যুদ্ধ নামটা শুনলেই অনেকেই আতকে উঠে কারন যুদ্ধ মানুষকে দাড় করিয়ে দেয় এক ভয়ংকর পরিণতির সামনে। পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকেই বিভিন্ন দেশ তার ক্ষমতা দেখানো /ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য একজন আরেক জনের উপরে ঝাপিয়ে পড়েছে আর এতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্হ হয়েছে নিরীহ মানুষ, মারা গেছে লক্ষ লক্ষ মানুষ। আজকের টিউনের বিষয় এই যুদ্ধ নিয়েই ।
চলুন তাহলে আজকে দেখে নেই এখন পযর্ন্ত সংঘটিত সবচেয়ে ধ্বংসাত্নক যুদ্ধের প্রথম পাচটির কথা তবে আলোচনায় যাবার আগে আইন্সটন সাহেবের একটি কথা না বলতে খুবই ইচ্ছে করতেছে কথাটি হল আমি জানিনা কোন অস্ত্র দ্বারা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হবে। তবে চতুর্থ বিশ্বযুদ্ধ হবে লাঠি আর পাথর দ্বারা।
সভ্য সমাজের সবচেয়ে বড় আর ধ্বংসাত্নক যুদ্ধ বলতে ২য় বিশ্বযুদ্ধকে সরাসরি বুঝানো হয় যা ১৯৩৯ সাল হতে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত চলে।এই ভয়াবহ যুদ্ধে আনুমানিক ৬ কোটি ২০ লক্ষ মানুষ মারা যায় যার মধ্যে প্রায় অর্ধেকই ছিল রাশিয়ার নাগরিক। নিহতের এই বিশাল সংখ্যার মূল কারণ ছিল গণহত্যা আর অস্ত্রের ব্যাপক ব্যবহার।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারিগর বলতে হিটলারকে সরাসরি বুঝানো হয় ।নাৎসি বাহিনীর পোল্যান্ড আক্রমণএর মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়
মিত্রপক্ষেছিল যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স পোল্যান্ড ,রাশিয়া আর গনচীন। জার্মানির সাথে ছিল ইতালি আর জাপান।এই্ যুদ্ধ প্রথমে রাশিয়া অংশগ্রহন না করলেও পরবর্তীতে জামার্নি রাশিয়াকে আক্রমন করে যুদ্ধের ময়দানে ডেকে আনে।
এই্ যুদ্ধের মধ্য দিয়ে মিত্রশক্তির বিজয় হয় । জাতিসংঘ সৃষ্টি হয় । বৃহৎ শক্তিহিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের আত্মপ্রকাশ করে আর রাশিয়া আমেরিকা স্নায়ু যুদ্ধের সূচনা হয়।এই যুদ্বের মাধ্যমে সর্বপ্রথম পারমানবিক বোমার ব্যবহার হয় আর এর শিকার হয় জাপান। ১৯৪৫ সালে জার্মানি এবং জাপান উভয় দেশের নিঃশর্ত আত্মসমর্পনের মধ্য দিয়েই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।তবে ভয়াবহতার জন্য এই যুদ্ধ মানুষ আজীবন মনে রাখবে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ছিল সভ্য যুগের সর্বপ্রথম অসভ্য যুদ্ধ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের স্হায়িত্ব ছিল প্রায় চার বছর ২৮ জুলাই, ১৯১৪ থেকে ১১ নভেম্বর ১৯১৮ সাল পর্যন্ত চলে এই যুদ্ধ।আর এই যুদ্ধের কারনে প্রায় ৫০ মিলিয়ন লোক প্রত্যক্ষ / পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্হ হয় এর মাঝে ১ কোটি ৬০ লক্ষ লোক শুধু মারাই যায় আর বাকীরা আহত হয়।
তবে যুদ্ধ মুলত শুরু হয় অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় আর সার্ভেরিয়ার মাঝে পরে দুই দেশের পক্ষ হয়ে নানা দেশ তাদের মনের ঝাল মিটানোর জন্যই এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। ১৯১৪ সালের ২৮শে জুন অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকারী আর্চডিউক ফ্রাঞ্জ ফার্দিনান্দের হত্যাকান্ডের মাধ্যমে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সূত্রপাত হয়।
এই যুদ্ধের কারন হিসেবে ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয় সাম্রাজ্য বসনিয়া-হার্জেগোভিনা দখল করা এবং আর্চডিউক ফ্রাঞ্জ ফার্দিনান্দের হত্যাকান্ডকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়।
তবে কেন বিভিন্ন দেশ এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে তা বুঝতে হলে আপনাকে নিচের অংশটুকু পড়তেই হবে।
ফ্রান্সের ঐতিহাসিক শত্রুতার কারণে ব্রিটেন প্রথমদিকে জার্মানীর প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন ছিলো। কিন্ত জার্মানী ব্রিটেনের সাথে নৌ- প্রযুক্তিতে পাল্লা দিতে শুরু করায় সম্পর্কটি প্রতিযোগিতামূলক হয়ে ওঠে। ফ্র্যাঙ্কো-প্রুশিয়ান যুদ্ধের পর থেকে জার্মান ও ফরাসীদের সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে। ফরাসীরা তাই রাশিয়ার সাথে মৈত্রী করে। অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরী রাশিয়াকে হুমকি হিসেবে দেখতো, তাই তারা জার্মানীর সাথে মৈত্রী চুক্তি করে। সার্বিয়ার উত্থানের সাথে সাথে স্লাভ জাতীয়তাবাদ জোরদার হয়ে ওঠে।
