সবাইকে আমার সালাম এবং শুভেচ্ছা। আমি নিয়মিত টিউন করতে পারছি না বলে দুঃখিত। এই টিউনের পর অপর আরেকটি টিউন করতে অনেক দেরি হতে পারে। আশা করি সবাই ভাল আছেন কিন্তু সবার হয়ত মন ভাল নেই; টিপু ভাইয়ের চলে যাওয়ার কারণে। আমি আমার টিউনটি টিপু ভাইয়ের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে শুরু করছি। সৃষ্টিকর্তা উনাকে ভাল রাখুন।
সবার অনুমতি নিয়ে তাহলে শুরু করছি, একনজরে আজকের আলোচ্য বিষয়বস্তু দেখে নিন।
- ঘর্ষণ কী?
- ঘর্ষণ বিষয়ক বিভিন্ন সংজ্ঞা।
- ঘর্ষণের বিভিন্ন গাণিতিক সমস্যার সাম্ভাব্য সমাধান
- আপেক্ষিক বেগ কাকে বলে
- আপেক্ষিক বেগের সূত্রাবলি নিয়ে আলোচনা
- আপেক্ষিক বেগ বিষয়ক বিভিন্ন সমস্যার সাম্ভাব্য সমাধান
তাহলে শুরু করা যাকঃ
দুটি বস্তু পরস্পরের সংস্পর্শে থেকে যদি একটির উপর দিয়ে অপরটি চলতে চেষ্টা করে তাহলে বস্তুদ্বয়ের স্পর্শ তলে এই গতির বিরুদ্ধে একটা বাধার উৎপত্তি হয়, এই বাধাকে ঘর্ষণ বলে।
কোন বস্তু বা তলই প্রকৃতপক্ষে সম্পূর্ণ মসৃণ নয়, উঁচু নিচু থাকবেই আর সেটাই সৃষ্টি করে ঘর্ষণের। আণুবীক্ষণিকভাবে দেখা যায়, কোন বস্তু যদি কোন মোটামুটি মসৃণ তলের উপরিতলে থাকে তাহলে বস্তু ও তলের স্পর্শস্থলের অবস্থা দেখা যায় এরকমঃ
এরকম থাকার কারণেই খাঁজগুলো সর্বদা বস্তুর বেগের বিপরীতে বল প্রয়োগ করে (চিত্রে একদিক দেখান হল)। এই বাধাজনিত বলের আরেক নাম ঘর্ষণ।
- ঘর্ষণ তলের এবং বস্তুর প্রকৃতির উপর নির্ভর করে। সঠিকভাবে বলতে গেলে বস্তুর যে তল মেঝে বা যে তলের উপরে থাকবে সি তলদ্বয়ের প্রকৃতির উপর নির্ভর করে। একই তলে একই বস্তুর ঘর্ষণ গড়পড়তায় একই রকম হয়ে থাকে।
- ঘর্ষণ তলের ক্ষেত্রফলের উপর নির্ভর করে না।
- ঘর্ষণ তাপমাত্রার উপর নির্ভরশীল।
- ঘর্ষণ সর্বদা বস্তুর গতির বিপরীতে ক্রিয়া করে।
- ঘর্ষণ বস্তুদ্বয়ের স্পর্শতল কোন মাধ্যমে রয়েছে তার উপরও নির্ভর করে।
- ঘর্ষণ বল অসংরক্ষণশীল বল। অর্থাৎ এই বল দ্বারা কাজ পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়।
এককঃ ঘর্ষণ একপ্রকার বল যা বস্তুর গতির বিরুদ্ধে ক্রিয়া করে মন্দন সৃষ্টি করার চেষ্টা করে, তাই এর একক হবে নিউটন এবং এর মাত্রা হবে বলের মাত্রার সমতুল্য।
এবার আসা যাক ঘর্ষণের প্রকারভেদ এবং বিভিন্ন সংজ্ঞায়।
প্রথমেই জানা যাক স্থিতি ঘর্ষণ বোঝার আগে একটি সাব-টপিক সীমান্তিক ঘর্ষণ বলতে কি বোঝায় সেটা আগে আলোচনা করা যাক।
কোন তলের অপর অবস্থিত কোন বস্তুকে গতিশীল করার জন্য বস্তুর অপর যে বল প্রয়োগ করলে বস্তুটিতে গতির সঞ্চার হওয়ার উপক্রম হয়, সেই সময় বস্তুদ্বয়ের মধ্যবর্তী আপেক্ষিক গতিকে বাধাদানকারী ঘর্ষণ বলের মানকে সীমান্তিক ঘর্ষণ বলে।
সহজ কথায়ঃ নিচের চিত্রের মত ধরুন, একটি বাক্স কোন একটি তলের উপরে আছে। [বলতে পারবেন বস্তুটির উপরে ঘর্ষণ বল কত? 8) হাহা.. ঘর্ষণ বলের মান ০ বা ঘর্ষণ বল নেই কেননা ঘর্ষণ বল তখনই সৃষ্টি হবে যখন বস্তুটির উপরে বল প্রয়োগ করা হবে।] এখন আপনার ইচ্ছা হল বাক্সটিকে সরিয়ে অন্য স্থানে নেওয়ার। আপনি প্রথমে বস্তুটির উপরে 1N বল প্রয়োগ করলেন। বাক্সটি একটুও নড়ল না। আপনি আবারও বল প্রয়োগ করলেন এবার বলের পরিমাণ 2N । এবারও নড়ল না। মেজাজ একটু গরম হল, এবার দিলেন 5N বল ফলে বস্তুটি প্রায় নড়ার মত অবস্থা হল, যেন আরেকটু বল প্রয়োগ করলেই বস্তুটি নড়বে। এবার 5.1N (জানি সম্ভব নয় তারপরও ধরে নিন 😛 )
বল প্রয়োগ করলেন, এবার বস্তুটিকে আপনি এপার থেকে ওপারে নিতে সফল হলেন। 😀
এখন 5N বলই হবে সীমান্তিক ঘর্ষণ বলের মান, বলাই বাহুল্য ওই তল এবং ওই নির্দিষ্ট বস্তু সাপেক্ষে।
এখানে নিশ্চয়ই একটা প্রশ্ন আসছে যে fk এর মান 4N হল কিভাবে? একটু পরই তার উত্তর পাবেন।
দ্রষ্টব্যঃ কোন কিছু বলা না থাকলে স্থিতি ঘর্ষণের ক্ষেত্রে সাধারণত সীমান্তিক ঘর্ষণকেই বুঝানো হয়ে থাকে।এবার মূল আলোচনায় আসা যাকঃ
কোন তল এবং এই তলের ওপর অবস্থিত কোন বস্তুর মধ্যে আপেক্ষিক গতি সৃষ্টি না হাওয়া পর্যন্ত যে ঘর্ষণ বল ক্রিয়া করে তাকে স্থিতি ঘর্ষণ বল বলা হয়।
কোন তল এবং তলের উপর কোন বস্তুকে খুবই অল্প বল প্রয়োগ করা হল। এতে বস্তুটি নড়ল না। এখন যে বল প্রয়োগ করা হল সেটার সমানই অপর একটি বল যা ঘর্ষণ প্রয়োগ করে যার ফলে বস্তুটি নড়ে না। (ঠিক উপরের চিত্রের মত)।এটাই স্থিতি ঘর্ষণ।
➡ আরও একটু বেশি বল প্রয়োগ করা হলেও বস্তুটি নড়ল না। একই কারণ; বস্তুর উপর প্রয়োগকৃত বল এবং বলের বিপরীতে ঘর্ষণ বল সমান। এটাও স্থিতি ঘর্ষণ।
➡ এবার যদি আরও বল প্রয়োগ করা হয় এবং তাতে বস্তুটি নড়বার উপক্রম হয় তাহলে এখানে যে ঘর্ষণ বল ক্রিয়া করে সেটাও স্থিতি ঘর্ষণ।
➡ এবার আরও বেশি পরিমাণ বল প্রয়োগ করা হল এবং বস্তুটি সরে গেল। এবার কিন্তু নড়বার আগ পর্যন্ত স্থিতি ঘর্ষণ এবং বস্তু সরে যাওয়ার সময় চল ঘর্ষণ ক্রিয়া করে।
- প্রয়োগকৃত বল=বস্তু নড়ে না বা নড়বার উপক্রম=স্থিতি ঘর্ষণ বল=সীমান্তিক ঘর্ষণ(যখন নড়বার উপক্রম)
- স্থিতি ঘর্ষণ বলের মান ০ থেকে সীমান্তিক ঘর্ষণের সমান হয়।
- “সকল সীমান্তিক ঘর্ষণ-ই স্থিতি ঘর্ষণ, কিন্তু সকল স্থিতি ঘর্ষণ সীমান্তিক ঘর্ষণ নয়” 8)
