বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আসসালামু আলাইকুম। আমি মেহেদী হাসান। কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভালই। ঈদের শপিংয়ে হয়তো সবাই ব্যস্ত? নাকি এখনো করেন নাই শপিং? যাই হোক না করলে করে ফেলুন। আজের টিউনে আলোচনার বিষয় "ফেইজবুক পেইজ সম্পর্কে আলোচনা ও কিভাবে একটা পেজ বানাতে হয় দেখুন"
তো চলুন আলোচনায় চলে যাই।
ফেসবুকের অনেকটি গুরুত্বপূর্ন সার্ভিসের মধ্যে অন্যতম একটি সার্ভিস হল ফেসবুক পেজ। একটি ফেসবুক পেজ মানে একটি ব্যবসায় অথবা একজন ব্যক্তির জীবন বিত্তান্ত।
ফেসবুক পেজ এমন ভাবে তৈরি যাতে যে কোন ব্যবসায়ের বা ব্যক্তির সকল রকম গুরুত্বপূর্ন এবং নতুন সব তথ্য থাকে। তাই যে কেউ একটি পেজ দেখলেই সেই ব্যবসায়ের সম্পর্কে অনেক তথ্য পেতে পারে।
অনেক ব্যবসায়িক পেজের কর্তৃপক্ষ সময়ের অভাবে সেই পেজ পরিচালনা করতে পারে না অথবা অনেক কিছু না জানার কারণে সে পেজ পরিচালনা করতে পারে না কিন্তু তার একটি ফেসবুক পেজ থাকাটা খুব জরুরী। সে জন্য ফেসবুক কর্তৃপক্ষ একটি ফেসবুক পেজের ৫ ধরণের পরিচালক রাখার সুবিধা দিয়ে থাকে।
যেমন-
তবে তাদের কাজের এবং পেজ পরিচালনার ক্ষেত্রে ক্ষমতা ভিন্ন। সবাই চাইলেই সবকিছু করতে পারবেন না। এডমিন ছাড়া বাকি সকল পরিচালনাকারীর জন্য তাদের কাজ করার ক্ষমতা সীমাবদ্ধ।
একজন পেজ মালিকের তার পেজ পরিচালনার জন্য কাউকে নিয়োগ দেয়ার পূর্বে বিভিন্ন পরিচালনাকারীর ক্ষমতা সম্পর্কে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।
যখন আপনি ১টি পেজ খুলবেন, আপনি অটোমেটিক এডমিন হয়ে যাবেন। একজন এডমিন পেজের সব ধরণের পরিবর্তন করতে পারে। বাকীরাও অনেক কাজ করতে পারে। নীচে প্রত্যেক পরিচালনাকারীর কাজের ক্ষমতা উল্লেখ করা হলঃ
এডমিনঃ
একজন এডমিন হল পেজের সকল ক্ষমতার আধিকারী। সে পেজের সব ধরনের কাজ করতে পারে। যেমন সেটিং পরিবর্তন করা যা অন্য কোন পরিচালনাকারী করতে পারে না। এছাড়া পেজ এডিট করা, টিউন এডিট করা, ডিলিট করা, অ্যাপস ব্যবহার করা, সরাসরি কাস্টমারদের কাছে পন্য পৌচ্ছে দেয়ার জন্য অ্যাড তৈরী, ছবি আপলোড করা বা ভিডিও আপলোড করা এবং কেমন ভিজিটর পেজে আসছে, কি পরিমান ক্লিক হচ্ছে ইত্যাদি জানার জন্য ইনসাইট দেখা। এছাড়া সে অন্যান্য পরিচালনাকারী যেমন এডিটর, মডারেটর,অ্যাডভার্টাইজার, এনালিস্ট সবাইকে নিয়ন্ত্রন করতে পারে।
