ডাটা এন্ট্রি বলেন, আর ভি-এ বলেন- পোর্ট ফলিওতে দু একটা নিন্মমানের লোগো ডিজাইন কিংবা ফটো এডিট থাকবেই। দোষের কিছু নয়, বলছি কি লাভ এতে? একটা বেপারই বোঝা যায়, ফটোশপ- কিংবা ইলাসট্রেটর সম্পর্কে এই লোকের কিছু ধারনা আছে। হয়ত আগ্রহও আছে। বাট, প্ল্যানিং নেই। কাজও নেই।
আবার অনেক নতুন। এখনো কোন কাজ করছেন না। শুনেছেন, ডিজাইনারদের অনেক টাকা, তাই ডিজাইনিং শেখার জন্য, ফেসবুকে কাউকে অনলাইনে পেলেই টেক্সট করা শুরু করেন। কিভাবে করবো? কেন করব? কথায় শিখব? আপনে সিখাবেন? বলা বাহুল্য, এই চ্যাটে গ্রাফিক ডিজাইন কি সেটা শেখানও সম্ভব হয়না। অজ্ঞতা যথেষ্ট বিরক্তি আসে- কারন এই লোকেরা মনে করে- ফেসবুকে অনলাইনে থাকা মানেই- এই লোক ফ্রি আছেন এবং যে কোন ধরনের উদ্ভট প্রস্ন করা যায়। তাই- লিখার অভ্যাস না থাকলেও দু চার কলম লিখলাম। আশা করছি- ভুল গুলো আপনাদের চোখ এড়িয়ে যাবে। পিঃ
ওয়েল, গ্রাফিক ডিজাইন একটি সৃষ্টিশীল কাজ। গতানুগতিক অন্য কাজগুলো থেকে আলাদা। এই কাজটির চাহিদা আছে থাকবে। আপনি এখন যেই স্ক্রিনে এই লিখাটা পড়ছেন, সেটার শুরুও গ্রাফিক্স। যেই মোবাইলে আপনি জানে জিগারের সাথে কথা বলছেন- সেখানেও আছে গ্রাফিক্স। টেলিভিশন, ফিল্ম থেকে শুরু করে, উচা উচা বিল বোর্ড - সব কিছুই গ্রাফিক্সের আওতাভুক্ত। সহজ কথায়- কম্পিউটারের মাধ্যমে দৃষ্টিনন্দন যে কোন কাজকেই আমরা গ্রাফিক্স বলতে পারি। সো, কাজটা মজার। কথা হল- কাজটা আপনার জন্য কি না।
আপনার কোন ফ্যান্টাসি আছে? কাউকে নিয়ে জেগে জেগে স্বপ্ন দেখেন? তার শরীরের কোন অংশটা সুন্দর, কোন অংশটায় খুত আছে- ধরতে পারেন? কোন রঙের লিপসটীক তাকে বেশি মানায়? কোন জামাটায় তাকে পরীর মতো লাগে? তাকে কখনো পুতুলের মতো সাজিয়ে রাখার চিন্তা করেছেন? উত্তর গুলো যদি পজিটিভ হয়- হবে- আপনাকে দিয়েই হবে। জাস্ট খালি ক্যানভাসটাকে আপনার গার্ল ফ্রেন্ড মনে করেন। মনে মনে মনের মতো করে সাজান। এক কানে না দিলে কিই বা হয়- ভেবে এক কানের কানফুল না দিয়ে চলে যাবেন না। সাজিয়েছেন? সুন্দর লাগছে? কনগ্রাটস -আপনি বরন ডিজাইনার।
আপনার কোন ফ্যান্টাসি নাই? নো প্রবলেম। আরেক জনের গার্ল ফ্রেন্ডরে সাজান!
