেমারের ছোট বেলা থেকেই বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ ছিল।
তাঁর ৬ বার বিবাহ হয়েছিল,আর সবগুলোতেই তালাক হয়েছিল।তিনি ৩ সন্তানের জননী।
হেডি লেমারকে তরুনী বয়সেই "বিশ্বের সর্বাপেক্ষা সুন্দরী মেয়ে" বলা হতো।তার অভিনয় করার ক্ষমতা ছিল সাধারন অভিনয় শিল্পীদের ছেয়ে মনে হয় কয়েকশ গুন বেশি। তিনি ছিলেন রেড়িও কমিউনিকেশনে প্রকৌশল বিদ্যা অর্জনকারী।
১৯৪০ সালের বসন্ত কাল,হেডি লেমার ভেবে যাচ্ছেন কিভাবে রেড়িও কমিউনিকেশন জ্যামিং থেকে মুক্তি পাওয়া য়াবে।
’৪০ সালের সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়িকা কাগজে ডিজাইন একেই চলেছেন,বারবার চেষ্টা করেও কোন সিস্টেম বের করতে পারছেন না।
“তিনি যেন চলচিত্র থেকে দূরে সরে যাচ্ছিলেন আর নিজের ক্রিয়েটিভিটি জাগিয়ে তুলতে ওয়াশিংটন গেলেন,তিনি চাইছেন যেন ২য় বিশ্বযুদ্ধে ইউনাইটেড স্টেট জয়ী হয়।” এন্থোনী লোডার-হেডি লেমার পুত্র
হঠাত করেই লেমার সমাধান পেয়ে গেলেন… তার নজর গেলে পাশের হ্যাম্বল পিয়ানোর দিকে। পিয়ানোর প্রতিটি টিউন এক একটি নোড থেকে জ্যাম্প করে আলাদা ভাবে বাজে।তাই সুরের কোন বেতাল হয় না। কোন প্রকার বাঁধা ছাড়াই এই ম্যাকানিক্যাল পিয়ানো বেজেই যাচ্ছে।
লেমার চিন্তা করলেন রেড়িও মেসেজ জ্যামিং সমস্যা হতে মুক্তি পেতে হলে কেবল মাত্র ফ্রিকুয়েন্সী টু ফ্রিকুয়েন্সী জ্যাম্প পদ্ধতি তৈরী করতে হবে।
যদি আপনি কাউকে গোপন কোন মেসেজ পাঠাতে চান তবে আপনার কাছে এমন একটি ফ্রিকুয়েন্সী থাকতে হবে যা প্রতি মুহুর্তে পরিবর্তনশীল।এবং একটি ফ্রিকুয়েন্সী অন্যটি থেকে আলাদা।
সুন্দরী লেমার তখনি ডিজাইন করলেন সেন্ডার আর রিসিভার জ্যাম্প ফ্রিকুয়েন্সী। যেটি ব্যবহার করলে শত্রু কখনো ফ্রিকুয়েন্সী ডিটেক্ট করতে পারবে না এবং জ্যাম ও করতে পারবে না।
লেমার এটির নাম রাখলেন “ফ্রিকুয়েন্সী হোপিং” পরবর্তীতে এটির নাম করন করা হয় “স্প্রেড-স্পেকট্রাম কমিউনিকেশন”
এর ফ্রিকুয়েন্সী প্রতিমুহুর্তে রেন্ডম আকারে পরিবর্তন হয় বলে শত্রু পক্ষ কখনো এটি ডিটেক্ট করতে কিংবা জ্যাম করতে পারেনা।
লেমার এবার ইউএস সরকারকে তার আইডিয়ার কথা জানালেন,তখনি আসলো আরেকটি সমস্যা,হেডি কেমল মাত্র ডিজাইন টি শেষে করেছেন কিন্তু তিনি এটির কোন প্রাকট্রিক্যাল পরীক্ষা করেন নি। কারন তখনকার দিনে এই পরীক্ষাটি করার মত প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতী ছিল না।