এডিটরঃ
এডমিন যখন পেজ পরিচালনার সময় পান না তখন সে একজন এডিটর নিয়োগ দেন। একজন এডিটর পেজের সেটিং এবং অন্যান্য পরিচালনাকারীদের নিয়ন্ত্রন ছাড়া অন্যান্য সকল কিছু করতে পারে। যেমনঃ যেকোন প্রয়োজনে পেজ এডিট করা, কোন টিউন ডিলিট করার দরকার হলে ডিলিট করা, অ্যাপ যোগ করা ইত্যাদি। যেকোন টিউমেন্ট ডিলিট করার ক্ষমতাও এডিটরের আছে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ন কাজও একজন এডিটর করতে পারে। তাহলো যেকোন সময় যেকোন ব্যক্তিকে ফেসবুক পেজ থেকে রিমুভ করতে পারে। যা স্প্যামিং রোধে অনেক বেশি প্রয়োজন। কারণ আমরা প্রায়ই দেখি বিভিন্ন স্প্যামাররা পেজের টিউন এর নিচে টিউমেন্টে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের লিঙ্ক বা অন্যকিছু দিয়ে থাকে। তাদের কে ফেসবুক পেজ থেকে রিমুভ করতে হয়।
মডারেটরঃ
একজন মডারেটরও একটি পেজের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করে। ফেসবুক পেজের মডারেটর শুধু মেসেজ এবং টিউমেন্ট করতে পারে কিন্তু কোন কিছু ডিলিট করতে পারে না। তাছাড়া একজন মডারেটরও যে কেউকে পেজ থেকে নিষিদ্ধ করে দিতে পারে। মডারেটর আরও ২টি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে পারে যেমনঃ অ্যাড তৈরি, ইনসাইট দেখা।এছাড়া পেজের হয়ে Message-এর উত্তরও দিতে সক্ষম।
অ্যাডভার্টাইজারঃ
অনেক সময় দেখা যায়, পেজ এডমিন এর ফেসবুক অ্যাড সম্পর্কে ধারনা কম থাকে। সেই সময় একজন অ্যাডভারটাইজারের প্রয়োজন হয়। তখন তিনি একজন অ্যাডভারটাইজার নিয়োগ দেন। অ্যাডভারটাইজারদের পেজ পরিচালনার ক্ষমতা থাকে সীমাবদ্ধ। তারা শুধু অ্যাড তৈরি অথবা বিভিন্ন ফ্রী মেথডে ব্যবসায় প্রচার করে। এছাড়া তাদের অ্যাড তৈরির সুবিধার জন্য তারা ইনসাইট দেখার সুবিধা পায়। তাকে একটি প্রোফেশনাল অ্যাড তৈরির জন্য ইনসাইটের বিভিন্ন বিষয় গুলো নিয়ে বিশ্লেষণ করতে হয়। সেই তথ্য গুলোর সমন্বয়ে লাভজনক অ্যাড তৈরি করা সম্ভব হয়। অনেক এজেন্সি রয়েছে যারা এই অ্যাডভারটাইজিং সেবা দিয়ে থাকে। তাদের কে অ্যাডভারটাইজার ক্ষমতা দেয়া হয়।
এনালিস্টঃ