নিজেকে গ্রাফিক ডিজাইনার বলার আগে- আপনাকে কিছু সিদ্ধান্তে আসতে হবে। আপনার কোন দিকে আগ্রহ আছে? যেমনঃ এডভারটাইজিং, ওয়েবসাইট, মাল্টিমিডিয়া, প্রিন্ট ডিজাইন অথবা অ্যানিমেশন। এগুলোকে গ্রাফিক্স এর বিভিন্ন ক্ষেত্র বলা হয়। শুরু করার আগে, আপনার সমস্ত আগ্রহ একটা ক্ষেত্রে নিয়ে আসুন। যেটা আপনাকে সবচেয়ে বেশি আকর্ষিত করে। যদিও ওয়েব এবং প্রিন্ট গ্রাফিক্স কিছুটা কাছাকাছি, তবে কিছু বেসিক পার্থক্য আপনাকে জানতে হবে। তাই, শুরু থেকেই বেপারটায় ফোকাস দিলে- উন্নতি তাড়াতাড়ি আশা করা যায়।
গ্রাফিক ইন্ডাস্ট্রিতে বিপ্লব ঘটানো দুটি সফটওয়্যার হল- এডোবি ফটোশপ আর ইলাসট্রেটর। এই দুইটা দিয়েই শুরু করুন। সহজ বেবহার, অনন্যসাধারণ ফিচার। যে কোন শৈল্পিক কাজে- এদের চাইতে কার্যকরী কোন সফটওয়্যার চোখে পরেনা। বাজারে সিডি কিনতে পাবেন। আর না হলে টরেন্ট থেকে ডাউনলোড করে নিন।
যে যাই বলুন। বইয়ের আপিল আমার কাছে অন্য রকম। বাজার থেকে কিছু বই কিনে নিন। উঠতে, বসতে, গাড়িতে কিংবা কারেন্ট গেলে বারান্দায় বসে- বই গুলোতে চোখ বুলান। ১৫০-২০০ টাকা খরচ করে যা শিখতে পারবেন। ইন্টারনেটএ পাঁচ ঘণ্টা সার্ফিং করেও তার অর্ধেক পাবেন না। তবে- আমাদের দেশি বইগুল লিখাই হয়- আন্দরকিল্লা কিংবা নীলক্ষেতের গ্রাফিক ডিজাইনারদের উদ্দেশ্য করে। তাই মানের যথেষ্ট ঘাটতি আছে। মান্সম্মত ই-বই ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিতে পারেন। মানের কমতি থাকবে না।
মানুষ সব চেয়ে বেশি শিখে দেখে। তাই ২/১ মাস কারো কাজ দেখুন। হতে পারে সেটা ট্রেনিঙের মতই নিয়মিত। এতে আপনার কাজের স্পৃহা বারবে। গতিও বারবে সন্দেহ নেই।
নিজে নিজে প্র্যাকটিস করাটা গ্রেট। (y) তবে মাঝে মাঝে নিজের কাজ গুলো অন্যদের দেখান। যদিও প্রথম দিকে এটা খুব পেইনফুল টাস্ক হবে কোন সন্দেহ নেই, অনেক সময় ভালো কিছু সাজেশন পেতে পেতে পারেন। তাই নিজের ইগোটাকে দমিয়ে রাখুন। অন্নের মতামতটাকে সিরিয়াসলি নিন। আবার অন্নের কাজ গুলও দেখা জরুরী। অন্যরা কি কাজ করছে তা দেখলে আপনি প্রেজেনট ফ্যাশন/ ট্রেনজ বুঝতে পারবেন। উপরন্তু- ফ্রিলেন্স কাজের ক্ষেত্রে এটা আরও অনেক বেশি দরকারি। সমপেশাজীবীদের সাথে বন্ধুত্ব গড়ুন, যোগাযোগ রাখুন, তাদের কাছ থেকে শেখার মন মানসিকতা তইরী করুন। সফলতা খুব একটা দূরে নয়।
