বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সকলেই আল্লাহর রহমতে ভাল আছেন। আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয় বর্তমান বিশ্বের সর্বাধিক ব্যবহৃত এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া সাইট কোনটি? আমি নিশ্চিত আপনারা সবাই কোন দ্বিধা দ্বন্দ্ব ছাড়াই উত্তর দিয়ে দিবেন ফেসবুক।
বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া সাইট হচ্ছে ফেসবুক। সব বয়সের, সব পেশার ও সব শ্রেণীর মানুষের সমাগম এবং ভিজিট রয়েছে এই সাইটটিতে।
আপনার যদি এ প্লাটফর্মে কোন পেজ থাকে, তাহলে আপনি নিশ্চয়ই চিন্তিত পেজটিতে কিভাবে আপনি ভিজিটর বাড়াবেন, কিভাবে লাইক বাড়াবেন এবং ফলোয়ার বাড়াবেন। তাই আজকে আমি আপনাদেরকে এই টিউনে কিছু কৌশল শেয়ার করতে যাচ্ছি, যার মাধ্যমে আপনি কোন প্রকার স্পামিং ছাড়া আপনার ফেসবুক পেজে লাইক এবং ফলোয়ার বাড়াতে পারবেন। তবে চলুন টিউনটি শুরু করা যাক। তাই আজকের টিউনটি আমি আপনাদেরকে মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য অনুরোধ করছি।
সর্বপ্রথম আপনাকে যে টিপস বলবো তা হলো, ফেসবুক পেজকে এডভার্টাইজিং এর মাধ্যমেও বুস্ট করা। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি পেজকে grow করার সহজ উপায় হলো এডভার্টাইজিং। আপনি ফেসবুকে এড এর মাধ্যমে আপনার পেজ প্রমোট করতে পারেন। এতে করে আপনার পেজে লাইক এবং ফলোয়ার এর সংখ্যা দ্রুতই বাড়বে। এক্ষেত্রে আপনার কাছে যদি ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড থাকে তবে সেটি দিয়ে আপনি আপনার কনটেন্ট কে প্রমোট করতে পারেন।
আপনি যখন আপনার ফেসবুকে এড এর মাধ্যমে প্রমোট করবেন তখন আপনাকে আগে লক্ষ্য রাখতে হবে আপনার কনটেন্ট যেন মানসম্মত হয়।
প্রথমত আপনাকে আপনার ফেসবুক পেজে লাইক, ফলোয়ার এবং ভিজিটর বাড়ানোর জন্য যে কাজটি করতে হবে তা হলো নিয়মিত পেজটিতে post করা। এটি যদি আপনার কাছে কোন নরমাল ব্যাপার মনে হয়ে থাকে, তাহলে আপনি ভুল করছেন। কেননা নিয়মিত post করার চাইতে আর ভাল জিনিস কিছুই হতে পারে না। একটি পেজে নিয়মিত post করার মাধ্যমে সেই পেজটির ইম্প্রেশন দ্রুতই বাড়তে থাকে। আপনার post দ্রুত মানুষের কাছে পৌঁছে যাবার ফলে আপনার ভিজিটর ও আসতে থাকবে, সেই সঙ্গে বাড়বে লাইক এবং ফলোয়ারের সংখ্যা।
আমি আপনাকে একটি পেজে নিয়মিত post করার কথা কেন বলব? কারণ আপনি যখন কোন সাইটে বা সোশ্যাল মিডিয়াতে নিয়মিত post করবেন তখন সেই মিডিয়াতে আপনার অ্যাক্টিভিটি বেশি হওয়ার জন্য অটোমেটিক ভাবে সেই প্ল্যাটফর্ম বেশি মানুষের কাছে আপনার post গুলো পৌঁছে দিবে। আর তখন কিন্তু এমনিতেই আপনি আপনার পেজে লাইক, শেয়ার এবং ভিজিটর পাবেন। তাই একটি পেজকে Grow করতে হলে অবশ্যই নিয়মিত post করা জরুরী।
এরপরে যে জিনিসটা চলে আসে তা হলো, আপনি post করার আগে একটা সময় নির্ধারণ করুন। আপনি আপনার post টি শেয়ার করার জন্য একটি সময় নির্ধারণ করুন যে আপনি কোন সময়টিতে প্রতিদিন post করতে পারবেন।