একজন এনালিস্ট এর কাজ হল ফেসবুক পেজকে বিশ্লেষণ করা। তারা দেখে পেজে কত ভিজিটর আসে, তারা কি ওয়েবসাইটের লিঙ্কে ক্লিক করে কি না, কোন সময়ে বেশি ভিজিটর আসে ইত্যাদি। যেহেতু এনালিস্টকে পেজ এর এ সকল তথ্য নিয়ে বিশ্লেষণ করতে হয় তাই সে ইনসাইট দেখার অনুমতি পায়।
তবে ফেসবুক পেজের সব পরিচালকরা ১টি কাজ করতে পারে তা হল কে পেজ এ কোন এডমিন টিউন করেছে তা দেখতে পারে।
বোঝার স্বার্থে ইমেজটা দেখুনঃ
পেজ মূলত একটা পৃষ্ঠা বা পাতাকেই বোঝায়। আপনার যদি একটা ফেইজবুক আইডি থাকে আপনি যদি কোনো পাবলিক ফিগার বা আর্টিষ্ট হয়ে থাকেন তাহলে আপনার এক্তা পেজ থাকা দরকার কেন না আপনি আপনার সকল কার্যক্রম ফেসবুক পেজের মাধ্যমে করতে পারবেন।
এছাড়াও মনে করেন আপনি একজন রাজনীতিবিদ। আজকে আপনার একটা জনসভা আছে সেটা আপনার দলের অনেকেই জানে না। এমত অবস্থায় আপনি আপনার তৈরি করা পেজ থেকে টিউনের মাধ্যমে আপনি সবাইকে জানিয়ে দিতে পারেন।
এখানে একটু বিভ্রান্তির অবকাশ আছেI এটা ঠিক যে ফেইসবুক থেকে আয় করা যায়, কিন্তু সেটি হচ্ছে মূলত একাধিক ফেইসবুক একাউন্ট করে বিভিন্ন ফেইসবুক পেজ লাইক করে। এটাকে এখন 'fake লাইক' সার্ভিস বলা হয়। একদিক থেকে এই ধরনের সার্ভিস অনৈতিক এবং ফেইসবুক এখন এরকম সার্ভিস যাতে বিস্তার না করে তার জন্য বিভিন্ন fake একাউন্ট বন্ধ করে দিচ্ছে। তবে নিজস্ব ফেইসবুক পেজ তৈরী করে আয় করার সুযোগ যদি আপনি পণ্য কেনা বেচার একটা মিডিয়া হিসাবে এটা ব্যবহার করেন। বাংলাদেশে অনেক ব্যবসায়ী এখন ফেইসবুক পেজ তৈরী করে তাদের পণ্য বা সেবা মার্কেটিং করছে। তবে ফেইসবুক পেজ-এ যে বিজ্ঞাপন থাকে তার ইনকাম কিন্তু পুরোপুরি ফেইসবুক নিজে পায় - এক্ষেত্রে বর্তমানে আপনি কোনো ধরনের বিজ্ঞাপন আয় করতে পারবেন না।
এইটা নিয়ে বিভিন্ন মতভেদ আছে তাই আর কিছু বলতে চাই না।
ফেসবুক ফেজ প্রমোট হলো বৃস্তিত করা বা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া আর আপনি যখন ফেসবুক এ
আপনার পেজ ওপেন করেন তখন
দেখবেন যে promote your page
লেখা আছে ওখানে কিল্ক করে পরবর্তী
ধাপ অনুসরন করলেই আপনি আপনার
কাঙ্ক্ষিত লক্ষে পউছে যাবেন।
ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজের কথা প্রায়ই শোনা যায়৷ এই ফেসবুক ভেরিফিকেশন নিশ্চিত করে দেয়, যাঁর নামে ফেসবুক ফ্যানপেজ রয়েছে, পেজটি আসলে তাঁরই৷ ফেসবুক ভেরিফিকেশন আসলে কী? ভেরিফায়েড করানোর উপায়ই বা কী?