দুটি স্পর্শতলের মধ্যে যখন আপেক্ষিক গতি থাকে, তখন তাদের মধ্যে যে ঘর্ষণ ক্রিয়া করে তাকে গতীয় ঘর্ষণ বলে।
যখন কোন বস্তু কোন তলের সংস্পর্শে থেকে চলতে থাকে তখন বস্তুর উপর যে ঘর্ষণ বল ক্রিয়া করে তাকে চল ঘর্ষণ বলে।
যেমন নিচের চিত্রের ক্ষেত্রে বস্তুর উপর 5.1N বল প্রয়োগ করলে বস্তুটি সরে যায় কিন্তু তখন গতীয় ঘর্ষণ বল fk=4N ক্রিয়া করায় নিট বল হয় 1.1N যা বস্তুটিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
একটি নির্দিষ্ট বস্তু এবং তলের ক্ষেত্রে গতীয় ঘর্ষণ বলের মান সর্বদা সীমান্তিক ঘর্ষণের বলের মানের চেয়ে কম হয়ে থাকে।
চল ঘর্ষণের কিছু প্রকারভেদ সম্পর্কে জানা যাকঃ
যখন কোন বস্তু অপর একটি তলের উপর গড়িয়ে যায় তখন তার গতির বিরুদ্ধে যে ঘর্ষণ ক্রিয়া করে তাকে আবর্ত ঘর্ষণ বলে।
সহজ কথায়ঃগাড়ি রাস্তায় চললে চাকার উপর যে ঘর্ষণ বল ক্রিয়া করে সেটা আবর্ত ঘর্ষণ।
এটা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু পেলাম না। বিসর্প মানে স্লাইডিং বা স্লাইড। স্লাইড করার সময় যে ঘর্ষণ বল ক্রিয়া করে তাকে বিসর্প ঘর্ষণ বলে।
প্রবাহী বা তরল পদার্থসমূহ যেসকল ঘর্ষণে অংশগ্রহণ করে এবং তার ফলে যে ঘর্ষণ বলের সৃষ্টি হয় তাকে প্রবাহী ঘর্ষণ বলে। একে “প্রবাহী পদার্থ” অধ্যায়ে সান্দ্রতা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। প্রবাহী ঘর্ষণ যে শুধু প্রবাহী তরল পদার্থসমূহের মধ্যে সৃষ্টি হবে এমন কোন কথা নেই।
ধমনীতে রক্ত প্রবাহিত হওয়ার সময়, জলযান পানিতে চলার সময় কিংবা সাঁতার কাটার সময়ও প্রবাহী ঘর্ষণের সৃষ্টি হয়। বৃষ্টি পড়াও প্রবাহী ঘর্ষণের একটি বাস্তব উদাহরণ।
এবার ঘর্ষণ সম্পর্কিত বিভিন্ন টপিকের উপর আলোচনা করা যাক।
অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়া ঘর্ষণের সাথে ওতপ্রোতভাব জড়িত; কিন্তু দুঃখের বিষয় এর সম্পর্কে তেমন কিছুই বলা হয় নি টেক্সটবইগুলোতে।
কোন বস্তু কোন তলের উপরে অবস্থান করলে তল বস্তুর উপর তলের সাথে লম্ব বরাবর যে লব্ধি বল প্রয়োগ করে তাকেই অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়া বলা হয়।
এটা পরিপূর্ণ সংজ্ঞা নয়। শুধু বোঝার সুবিধার্থে বলা হয়েছে।
এখানে লব্ধি এবং তলের সাথে লম্ব বরাবর এর উপর বিশেষভাবে জোর দেওয়া হয়েছে। কেন? কারণ আছে নিশ্চয়ই!
অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়ার এই আলোচনায় ঘর্ষণ আসবে না, শুধু বস্তুর ওজন, বস্তু যে তলে অবস্থিত তার অবস্থা এবং যদি বাহ্যিক বল প্রয়োগ করা হয় তবে সেটাই হবে মূল মূখ্য বিষয়।
কোন বস্তু যদি নিচের চিত্রের মত অবস্থান করে তাহলে তার অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়া হবে ওজনের সমান এবং তা ওই তলের সাথে লম্ব বরাবর ওজনের বিপরীতে ক্রিয়া করবে।
কোন বস্তু যদি থিটা কোণে আনত তলের উপরিস্থলে থাকে তবে অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়া কিরকম হবে দেখা যাকঃ
এসকল ক্ষেত্রে অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়া থিটা কোণের বা তলের হেলানো কোণের উপরে নির্ভরশীল। হেলানো কোণের মান যত কম অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়ার মান তত বেশি হয় আর হেলানো কোণের মান যত বেশি অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়ার মান ততই কমতে থাকে।
এখানে নিশ্চয়ই একটা প্রশ্ন আসে, সেটা হল তল থিটা কোণে হেলে থাকলে বস্তু কিভাবে থিটা কোণে হেলে থাকবে? উত্তর পাবেন, তবে একটু ধৈর্য ধরতে হবে।
এবার ধরি, সমতলে একটি বাক্সকে একটি লোক দড়ি দ্বারা অনুভূমিকের সাথে আলফা কোণে F বল প্রয়োগ করেছে কিন্তু বস্তুটিকে একটুও সরাতে পারে নি।(লোকের চিত্রটা দিতে পারি নি বলে দুঃখিত) এক্ষেত্রে অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়া বিবেচনা করা যাকঃ
ক্ষেত্রবিশেষে অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়ার এই হল মোটামুটি ধারণা। এবার একটি সাবটপিকে আসা যাক।
আমার মনে হয় নিচের ছবি দুইটা দেখলেই আপনারা বুঝতে পারবেন, সেকারণে কিছু বললাম না।
এবার ঘর্ষণ গুণাংকের গুণগত মান সম্পর্কে জেনে গুণান্বিত হওয়া যাক।
প্রথমে পুঁথিগত বিদ্যা উপস্থাপন করে সরল করার চেষ্টা করব।
স্থিতি ঘর্ষণ গুণাংক কাকে বলে, ইহা খাদ্যদ্রব্য নাকি মস্তকে দেওয়ার দ্রব্য এটা সম্পর্কে জানা যাক।
যে টাইপের বা ধরণের ঘর্ষণ বল ক্রিয়া করে, সেই ধরণের ঘর্ষণ বলের মানকে যদি অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়া দ্বারা ভাগ করা হয়, তাহলেই ঘর্ষণ গুণাংক পাওয়া যায়।
➡ তাহলে এই ক্ষুদ্র জ্ঞান প্রয়োগ করার চেষ্টা করি।
দুটি বস্তু পরস্পরের সংস্পর্শে থাকলে স্থিতি ঘর্ষণের সীমান্তিক মান ও অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়ার অনুপাতকে স্থিতি ঘর্ষণ গুণাংক বলে।
আগেই বলা হয়েছিল যে স্থিতি ঘর্ষণ বলতে আমরা সাধারণত সীমান্তিক ঘর্ষণকেই বুঝবো। তাহলে দেখুন, আমরা সাধারণ ঘর্ষণ গুণাঙ্কের সাথে তুলনা করে দেখি।