জার্মান অধিবাসী George Antheil,তিনি হেডি লেমারের প্রতিবেশী ছিলেন।তিনি বাদ্যযন্ত্র এর স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রণ করতে জানতেন, যিনি একই সাথে ১৬ টি ম্যাকানিক্যাল পিয়ানো বাজিয়েছিলেন যার সাথে ছিল Ballet Mécanique এর গান।
যেটি ছিল ম্যাল্টিপল প্লেয়ার পিয়ানো’স প্লেয়িং সিমুটানিয়সলি। লেমার এই মেকানিক্যাল পিয়ানোর মাঝে তার ফ্রিকুয়েন্সী হোপিং বা ফ্রিকুয়েন্সী জ্যাম্পিং সিস্টেমটি কল্পনা করতে পেরেছিলেন।
লেমার তার আইডিয়ার কথা Antheil কে বললেন,এবং ২ জন একসঙ্গে এটির জন্য ইউএস সরকারের কাছে প্রস্তাব করলেন।
তারা এই আইডিয়াকে “সিকরেট কমিউনিকেশন সিস্টেম” বলে জুনের ১৯৪১ সালে জমা দেন।
এবং এটি আগষ্ট ১৯৪২ সালে ইউএস সরকার অনুমোধন দেয়।
US Patent 2,292,387 অনুযায়ী তাদের দুজনের নামে এটি প্রকাশ এন্ট্রি করা হয়।
কেন লেমার আর Antheil একসঙ্গে যুক্ত হলেন ?
লেমারের ফ্রিকুয়েন্সী হোপিং আর Antheil এর পিয়ানো রোল দুটি এসসাথে মিলেই জ্যামিং সমস্যার জ্যাম্পিং সমস্যার নতুন পথ উম্মোচন করে। আর তারা যেন পুরো যুদ্ধের চিত্রই বদলে দিলেন,সর্বপ্রথম এটির ব্যবহার হয় ১৯৬২ সালে। কিউবাতে মিসাইল নিক্ষেপন কন্ট্রোলিং করতে আর বর্তমানে সকল প্রকার তারবিহহীন মিসাইল নিক্ষেপন পদ্ধতিতে।
যদিও Antheil কে সহ-উদ্ভাবক হিসেবে বলা হয়,কিন্তু মূলত এই পদ্ধতির মূল ডিজাইনার/উদ্ভাবক ১৯৪০-৫০ এর দিকের বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরী হলিউড চিত্রনায়িকা হেডি লেমার।
তিনি এমন একটি রেড়িও ফ্রিকুয়েন্সী ট্রান্সমিটি/রিসিভিং সিস্টেম ডিজাইন করেছিলেন যা দ্বারা একটি নির্দিষ্ট সময়ে ডিফারেন্ট রেড়িও ফ্রিকুয়েন্সী দ্বারা মেসেজ পাঠানো এবং গ্রহন করা যায়,কোন প্রকার ডিটক্টে/জ্যামিং ছাড়া।
হেডি লেমার তার বৈজ্ঞানিক আবিস্কারের জন্য কখনো হয়তো মানুষের কাছে পরিচিত হননি,তিনি নামকরা,জনপ্রিয় অভিনেত্রী হিসেবেই বেশি পরিচিত ছিলেন।
হেডির কাছে বিজ্ঞান নয় বরং বিজ্ঞানের কাছেই যেন হেডি লেমারের প্রয়োজন ছিল।
তাইতো ১৯৯৯ সালে তিনি বলেছিলেন “ চলচিত্র কেবল একটি স্থানের কিংবা একটি সময়ের জন্য,কিন্তু প্রযুক্তি সব সময়ে সবার জন্য”
তিনি তো শুধু এই কথাটা না হয় বলে গিয়েছিলেন,কিন্তু বিশ্ব তো আজ সেটাই দেখছে।
Antheil ১৯৫৯ সালে মারা গেলেন আর ১৯৯৭ সালে লেমার Electronic Frontier Foundation Pioneer Award পেলেন।
তাঁর পক্ষ থেকে তাঁর ছেলে আন্থনি লোডার পুরস্কার গ্রহন করেন।
হেডি লেমার যখন আওয়ার্ড পাবার কথা প্রথম শুনেন তখন তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর,তখন তিনি বলেছিলেন “It is about time.”
