পাঁচিলে ঘেরা সবুজ গাছগাছালিতে ভরপুর কোনো বাড়ির কিশোর বা কিশোরী হয়তো কোনোদিন বাড়ির সীমানার বাইরে এসে সহসা আবিষ্কার করে পাঁচিলের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া স্বচ্ছতোয়া কোন সংকীর্ণ স্রোতধারায় কিলবিল করছে অনেকগুলো ছোট মাছ। সেই কিশোর বা কিশোরীর আলোভরা চোখের খুশির ঝিলিক কল্পনা করুন। কিংবা এক পলকেই ভেবে নিন ‘পথের পাঁচালি’র অবিনশ্বর দুই শিশু চরিত্রের কথা। নিজেদের চিরচেনা পরিবেশের বাইরে কোন ধানক্ষেত, বাঁবলার বন, কোন জলা, দূরের সূর্যাস্ত - কী নিষ্পাপ চোখেই না ওরা দেখেছিলো সেই অনাস্বাদিত সৌন্দর্য। অদেখাকে দেখা আর অচেনাকে চেনার সেই অনাবিল অনুভূতি। সেতো গেলো কোন অজপাড়াগাঁ নিশ্চিন্দপুরের অপু আর দুর্গার কাহিনী। কিন্তু এই পুরো পৃথিবীটাকেই যদি ভেবে নেন নিশ্চিন্দপুর, তবে তার অপু আর দুর্গাদের খুঁজে পেতেও কষ্ট হবে না। বিশ্ব-পল্লীর বাইরে তারা খুঁজে ফিরছেন অধরা কোন কিছু - খুঁজছেন প্রাণ সখা - প্রাণী বা উদ্ভিদ।
পৃথিবীতে জীবনের উপাদান কার্বন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, হাইড্রোজেন, ফসফরাস ইত্যাদির সাথে অত্যাবশকীয় পানির উপস্থিতি কোন গ্রহে বহির্জাগতিক প্রাণের সম্ভাবনা নিয়ে বিজ্ঞানীদের ভাবিয়ে তোলে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিপুল গ্রহরাজির কোনটাতেই কি প্রাণের উদ্ভব হতে পারে না? জৈবরাসায়নিক ভিত্তি ছাড়াও বিবর্তন আর মর্ফোলজি থেকেও বহির্জাগতিক প্রাণের সম্ভাবনা নিয়ে অনুসিদ্ধান্ত টানা হচ্ছে।
পৃথিবীর অপু দুর্গাদের অনুসন্ধান চলছে বিভিন্নভাবে। পৃথিবীপৃষ্ঠের অনেক গভীর খনিতে কিংবা অন্যকোন চরমভাবাপন্ন পরিবেশে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি ভিনগ্রহের প্রতিকূল পরিবেশেও জীবনের অস্তিত্ব নিয়ে মানুষকে আশান্বিত করে তোলে। উৎসঃ http://www.world-science.net/othernews/061019_bacteria.htm
পৃথিবীর বুকে ছিটকে পড়া উল্কাপিণ্ড বা অন্যগ্রহের পৃষ্ঠদেশ নিয়ে গবেষণা চালিয়ে সরাসরি খোঁজার চেষ্টা হচ্ছে সেখানে সত্যই অতীত বা বর্তমানের আণুবীক্ষণিক বা বৃহদাকার কোন প্রাণের নিদর্শন পাওয়া যায় কিনা। এছাড়াও বহির্জাগতিক প্রাণ থেকে থাকলে তাদের থেকে আগত লেজার সংকেত বা ইনফ্রারেড স্প্রেকট্রাম বিশ্লেষণ করে কোন বুদ্ধিদীপ্ত বার্তা আছে কিনা সেটাও পরখ করে দেখতে হবে। তেমনই একটি প্রকল্প হচ্ছে SETI (Search for Extraterrestrial Intelligence )| হাজার হাজার অ্যান্টেনা বসিয়ে পৃথিবীর বাইরে থেকে আগত সংকেত সংগ্রহ করা হচ্ছে। গৃহীত