ধরি, কোন বস্তুর উপর F বল প্রয়োগ করায় বস্তুর সীমান্তিক ঘর্ষণ বলের মান fl হয় এবং এর অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়া হল R, তাহলে এর ঘর্ষণ গুণাঙ্ক µs=fl/R
ঠিক একই ভাবে, গতীয় ঘর্ষণ গুণাংক এর সংজ্ঞাও আমরা দিতে পারি।
একটি বস্তু যদি কোন তলের সাপেক্ষে গতিশীল থাকে তাহলে গতীয় ঘর্ষণ বলকে অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়া দ্বারা ভাগ করলে গতীয় ঘর্ষণ গুণাংক পাওয়া যায়। বলাই বাহুল্য ঘর্ষণ গুণাংকটি হবে একমাত্র ওই বস্তু এবং তলের সাপেক্ষে।
ধরি, কোন বস্তু একটি তলের সাপেক্ষে একটি বস্তু গতিশীল রয়েছে। এখন গতীয় ঘর্ষণ বল বস্তুর গতির বিপরীতে ক্রিয়া করছে। এই বলের মান fk এবং অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়া R তাহলে গতীয় ঘর্ষণ গুণাংক µk=fk/R ।
** এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়াকে যদি আমরা ঘর্ষণ গুণাংক দ্বারা গুণ করি তাহলে আমরা সংশ্লিষ্ট ঘর্ষণ বলের মান পেয়ে যাব।
এই টপিক ঘর্ষণ বিষয়ক জটিল সমস্যা সমাধানের জন্য খুবই কার্যকরি।
গুণাংকের গুণাবলি আপাতত এই পর্যন্তই। এর পরে কি আসে চলুন দেখি।
সীমান্তিক ঘর্ষণের ক্ষেত্রে অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়া এবং ঘর্ষণ বলকে সংযোজন করলে যে লব্ধি প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় সেটি অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়ার সাথে যে কোণ উৎপন্ন করে তাকে ঘর্ষণ কোণ বলে।
এখানে অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়া যেমন একটি বল, তেমনি ঘর্ষণ ও একটি বল। সবচেয়ে বড় ব্যপার হল উভয়ই ভেক্টর রাশি।
যেহেতু বলদ্বয় একই সময়ে একই সাথে এবং একটি সাধারণ বিন্দুতে ক্রিয়াশীল তাই এদেরকে সামান্তরিকের দুইটি বাহু বিবেচনা করে সামান্তরিকটি আঁকলে এবং কর্ণটি সংযোজন করলে আমরা একটি লব্ধি S (বইয়ে এটা আছে তাই আমিও এটাই লিখলাম) পাই। এখন প্রচলিত নিয়মানুসারে লব্ধির দিক বের করতে আমরা সাধারণত লব্ধিটির সাথে অনুভূমিকের মধ্যবর্তী কোণ বিবেচনা করি।
এক্ষেত্রে ঘর্ষণ বলের সাপেক্ষে অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়াকে অনুভূমিক ধরা হয়। তাই কোণের ক্ষেত্রে অনুভূমিক অর্থাৎ অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়ার সাথে লব্ধি যে কোণ উৎপন্ন করে তাকেই ঘর্ষণ কোণ বলে। নিচের ছবিটা দেখুনঃ
এখন নিশ্চয়ই ঘর্ষণ কোণ সম্পর্কে কোন সমস্যা নেই। তাই না?
ঘর্ষণ কোণের পর আরেকটি টপিক হল স্থিতি বা নিশ্চল কোণ ঠিক কী। চলুন দেখি এটা আসলে “কী?”।
অনুভূমিকের সাথে কোন তল যে কোণ উৎপন্ন করলে আনত তলের উপরস্থ কোন বস্তু গতিশীল হওয়ার উপক্রম হয় সেই কোণকে ওই তলে বস্তুটির স্থিতি ঘর্ষণ কোণ বা নিশ্চল কোণ বলে।
ধরুন একটি হার্ডবোর্ডের উপর একটি বস্তু আছে। আপনার ইচ্ছা হল হার্ডবোর্ডটির (তল) একপ্রান্ত স্থির রেখে অন্য প্রান্ত ভূমির সাথে যেকোন কোণে আস্তে আস্তে তুলে বস্তুটিকে ফেলে দেওয়ার। প্রথমে আপনি ৩০ ডিগ্রি কোণে হার্ডবোর্ডটি ধরলেন, বস্তুটি তার স্থানে স্থির থাকল। এবার ৩৫ ডিগ্রি কোণে ধরলেন, এবার প্রায় পড়ি পড়ি অবস্থা কিন্তু পড়ে না। এবার ৩৬-৩৭ ডিগ্রি কোণে ধরলেন, এবার দেখলেন বস্তুটি স্লাইড করে পড়ছে।
এই ঘটনাটির মধ্যে নিশ্চল কোণ কোথায় এবং কত ডিগ্রি? বাহ্, আপনি ঠিক ধরেছেন!! উত্তর হল দ্বিতীয় অবস্থা এবং ৩৫ ডিগ্রি।
“স্থিতি কোণ এবং ঘর্ষণ কোণ সমান” – এই টপিকটি খুবই সহজ বলে আলোচনা করা হল না। যদি কারও প্রয়োজন হয় তাহলে কমেন্টে বলবেন, আমি পোস্ট আপডেট করে দেব।
- যখন কোন বস্তুকে সমবেগে টানা হয়, এবং যদি বল অনুভূমিকের সাথে একটি নির্দিষ্ট কোণে থাকে তাহলে ওই বলের cosine উপাংশ এবং গতীয় ঘর্ষণ বলের মান সমান হয়। অর্থাৎ, বলের মান F এবং অনুভূমিকের সাথে এটি θ কোণ উৎপন্ন করলে যদি গতীয় ঘর্ষণ বলের মান fk হয় তবে সমবেগে টানলে Fcosθ= fk হবে।
- যদি অনুভূমিক বরাবর F বলে সমবেগে টানা হয় তবে F= fk হবে।
- R এর মান যেটাই হোক না কেন, এর সাথে ঘর্ষণ গুণাংক গুণ করে দিলেই ঘর্ষণ বলের মান পাওয়া যাবে।
- যদি m ভরের বস্তুকে F বলে সমবেগে না টানা হয় তাহলে অবশ্যই বলের দিকে বস্তুর একটি ত্বরণ ক্রিয়া করবে [যখন, F> fk] । এবং লব্ধি বল Fcosθ-fk এর দিক হবে Fcosθ এর দিকে এবং লব্ধির মান হবে, Fcosθ-fk=ma; যখন ত্বরণের মান a
এবার এই অনুসিদ্ধান্তগুলো কাজে লাগিয়ে আমরা একটি জটিল অঙ্কের জটিল সমাধান বের করি, আপনি তৈরী তো???
একজন লোক m kg ভরের একটি বস্তুকে অনুভূমিকের সাথে θ কোণে টেনে নিয়ে যাচ্ছে, তল বরাবর সমবেগে x m সরাতে লোকটির কত কাজ করতে হবে?
[যে থিওরিগুলো আমি আলোচনা করলাম সেগুলো ব্যবহার করলেই এই সমস্যা অতিসহজে সমাধান করা যাবে। ]
একটি চিত্রের সাহায্যে বোঝার চেষ্টা করিঃ
এখানে, বস্তুর ভর = m kg
ঘর্ষণ গুণাংক= µk (দুটি একই রাশির অনুপাত বলে একক নেই। প্রশ্নে ঘর্ষণ গুণাংকের মান দেওয়া থাকবে)
লোকটির বল= F N
অনুভূমিক ও বলের মধ্যবর্তী কোণ = θ = বল ও সরণের অন্তর্গত কোণ
বস্তু সরাতে হবে = x m
মনে করি, ঘর্ষণ বলের মান = fk N
অভিকর্ষজ ত্বরণ= g
কৃত কাজ, W=?