অবশেষে তিনি ২০০০ সালের জানুয়ারীতে মারা গেলেন।
বর্তমান যুগে spread spectrum (স্প্রেড-স্পেকট্রাম) বিভিন্ন ট্রান্সমিশনের জন্য ব্যবহার করা হয়।
সর্বোপরী এটি প্রযুক্তির ভিত্তিতে বেতার সেলুলার ফোনের মধ্যে যোগাযোগের কাজ, ফ্যাক্স, এবং অন্যান্য বেতার যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলে।এছাড়াও বর্তমানে স্প্রেড স্পেকট্রাম কে মাইক্রো চিপে ব্যবহার করা হচ্ছে।
এর সবচেয়ে বড়গুন হচ্ছে অনেক গুলো ইউনিট একযোগে একই ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে কাজ করতে পারে।
এই সিস্টেমটি ওয়্যারলেস ল্যান,ইন্টিগ্রেটেড বার কোড স্ক্যানার,পালটপ কম্পিউটার ,ডিজিটাল প্রেরণ, ডিজিটাল সেলুলার টেলিফোন যোগাযোগ,ফ্যাক্স,কম্পিউটার তথ্য, ই মেইল বা মাল্টিমিডিয়া দ্বারা যে কোন তথ্য যে কোন শহর/ রাজ্য বা দেশের নেটওয়ার্কের জন্য। রেডিও মোডেম ডিভাইস,এবং এটি ব্যবহার করে সম্ভাব্য বিস্ফোরক বাণিজ্যিক উন্নয়ন আজকে শেষপ্রান্তে।
স্প্রেড স্পেকট্রাম এমন একটি বেতার তরঙ্গ যোগাযোগ সিস্টেম যা ব্যবহার অত্যন্ত কার্যকরী,একই সময়ে একে অপরের সাথে কোন প্রকার হস্তক্ষেপ ছাড়া রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির ভাগ পেতে পারে,এটি একই সময়ে একাধিক ব্যবহারকারীর ব্যবহার সক্ষম ।
এছাড়াও এটি ব্যবহার শুরু হয় কোড ডিভিশন মাল্টিপল একসেস (সিডিএমএ)নেটওয়ার্ক,ব্লুটুথ,ওয়্যাইফাই নেটওয়ার্ক,কর্ডলেস ফোন,এবং ওয়্যারলেস টেলিফোনে।.
কী বিস্ময়কর ! এই আশ্চর্যজনক প্রক্রিয়া আবিষ্কারের পিছনে কেবল মাত্র ১৯৪০ সালের অবিশ্বাস্যভাবে এক সুন্দরী এবং প্রতিভাবান অভিনেত্রী ছিলেন!
যদি লেমার সেদিন মাল্টিপল ফ্রিকুয়েন্সী ট্রান্সমিশন সিস্টেম ডিজাইন না করতেন তবে হয়তো পৃথিবী বিশাল কিছু মিস করতো !আর টাইটানিকের মত এক তরফা মেসেজ যেত।
হেডি লেমার সম্পর্কে কিছু তথ্য:-
জন্ম : ৯ নভেম্বর ১৯১৩
ভিয়েনা, অষ্ট্রিয়া
মৃত্যু : ১৯ জানুয়ারী ২০০০ (৮৬ বছর বয়সে)
ক্যাসেলবেরি, ফ্লোরিডা,ইউ.এস
দাম্পত্য সঙ্গী:-
ফ্রিটজ ম্যানডল (১৯৩৩–১৯৩৭) (তালাকপ্রাপ্ত)
জিন মারকী (১৯৩৯–১৯৪১) (তালাকপ্রাপ্ত) ১ শিশু
জন লোডার (১৯৪৩–১৯৪৭) (তালাকপ্রাপ্ত) ২ শিশু
টেডি স্টুফার (১৯৫১–১৯৫২) (তালাকপ্রাপ্ত)
ডব্লিউ হাওয়ার্ড লী (১৯৫৩–১৯৬০) (তালাকপ্রাপ্ত)
লুইস জে বইস (১৯৬৩ –১৯৬৫) (তালাকপ্রাপ্ত)
সর্বপ্রথম AT&T কোম্পানি বাণিজ্যিক ভাবে মোবাইল টেলিফোন সার্ভিস চালু করে ১৯৪৭ সালে, এরপর এপ্রিল মাসের ৩ তারিখ ১৯৭৩ সালে মটরোলা এবং বেল ল্যাব্রেটরি যৌথ উদ্দ্যেগে হ্যান্ডহেল্ড ফোন চালু করে।