আমরা অনেকেই post শেয়ার করার সময় ভুল করে থাকি। আমাদেরকে লক্ষ্য রাখতে হবে যে, কোন সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া বা অনলাইনে মানুষ বেশি অ্যাক্টিভ থাকে সে সময় post শেয়ার করা উচিত। আপনি যেই দেশে রয়েছেন সেই দেশের টার্গেটেড অডিয়েন্সকে লক্ষ্য করে post করতে হবে। যেমন আমাদের বাংলাদেশের যে সময় মানুষ কাজ থেকে ফ্রি বা অবসর থাকে, কোন কাজে ব্যস্ত থাকে না আপনাদেরকে সেই সময়ে post করা উচিত। আমরা বাংলাদেশের সেই সময়টি ধরে নিতে পারি অফিস টাইম শেষ হওয়ার পর, অর্থাৎ সন্ধ্যার দিকে। সে দিক থেকে বলতে গেলে মানুষ সন্ধ্যা ছয়টা থেকে নয়টা পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবেই ফ্রি থাকে। যারা কোন কাজ করে অথবা যারা পড়াশোনা করে সবাই প্রায়ই এ সময়টাতে ফ্রি থাকে। আপনাকে এই সময়টি কে লক্ষ্য করে post করতে পারেন। এতে করে আপনার post এ ভিউ অনেক বেশি হতে পারে।
যখন বেশী বেশী মানুষ অনলাইনে বা সোশ্যাল মিডিয়াতে একটিভ থাকে তখন আপনাকে post করার কথা এজন্যই বললাম যে, আপনি লক্ষ্য করলে দেখবেন ইউটিউব ভিডিও কিংবা অন্য কোন সাইটে post করার ক্ষেত্রে বিকাল থেকে রাত নয়টা-দশটার মধ্যে সবচাইতে বেশি ভিউ পাওয়া যায়। তাহলে এই সময়টাতে আপনাদের post এ লাইক এবং শেয়ার বেশি পাবার সম্ভাবনা থাকে। কেননা এ সময় সবাই একসাথে অনলাইনে ঢুকে পড়ে।
এরপর আপনাকে যে বিষয়টি সবচাইতে বেশি লক্ষ্য রাখতে হবে তা হল আপনার কনটেন্ট কোয়ালিটি। যে কনটেন্ট আপনি লিখছেন আপনার ফেসবুক পেজে, সেটি অবশ্যই মান সম্মত হতে হবে। আপনার পেজটি যে ক্যাটাগরির আপনি সেই রিলেটেড পোস্টগুলিই পেজে করবেন।
ধরুন, আপনার পেজটি স্বাস্থ্য বিষয়ক কোন বিষয় নিয়ে। এক্ষেত্রে আপনাকে মাথায় রাখতে হবে বর্তমানে কোন post দিলে মানুষের উপকারে আসবে এবং সেটি বেশি দেখার সম্ভাবনা রয়েছে। যেমন বর্তমানে বাংলাদেশে শীত। এক্ষেত্রে আপনি যদি শীতে করণীয় বিষয়ে post করেন তাহলে কিন্তু সেটি বেশি দেখার সম্ভাবনা রয়েছে। আর আপনি যদি এসময় গ্রীষ্ম কালে গরম থেকে বাঁচার উপায় নিয়ে post করেন, তবে সেটি কিন্তু বেশি মানুষ দেখতে চাইবেনা।
আপনাকে অবশ্যই সে সময়ের টপিক নিয়েই কাজ করতে হবে। আপনার পেজে post করার সময় আপনি সবসময় চেষ্টা করবেন সেই post এর তথ্যের রেফারেন্স দিতে। আপনি কোন সোর্স থেকে সেই তথ্যটি সংগ্রহ করেছেন সেটি দিলে ভিজিটরের কাছে আপনার কনটেন্টটি আরো গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে। আপনার কনটেন্ট গুলো যখন দর্শকদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে তখন তারা কিন্তু আপনার পেজে এবং পোষ্টটিতে লাইক এবং শেয়ার করবে।
এছাড়া ধরুণ, বর্তমানে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি চলছে। এসময়ে করোনা বিষয়ে মানুষকে কি জানতে চায় তা লক্ষ্য করে সে বিষয়ে post করলে বেশি ভিউ, লাইক ও শেয়ার আসার সম্ভাবনা থাকে। সব মিলিয়ে বলতে গেলে আপনি যে বিষয় নিয়ে আপনার পেজটি তৈরি করেছেন সেই রিলেটেড ট্রেডিং নিউজ বা কনটেন্ট গুলো আপনার পেজে post করতে হবে।
যদি আপনার পেজটি মানুষের কাছে বিশ্বস্ততা অর্জন করতে পারেন তবে পরবর্তীতে আপনি যে পোস্টটি করুন না কেন সেটিতে লাইক, শেয়ার অবশ্যই বেশি হবে। তবে একটি পেজের লাইক শেয়ার বৃদ্ধির জন্য অবশ্যই কোয়ালিটি কনটেন্ট post করতে হবে। একটি কনটেন্টে যদি কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকে তবেই কিন্তু একজন সেই post টি লাইক এবং শেয়ার করে। তাই আপনার ফেসবুক পেজের জন্য সবসময় কোয়ালিটি সম্পন্ন কনটেন্ট তৈরি করার চেষ্টা করুন।
আপনি আপনার পেজের যে লেখাগুলো লেখছেন সেগুলো যদি কোয়ালিটি সম্পন্ন হয় তাহলে সেসব পোস্টগুলোতে অনেক বেশি ভিউ হবে। আপনি সবসময় মনে রাখবেন আপনি যে ধরনের কনটেন্ট পছন্দ করেন মানুষের জন্য ও সে ধরনের কনটেন্ট তৈরি করার। আপনি আপনার নিজের ভালো লাগাকে উপলব্ধি করতে পারলেই অন্যের ভাল লাগাকে ও উপলব্ধি করতে পারবেন। এভাবেই আপনি অন্যের ভালো লাগাকে উপলব্ধি করে মানসম্মত ও কোয়ালিটি সম্পন্ন post আপনার পেজে দেন, তবে খুব দ্রুতই আপনার post এ লাইক, ভিউ এবং শেয়ার বেশি হবে।
