আপনি কি ফেসবুক এবং মেসেঞ্জারে কাউকে কিভাবে ব্লক দিতে হয় তা জানতে চান তাহলে আজকের টিউনটি পুরোপুরি পড়ুন। আজকের টিউনে আমি আপনাকে দেখাবো যে: কীভাবে ফেসবুকে কাউকে ব্লক করতে হয় এবং কীভাবে মেসেঞ্জারে কাউকে ব্লক করতে হয়, কীভাবে ফেসবুকে কাউকে আনব্লক করতে হয়, কীভাবে মেসেঞ্জারে কাউকে আনব্লক করতে হয় এই সবকিছু। এছাড়াও আজকের টিউনে আপনি জানতে পারবেন যে ফেসবুকে ব্লক করার সুবিধা ও মেসেঞ্জারে ব্লক করার সুবিধা গুলো কী কী সেগুলো। এবং ফেসবুক ব্লক ও মেসেঞ্জারে ব্লক এর মধ্যেকার পার্থক্য কী? এই সবকিছু।

টিউনটি শুরু করার আগেই আমি আপনাকে জানিয়ে দিতে চাই যে আজকের পুরো এই টিউনে আমি আপনার সাথে যেই যেই বিষয়গুলো শেয়ার করব সেগুলো আমি আমার ব্যক্তিগত ফেসবুক ও মেসেঞ্জার ব্যবহার থেকে জেনেছি। আমার শেয়ার করা সকল তথ্য ব্যক্তিগত ব্যবহার থেকে নেওয়া তা এখানে কিছু জিনিস হয়তো আমি এখনো পাইনি তাই সেগুলো মিস হতে পারে। তো চলুন বেশি কথা না বারিয়ে এবার চলে যাওয়া যাক মেইন টিউনে।

ফেসবুকে ব্লক কী? ফেসবুক ব্লক এর সুবিধাগুলো কী কী? কীভাবে ফেসবুকে কাউকে ব্লক করবেন? কীভাবে ফেসবুকে কাউকে আনব্লক করবেন?

ফেসবুক ব্লক কী?

ফেসবুকে ব্লক হলো ফেসবুকের একটি সিস্টেম যেটি দ্বারা আপনি অন্যদেরকে আপনার ফেসবুক টিউন, টিউমেন্ট, স্টোরি ইত্যাদি এক্টিভিটি দেখা থেকে ও সেগুলোতে রিঅ্যাক্ট করা থেকে বিরত রাখতে কাজ করে। অর্থাৎ, আপনি ফেসবুকে কাউকে ব্লক করলে সেই ব্যক্তি আর আপনার ফেসবুক টিউন দেখতে পাবে না, ফেসবুক স্টোরি দেখতে পাবে না, আপনার করা অন্য কোন ফেসবুক টিউনে টিউমেন্ট দেখতে পাবে না। এক কথায় আপনার কোন ফেসবুক অ্যাক্টিভিটিই আর সেই ব্লক করা ব্যক্তিটি দেখতে পাবে না। এছাড়াও ফেসবুকে আপনি কাউকে ব্লক করলে সে মেসেঞ্জারেও আপনাকে আর কোনরকম মেসেজ করতে পারবে না।

ফেসবুক ব্লক এর সুবিধাগুলো কী কী?

ফেসবুকে কাউকে ব্লক করলে সহজ ভাষায় তার আইডির সাথে আপনার ফেসবুক আইডির আর কোন রকম সম্পর্ক থাকে না। তো নিচে ফেসবুক ব্লক এর কিছু সুবিধা গুলো দেওয়া হলো:

1. অবাঞ্ছিত ব্যবহারকারীদের দূরে রাখা: আপনি যদি ফেসবুকে কোন ব্যবহারকারীকে বিরক্তিকর, হুমকিস্বরূপ, ঝুঁকিপূর্ণ বা আপত্তিকর মনে পড়ে তাহলে আপনি সেই ব্যক্তিকে ফেসবুকে ব্লক করে তাকে আপনার ফেসবুক একাউন্ট থেকে দূরে রাখতে পারেন।
2. গোপনীয়তা নিয়ন্ত্রণ: আপনি যদি কোন ব্যক্তিকে আপনার ফেসবুক টিউন, টিউমেন্ট বা মেসেজ থেকে গোপন রাখতে চান তাহলে আপনি সেই ব্যক্তিকে ফেসবুকে ব্লক করতে পারেন।
3. মানসিক শান্তি: আপনি বিরক্তিকর ব্যক্তিদেরকে ফেসবুকে ব্লক করে তাদেরকে আপনার একাউন্ট থেকে দূরে রেখে প্লিজ শান্তিপূর্ণভাবে ফেসবুক ব্যবহার করতে পারেন।

কীভাবে ফেসবুকে কাউকে ব্লক করবেন?