পাগল বলাটা অস্বাভবিক কিছু ছিল না, একটা বিশাল আকারের বাঁকানো লাঙ্গলের হালের মত বস্তু যখন কোন মানুষ কানের সাথে ধরে রাস্তায় নেমে নিজে নিজে কথা বলে যথন তাকে পাগল বলতে পারে।হুম ৩ তারিখ সকাল বেলা নিউইয়র্ক সিটির ব্যস্ত রাজপথের অসংখ্য মানুষ হয়তো ডঃ মার্টিন কুপারকে লাঙ্গলের হালের মত বস্তু কানে ধরে নিজে নিজে কথা বলতে দেখেছিল। কেউ কি জানতো একদিন এই হালের মত জিনিষটা প্রত্যেক মানুষ কানের সাথে ধরে নিজে নিজে কথা বলবে,না হয়তো জানতো না কিন্তু এখন সবাই জানে এটা কোন লাঙ্গলের হাল ছিল না এটা মোবাইল ফোন!
আজ থেকে ৪০ বছর আগে মোবাইল ফোন যাত্রা শুরু করে তারবিহীন প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
মোবাইল ফোনে বলা মার্টিন কুপারের প্রথম কথাটি ছিল “Hello it’s marty,can you hear me?” এরপর তিনি বলেন আমি তোমাকে একটা মোবাইল ফোন দিয়ে কল করেছি,এটা পোর্টেবল পার্সোনাল হ্যান্ডহেল্ড ফোন।
এটি একটি রিয়েল হ্যান্ডহেল্ড সেলুলার ফোন!
এটি 2 way radio sending and receiving call systems অনুযায়ী কাজ করতো।
এক নজরে মার্টিন কুপার:
জন্ম: ডিসেম্বর ২৬, ১৯২৮ (বয়স ৮৪)
শিকাগো, ইলিনয়িস, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
বাসস্থান: দেল মার, ক্যালিফোর্নিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
জাতীয়তা: আমেরিকান
শিক্ষা: ইলিনয়িস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (বি.এস.ই.ই.; এম.এস.ই.ই.)
পেশা: আবিষ্কারক,উদ্যোক্তা,নির্বাহী,নিয়োগকারী মটোরোলা
এরেকমের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা,ডায়না এলএলসি’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি
যে জন্য পরিচিত সেলুলার মোবাইল ফোনের আবিষ্কার,তিনি বিশ্বের প্রথম সেলুলার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কথা বলেন।
দম্পতি: আর্লিন হ্যারিস
আজকাল নানা আকৃতির নানা ব্রান্ডের মোবাইল ফোন পাওয়া যায়,যেমন নকিয়া,আইফোন,স্যামস্যাং,মাইক্রোমাক্স,ওয়ালটন কিংবা সিম্পনী।
প্রতিটা মোবাইল ফোনের গঠন এবং ফাংশনাল কিছু বৈশিষ্ট আছে
এক এক কোম্পানীর মোবাইলে তাদের নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম থাকে।
তবে গ্রাহক মোবাইল কেনার সময় প্রায়ই বেশি গুরুত্ব দেয় চার্জ কতক্ষন থাকবে তার উপর। আপনার মোবাইল জতই আকর্ষনীয় হোক না কেন চার্জ ছাড়া মোবাইল ফোন অচল!
চার্জ মানেই ব্যাটারি কার্যক্ষমতা বুঝায়,মানে কতক্ষন চার্জ দিলে এটা কত ঘন্টা সক্রিয় থাকবে।
যেমন ১,০০০ আম্পেয়ার/১২০০ আম্পেয়ার ইত্যাদি মানের ব্যাটারি পাওয়া যায়।
কোন মোবাইল এর ব্যাটারি ক্ষমতা খুব ভালো,একবার চার্জ দিলে কয়েকদিন আর চার্জ দেওয়া লাগেনা।
ইমেইল,চ্যাটিং,ভিডিও কলিং,স্কাইপে,টুইটার,ইউটিউব ফেইসবুক আরো কত কি ! আপনি তি বেশি অনলাইনে থাকতে চান বা বিনোদন পেতে চান ততবেশি চার্জ ও থাকা আবশ্যক!