যখন আপনি কোয়ালিটি কনটেন্ট আপনার ভিজিটরকে দিতে পারবেন অথবা আপনি যাদের কাছে আপনার কনটেন্ট পৌঁছতে চাচ্ছেন, তাকে যদি আপনি কোয়ালিটি কন্টেন্ট, কোয়ালিটি লেখা এবং কোয়ালিটি সম্পন্ন ভিডিও দিতে পারেন তবে সে কিন্তু আপনার কনটেন্ট গুলোকে লাইক করবে এবং আপনার পেজকে ফলো করবে।
আপনার ফেসবুক পেজের কনটেন্ট গুলোতে ভিউ এবং লাইক বাড়ানোর জন্য আপনাকে আরো কিছু বিষয় জানতে হবে। আপনাকে এজন্য কিওয়ার্ড রিসার্চ করতে হবে। কিওয়ার্ড রিসার্চ করার জন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইট রয়েছে। সেখান থেকে আপনি রিসার্চ করতে পারেন যে, বর্তমান সময়ে মানুষ কোন কোন বিষয় নিয়ে বেশি সার্চ করছে। আপনি ফেসবুকে সেই কিওয়ার্ডগুলো ব্যবহার করার চেষ্টা করুন, তাহলে আপনার ফেসবুকের সেই পোস্টগুলো মানুষের সামনে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তারপর সেই অনুযায়ী আপনি আপনার পেজের ছবি, ভিডিও, টেক্সট ইত্যাদি যেকোনো কিছু শেয়ার করতে পারেন।
ফেসবুকে আপনার পেজের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ অনেক গ্রুপ রয়েছে। আপনি সেসব গ্রুপে যুক্ত হতে পারেন। সেসব গ্রুপে গিয়ে আপনি আপনার পেজের বিষয়ে comment করতে পারেন। আবার সেসব গ্রুপে আপনি সেই রিলেটেড কন্টেন্ট নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। যখন মানুষের কাছে এই কনটেন্টগুলো ভালো লাগবে তখন সেই গ্রুপ থেকে ও কিন্তু আপনার পেজে মানুষ ভিজিট করতে পারে।
তারপরে আপনি আপনার ফেসবুক পেজে লাইভ মেসেঞ্জার চালু করে রাখুন। যাতে করে কেউ কোন বিষয়ে মেসেজ করলে খুব দ্রুতই উত্তর দিতে পারেন। এছাড়া আপনি ইনস্ট্যান্ট মেসেজ চালু করে রাখতে পারেন। এতে করে কেউ যদি কোন মেসেজ করে সেটির গঠনমূলক রিপ্লাই অটোমেটিক দিয়ে দেয়। এতে করে পরবর্তীতে আপনি তার সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন।
সর্বশেষ আপনাকে আপনার ফেসবুক পেজের সব সেটিং গুলো প্রফেশনাল ভাবে সেট করার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। এক্ষেত্রে, আপনার ফেসবুক পেজের নাম, পেজটি সম্বন্ধে কিছু বর্ণনা, আপনার সাথে যোগাযোগ করার জন্য নাম্বার অথবা ইমেইল নাম্বার, সঠিক এড্রেস যোগ করার মাধ্যমে আপনার পেজটি হয়ে উঠবে আরো প্রফেশনাল। এছাড়া আপনার যদি আলাদা কোন ওয়েবসাইট থাকে সেটি ও যুক্ত করতে পারেন আপনার ফেসবুক পেজটিতে। আপনি আপনার পেজটির প্রোফাইল পিকচার কভার পিকচার সবগুলোই সঠিকভাবে দিয়ে পেজটিকে পরিপূর্ণ করার চেষ্টা করুন।
বন্ধুরা এই ছিল ফেসবুক পেজ grow করার কিছু টিপস। যদি টিউনটি আপনাদের কাছে ভাল লেগে থাকে তাহলে টিউনমেন্ট এ জানাবেন কেমন লাগলো। তবে আজ এ পর্যন্তই, দেখা হচ্ছে তবে পরবর্তী টিউনে আরো নতুন কোনো বিষয় নিয়ে ইনশাআল্লাহ। আসসালামু আলাইকুম।
আমি মো আতিকুর ইসলাম। কন্টেন্ট রাইটার, টেল টেক আইটি, গাইবান্ধা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 421 টি টিউন ও 93 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 62 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 3 টিউনারকে ফলো করি।
“আল্লাহর ভয়ে তুমি যা কিছু ছেড়ে দিবে, আল্লাহ্ তোমাকে তার চেয়ে উত্তম কিছু অবশ্যই দান করবেন।” —হযরত মোহাম্মদ (সঃ)