অঙ্কটি সমাধান করার জন্য আমাদের মূল লক্ষ্য হবে বলের পরিমাণ বা, F নির্ণয় করা। কারণ F নির্নয় করলেই আমরা W=Fxcosθ সমীকরণ থেকে কাজের পরিমাণ পেয়ে যাব।
i) ➡ এখানে, বস্তুটিকে সমবেগে সরানো হচ্ছে তাই লোকের বলের অনুভূমিক উপাংশ এবং ঘর্ষণ বলের মান সমান হবে,
অর্থাৎ, Fcosθ= fk ... ... ... ... ... ... ... ... ... (i)
ii) ➡ আবার, আমরা জানি,
fk= µkR... ... ... ... ... ... ... ... ... ... (ii)
iii) ➡ আপনারা এতক্ষণে জানেন, R=W-Fsinθ
=>R=mg-Fsinθ .. ... .. .. (iii)
তাহলে (ii) নং সমীকরণ থেকে পাই,
fk=µk(mg-Fsinθ) ... .. .. .. ... ... .. (iv)
খুব বেশি কঠিন লাগছে? কঠিন লাগলে স্টেপগুলো একটু খেয়াল করে দেখুন।
অবশেষে কাজের পরিমাণ পাওয়া গেল,
সেটা হল, ঘর্ষণ বল এবং লোকের বলের cosine উপাংশ সমান হলে তো বস্তু নড়ার কথাই নয়। কারণ বস্তুর ওজন, লোকটির বলের উল্লম্ব উপাংশ এবং অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়া পরস্পর পরস্পরকে নাকচ করে দেয়। এখানে ওজন=লোকটির বলের উল্লম্ব উপাংশ+অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়া; এবং সেই সাথে লোকটির বলের cosine উপাংশ এবং ঘর্ষণ বল পরস্পরকে নাকচ করে দেয়। তাহলে বস্তুটিকে লোকটি টানছে কীভাবে?
বল প্রয়োগ করলেই বস্তু নড়বে না, কেননা এক্ষেত্রে লোকটির বলের cosine উপাংশ এবং সীমান্তিক ঘর্ষণ বলের মান প্রথমে সমান হয়, পরে ঘর্ষণের সীমান্তিক মানের চেয়ে বলের কোসাইন উপাংশ বেশি হলেই বস্তুটি চলা শুরু করে। আগে আমি একটি ছবিতে দেখিয়েছিলাম, F(limiting)>F(kinetic)
যখন লোকটির বলের কোসাইন উপাংশ এবং ঘর্ষণের সীমান্তিক মান সমান হয় তখন বস্তুটি নড়ার উপক্রম হয়, বল একটু বেশি হলেই সীমান্তিক মান আর কাজ করে না, কেননা বস্তুটি তখন চলা শুরু করে তখন গতীয় ঘর্ষণ গুণাংক ক্রিয়াশীল হয়। আর যেহেতু F(kinetic)<F(limiting) তখন বস্তুটি লোকটির বলের কোসাইন উপাংশের কিছু অংশ লাভ করে যা বস্তুটিকে গতিশীল রাখার চেষ্টা করে। আর এই গতিশীল রাখার বলটিই গতি জড়তা সৃষ্টি করে। অর্থাৎ Fcos(theta)=f(kinetic) হলেও গতি জড়তাই বস্তুটিকে গতিশীল রাখে। ফলে আপাত দৃষ্টি এবং বিবেচনায় বস্তুটির নড়ার কথা না হলেও সামগ্রিক বিশ্লেষণে দেখা যায় বস্তুটি ঠিকই নড়ছে। আর গতি জড়তা বস্তুটিকে যে গতিতে গতিশীল রাখে সেটাই হল সমবেগ।
উত্তর পছন্দ হয় নি? তাহলে আরেকটু বাস্তবমুখী ব্যাখ্যা দেইঃ
বৃষ্টির ফোঁটা অনেএএএএএক উঁচু থেকে পড়ে,ভালভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যায় এটা কোন ত্বরণ নিয়ে পড়ছে না। ত্বরণ নিয়ে পড়লে ছাতা ফুটো হয়ে যেত, হে হে 😉 😀 । বৃষ্টির ফোঁটা সমবেগেই পড়ে। বৃষ্টি কিন্তু মেঘ থেকেই সমবেগে পড়ে এটা ঠিক নয়। শুরুতে এটি g ত্বরণেই পড়তে থাকে কিন্তু বাতাসের সাথে ঘর্ষণের ফলে অর্থাৎ প্রবাহী ঘর্ষণের ফলে এর ত্বরণ আস্তে আস্তে কমতে থাকে এবং একসময় প্রবাহী ঘর্ষণ=পানির ফোঁটার ওজন = mg হয়, কিন্তু তখন তো পানির ফোঁটা স্থির থাকার কথা!! তাই না? তাহলে বৃষ্টির ফোঁটা পড়ে কিভাবে? বৃষ্টির ফোঁটা পড়ার মূল কারণ হল, প্রবাহী ঘর্ষণ বলের মান পানির কণার ওজনের সমান হওয়ার আগ পর্যন্ত বৃষ্টির ফোঁটা গতি জড়তা লাভ করে। যখন প্রবাহী ঘর্ষণ এবং ওজন সমান হয় তখন কণাটি নিচে নামতে থাকে ওই অর্জিত গতি জড়তার মাধ্যমে। আশা করি ব্যপারটা এবার বোঝা গেল?
না বোঝা গেলে আরেকটি ব্যাখ্যা দেই।
ধরা যাক, একটি পানিপূর্ণ কাঁচের লম্বা সিলিন্ডারাকৃতির একটি পাত্র নেওয়া হল। এখন একটি গোলাকার বস্তুকে উপর থেকে ছেড়ে দিলে প্রথম দিকে ঠিকই ত্বরণ নিয়ে নামতে থাকবে কিন্তু কিছুক্ষণ পর দেখা যাবে যে বস্তুটি ত্বরণে না নেমে সমবেগে নামছে। এখান থেকেই অন্ত্য বেগ সূত্র টি প্রতিপাদন করা হয়েছিল এবং সেখানে স্পষ্ট লেখা ছিল বস্তুটি গতি জড়তার কারণে নিচে নামতে থাকে যদিও সান্দ্র পশ্চাৎ টান এবং বস্তুর ওজন সমান।
এই গেল ঘর্ষণ সম্বলিত একটি সমস্যা এবং সমস্যা সম্পর্কিত একটি প্রশ্নের সমাধান।
আমরা আরও দুটো সমস্যার সমাধান দেখব।
5 মিটার দীর্ঘ একটি আনত তলের শীর্ষ ভূমি থেকে 2.5 মিটার উপরে অবস্থিত। 10 কিলোগ্রাম ভরের একটি বস্তুকে তলের সমান্তরালে বল প্রয়োগ করে তলের পাদ দেশ থেকে শীর্ষ বিন্দুতে সমবেগে উঠাতে কি পরিমাণ কাজ করতে হবে? (তল ও বস্তুর মধ্যে ঘর্ষণ গুণাংক, µk=0.25)
একনজরে দেখি কী কী তথ্যাবলি আছে,
এখানে,
বস্তুর ভর, m=10 kg
তলের দৈর্ঘ্য, l=5m
তলের পাদবিন্দু থেকে শীর্ষের উচ্চতা, h=2.5m
অভিকর্ষজ ত্বরণ, g=9.8 m/s^2
বস্তু ও তলের ঘর্ষণ গুণাংক, µk=0.25
তলের নতি, θ=?
বল, F=?
কাজ, W=?