ব্যাটারির কাজ হচ্ছে ইলেকট্রিক্যাল পাওয়ার কে ধরে রাখা বা সঞ্চিত রাখা।
ব্যাটারির ধারনা এসেছিল মোবাইল ফোন আসার বহু আগেই,প্রায় ২০০ বছর আগে।
১৭৪৮ সালে সর্বপ্রথম বেঞ্জামিন ফ্র্যাংকলিন ব্যাটারি শব্দটি ব্যবহার করেন।
তিনি “an array of charged glass plates” বর্ণনার সময় ব্যাটারি শব্দটি ব্যবহার করেন।
১৭৮০ সালে প্রানীর দেহে ইলেকট্রিক পাওয়ার আবিস্কার করেন ইতালিয়ান পদার্থ বিজ্ঞানী লুইজি গ্যালভানি,যিনি ছিলেন জিওবানি আলদিনী র চাচা।
১৮০০ সালে সর্বপ্রথম ইলেকট্রিক ব্যাটারি আবিস্কার করেন ইতালীয় পদার্থ বিজ্ঞানী আলেসান্দ্রো ভোল্টা।এবং তাকেই ব্যাটারির আবিস্কারক বলা হয়।এছাড়াও তিনি মিথেন গ্যাস আবিস্কার করেন।
আলেসান্দ্রো ভোল্টা এবং লুইজি গ্যালভানি দুজনই "animal electricity" নিয়ে বহু গভেষনা করেছেন। তারা ব্যাঙ এর পায়ের সাথে দুটি ভিন্ন ধাতু সিরিজে যুক্ত করেন এবং সর্বপ্রথম “প্রাণী বিদ্যুৎ” আবিস্কার করেন।
তারা ব্যাঙ এর পা প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে বিদুৎ প্রবাহ সনাক্ত করেন।
প্রথম ভোল্টা ব্যাটারি গঠিত হয় একটি ইলেকট্রোকেমিকেল সেলে। যাতে দুটি ইলেকট্রোড ছিল, একটি জিংক/দস্তা এবং আরেকটি কপার/তামা।
এতে দুটি টার্মিনাল রয়েছে,যদি ইলেকট্রোড দুটি সংযুক্ত থাকে তবে একটি বৈদ্যুতিক প্রবাহ হবে।
voltaic কক্ষে রাসায়নিক বিক্রিয়ার নিম্নরূপ:
দস্তা
Zn → Zn2 + 2e-
সালফিউরিক এসিড
2h + 2e-→ H2
এতে তামা কখনো প্রতিক্রিয়া দেখায় না,এবং এটি বিদ্যুৎ বাহক হিসেবে কাজ করে,তবে এটি মানুষের জন্য খুবই বিপজ্জনক।
১৮২৭ সালে ৮২ বছর বয়সে ভোল্টা মারা যান।
১৮ই জানুয়ারী ১৮০৩ সাল,লন্ডনে রয়েল কলেজ এ সার্জনদের সামনে
ইতালীয় প্রফেসর জিওবানি আলদিনী ব্যাটারী সঙ্গে এটি electrocuting করে একটি মৃতদেহ পুনর্জন্ম (প্রান) এনেছিল. মৃত দেহটি ছিল একজন খুনির ,যিনি ওই দিন সকালে মানে পরীক্ষন চালানোর ১ ঘন্টা আগে ফাঁসিতে ঝুলেছিলেন নিজের স্ত্রী এবং সন্তানদের খুন করার অপরাধে।
জিওবানি আলদিনী মূলত মেরি শেলীর লেখা বিখ্যাত বই 'Frankenstein' থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে তার চাচার তত্ব অনুসরন করে বাস্তব পরীক্ষা চালিয়েছিলেন।
আর এটির নামকরন করা হয় "Galvanic Experiments on The Dead Body of a Criminal"