নিয়মিত যোগাযোগের জন্য ফেসবুক প্রোফাইল ব্যবহার করেন-এমন ব্যবহারকারীর সংখ্যাও প্রচুর৷ আবার বিখ্যাত লোকেরা যোগাযোগের জন্য ব্যক্তিগত প্রোফাইলের চেয়ে ফেসবুক পেজ ব্যবহারে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন৷ প্রতিষ্ঠান, ব্র্যান্ড, অনুষ্ঠান ও কার্যক্রম সম্পর্কে জানানোর জন্যও ফেসবুক পেজ তৈরি করা হয়ে থাকে৷
ফেসবুক সবার জন্য উন্মুক্ত, যে কেউ ইচ্ছা করলেই তাঁর নিজের প্রোফাইল ও পেজ তৈরি করতে পারেন৷ একই সঙ্গে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র উল্লেখ করার প্রয়োজনীয়তা নেই বলে একজন ব্যক্তি অন্য কারও নামেও অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারেন৷ এমনকি অন্য প্রতিষ্ঠানের নামে ফেসবুক পেজ তৈরি করে নিয়মিত হালনাগাদও করা যায়৷ বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান অথবা ব্যক্তির নামে এমন ভুয়া অ্যাকাউন্ট বা পেজ থেকে প্রচারণা চালানো হলে ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য সেটি ক্ষতির কারণও হতে পারে৷ মিথ্যা বা ফেক অ্যাকাউন্ট থেকে মূল অ্যাকাউন্ট আলাদা করে দেখানোর জন্য ফেসবুকের একটি নিজস্ব ভেরিফিকেশন পদ্ধতি রয়েছে৷ এই ভেরিফিকেশনে উত্তীর্ণ পাতাগুলোর নামের পাশে নীল রঙের একটি টিক চিহ্ন থাকে৷ পেজের পাশাপাশি ফেসবুক প্রোফাইলও একইভাবে ভেরিফায়েড হতে পারে৷ সাধারণত তারকাখ্যাতি-সম্পন্ন ব্যক্তি, সেলিব্রিটি, সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠান ও ব্র্যান্ডের পাতাগুলো ভেরিফাই করে থাকে ফেসবুক৷
ফেসবুক প্রোফাইল বা পেজ ভেরিফাই করার জন্য নির্দিষ্ট কোনো নিয়ম উল্লেখ করা নেই; আবার ফেসবুকের কাছে ভেরিফিকেশনের জন্য সরাসরি আবেদন করার জন্যও কোনো যোগাযোগের পদ্ধতি নেই৷ ফেসবুকের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা প্রোফাইল ও পেজে যে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের উল্লেখ রয়েছে, সেটি সত্যিই ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কি না, সেটি নিশ্চিত করার জন্যই এই ভেরিফিকেশন৷ ফেসবুক পর্যায়ক্রমে নির্ধারিত বিষয়ের পাতাগুলো ভেরিফিকেশনের কাজ করছে৷
সাদা–নীল টিক চিহ্ন পেতে যে পদ্ধতিগুলো প্রচলিত—
এই ধাপগুলো অনুসরণ করার সঙ্গে সঙ্গেই যে প্রোফাইল বা পেজে ভেরিফায়েড হয়ে যাবে, এমন নয়৷ কিন্তু এই তথ্যগুলো দিলে অন্যান্য সাধারণ ব্যবহারকারীও পেজের মালিক বা যিনি পরিচালনা করছেন, সেই বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারবেন৷
অনেকেই পেজ ক্রিয়েট করেন। কিন্তু পেজে ঠিক ঠাক মত সময় দেন না। আসলে আপনি যদি পেজে ঠিক ঠাক মত সময় দিয়ে সাহায্য করেন তাহলে আপনিও পারবেন একটা নামীদামী পেজের ওনার।
আমার টিউনে যদি কোনো ভুল ত্রুটি থাকে তাহলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
টিউনটি যদি আপনার কাছে ভাল লেগে থাকে তাহলে মনোনয়ন করতে পারেন।
যারা পেজ বানাতে চান তারা এই ভিডিও টা দেখে নিতে পারেন।
ভিডিওটা বাংলায় সাবটাইটেল দেয়ায় আপনি সহযেই বুঝতে পারবেন কোথায় কি করতে হবে।
ধন্যবাদ সবাইকে কষ্ট করে পড়ার জন্য। আজকে বিদায় নিচ্ছি দেখা হবে সামনের টিউনে। সবাই ভাল থাকুন। মেতে থাকুন প্রযুক্তির সুরে।
প্লাস করুণ আমাকে
সমস্যা হলে মেসেজ করুণ ফেইজবুকে
ফলো করুণ টুইটারে
ফেইজবুক সম্পর্কিত ভিডিও পান ইউটিউবে
আমি মামুন। COO, Injaazh Private Limited, Pabna। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 4 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 122 টি টিউন ও 134 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 50 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 2 টিউনারকে ফলো করি।
{জানিয়ে দাও} (,) {না হয় জেনে নাও}