জীবনবৃত্তান্ত বা সিভি যেন আপনার আমার জীবনের গল্প। একটা ভাল মানের চাকরি নিতে গেলে একটা ভাল মানের সিভির প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। তাই এটি হতে পারে আপনার জিবনের সেই গল্প, যা চাকরিদাতাকে আকৃষ্ট ও উৎসাহিত করবে অর্থাৎ আপনার সিভি দেখেই যেন আপনাকে নির্বাচন করতে পারে। ইন্টারনেটে আপনি অনেক সাইট পাবেন যেখানে একটু খুঁজলেই পেয়ে যাবেন একটি প্রফেশনাল সিভি তৈরির হাজার হাজার সুন্দর আর অসুন্দর নিয়ম। আপনি কোন লেখাকে কেন্দ্র করে আপনার পরিপূর্ণ একটি সিভি বানাবেন, এতে বাছাই করতে আপনি হিমশিম খেয়ে যাবেন। তাই সময় নিয়ে আপনার জিবনের প্রাপ্তিগুলো সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করে তৈরি করুন সিভি। যেখানে শুধু আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা, প্রশিক্ষণ বা অভিজ্ঞতাই নয়, এর চেয়েও একটু বেশি কিছু যেন থাকে। অর্থাৎ আপনি এই ভেবে বসবেন না যে আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা আকাশ সমান হলেও আপনার চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা জিরো %। আপনারও আকাশ সমান শিক্ষাগত যোগ্যতা আছে, ঐ পাড়ার আবুলেরও আছে তাহলে আপনি তার থেকে ভিন্ন কোথায়? হ্যাঁ, এখানেই আপনাকে একটা ভাল সিভি লেখার মাধ্যমে বুঝিয়ে দিতে হবে যে আমি আবুলের চেয়ে একটু ভাল। এই একটু বেশি কিছুই আপনাকে হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর মধ্যে আলাদা করে দেবে। কিন্তু যারা সবেমাত্র পাশ করে বের হয়েছেন বা ১-২ বছরের বেশি কাজ করার অভিজ্ঞতা নেই তাদের সিভির ধরণ আর প্রফেশনালদের সিভির ধরণ কিছুটা ভিন্ন। যারা কেবল পাশ করে বের হয়েছেন তাদের কাজের অভিজ্ঞতা না থাকার কারনে প্রফেশনালদের মত সিভি তৈরি করা যায়না। আমি এই লেখায় আলোচনা করব কিভাবে ভালমানের সিভি তৈরি করবেন।
নিম্নে ভাল সিভি লেখার কয়েকটি নির্দেশনা বা পরামর্শ দেওয়া হলঃ-
১. ভাল মানের কাগজ ব্যবহার করাঃ-
প্রথমেই আপনার সিভি লিখতে ভাল মানের কাগজ নির্বাচন করুন। আমি মনে করি এখন খুব কম প্রতিষ্ঠানই কাগজের তৈরি সিভি চায়। আপনাকে আপনার সিভি ইন্টারনেটের যেকোন জব সাইট বা সেই প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে আপলোড বা ইমেইল করতে বলে। তাই আপনি যেখানেই লিখুন না কেন ফন্ট ও লে-আউট যেন সুন্দর ও ঝকঝকে হয়। তাই সিভি লেখার ক্ষেত্রে আপনি কিছু পরিচিত ফন্ট যেমনঃ টাইমস নিউ রোমান, আরিএল বা ভারদানা ফন্ট ব্যবহার করতে পেরেন। এসব ফন্ট দেখতে যেমন ভাল, তেমনি সহজে পড়াও যায়। ফন্ট সাইজের দিকে একটু নজর রাখবেন। ফন্ট সাইজ যেন ১১- এর কম না হয়। এতে আপনার যত্নের ও আন্তরিকতার ছাপ ফুটে উঠবে। এতে চাকরিদাতাও বুঝতে পারবেন, আপনি চাকরি করতে কতটা আগ্রহী।
২. বানান ও ব্যাকরনঃ
একটা ভাল মানের সিভি লিখতে গেলে আপনাকে সব দিকে নজর দিতে হবে। সিভির বানান যেন একটাও ভুল না হয়। সিভিতে বানান ভুল করা যেন বড় ধরনের পাপ। নিয়োগদাতা যেন কোন ভাবেই ধরতে না পারে যে আপনার সিভির বানান ভুল আছে। যদি কখনো বানান চোখে পড়ে তাহলে আপনার সম্পর্কে নেতিবাচক ধারনা তৈরি হবে। আর নেতিবাচক ধারনা তৈরি হলে আপনার চাকরি পাওয়ার ৩০% কমে গেল ভেবে নিবেন। আর ব্যাকরণের দিকটাও ভাবতে হবে। ব্যাকরণগত ভুল যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাই মাথা ঠান্ডা করে একটি ভাল মানের সিভি বানাবেন।
৩. সিভির মাপযোগ বা লে-আউট এবং দৈর্ঘ্যঃ
যেমন তেমন মাপের সিভি বানালেই হবেনা সেগুলোর ভাল মত মাপযোগ দিয়ে তৈরি করতে হবে। আজকাল বেশির ভাগ কোম্পানিই অনলাইনে সিভি পাঠাতে বলে। আবার কোন কোন কোম্পানি এখনও কাগজে টাইপ করা সিভি পাঠাতে বলে। তাই লে-আউট ও দৈর্ঘ্য- এই দুটো সিভির জন্য একই রকম হওয়া উচিত।
৪. কিছু বিশেষ গুনাবলিঃ
বেশিরভাগ চাকরির বিজ্ঞাপনে দেখবেন নিয়োগকর্তারা চাকরিপ্রার্থীর মধ্যে কিছু বিশেষ গুণাবলি বা সফট স্কিল চান। এগুলো যদি আপনার মধ্যে থাকে তাহলে আপনার ইতিবাচক দিক হবে। যেমনঃ