আলদীনি মৃত মানুষটির শরীরের সাথে ২টি মেটাল ডিভাইস যুক্ত করে মৃত শরীরে বৈদ্যুতিক সাপ্লাই দেন। ইলেকট্রিসিটি প্রয়োগের ফলে মৃত শরীররটি কেপে উঠে এবং মানুষটির চোয়াল খুলে যায় সাথে সাথে ২টি চোখও খুলে যায়।আর কঠোর যন্ত্রনায় ঝেকে উঠে। এভাবে কয়েক সেকেন্ড গ্যাপ দিয়ে কয়েকবার মৃত শরীরের সাথে মেটাল ডিভাইস স্পর্শ করিয়ে ইলেকট্রিসিটি সরবরাহ করে পুনর্জন্ম পরিলক্ষন করা হয়।
আর এটি দেখে সেখানে উপস্থিত থাকা সার্জনদের একজন সেখানেই মারা যান।
এখান থেকেই আলদীনি ব্যাটারি ডিভাইসে ইলেকট্রিসিটি পাওয়ার সম্পর্কে প্রথম বাস্তব ধারনা দাঁড় করান। তিনি দুটি ভিন্ন মেটাল ডিভাইসকে একটি কন্ডাকটিং লেয়ার দ্বারা আলাদা করেন।এবং ইলেকট্রিক ক্যামিকেল ক্রিয়ার ফলে শক্তিশালী ইলেকট্রিক কারেন্ট তৈরী করেন।
আর বর্তমানে সেই সূত্রের উপর ভর করে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ব্যাটারি সিস্টেম তৈরী হচ্ছে। নতুন নতুন ব্যাটারি তৈরী হচ্ছে যেমন: সোলার সেল ব্যাটারি,লীড এসিড ব্যাটারি, ফুয়েল সেল ব্যাটারি ইত্যাদি।
বর্তমান যুগে সবার সাথেই ব্যাটারি থাকে,কখনো পকেটে কখনো হাতে,কারন প্রতিটা মোবাইল ফোনেই একটি শক্তিশালী ব্যাটারি আছে,হালকা ও সহজ বহনযোগ্য করার লক্ষ্যে মোবাইলে লিথিয়াম ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়।
বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্ররা তো জানেনই এবং কি অন্য বিভাগে পড়াশোনা করেছেন তারাও অবশ্যই জানেন বর্তমানে ব্যাটারি কি দিয়ে তৈরী হয়।
হ্যাঁ বলছিলাম লিথিয়ামের কথা,লিথিয়াম একটি রাসায়নিক মৌল যার প্রতীক Li এবং পারমানবিক সংখ্যা ৩ গ্রিক শব্দ λιθoς লিথোস "পাথর" থেকে লিথিয়াম ধাতুর নামকরন করা হয়েছে,লিথিয়াম সবচেয়ে হালকা কঠিন মৌল।
এর আণবিক ভর ৬,৯৪১,ভর ৭,গ্রুপ ১
স্ফুটনাঙ্ক º C: 1342
গলনাঙ্ক º C: 181
ঘনত্ব: 0.53g/cm ³ এটি রূপালী রঙের এবং সহজে ছুরি দিয়ে কাটা যায়।
সর্বপ্রথম Johann Arfverdson লিথিয়াম আবিস্কার করেন।
কিছু নির্দিষ্ট খনিতে এটি পাওয়া যায়।বর্তমানে সবচাইতে বেশি মজুদ আছে
আর্জেন্টিনা ৩.২০০ ৮৫০.০০০ টন
অস্ট্রেলিয়া ৯.২৬০ ৯৭০.০০০ টন
ব্রাজিল ১৬০ ৬৪,০০০ টন
তবে স্মরন রাখতে হবে সর্বপ্রথম আউটপুট দেওয়া ব্যাটারি ছিল ক্যামিকেল ব্যাটারি এবং তা আলেসান্দ্রো ভোল্টার ভোল্টা পাইল/গাঁধা আকারে ছিল।
এক নজরে জিওবানি আলদিনী :
জন্ম: এপ্রিল ১০,১৭৬২
ইতালির বলগনা শহরে