সুযোগ পেয়ে এবার অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরী সার্বিয়াকে কোণঠাসা করে ফেলে। সার্বিয়ার মিত্র রাশিয়া, সে জোরে সার্বিয়া হুমকি অগ্রাহ্য করবার সাহস দেখায় ও সৈন্য সমাবেশ শুরু করে। বিভিন্ন মৈত্রী চুক্তি, দুর্বল যোগাযোগ ব্যবস্থা ও বিভিন্ন পর্যায়ে সত্যের বিভিন্ন বিকৃতি রাষ্ট্রনায়কদের যুদ্ধের সিদ্ধান্তের দিকে ঠেলে দেয়। ২৮ জুলাই ১৯১৪ অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরী সার্বিয়ার সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করে। পরদিন রাশিয়া সৈন্য সমাবেশের মাধ্যমে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। ফলে জার্মানীও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়। এদিকে সার্বিয়ার সমর্থনে ফ্রান্স সৈন্য সমাবেশ শুরু করে আর তারপরের ঘটনা বলার কোন দরকার মনে করিনা।
আমার ধারনা খুব কম সংখ্যক লোকই এই্ যুদ্ধটি সম্পর্কে জানেন। এই যুদ্ধটি চলে April 19, 1775 – September 3, 1783 যুদ্ধটি শুরু হয়েছিল গ্রেট ব্রিটেন আর নর্থ আমেরিকার মাঝে তবে পরর্ততিতে ফ্রান্স ,স্পেন আর জার্মান আমেরিকাকে সাপোর্ট দিয়ে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে তবে ফ্রান্স আমেরিকাকে প্রচুর পরিমান অস্ত্র সরবরাহ করে।সেই সময়ে আমেরিকা ছিল ব্রিটিশদের দখলে। মুলত ব্রিটিশ গর্ভমেন্ট কতৃর্ক কর বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে এই যুদ্ধের শুরু হয়।
কর বৃদ্ধির ফলে তখন আমেরিকাতে প্রতিবাদের ঝড় উঠে আর এই ঝড়ের ফলেই পরবর্তীতে ব্রিটিশরা আমেরিকা ছাড়তে বাধ্য হয়।এই যুদ্ধটিতে প্রচুর মানুষ মারা যায় ।
ভিয়েতনাম যুদ্ধের কথা অনেকেই জানেন ।এটি হচ্ছে প্রথম যুদ্ধ যাতে আমেরিকা হেরে যায়।ভিয়েতনাম যুদ্ধ ১৯৫৯ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সংঘটিত সবচেয়ে দীর্ঘ সামরিক সংঘাত।সাম্যবাদী শাসন / কমিউনিস্ট শাসন সবদিকে যেন ছড়িয়ে না পড়তে পারে সে লক্ষেই আমেরিকা এই যুদ্ধে অংশগ্রহনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
যুদ্ধ মূলত শুরু হয় দক্ষিন আর উত্তর ভিয়েতনামের মাঝে।আর এতে আমেরিকা দক্ষিণ ভিয়েতনামের পক্ষে ১৯৬৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেখানে সৈন্য পাঠায়, কিন্তু এর ফলে যে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের সূত্রপাত হয়, তাতে শেষ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জয়ী হতে পারেনি।
১৯৭৫ সালে দুই ভিয়েতনাম একত্রিত হয়। ১৯৭৬ সালে এটি সরকারীভাবে ভিয়েতনাম সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র নাম ধারণ করে। এই যুদ্ধে প্রায় ৩২ লক্ষ ভিয়েতনামি মারা যান। এর সাথে আরও প্রায় ১০ থেকে ১৫ লক্ষ লাও ও ক্যাম্বোডীয় জাতির লোক মারা যান। মার্কিনীদের প্রায় ৫৮ হাজার সেনা নিহত হন।
অনেকেই এই যুদ্ধের কথা জানেন ।তবে আরেকটা তথ্য দিলে মনে হয় অধিকাংশরাই বুঝতে পারবেন আমি কোন যুদ্ধের কথা বলছি ইরাক আর কুয়েতের মাঝে সংঘটিত যুদ্ধ/ উপসাগরিয় যুদ্ধ ।2 August 1990 – 28 February 1991 চলে এই যুদ্ধ ।তবে অফিসিয়ালি ৩০ শে নভেম্বর ১৯৯৫ সালকে বলা হয় অফিসিয়ালি গালফ ওয়ার সমাপ্তের দিন।
অপারেশন ডেজার্ট স্টর্ম নামে সমধিক পরিচিত এই যুদ্ধের সংঘটিত হয় ইরাক এবং ৩৪ টি দেশের জাতিসংঘ অনুমোদিত যৌথ বাহিনীর মধ্যে । ১৯৯০ সালের আগস্ট মাসে ইরাকের কুয়েত আগ্রাসন এবং কুয়েতি ভূ-খন্ড দখলের প্রেক্ষিতে ইরাকী বাহিনীর হাত থেকে কুয়েতকে মুক্ত করাই ছিল এ যুদ্ধের উদ্দেশ্য ।
এই যুদ্ধে প্রায় দেড় লক্ষ লোক মারা যায় এবং ১ লাখের মত আহত হয়।এব্ং ইরাক ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখিন হয়।
এই টিউনটি আমার করা সবচেয়ে বড় টিউন ।আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে ।কেমন লাগলে তা জানাতে ভুলবেন না।
আমি বিল্লাহ মামুন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 16 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 142 টি টিউন ও 1447 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
করি মায়ের ভাষায় চিৎকার........ http://bloggermamun.com
অ-নে-ক কিছু জানলাম মামুন ভাই।
ধন্যবাদ আপনার সুন্দর টিউনের জন্য।
আসলে আমেরিকার জন্মই হইছে যুদ্ধের জন্য।