উপাত্ত বিশ্লেষণের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে মজার এক উপায়। এতে সাবস্ক্রাইব করলে আপনার কম্পিউটারের অলস মুহূর্তে যখন স্ক্রীণসেভার চালু হয়, তখন সেখানে সেটির স্ক্রীণসেভার চালু হবে। আপনার সিপিইউ ব্যবহার করে তথ্য বিশ্লেষণ করা হবে আরো হাজার হাজার ব্যবহারকারীর সাথে। আর যদি আপনার ব্যবহৃত কম্পিউটারের বিশ্লেষিত উপাত্ত থেকেই মানুষ জাতির কাছে প্রথম বহির্জাগতিক প্রাণের অস্তিত্ব ধরা পড়ে তবে আপনার নামটি মানুষ আর বহির্জাগতিক প্রাণীর ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষ্ররে লেখা থাকবে।
এখন আমরা কোন গ্রহে প্রাণের উপস্থিতির সম্ভাবনা নিয়ে সুবিখ্যাত সমীকরণ নিয়ে আলোচনা করব।
এবারে আরেকটি চমকপ্রদ বিষয় ‘ আরেসিবো ’ বার্তা। দূরের বুদ্ধিমান প্রাণীর সাথে মানুষের যোগাযোগ চেস্টার উদাহরণ। ১৯৭৪ সালে ২৬ হাজার আলোকবর্ষ দূরে হারকিউলিসের এম১৩ নক্ষত্রপুঞ্জের উদ্দেশ্যে বিজ্ঞানীরা এই বেতারবার্তা পাঠিয়েছিলেন। ছবিতে দেখা বার্তাটিতে ৭টি অংশ আছে:
চিত্র: আসিবো বার্তা
কাংখিত গন্তব্যে পৌঁছাতে এর সময় লাগবে ২৫০০০ বছর। সুতরাং সেখান থেকে ফিরতে সময় লাগবে সর্বমোট ৫০০০০ বছর।
কিন্তু মানুষের স্বপ্ন বেঁচে থাকে তার চেয়েও বেশি সময় ধরে। তাই শেষ হয় না এই অনুসন্ধানেরও। সফলতা না আসে না আসুক। কিন্তু যদি কোনোদিন দেখা হয়েই যায় সেই ছায়াপথ প্রতিবেশীর সাথে, তবে হয়ত পৃথিবীর একতারা বাজিয়ে মানুষ সেদিন গেয়ে উঠবেঃ
বাড়ির পাশে আরশি নগর,
সেথা এক পড়শী বসত করে
আমি একদিনও না চিনিলাম তারে।
কিন্তু সেই সুরে কী থাকবে - প্রথম দেখার উচ্ছাস, নাকি এতদিনেও যোগাযোগ না হওয়ার কারণে অভিমান ভাঙানোর চেষ্টা, অথবা উভয়ই। সময়ই সে কথা বলবে।
আমি অনিকেত পান্থ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 16 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 1 টি টিউন ও 1 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
Hi, Congratulations to the site owner for this marvelous work you’ve done. It has lots of useful and interesting data.
সতি্য কথা বলতে কি এইসব বিষয়ে আমার খুব আগ্রহ। আমি এইসব বিষয়ের লেখাগুলো পড়তে পারি না লেখার কাটখোট্টা ভাষার জন্য। কিন্তু আপনার ব্যবহার করা ভাষা আমার কাছে সহজ এবং সাবলীল মনে হয়ছে। ধন্যবাদ আপনাকে।
fantastic…….bohudin por techtunes e ektu onno rokom likha dekhlam…..tai comment na korei parlam na…..keep going …
আপনের লেখা অসাধারন। আশাকরি আরো লিখবেন।