মৃত্যু: ১৭ই জানুয়ারী ১৮৩৪,৭১বছর বয়সে
তিনি একজন পদার্থবিজ্ঞানী ছিলেন
এখন লাইভ ভিডিওর যুগ,আপনি কথা বলছেন আর মুহুর্তেই তা শেয়ার হচ্ছে অসংখ্য ওয়েবসাইটে।
এখন সব যায়গায় বিশাল বিশাল ভিডিও রেকর্ডিং ক্যামেরা নিতে হয় না,মোবাইল ভালো মানের রেকর্ড করা যায়,আবার মুহুর্তেই তা অফিসে পাঠিয়েও দেওয়া যায়।
অনেকে আবার বিয়ে শাদি কিংবা আড্ডার ছবি তুলে শেয়ার করে..হ্যাঁ সবই তো ক্যামেরা মোবাইল ফোন দ্বারা সম্ভব হয়।
এমনও হয় যে স্যার বোর্ডে অংক করার পর এখন অনেকে খাতায় তুলে না বরং মোবাইলে জুম দিয়ে ছবি তুলে বাসায় নিয়ে যায়,প্রয়োজনে পোর্টেবল নোট হিসেবে যেখানে খুশি সেখানে ছবিটা ওপেন করে পড়াশোনাও করা যায়।
আপনার সহপাঠী কাঁদায় পড়ে গেছে,ছবি তুলবেন মাষ্ট আর সোস্যাল কমিউনিটিতে তা শেয়ার করে তাকে পঁচাবেন না তাকি হয়! আসলে অনেক কিছুই আমরা ক্যামেরা বন্দি করতে পারি… আর যারা ফটো সাংবাদিক তাদের জন্য তো স্মার্টফোন নতুন যুগের সূচনা করেছে।
এইতো ক’দি আগে বি বাড়িয়াতে ঘূর্ণঝড়ে লন্ড ভন্ড হয়ে যাওয়ার সময়টা ঠিকই ক্যামেরা বন্দি করেছিলেন একজন। আর পরে তা আমরা বিভিন্ন টেলিভিশনে দেখি,তবে জানেন তো ক্যামেরাটি ছিল মোবাইল ফোন।
চলুন জানি কিভাবে প্রথম মোবাইলে ক্যামেরা সংযুক্ত করা হয়েছি।
সময়টা জুন মাসের ১১ তারিখ আর ১৯৯৭ ইংরেজী
ফিলিপ কান, ফ্রান্সের একজন প্রযুক্তিবিদ,সফটওয়্যার প্রোগ্রামার এবং একজন সফল উদ্যোক্তা।
তিনি চারটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা:
ফুলপাওয়ার টেকনোলজি,স্টারাফস সফটওয়্যার,লাইটসার্ফ টেকনোলজি এবং বরল্যান্ড
আজকে তার প্রথম সন্তান(সোফি)জন্মগ্রহন করবে,সে চায় এই খবরটা ইন্টারনেটের মাধ্যমে সবার সাথে শেয়ার করতে।
ফিলিপ চিন্তা করলেন আজকে এমন কিছু করবেন যা এর আগে কেউ করেনি,অর্থ্যাৎ সন্তান জন্ম লাভের ঠিক পরপরই তিনি তার সোস্যাল কমিউনিটিতে(ফ্রেন্ডস এন্ড ফ্যামেলির সাথে) শেয়ার করবেন যা এর আগে কেউ করেনি।
তিনি সবে মাত্র বাসা থেকে বের হয়ে গাড়িতে বসেছেন রওনা হবার জন্য,আর মনে মনে প্লান করে যাচ্ছেন কিভাবে এটা করা যায়।
তার সাথে ছিল একটা ল্যাপটপ,একটা ডিজিটাল ক্যামেরা এবং মটোরোলা কোম্পানীর একটি মটোরোল স্টারটেক মোবাইল ফোন।
কিভাবে ক্যামেরা এবং মোবাইল একসঙ্গে যুক্ত করবেন তিবি ভাবলেন এবং ঠিক মাথার উপরে থাকা স্পিকার বক্সের দিকে নজর দিলেন…..
