আসসালামু আলাইকুম। টেকটিউনস ওয়েবসাইটের নতুন আরো একটি টিউনে আপনাকে স্বাগতম। আমি স্বপন আছি আপনাদের সাথে, আশাকরি সকলেই অনেক অনেক ভালো আছেন। বন্ধুরা, আমরা সবাই জানি, ফেসবুক বর্তমানের জনপ্রিয় একটি সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম। দেশের একপ্রান্ত থেকে আরেকপ্রান্তে মুহূর্তের মধ্য একজন আরেকজনের সাথে যোগাযোগ করতে পারে এই ফেসবুকের মাধ্যমে। আমাদের ব্যবহার করা এই গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিসকে অবহেলায় রাখা উচিত নয়। আমাদের সারাদিনের প্রাইভেসি যখন এই ফেসবুকের কাছে, তখন অবশ্যই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট সর্বোচ্চ সুরক্ষিত নিশ্চিত করতে হবে৷ নয়তো আপনার গুরুত্বপূর্ণ সকল ডেটা অন্যের কাছে যেতে পারে। এছাড়াও আপনার গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয়ের প্রাইভেসি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়া বাঁচাতে সেরা ৫ টি টিপস।
ফেসবুক অ্যাকাউন্টের ঝুঁকি নিয়ে তেমন কোনো বিষয় আলোচনায় না আসলেও সাধারণ মানুষের ধোঁকা নিয়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ নানান রকম পদক্ষেপ নিয়েও এর বিশেষ কোনো সমাধান আনতে পারে নাই। সাধারণ মানুষদের বোকা বানিয়ে লিংকে ক্লিক করে তাদের পারসোনাল অ্যাকাউন্ট হাতিয়ে নিচ্ছে। চুরি হয়ে যাচ্ছে তাদের পারসোনাল, প্রাইভেসি ডেটাসমূহ। স্প্যাম লিংকের মাধ্যমে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক যাতে না হয় অথবা অন্য কোনো উপায়ে যাতে আপনার অ্যাকাউন্ট কেউ হ্যাক করতে না পারে সেই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আজকের টিউনের আলোচনা করবো। আজকের টিউনের মূল বিষয় হলো - ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়া বাঁচাতে সেরা ৫ টি টিপস। তো চলুন শুরু করা যাক আমাদের আজকের টিউন।
ফেসবুক অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখতে প্রথমেই আপনাকে যে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে তা হলো শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা। আপনার ব্যবহার করা পাসওয়ার্ড যত বেশি কঠিন হবে আপনার অ্যাকাউন্ট ততো বেশি সুরক্ষিত হবে। আপনি যখন ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পাসওয়ার্ড যুক্ত করবেন তখন সেই পাসওয়ার্ড 7 অথবা তার বেশি সংখ্যার পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন। এতে আপনার পাসওয়ার্ড সহজে কেউ আন্দাজ করতে পারবে না। কেউ হঠাৎ একনজর দেখলেও আপনার পাসওয়ার্ড মনে রাখতে পারবে না। তাই যতোটা পারবেন বড়ো পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন।
তবে একটি বিষয় মাথায় রাখবেন, বড়ো পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন তবে এমন ভাবে পাসওয়ার্ড দিবেন যা আপনার মনে রাখা সহজ হয়। এক্ষেত্রে আপনি আপনার পাসওয়ার্ড এর সাথে বড়ো, ছোট, নাম্বার একসাথে যুক্ত করে পাসওয়ার্ড দিতে পারলে সেটি আরো বেশি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড হয়। তাই আমি রিককমান্ড করবো আপনি মিশ্রিত পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। এমন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন যাতে সহজে কেউ আন্দাজ করতে না পারে। এইভাবে আপনি আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সর্বোচ্চ সুরক্ষা দিতে পারবেন। তাই আর দেরি না আজকেই আপনার ফেসবুক পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে ফেলুন।
ফেসবুক অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত করতে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করার বিকল্প আর কিছুই নাই। আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রাইভেসি আরো বেশি শক্তিশালী করতে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করা খুবই প্রয়োজনীয়। আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু থাকলে আপনার অনুমতি ব্যতীত আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে কেউ লগ-ইন করতে পারবে না। আপনি ব্যতীত অন্য কেউ যদি আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড জেনেও থাকে, তাহলেও সে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারবে না।
টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু থাকার কারণে কোনো অপরিচিত ব্যক্তি আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড জেনে থাকলেও সে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারবে না। কারণ পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ-ইন করার সাথে সাথে ফেসবুক একটি ভেরিফিকেশন কোড আপনার টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করা নাম্বারে পাঠাবে। উক্ত কোড দিয়ে ভেরিফাই না করা পর্যন্ত আপনার অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারবে না। এমনকি টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন কোড ছাড়া আপনি নিজেও আর কখনো আপনার অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারবেন না।
তাই মনে রাখবেন, আপনার যে নাম্বার অথবা জিমেইল সচল আছে শুধুমাত্র সেই জিমেইল বা নাম্বারে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করবেন। নয়তো পরবর্তী আপনি আর সেই অ্যাকাউন্টে লগ-ইন করতে পারবেন না। টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু থাকলে অনেক সময় কোড আসেনা এমন সমস্যাও হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে আপনি আপনার অ্যাকাউন্ট এর জন্য টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন রিকভারি কোড সংগ্রহ করে রাখতে পারেন। এছাড়াও বেশি সমস্যা হলে আপনি আপনার NID কার্ড দিয়ে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন বাইপাস করতে পারবেন। তবে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু থাকলে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট সর্বোচ্চ সুরক্ষিত থাকলে তাই আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু না থাকলে আর দেরি না এখনি ফেসবুক টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করুন৷
আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সুরক্ষা আরো এক ধাপ এগিয়ে রাখতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রানিং ভেরিফাই করে নেওয়া উচিত। এতে আপনার অ্যাকাউন্ট সহজে নষ্ট হবে না। এমনকি ফেসবুকের ভায়োলেশন জনিত কারণেও আপনার অ্যাকাউন্টের অনেক বেশি সুরক্ষিত থাকবে৷ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রানিং ভেরিফাই করা থাকলে আপনি আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এক্সেস হারিয়ে ফেললেও ফেসবুকের সার্পোট টিমের কাছে আপনার অ্যাকাউন্টের যাবতীয় সকল প্রমাণ দিতে পারলে আপনার অ্যাকাউন্ট ফিরে পাওয়ার সম্ভবনা অনেক বেশি হয়। এতে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রানিং ভেরিফাই করা থাকলে আপনি এই কাজগুলোতে অনেক বেশি সফলতা পাবেন।
ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রানিং ভেরিফাই করতে হলে আপনার কোনো প্রকার ফি প্রদান করতে হবে না। আপনি একদম ফ্রিতেই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রানিং ভেরিফাই করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনার অ্যাকাউন্ট Ads On Reals অপশনিও চালু হয়ে যাবে৷ তবে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রানিং ভেরিফাই করতে হবে অবশ্যই আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এর নাম, আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের জন্ম সাল আপনার NID, Passport, Driving Licences ইত্যাদি সাথে সম্পূর্ণ এক থাকতে হবে। তাহলে আপনি আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রানিং ভেরিফাই করতে পারেন। ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রানিং ভেরিফাই করা নিয়ে আপনারা বিস্তারিত টিউন চাইলে অবশ্যই টিউমেন্ট করে জানিয়ে যাবেন।
ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হলে আপনাকে অপরিচিত ডিভাইস থেকে লগ-ইন করার অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। আপনি যদি নিয়মিত আলাদা আলাদা ডিভাইস থেকে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লগ-ইন করে থাকেন তাহলে আজকেই সেই সমস্ত ডিভাইস আপনার লগ-ইন ডিভাইস থেকে রিমুভ করে দিন। আপনি অপরিচিত কোনো একটি ডিভাইস থেকে লগ-ইন করলে পরে আবার লগ-আউট করতে ভুলে গেলে উক্ত ডিভাইসে সেভ থাকা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট দ্বারা উক্ত ব্যক্তি আপনার যেকোনো পারসোনাল ডেটা দেখে নিতে পারবে৷ তাই আপনার অ্যাকাউন্টে যদি আলাদা আলাদা ডিভাইস থেকে লগ-ইন থেকে থাকে তাহলে সেই ডিভাইসগুলো রিমুভ করে দিন।