আগের সমস্যার মতই, আগে বলের মান অর্থাৎ F এর মান বের করতে হবে এবং এরপর W এর মান বের করতে হবে। এক্ষেত্রে, W =Flcos0=Fl কেননা, বল যেদিকে প্রয়োগ করা হয়েছে সেদিকেই বস্তুর সরণ ঘটছে।
তাহলে F এর মান বের করা যাক।
এই সমস্যায় F এর বিপরীতে ওজন W এর sine উপাংশ অর্থাৎ Wsinθ এবং fk ক্রিয়া করছে। তাহলে F এর মান যদি (fk+ Wsinθ)=(fk+mgsinθ)এর বেশি সমান অথবা বেশি না হয় তাহলে বস্তু শীর্ষে উঠাতে পারবে না।
➡ যেহেতু এখানে সমবেগে বস্তু উঠানো হচ্ছে তাই,
F= fk+mgsinθ ... ... .. .. ... ... (i)
এবার আমাদের কাজ হল fk এর মান বের করা।
আমরা জানি, fk= µkR ... ... ... ... (ii)
অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়ার সংজ্ঞা থেকে আমরা জানি, অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়া তলের সাথে সমকোণে ক্রিয়া করে, আর এখানে F বলের সাইন উপাংশ=Fsin0
➡ আবার এখানে তলের সাথে অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়ার বিপরীতে ক্রিয়া করছে mgcosθ তাহলে,
mgcosθ-Fsin0=R
বা, R=mgcosθ
➡ তাহলে (ii) নং সমীকরণ থেকে আমরা পাই,
fk= µkmgcosθ
➡ এবার এই মান (i) নং সমীকরণে বসিয়ে দেই,
F= µkmgcosθ+mgsinθ
বা, F=mg(µkcosθ+sinθ)
সুতরাং কাজের পরিমাণ হবে, W=mgl(µkcosθ+sinθ)... ... ... ... (iii)
প্রশ্নমতে এবং চিত্র থেকে দেখা যায়, sinθ=h/l বা, θ=sin^-1(h/l)
বা, θ=sin^-1(2.5/5)
বা, θ=sin^-1(0.5)
বা, θ=30 Degree
এবার আমরা (iii) নং সমীকরণে যাবতীয় মানগুলো বসিয়ে পাইঃ
W = 10kg x 9.8m /s^2 x 5m (0.25cos30+sin30)
W = 351.088112 = 351 J (apprx)
অনেক সহজ!! তাই না? এরপরে একটা সুপারম্যান বিষয়ক গাণিতিক সমস্যা সমাধান করে ঘর্ষণের চ্যাপ্টার ক্লোজ করে দেব।
ধরা যাক একজন Bad Guy 8) কতগুলো বিস্ফোরকসহ 40000kg এর একটি দ্রুতগামী ট্রাকে 35m /s বেগে এগিয়ে চলছে। উপরে পিঙ্ক(!!!) আন্ডি(??) পরা সুপারম্যান (পিঙ্ক কেন? লালটা উনি ধুয়ে[অবশ্যই পচা বল সাবান দিয়ে] শুকাতে দিয়েছিলেন তাই ইমারজেন্সিতে পিঙ্ক!! 😛 ) খবর পেয়ে রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে এসে ট্রাকের সম্মুখের দিকে হাত প্রসারিত করে ট্রাকটি তৎক্ষণাৎ থামিয়ে দিল। পদার্থবিদ্যায় পারদর্শী একজন দর্শক (আসলে আঁতেল, না ভাইগা দাঁড়াইয়া হিসাব করে!!) সমস্ত ঘটনা বিবেচনা করে দেখে যে ঘটনা পদার্থবিদ্যার নীতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কিনা বা ট্রাকটি সুপারম্যানকে নিয়ে কতদূরে থামবে? আপনি কি পারবেন দর্শককে সাহায্য করতে? [সুপারম্যানের ভর 100kg এবং তার স্যান্ডেল(!!!) ও রাস্তার ঘর্ষণ গুণাংক µs = µk =1]
এখানে, সুপারম্যানের ভর, m=100kg
১ জন খারাপ লোক, বিস্ফোরকসহ ট্রাকের ভর, M =40000kg
ট্রাকের বেগ,V=35m/s
ঘর্ষণ গুণাংক, µ=1
ট্রাকের শেষ বেগ, w=0m/s
ট্রাক সুপারম্যানকে নিয়ে যে দূরত্ব অতিক্রম করে, s=?
যেহেতু ট্রাক সমবেগে গতিশীল তাই প্রথমে এর ত্বরণ থাকে না যখন সুপারম্যান বল প্রয়োগ করে তখনই এর মন্দন সৃষ্টি হয়। এখানে, ট্রাক যখন সুপারম্যানকে ধাক্কা দিয়ে সরাতে চেষ্টা করে তখন সুপারম্যানের গতি হয় ট্রাকের গতির দিকে ফলে ঘর্ষণ বল বিপরীতে ক্রিয়াশীল হয়। এই ঘর্ষণ বলই ট্রাককে থামায়।
➡ তাহলে, F(superman)=F(friction)
Fk= µkR
➡ অভিলম্বিক প্রতিক্রিয়া সুপারম্যানের ওজনের সমান, তাই R =mg
F=Fk=µkmg
➡ এই বল ট্রাকের গতির বিপরীতে ক্রিয়া করে a মন্দনের সৃষ্টি করে।
সুতরাং, -F=Ma
বা, a= -F/M = - µkmg/M
বা, a= (-1x980N)/40000kg
বা, a= -0.0245
➡ যেহেতু মন্দন তাই মাইনাচ চিহ্ন লাগবে না, a=0.0245m/s^2
আদিবেগ জানি, মন্দন জানি, শেষবেগ ০ তাও জানি, জানিনা s , তাহলে এটা পড়বে এই সূত্রে,
w2=V2-2as
বা, s= V2/2a [w=0]
বা, s=(35)2/2 X 0.0245
বা, s= 25000m
বা, s=25km !!!
➡ অর্থাৎ ট্রাকটি সুপারম্যানের সাথে সংঘর্ষের পর আরও ২৫ কিমি সামনে যাবে। এতক্ষণে নিশ্চয়ই সুপারম্যান ট্রাকটিকে ছবির মত উড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবেন।
যাই হোক, আপনি যদি আমার পোস্ট থেকে অন্তত একটা কিছু নতুন শিখে থাকেন তাহলে আমার এই ঘর্ষণ বিষয়ক লাফালাফি সার্থক হয়েছে বলে মনে করব।
নেক্সট বিষয় এ আসা যাকঃ
শুরু করার আগে আমি এব্যপারে কিছু বলতে চাই। এ টপিকটি অনেকের কাছে অতিসহজ মনে হলেও আমার কাছে এটা অনেক কঠিন লাগত। এর কারণ একটি নয়, অনেকগুলি; সেগুলোর মধ্যে আমার যেসব কারণ যথোপযুক্ত মনে হয়েছে সেটা হল, আপেক্ষিক গতি সম্পর্কে ক্লাসে কিছুই আলোচনা করা হয় না, আপেক্ষিক গতিসম্পর্কে টেক্সটবইগুলোতে ভাল আলোচনা করা হয় নি, বেশিরভাগ বলবিদ্যা বইগুলোতে আপেক্ষিক গতিসম্পর্কিত কয়েকটি সূত্র দিয়েছে যার ব্যাখ্যা ও প্রমাণ পর্যন্ত দেওয়া হয় নি। **সবচেয়ে বড় কথা হল আপেক্ষিক গতি সম্পর্কিত প্রশ্ন বোর্ডে আসে না তাই এর উপর জোর দেওয়া হয় না। এটাই সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যপার।
ক্লাসে শিখায় না,বইতে ভাল নেই তো কি হয়েছে?? আমিতো আছি!! চলুন দেখি আপনাদের জন্য কী করতে পারি।