তিনি ডিজিটাল ক্যামেরাটি মোবাইলের সাথে কানেক্ট করার জন্য গাড়িতে থাকা স্পিকারের তার ব্যবহার করেন।
এবং মোবাইল থেকে একটি ক্যাবল দিয়ে তা ল্যাপটপের সাথে যুক্ত করেন।
ফিলিপ তার ওয়্যারলেস শেয়ারিং সফটওয়্যার এবং ক্যামেরা যুক্ত মোবাইল ফোন কানেক্ট করে শিশুটির জন্মের ছবি শেয়ার করেন প্রায় ২ হাজারেরও বেশি মানুষের সাথে।
এটাই মোবাইল ফোন দিয়ে তুলে শেয়ার করা ইন্টারনেটের প্রথম ডিজিটাল ছবি।
তখন ছিল ইন্টারনেটের বয়স মাত্র ৪ বছর,সোফি মাত্র জন্মলাভ করলেন এক বিরাট প্রযুক্তির পরিবর্তন সহ।
অপেক্ষা করেন কয়েক মাস পরেই নকিয়া ৪১ মেগাপিক্সেলের লুমিয়ার নতুন মোবাইল আনবে।
গত বছর কান ম্যাশেবলকে বলেছিলেন “I wanted to create a 21st century version of a Polaroid picture.”
এক নজরে ফিলিপ কান:
জন্ম: ১৬ই মার্চ, ১৯৫২
বর্তমান বয়স ৬০ বছর
ফ্রান্সের প্যারিসে জন্মগ্রহন করেন।
তিনি গনিত নিয়ে পড়াশোনা করেছেন সুইজারল্যান্ডের সুইস ফেডারেল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এবং ইউনিভার্সিটি অব নাইসে।
বর্তমানে মোবাইল থেমে নেই কোন স্থানে,যেকোন সময় যেকোন স্থানে মানুষ ব্যস্ত ছবি তুলতে,ভিডিও করতে আর পৃথিবীকে জানাতে।
আজকে আমি আপনি আমরা সবাই নাগরিক সাংবাদিক,আমার যে কেউ যেকোন গটনার ছবি তুলতে পারি,যে কোন অন্যায় অনিয়মের ছবি তুলে শেয়ার করতে পারি,খবরে প্রকাশ করতে পারি।
বর্তমান যুগ টাচ স্ক্রীন মোবাইল এর যুগ,কম বেশি সবাই এই মোবাইল ব্যবহারও করেছেন,হয়তো জানেন না কারা এর পিছনে কাজ করেছেন।
সর্বপ্রথম ইউরোপিয়ান কাউন্সিল ফর নিউক্লিয়র রিসার্চ (CERN) এর ইঞ্জিনিয়ার ফ্রাঙ্ক বেক এবং টেকনেশিয়ান বেন্ট স্টুমপা মিলে ১৯৭০ এর দশকে ট্রান্সপারেন্ট টাচ স্ক্রীন আবিস্কার করেন,এবং এটি সর্বপ্রথম ১৯৭৩ সালে ব্যবহা করা হয়। এরপর টাচ স্ক্রীন টেকনোলজী নিয়ে অনেকেই কাজ করেছেন এবং এখনো করে যাচ্ছেন।
আধুনিক মোবাইল ফোন আবিস্কারের টাইমলাইন…..
হেডি লেমার -- মার্টিন কুপার -- ফিলিপ কান -- ফ্রাঙ্ক বেক
ক্রেডিট: ইউকিপিডিয়া,আমেরিকান ইনভেন্টর,এভাউট ডি কম,ডিসকভারী চ্যানেল,গুগল এবং আরো অনেক ওয়েবসাইট থেকে,সব ছবি গুগল থেকে
[ভুল ক্রুটি থাকতে পারে,কোন যায়গায় সন্দেহ লাগলে গুগলের সহায়তা নিয়ে সঠিকটা জেনে নিবেন,ধন্যবাদান্তে সিএক্স রানা,লেখার সময়: মার্চ ১২ থেকে জুলাই ৬]
আমি সিএক্স রানা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 24 টি টিউন ও 131 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 12 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
WordPress Developer, Visual Composer and Recurring Payments Expert.
অনেক ভালো লিখছেন। সবটুকুই পড়লাম। অবশ্য আমি এই সব কাহিনিই আগে discovery চ্যানেল এ দেখেছি! ধন্যবাদ!