১. তো ফেসবুকে কাউকে ব্লক করতে প্রথমে আপনার ফোনের ফেসবুক অ্যাপে প্রবেশ করুন।

২. তারপর আপনি যাকে ব্লক করতে চান আইডিতে প্রবেশ করুন। তারপর থ্রি ডট আইকন এ ক্লিক করুন।

৩. তারপর কয়েকটি অপশন থেকে ব্লক লেখাতে ক্লিক করুন।

৪. তারপর আবারও ব্লক লেখাতে ক্লিক করবেন।

৫. তাহলেই সেই ফেসবুক আইডিটিতে ব্লক করা সম্পন্ন হবে। তো চলুন আমার জেনে নেওয়া যাক যে: কীভাবে ফেসবুকে কাউকে আনব্লক করতে হয়?

কীভাবে ফেসবুকে কাউকে আনব্লক করতে হয়?

১. এটি করার জন্য আপনার ফেসবুক আ্যপ এ প্রবেশ করুন। ২. তারপর সবার উপরে ডান দিকে থ্রি ডট আইকনে ক্লিক করুন।

৩. তারপর সেটিংস ও প্রাইভেসি তে প্রবেশ করুন।

৪. তারপর সেটিংস এ প্রবেশ করুন।

৫. তারপর অনেকগুলো লিস্ট থেকে ব্লকিং অপশনটি খুঁজে সেটিতে ক্লিক করুন।

৬. তারপর আপনি ফেসবুকে যাদের যাদের কে ব্লক করেছেন তাদেরকে এখানে দেখতে পাবেন। তো এখান থেকে আপনি যাকে আনব্লক করতে চান তার আইডির পাশে আনব্লক লেখাতে ক্লিক করুন।

৭. তারপর আবারো ডান পাশের আনব্লক লেখাতে ক্লিক করুন।

তাহলেই আবার সেই ব্যক্তিটিকে আপনার ফেসবুক আইডি থেকে ব্লক থেকে আনব্লক করা হয়ে যাবে।

মেসেঞ্জারে ব্লক কী? মেসেঞ্জারে ব্লক এর সুবিধাগুলো কী কী? কীভাবে কাউকে মেসেঞ্জারে ব্লক করবেন? কীভাবে কাউকে মেসেঞ্জারে আনব্লক করবেন?

মেসেঞ্জারে ব্লক কী?

সহজ ভাষায় মেসেঞ্জারে ব্লক হল ফেসবুক মেসেঞ্জারের এমন একটি সিস্টেম যেটি দ্বারা আপনি অপরজনের সাথে বা আপনি যাকে ব্লক করবেন সে ব্যক্তি আপনার সাথে মেসেঞ্জারে আর কোনভাবেই যোগাযোগ রাখতে পারবেনা। এবং ফেসবুকের নতুন নিয়ম অনুযায়ী মেসেঞ্জারে ব্লক করলে সাথে সাথে ওই ব্যক্তি আপনার ফেসবুক ফ্রেন্ড থেকেও আনফ্রেন্ড হয়ে যাবে।

মেসেঞ্জারে ব্লক এর সুবিধাগুলো কী কী?

নিচে মেসেঞ্জারে ব্লক এর কিছু সুবিধা গুলো উল্লেখ করা হলো:

1. অবাঞ্চিত কল বা মেসেজ থেকে মুক্তি: আপনি যদি মেসেঞ্জারে কারো অবাঞ্ছিত কল বা মেসেজ থেকে মুক্তি পেতে চান বা কেউ আপনাকে মেসেঞ্জারে কল বা মেসেজ দিয়ে বিরক্ত করে তাহলে আপনি তাকে এই সিস্টেম দ্বারা আটকাতে পারেন।
2. হয়রানি থেকে রক্ষা: আপনি যদি মেসেঞ্জারে কারো দ্বারা হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন তাহলে আপনি তাদেরকে ব্লক করে সেই হয়রানি থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারেন।
3. গোপনীয়তা রক্ষা: আপনি যদি আপনার মেসেঞ্জারে স্টোরি সহ আরো গোপনীয় কিছু কারো কাছ থেকে গোপন রাখতে চান তাহলে আপনি তাকে মেসেঞ্জারে ব্লক করতে পারেন।
4. মানসিক শান্তি: আপনি যদি কারো সাথে যোগাযোগ রাখতে না চান তাহলে আপনি তাদেরকে মেসেঞ্জারে ব্লক করেন নিজে বিরক্ত হওয়া থেকে রক্ষা পেতে পারেন।

কীভাবে কাউকে মেসেঞ্জারে ব্লক করবেন?