দুইটি গতিশীল বস্তুর প্রথমটির তুলনায় দ্বিতীয়টির সরণের হারকে প্রথম বস্তুর তুলনায় দ্বিতীয় বস্তুর আপেক্ষিক বেগ বলা হয়। অর্থাৎ প্রথমটিতে অবস্থানরত পর্যবেক্ষকের নিকট দ্বিতীয়টির যে বেগ পরিলক্ষিত হয় তাকে প্রথমটির তুলনায় দ্বিতীয়টির আপেক্ষিক বেগ বলে। সংক্ষেপে দুইটি গতিশীল বস্তুর একটিকে স্থির বিবেচনা করে অন্যটির যে বেগ পরিলক্ষিত হয়, তাকে আপেক্ষিক বেগ বলে।
আমি প্রথমে সহজতর বিষয়গুলো আলোচনা করে জটিল বিষয়বস্তুতে যাব। ধরা যাক, দুইটি ট্রেন একই দিক বরাবর পরস্পর সমান্তরাল লাইনে চলছে। একটি প্রতি সেকেন্ডে ৩০ মি যাচ্ছে এবং অপর ট্রেনটি যাচ্ছে প্রতি সেকেন্ডে ২০ মি। কিন্তু দ্বিতীয় ট্রেনটির তুলনায় আরও সেকেন্ডে ১০মি যাচ্ছে। সেকারণে ২য় ট্রেনের যাত্রীদের মনে হবে যে ১ম ট্রেনটি যাচ্ছে প্রতি সেকেন্ডে ১০ মিটার। যাত্রীদের মনে হওয়া এই বেগই হল আপেক্ষিক বেগ।
এবার আমরা দেখব, যখন দুইটি গতিশীল বস্তুর গতির দিকের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট কোণ বিদ্যমান থাকে তাহলে আপেক্ষিক গতির অবস্থা কেমন হবে।
আমি আগেই আপনাদের চুপি চুপি সূত্রটা বলে রাখি, কীভাবে আপেক্ষিক গতির দিক এবং আপেক্ষিক গতি বের করবেন।
যখন দুটি গতিশীল বস্তু যথাক্রমে u এবং v প্রকৃত বেগে গতিশীল থাকে এবং তাদের মধ্যবর্তী কোণের মান যদি alpha হয় তাহলে,
আপেক্ষিক গতি,
এবং লব্ধি অর্থাৎ, আপেক্ষিক গতি যদি দর্শকের সাথে theta কোণ উৎপন্ন করে তাহলে এর দিক হবে,
ধরি, u= 30m/s
v= 20m/s
α=0
➡ সুতরাং আপেক্ষিক বেগ নির্ণয়ের সমীকরণটিতে মানগুলো বসিয়ে পাই,
➡ এখানে কিন্তু দিক ০ ডিগ্রি হবে। সূত্রে কী বলে চলুন দেখিঃ
সূত্রও একই কথা বলছে।
এবার আপেক্ষিক গতি নিয়ে কিছু আলোচনা সমালোচনা করা যাক।
ধরা যাক, একটি লাল রঙের গাড়ি এবং একটি বেগুনী রঙের গাড়ি O বিন্দু থেকে যাত্রা শুরু করল। লাল গাড়ি যাচ্ছে OA বরাবর এবং বেগুনী গাড়ি যাচ্ছে OB বরাবর। এবার আমরা দুইটি চিত্রের মাধ্যমে দেখব দুইগাড়ির যাত্রী পরস্পরকে কিভাবে দেখছেন।
এখানে যদিও বেগুনী গাড়িটি OB বরাবর যাচ্ছে কিন্তু লাল গাড়ির ড্রাইভার গাড়িটিকে OC পথে যেতে দেখবেন।
যদিও লাল গাড়ি OA পথ বরাবর গতিশীল, কিন্তু বেগুনী গাড়ির যাত্রী অথবা ড্রাইভার লাল গাড়িটিকে OB পথে গতিশীল হতে দেখবেন।
এই হল আপেক্ষিক গতি কী এবং এর প্রকৃত অর্থ কী।
ধরা যাক, P ও Q দুটি গাড়ি যথাক্রমে OA এবং OB বরাবর u ও v বেগে গতিশীল। এখন Q এর সাপেক্ষে P এর আপেক্ষিক বেগ নির্ণয় করতে হবে। কীভাবে নির্ণয় করব সেটা ধাপে ধাপে দেখে নেই,
যার সাপেক্ষে আপেক্ষিক বেগ নির্ণয় করতে হবে, তার বেগকে ০ করতে যতটুকু বেগের প্রয়োজন তার ঠিক বিপরীতে প্রয়োগ করতে হবে। অর্থাৎ, সোজা কথায় যার সাপেক্ষে আপেক্ষিক বেগ নির্ণয় করতে হবে তার বেগের ক্রিয়ারেখাকে শুধু উল্টিয়ে দিতে হবে। অবশ্যই সংযোগ বিন্দু স্থির রেখে।
নিচের ছবিতে যেহেতু Q এর সাপেক্ষে P এর আপেক্ষিক বেগ নির্ণয় করতে হবে তাই Q এর বেগের ক্রিয়ারেখা উল্টিয়ে দেওয়া হল,
এরপর যার আপেক্ষিক বেগ নির্ণয় করতে হবে, (এখানে P এর) তার ক্রিয়ারেখার সমান এবং সমান্তরাল একটি ক্রিয়ারেখা অপর বেগের উল্টানো (এখানে,Q এর উল্টানো) ক্রিয়ারেখার শীর্ষবিন্দুতে স্থাপন করতে হবে (সংযোগ বিন্দু O নয়, উল্টানো ক্রিয়ারেখার একদম শেষে যে বিন্দুটি আছে সেখানে স্থাপন করতে হবে; ছবিতে উল্টানো ক্রিয়ারেখার তীর চিহ্নে স্থাপন করতে হবে)
বোঝেন নি? তাহলে চিত্র দেখুন,
এবার P ও Q এর যাত্রাবিন্দু অর্থাৎ O থেকে উল্টানো ক্রিয়ারেখা OM এর শীর্ষে যে নতুন রেখা MN আঁকা হল, সেই MN এর N বিন্দুর সাথে O বিন্দু সংযোগ করলে যে ক্রিয়ারেখা ON পাওয়া যাবে, সেটাই হল Q এর সাপেক্ষে P এর আপেক্ষিক গতি।
এর মানে হল এই, ধূসর গাড়িটি রঙ্গিন গাড়িটিকে ON বরাবর যেতে দেখবে, যদিও গাড়িটি যাচ্ছিল OA বরাবর।
এই হল একদম শেষ অবস্থা যেখানে Q গাড়িটি P কে ON বরাবর গমন করতে দেখবে।
এই তিনটি ধাপ অনুসরণ করে আমরা যেকোন দুটি বেগের একটির সাপেক্ষে অন্যটির আপেক্ষিক বেগ বের করতে পারব।
সমস্যা হচ্ছে? না সমস্যার কোন কারণ নেই,
এটা আরও সহজ কেননা এতে ধাপ মাত্র দুইটি। 😛
ধরি, O বিন্দু থেকে P এবং Q গাড়ি দুইটি যথাক্রমে OB এবং ?? বরাবর গতিশীল। OB রেখা Q এর প্রকৃত বেগ নির্দেশ করছে এবং ON রেখা Q এর সাপেক্ষে P এর আপেক্ষিক বেগ নির্দেশ করছে। P এর প্রকৃত বেগ অর্থাৎ “??” নির্ণয় করতে হবে।
যার প্রকৃত বেগ দেওয়া আছে, তার বেগের ক্রিয়ারেখার সমান এবং সমান্তরাল (বিপরীতমুখী নয়, সমমুখী) একটি অনুরূপ ক্রিয়ারেখা আপেক্ষিক বেগ নির্দেশিত রেখার পাদবিন্দুতে স্থাপন করতে হবে।
এক্ষেত্রে, Q গাড়ির বেগ নির্দেশিত রেখা OB এর সমান এবং সমান্তরাল ও সমমুখী একটি ক্রিয়ারেখা অপর P গাড়ির আপেক্ষিক বেগ নির্দেশিত রেখা, ON এর পাদবিন্দু অর্থাৎ N এ স্থাপন করতে হবে।
এবার, যাত্রাবিন্দু O থেকে অঙ্কিত সমমুখী, সমান এবং সমান্তরাল রেখা NM এর পাদবিন্দু M এ যেই রেখাটি আঁকা হবে সেটাই P গাড়ির প্রকৃত বেগ নির্দেশ করবে।
খুবই সহজ ব্যপার!