আপনি গ্রাফিক ডিজাইনের প্রতি সত্যিকারেই সিরিয়াস? এটাকে আপনার একাডেমিক শিক্ষায় যুক্ত করুন। একটা সার্টিফিকেট থাকাটা সবসময়ই একটা প্লাস। তাছাড়া- অনেকেই গ্রাফিক ডিজাইনার হায়ার করেনা, যদিনা সে দেখতে পায়, আপনি প্রপারলি ট্রেইনড।
এই ইংরেজি বাক্যটা যত হালকা দেখছেন, তত হালকা নয়। এটা খুবই সিরিয়াস ফিলসপি। নিজের স্টাইল তইরী করুন। আপনি কালার নিয়ে খেলতে ভালবাসেন? খেলুন। হাজার হাজার কালার আনুন আপনার কাজে। অথবা, যদি আপনার পরিচ্ছন্ন, ভারসাম্যপূর্ণ সিম্পল ডিজাইন ভালো লাগে- তাই করুন। সর্বোপরি, নিজের জন্য নিজস্ব ডিজাইন সেন্স তইরী করুন।
পড়া ছাড়বেন না। গ্রাফিক সম্পর্কিত আর্টিকেল পড়ুন। প্রফেশনালদের স্টাডি করুন। নিজেকে গতানুগতিক গ্রাফিক ডিজাইনারের মতো রাখবেন না। বৃত্তের বাইরে পা ফেলার মতো সাহস রাখুন। Joey Roth, Makota Makita & Hiroshi Tsuzaki, Santiago Calatrava, Frank Gehry এদের মতো ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিজাইনারদের কাজ দেখুন। কিংবা আই ও এস গুরু Teehan and Lax এর কাজগুলো ফলও করুন।
টাইপোগ্রাফি যারা করেন, তারা জানেন কাজের ক্ষেত্রে ফন্ট কতটা গুরত্তপূর্ণ। আমি একটা কাজে দশ বারের বেশি রিভিউ দিসিলাম জাস্ট ক্লায়েন্টের ফন্ট পছন্দ হচ্ছিলো না বলে। তাই, যারা ভাবছেন, ধুর! আমার কাছে দেড়শ দুশো ফন্ট আছে, আর কি দরকার? ভুল ভাবছেন। এদের মধ্যে কাজের ফন্ট খুব কমই আছে। তাই ফন্ট লাইব্রেরী করুন। আজই।
টি -শার্ট, টিউনার, ফুড লেভেল কিংবা টিউন কার্ড- ভালো লাগা যে কোন ডিজাইন সংগ্রহে রাখুন। কম্পিউটারে হলে স্ক্রিন শট রাখুন। কাজ করতে গিয়ে যখন মাথা হেং করবে- তখন কাজে লাগবে সন্দেহ নাই। অথবা সময় পেলে এই ডিজাইন গুলো কপি করুন বসে বসে।
হোক সেটা খুবই খারাপ। হোক সবাই এটার নিন্দা করেছে। তারপরও তা সংগ্রহে রাখুন। কয়েক মাস পরে ওই কাজেই আবার টাচ দিন। হয়ত- মাস্টারপিস বানায়া ফেলবেন। ঃ)
নিজের সব কাজ গুলোকে এক যায়গায় স্থান দিন। নিজে কম্পেয়ার করুন, কোন কাজটা ভালো- কোন কাজটা খারাপ কেন খারাপ। বন্ধুদের ফিডব্যাক নিন। ক্লায়েন্টের টেস্টিমোনিয়াল নিন। নতুন কেউ দেখতে চাইলে দেখান।
-
(লেখকের আহাজারিঃ কষ্ট করে পড়ার জন্য ধইন্না। নতুন লিকক। দোয়া রাখবেন :P)
আমি অরিজিনাল যামীর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 3 টি টিউন ও 70 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
মরুন্মিত কষ্টকর জীবন নিয়ে কিছুই বলার নাই......।
thnaks a lot ……….