১. প্রথমে মেসেঞ্জারে প্রবেশ করুন।

২. তারপর যাকে ব্লক করতে চান তার আইডিতে ঢুকুন।

৩. তারপর আবারো তার আইডিতে ঢুকুন।

৪. তারপর সবার নিচে এসে ব্লক লেখাতে ক্লিক করুন।

৫. তারপর আবারও ব্লক লেখাতে ক্লিক করবেন।

তাহলেই আপনার মেসেঞ্জারে সেই ব্যক্তিটিকে ব্লক করা হয়ে যাবে। তো চলুন এবার দেখে নেওয়া যাক যে: কীভাবে মেসেঞ্জারে কাউকে ব্লক দিলে তাকে আনব্লক করবেন?

কীভাবে মেসেঞ্জারে কাউকে ব্লক দিলে তাকে আনব্লক করবেন?

১. প্রথমে মেসেঞ্জারে প্রবেশ করুন তারপর উপরে বাম দিকে থ্রি ডট আইকনে ক্লিক করুন।

২. তারপরে সেটিংস আইকনে ক্লিক করুন।

৩. তারপরে প্রাইভেসি অ্যান্ড সেফটি লেখাতে ক্লিক করুন।

৪. তারপরে ব্লকড একাউন্ট লেখাতে ক্লিক করুন।

৫. তারপরে আপনি মেসেঞ্জারে যাদের যাদেরকে ব্লক করে রেখেছেন তাদের সবার আইডি এখানে দেখতে পাবেন। তো এখান থেকে যাকে আপনি আনব্লক করতে চান তার আইডিতে ক্লিক করুন।

তাহলেই মেসেঞ্জারে সেই ব্যক্তিটিকে আনব্লক করা হয়ে যাবে।

ফেসবুকে ব্লক ও মেসেঞ্জারে ব্লক এর মধ্যেকার পার্থক্য কী?

যদিও আপনি ভাবতে পারেন যে ফেসবুকে ব্লক ও মেসেঞ্জারে ব্লক তো প্রায় একই তারপরেও এ দুটির মধ্যে অনেক বড় তফাৎ রয়েছে। আপনি যদি ফেসবুকে কাউকে ব্লক করেন তাহলে সেই ব্যক্তিটি আপনার ফেসবুকের সকল অ্যাক্টিভিটি যেমন: আপনার Comments, Posts, Story দেখতে পাওয়া ও আপনার করা Commens, Posts, Story তে রিয়াক্ট করা এসব করতে পারবেনা। কিন্তু আপনি যদি মেসেঞ্জারে কাউকে ব্লক করেন তাহলে সেই ব্যক্তি আপনার ফেসবুক অ্যাক্টিভিটি দেখতে পারবে মেসেঞ্জারে তাকে ব্লক করা হয় শুধু সেই ব্যক্তি আপনাকে মেসেঞ্জারে মেসেজ করতে পারবে না এটুকুই। আশাকরি তফাৎ বুঝতে পেরেছেন। তবে ফেসবুকের নতুন নিয়ম অনুযায়ী মেসেঞ্জারে কাউকে ব্লক করলে সেই ব্যক্তিটি আপনার ফেসবুকেও অটোমেটিক আনফ্রেন্ড হয়ে যাবে।

আমার ব্যক্তিগত পরামর্শ

আপনি যদি ফেসবুক অথবা মেসেঞ্জারে কোন ব্যক্তি দ্বারা বিরক্তিবোধ করেন তাহলে সিম্পলি তাকে শুধু ব্লক করে দিন। তবে, কেউ যদি আপনাকে অতিরিক্ত বারবার বিরক্ত করে বা হয়রানি করে বা কোন কারনে ভয় দেখায় তাহলে অবশ্যই রিপোর্ট করার পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থা নিন।