দুটি বেগ দেওয়া থাকলে, যার সাপেক্ষে আপেক্ষিক বেগ নির্ণয় করতে হবে তাকে উল্টে দিতে হয়। এতে কত ডিগ্রি কোণে ঘুরাতে হয়? অবশ্যই ১৮০ ডিগ্রি, তাই না? এখন, আমরা যার বেগ উল্টে** [বৈজ্ঞানিক ভাষায়, বেগের সমান এবং বিপরীতমুখী আরেকটি বেগ প্রয়োগ করা; পুরাই আতলামি, এত ক্যাচাল করার দরকার নাই, উল্টে দেওয়া ভাল বুঝি! আপনার কী মত?] দিলাম সেটা আপাত এবং আপেক্ষিক বেগটাও আপাত, কিন্তু যার আপেক্ষিক গতি নির্ণয় করব সেটা কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে তার নিজের দিক বজায় রেখে চলছে। এবার, আপনি দুই বেগের আপেক্ষিক বেগ নির্ণয় করার সূত্র দেখলেই বুঝবেন এখানে উল্টে দেওয়া বেগটি আমাদের কল্পনা, এবং এই উল্টে দেওয়া বেগ এবং যার আপেক্ষিক বেগ বের করব তাদের লব্ধি বেগই কিন্তু ১ম বস্তুর সাপেক্ষে দ্বিতীয় বস্তুর আপেক্ষিক বেগ।
তাহলে, আমরা যদি ১ম বস্তুর উল্টে দেওয়া বেগ এবং ২য় বস্তুর আসল বেগের মধ্যে ভেক্টরের সামান্তরিক সূত্র প্রয়োগ করি তাহলেই যে লব্ধি বের হবে সেটা হবে ১ম বস্তুর(যার বেগ উল্টে দেওয়া হয়েছিল) সাপেক্ষে দ্বিতীয় বস্তুর আপেক্ষিক বেগ।
একারণেই আমরা যখন আপেক্ষিক বেগ নির্ণয় করতে যাই, তখন তার সূত্র হয়, (পাই-আলফা) এই (পাই-আলফা) এমন একটি ফাংশন যা দুই বেগের একটিকে উল্টিয়ে দিয়ে লব্ধি নির্ণয় করতে সাহায্য করে। এভাবেই সামান্তরিক সূত্র থেকে আমরা আপেক্ষিক বেগের সূত্রাবলি পেয়ে থাকি।
এতক্ষণের আলোচনায় সূত্র, কিভাবে আপেক্ষিক বেগ বের করতে হয়, কীভাবে আপেক্ষিক বেগ দেওয়া থাকলে প্রকৃত বেগ নির্ণয় করা যায় এগুলো দেখানো হল, এবার তিনটি অঙ্কের মাধ্যমে দেখাব কীভাবে প্রয়োগ করতে হয়।
বৃষ্টির দিনে একটি লোক ঘন্টায় ৫ কিমি বেগে হেঁটে দেখল বৃষ্টি খাড়াভাবে পড়ছে। তার বেগ দ্বিগুণ করে দেখল বৃষ্টি খাড়া রেখার সাথে ৩০ ডিগ্রি কোণে পড়ছে। বৃষ্টির প্রকৃত বেগ কত?
ধরি, লোকটি OX বরাবর ঘন্টায় ৫ কিমি. হাঁটছে। এবং বৃষ্টি খাড়া OZ বরাবর নিচে পড়ছে। প্রশ্ন পড়ে দেখুন, লোকটি দেখছে বৃষ্টি খাড়া নিচের দিকে পড়ছে। অর্থাৎ, খাড়া নিচের দিকে পড়া হল লোকটির সাপেক্ষে বৃষ্টির আপেক্ষিক বেগ।
এই তথ্য দিয়ে একটা ছবি আঁকা যাক।
এখান থেকে আমরা v অর্থাৎ বৃষ্টির প্রকৃত বেগের একটা সমীকরণ পেয়ে গেলাম।
➡ প্রশ্নের পরবর্তী অংশে বলা আছে, যদি লোকটি বেগ দ্বিগুণ করে অর্থাৎ ঘন্টায় 10কিমি. হয় তাহলে বৃষ্টি উল্লম্বের সাথে ৩০ ডিগ্রি কোণ উৎপন্ন করে। উল্লম্ব অংশের সাথে ৩০ কোণ উৎপন্ন করলে তা আবার বৃষ্টির ১ম আপেক্ষিক গতির সাথেও ৩০ ডিগ্রি কোণ উৎপন্ন করে, কেননা এটি বিপ্রতীপ কোণ। তাহলে আমরা একে ১ম চিত্রের সাথে সংযোজন করতে পারি। কিভাবে? দেখুনঃ
➡ এবার আমাদের theta এর মান বের করতে হবে। তাই সমীকরণ ১ কে ২ দ্বারা ভাগ করে ক্যালকুলেশন করি যা নিচের চিত্রে দেখতে পারবেনঃ
এখন, ১ নং সমীকরণে থিটার মান বসিয়ে পাই,
v=5/sinθ = 5/sin(30)= 5/ 1/2 =10km/h
এটাই বৃষ্টির গতিবেগ। 🙂
একটি ভ্যানগাড়ি সোজা রাস্তায় প্রতি ঘন্টায় 40 কিমি. বেগে চলে এবং বৃষ্টি উপর থেকে উল্লম্বভাবে পড়ে। যদি বৃষ্টি ভ্যান গাড়িতে 30 ডিগ্রি কোণে আঘাত করে তবে বৃষ্টির বেগ নির্ণয় করতে হবে।
এখানে কিন্তু বৃষ্টির প্রকৃত বেগের দিক উল্লম্ব, কেননা প্রশ্নতে এদের মধ্যে কোন সম্পর্ক দেখানো হয় নি। ভাল করে লক্ষ্য করে দেখুন দ্বিতীয় বাক্যে বলা আছে “বৃষ্টি ভ্যান গাড়িকে ৩০ ডিগ্রি কোণে আঘাত করে” ভ্যান চলছে ভ্যানের গতিপথের দিকে এবং বৃষ্টি পড়ছে উল্লম্বভাবে খাড়া নিচের দিকে। যেহেতু ভ্যানগাড়িটি গতিশীল তাই বৃষ্টির পানি ৩০ কোণে ভ্যানগাড়িটির উপরে পড়ে।
খুবই সহজ একটি অঙ্ক,
ধরি, ভ্যানগাড়িটি AM পথে ঘন্টায় 40km বেগে গতিশীল এবং বৃষ্টি খাড়া নিচের দিকে উল্লম্বভাবে AS বরাবর পড়ছে(প্রকৃত বেগ)
(একইসাথে সমাধানও দিয়ে দিলাম 😉 )
আরেকটি অঙ্ক করেই আজকের মত আপেক্ষিক গতি শেষ করে দেব।
তাহলে পরের সমস্যায় যাওয়া যাক, অনুমতি দিলেন তো?
u বেগে একটি গাড়ি পূর্বদিকে চলছে। অপর একটি গাড়ি প্রথমটির দিকের সাথে θ কোণে আনত রেখায় 2u বেগে চলছে। প্রথম গাড়ির ব্যাকসিটে বসা যাত্রীদের মনে হচ্ছে দ্বিতীয় গাড়িটি উত্তর-পূর্ব দিকে চলছে। প্রমাণ করতে হবে যে,
** উত্তর-পূর্ব বলতে এখানে গাড়িটির অনুভূমিকের সাথে 45 ডিগ্রি কোণ উৎপন্ন করাকে বোঝানো হয়েছে।
মনে করি, ১ম গাড়িটির সাপেক্ষে ২য় গাড়িটির আপেক্ষিক বেগ=v যা উত্তর-পূর্বদিকে OB বরাবর কার্যরত।
অঙ্কের চিত্রটি অঙ্কন করে নেইঃ
চিত্রটা জটিল তাই, ধীরে সুস্থে বুঝে নিন। চিত্র বুঝলে ক্যালকুলেশন কোন ব্যপারই না।
আশা করি বুঝেছেন! এবার ক্যালকুলেশনের পালা,
এই হল প্রদত্ত সমস্যার সমাধান।
* ➡ এখানে যে তিনটি গাণিতিক সমস্যার সমাধান দেওয়া হয়েছে তাতে সাইনের ত্রিভুজ সূত্র প্রয়োগের পর দ্বিতীয় ধাপে প্রত্যেক ক্ষেত্রে আপেক্ষিক গতি r কে বিবেচনার বাইরে রাখা হয়েছে। এর কারণ হল, ওইসকল গাণিতিক সমস্যাবলীতে আপেক্ষিক গতিসম্পর্কিত কোন ডেটা দেওয়া হয় নি যাতে করে সমস্যাটির সমাধান দেওয়া যায়।
* ➡ আলোর বেগের ক্ষেত্রে আপেক্ষিক গতির সূত্রাবলি প্রযোজ্য নয়। স্যার আলবার্ট আইন্সটাইনের আপেক্ষিকতা নীতির বিশেষ স্বীকার্য মতে সকল কাঠামোতে আলোর বেগ সমান এবং এর চেয়ে বেশি বেগ হতে পারে না। (এই ব্যপারে আমার তেমন ধারণা নেই বললেই চলে তাই এই ব্যপারে আমার সাথে তর্ক না করলেও চলবে)।
আজকের ফিরি বিষয় হল, আমরা পদার্থবিজ্ঞানের নির্দিষ্ট গাণিতিক সমস্যাগুলোকে সূত্রে প্রকাশ করে লাভবান হতে পারি।
বুলেট ও তক্তার অঙ্কের কথাই ধরা যাক! কি প্যাচালো অঙ্কগুলো!! উত্তর বের করতে অনেক কিছু করা লাগে!!! উত্তর ঠিক হল কিনা তা নিয়েও সন্দেহ!