১. নমনীয়তা
২. ইতিবাচক হওয়া
৩. যোগাযোগ দক্ষতা
৪. উদ্যোগী মনোভাগ
৫. দলগত ভাবে কাজ করার ক্ষমতা
৫. সব চাকরিতে একই আবেদন সমীচীন নয়ঃ
আপনার মূল বা প্রধান জীবনবৃত্তান্ত কয়েক পৃষ্ঠার হতে পারে। কিন্তু যখন কোথাও আবেদন করবেন, তখন সেই সিভিকে যে পদে আবেদন করবেন, সেই পদের চাহিদা অনুযায়ী সাজাতে হবে। একটি জীবনবৃত্তান্ত দিয়ে সব চাকরিতে আবেদন করা যাবেনা। আরও খেয়াল রাখতে হবে, প্রতিটি পদের জন্য সিভি দুই পৃষ্ঠার বেশি বড় যেন না হয়। প্রথম পৃষ্ঠাই সবচেয়ে জরুরি বিষয় যেমন আপনি যদি কলেজে ফুটবল টিমের দলনায়ক হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি বলতে পারেন আপনার নেতৃত্বদানের দক্ষতা রয়েছে। যারা একটি চাকরি থেকে আর একটি চাকরিতে যাবেন, তারা অবশ্যই আপনার বর্তমান কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা ও সফলতার কথা লিখবেন। মনে রাখবেন, চাকরিদাতা কিন্তু প্রথম পৃষ্ঠার প্রথম দিকের কয়েকটি লাইনই আসলে মনোযোগ দিয়ে পড়েন। সুতরাং প্রথম পৃষ্ঠা ভাল না হলে দ্বিতীয় পৃষ্ঠা পর্যন্ত তিনি যাবেনই না। এভাবে প্রথম পৃষ্ঠাই আপনার প্রমাণ করতে হবে যে আপনিই একমাত্র প্রার্থী এই পদটির জন্য। এরপর দ্বিতীয় পৃষ্ঠাই আপনার পূর্ববর্তী চাকরি, পড়াশোনা ও ব্যক্তিগত অন্যান্য তথ্য দিবেন।
৬. সঠিক রেফারেন্স ব্যবহার করাঃ
সিভি লেখার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সঠিক রেফারেন্স ব্যবহার করা। সিভিতে রেফারেন্স হিসেবে জার নাম ব্যবহার করেছেন তাকে অবগত করুন ও অনুমতি নিন। তাঁর নাম, পদবি ও যোগাযোগের সঠিক তথ্য ব্যবহার করুন। কারণ, নিয়োগদাতা আপনার দেওয়া রেফারেন্সকে ফোন করে আপনার সম্পর্কে কিছু জানতে পারে। আর আপনি যদি আহামরি ভুল তথ্য দিয়ে থাকেন তাহলে আশাই গুরেবালি ছাড়া কিছুই হবেনা। তাই সঠিক রেফারেল ব্যবহার করুন।
এতক্ষণ আপনাদের কিছু পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করলাম মাত্র। এবার জেনে নিন কিভাবে সিভি লিখতে হয়ঃ
১. Title/শিরোনামঃ
২. Career Objective/ক্যারিয়ারের উদ্দেশ্য পরিষ্কারভাবে গুছিয়ে লিখুনঃ
৩. Experience/কাজের অভিজ্ঞতার বিবরণ দিনঃ
৪. Objective of Career/ক্যারিয়ারের উদ্দেশ্যঃ
৫. Educational Background/শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ
৬. Internship/ইন্টার্নশিপঃ
৭. Computer Skill/কম্পিউটারে দক্ষতাঃ
৮. Training/প্রশিক্ষণঃ
৯. Language Proficiency/ভাষাগত দক্ষতাঃ
১০. Scholarship / Award/বৃত্তি বা পুরষ্কারঃ
১১. Hobbies and Interests/শখ এবং আগ্রহঃ
১২. Personal Information/ব্যক্তিগত তথ্যঃ
১৩.Reference:
১৪. Declaration/ঘোষণাঃ
১৫. Signature & Date/সই এবং তারিখঃ
এগুলোর বিশদ বর্ণনা দিলাম না, কারণ আপনার ব্যক্তিগত তথ্যগুলো আপনি নিজেই লিখতে পারবেন। আপনাদের জন্য আমার তৈরি করা আমার সিভি পিডিএফ আকারে নিচে দিলাম।
ওকে আজ আর নয়। আমার লেখাতে যদি কোন ভুল থাকলে ক্ষমা করে দিবেন।
টিউনটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে অথবা বুঝতে যদি কোন রকম সমস্যা হয় তাহলে আমাকে টিউমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না। কারন আপনাদের যেকোন মতামত আমাকে সংশোধিত হতে এবং আরো ভালো মানের টিউন করতে উৎসাহিত করবে।সবাইকে ধন্যবাদ।
আমি মোঃ জিল্লুর রহমান। Credit Checking Cum-Sayerat Assistant, ICT Section, DC Office, Naogaon., Naogaon। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 24 টি টিউন ও 155 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
Md.Zillur Rahman, born in 1991, is one of the first children of two children in a small family consists of five members. Born in a poor family, I face a very miserable condition from outset of my bringing up until maturity. Being a very depraved child in the poor family...
Tnx
Nice tune bro