আপনি অনেক বেশি আলাদা আলাদা ডিভাইস থেকে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লগ-ইন করার কারণে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট টি পারমানেন্ট ব্যান করে দিতে পারবে। এছাড়াও আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট টির Browser Cookies ব্যবহার করে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট টি হ্যাক করে নিতে পারে। চুরি হয়ে যেতে পারে আপনার সমস্ত প্রাইভেসি আর ডেটা। আপনি যদি ইতিমধ্যে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট টি আলাদা আলাদা ডিভাইস থেকে লগ-ইন করে থাকেন তাহলে আজকেই আপনার পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করে দিন। আর সেই সাথে ডিভাইসগুলো ভিউ করে সমস্ত ডিভাইস আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লগ-আউট করে দিন। এতে আপনার ফেসবুক আরো বেশি সুরক্ষিত থাকবে।
ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আরো বেশি সুরক্ষিত করতে চাইলে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি সচল জিমেইল যুক্ত করুন। একটি সচল জিমেইল একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টের বড়ো প্রাইভেসির কারণ হতে পারে। উপরে আলোচনা করা টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন সিস্টেমটি আপনি একটি সচল জিমেইল ব্যবহার করেও করতে পারবেন। এতে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রতিবার লগ-ইন অ্যালার্ট নোটিফিকেশনের মাধ্যকে জানিয়ে দেওয়া হবে। এতে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আরো বেশি সুরক্ষিত থাকবে। আপনি ব্যতীত অন্য কেউ আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লগ-ইন করলে আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন।
এছাড়াও আপনি যদি আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি সচল জিমেইল যুক্ত করেন তাহলে আপনি ব্যতীত আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড কেউ পরিবর্তন করতে সেটা ফেসবুক আপনাকে জিমেইল করে জানিয়ে দিবে। এছাড়াও আপনি আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের অচেনা লগ-ইন ঠেকাতে আপনি আপনার জিমেইল দিয়ে আপনার অ্যাকাউন্ট লক করে দিতে পারবেন। যার কারণে আপনার প্রাইভেসি সুরক্ষার আরালে থাকবে। পরবর্তী আপনি আবারো আপনার ইনফরমেশন দিয়ে আপনার অ্যাকাউন্ট ব্যাক আনতে পারবেন। একটি সচল জিমেইল আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে যুক্ত করে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আরো বেশি সুরক্ষিত করতে পারবেন।
বন্ধুরা, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়া বাঁচাতে সেরা ৫ টি টিপস এন্ড ট্রিক আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। আপনি যদি আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত করার উপায় খুঁজে থাকেন তাহলে আজকের এই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়া বাঁচাতে সেরা ৫ টি টিপস এন্ড ট্রিক আপনার কাছে অনেক হেল্পফুল একটি টিউন হবে। আপনি চাইলে আজ থেকেই এই উপায়গুলো ব্যবহার করে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট সর্বোচ্চ সুরক্ষিত করতে পারবেন।
তো বন্ধুরা, এই ছিল আমাদের আজকের টিউন, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়া বাঁচাতে সেরা ৫ টি টিপস এন্ড ট্রিক! আশাকরি টিউন টি আপনাদের একটু হলেও হেল্পফুল হবে। আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি, দেখা হবে পরবর্তী টিউনে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। ততক্ষণ অবধি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং টেকটিউনস এর সাথেই থাকবেন।
আমি স্বপন মিয়া। Sonic টিউনার, টেকটিউনস, গাইবান্ধা, রংপুর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 107 টি টিউন ও 29 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
টেকনোলজি বিষয়ে জানতে শিখতে ও যেটুকু পারি তা অন্যর মাঝে তুলে ধরতে অনেক ভালো লাগে। এই ভালো লাগা থেকেই আমি নিয়মিত রাইটিং করি। আশা করি নতুন অনেক কিছুই জানতে ও শিখতে পারবেন।