একটি বন্দুকের গুলি কোন দেয়ালের মধ্যে 0.04m প্রবেশ করার পর অর্ধেক বেগ হারায়। গুলিটি দেয়ালের মধ্যে আর কতদূর প্রবেশ করতে পারবে?
এর উত্তর হলঃ 0.0133m 8) ,
আপনি চিন্তা করতেই পারেন যে প্রশ্নের উত্তর দেখা আমার পক্ষে কোন ব্যপার না। আমি কিন্তু একটি ট্রিক অ্যাপ্লাই করে উত্তরটা দিয়েছি।
আচ্ছা ঠিকাছে, এবার আরেকটি প্রশ্ন করি, ধরি উপরের প্রশ্নই তবে দেওয়ালের মধ্যে 0.8m প্রবেশ করার পর তার বেগ 1/3 বা এক-তৃতীয়াংশ হয়ে গেল। আর কতদূর প্রবেশ করবে?
এটার উত্তর বইয়ে নাই (এটা বইয়ের অঙ্কও নয়, আমি মাত্র বানালাম)
এর উত্তরঃ 0.64m
বিশ্বাস না হলে নিজে করেই দেখুন! 😉
এই অঙ্কের সূত্র হল এটাঃ
যেখানে, s=বুলেট আরও যতটুকু দূরত্ব অতিক্রম করবে
x=যতটুকু প্রবেশ করার পর বেগ কমে
1/n=বেগের যত অংশ হ্রাস পায়
এই সূত্র নিয়ে চিন্তা করার কোন কারণই নেই, এটি ১১০ শতাংশ সঠিক। ১০০ শতাংশ কারণ আমি নিজে থেকে বললাম !! আর বাকি ১০ শতাংশ প্রমাণ করে দিচ্ছি। 😛
আমরা নিজেরা একটি অঙ্ক বানিয়ে সমাধান করলেই সূত্রের সঠিকতা যাচাই হবে।
সমস্যাঃ একটি বন্দুকের গুলি একটি লক্ষ্যবস্তুর x মিটার প্রবেশ করার পর এর বেগ 1/n অংশ কমে যায়। গুলিটা আর কতটা ভেতরে প্রবেশ করবে?
লক্ষ্যস্থল ভেদ করার পর গুলির বেগ কমে যায়। অতএব, এখানে মন্দনের সৃষ্টি হচ্ছে। x মিটার প্রবেশ করার পর যে বেগ হবে তা পরবর্তী অতিক্রান্ত দূরত্বের জন্য আদিবেগ হিসেবে বিবেচিত হবে। দেওয়া আছে, বেগ 1/n অংশ কমে যায়। অতএব x মিটার প্রবেশ করার পর শেষ বেগ হবে,
এই হল প্রদত্ত অঙ্কের একটি সূত্র যার সাহায্যে আমার মত আপনিও এধরণের অঙ্কের সমাধান মুহূর্তের মধ্যে বলে দিতে পারবেন।
ফাউ জিনিস নাকি ভাল হয় না! আমার দেওয়া ফাউ কেমন লাগল তা জানাবেন কিন্তু! একটা কৌতুক দিয়ে শেষ করছি।
কারণ জানতে ছবি দেখুনঃ 8)
সবাই ভাল, হাসিখুশি এবং
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল ➡ সুস্থ থাকুন। আমার এ পথ চলায় আবার আপনাদের সাথে দেখা হবে এই কামনায় আজ পোস্ট শেষ করলাম। আল্লাহ্ হাফেজ।
The fundamentals of Physics 9th edition download link : (90MB)
Fundamentals of Physics পদার্থবিজ্ঞানের ক্যালকুলাস ভিত্তিক একটি টেক্সটবই যার লেখক হচ্ছেনঃ David Halliday, Robert Resnick এবং Jearl Walker. এই টেক্সটবইটা বর্তমানে নবম সংস্করণে আছে এবং ৫টি খন্ডে প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমান সংস্করণটি Halliday এবং Resnick এর অরিজিনাল টেক্সটবুক Physics এর রিভাইজড সংস্করণ যা ১৯৬০ সালে প্রথম প্রকাশিত। এই বইটা কলেজ কিংবা আন্ডারগ্র্যাজুয়েটদের পদার্থবিজ্ঞান কোর্সের জন্য প্রযোজ্য। শুধু তাই নয়, বইটি বিজ্ঞান এবং ইঞ্জিনিয়ারিং এ অধ্যয়নরত ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে বহুলভাবে সমাদৃত। American Physical Society ইন্ট্রোডাক্টরি পদার্থবিজ্ঞানের ভিত্তিতে বইটিকে বিংশ শতাব্দীর এক অনন্যসাধারণ বই হিসেবে ঘোষণা করে।
- Mechanics (বলবিদ্যা)
- Wave (তরঙ্গ)
- Thermodynamics (তাপগতিবিদ্যা)
- Electromagnetism (তড়িচ্চুম্বক)
- Optics (দর্শনশাস্ত্র)
- Special Relativity (আপেক্ষিক তত্ত্বের বিশেষ স্বীকার্য)
তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া, লিঙ্ক
➡ জানালা ভেঙ্গে বের হতে পারছেন না? জানালা দিয়েই অন্তত চেয়ে দেখুন, আকাশটা কতই না বিশাল! [ফ্রি-ওয়্যার সমাচার; সচিত্র ও মোটামুটি বিস্তারিত মেগাটিউন]
➡ আমরা ইন্টিগ্রেশন ভয় পাই না ইন্টিগ্রেশনই আমাদের ভয় পায়<----২০০০ শব্দের + ৩৫ ছবির মেগাটিউন
➡ অ্যালিফেটিক হাইড্রোকার্বনের প্রস্তুতি, বিক্রিয়া মেকানিজমসহ <----- কিলোটিউন
➡ জটিল তড়িৎ বর্তনীর তুল্যরোধ নির্ণয়
**আমাদের উন্মাদ তন্ময় ভাই ডাউনলোড লিঙ্ক নিয়ে এসেছেন। লেখাটি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন।
১। তপন ও রানা
২। সুশান্ত ,গণি ও অচিন্ত্য <---- কঠিনভাবে ফলো করা হয়েছে
৩। তফাজ্জল
৪। ড. আমির হোসেন খান ও মোহাম্মদ ইসহাক
৫। নাছির উদ্দিন প্রামাণিক
৬। গিয়াস, মমিন ও হাসান এবং মাহেরা
+ উপহারে যে বইটি দেওয়া আছে সেটা
১। এস. ইউ. আহাম্মদ
২। প্রফেসর হারুনুর রশীদ
৩। আফসার উজ-জামান
৪। এম এ জব্বার <---- কঠিনভাবে ফলো করা হয়েছে
টিউনটি পূর্বে প্রকাশিত এখানে
আমি নিওফাইটের রাজ্যে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 13 টি টিউন ও 1392 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 5 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
শ্রবণ, মনন , অনুশীলন
Excellent.